নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত,
রাষ্ট্রের ধর্ম বা ধর্ম-রাষ্ট্র । এই উপমহাদেশে পাকিস্থান এবং বাংলাদেশ হল ধর্ম-রাষ্ট্র । যে দ্বিজাতি তত্বের ভিত্তিতে পাকিস্থান গঠিত হয়েছিল এবং ১৯৭১এ সেই দ্বিজাতি তত্বের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্টার জন্যে পাকিস্থানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল । কিন্তু রাষ্ট্রের গায়ে পুরানো নামাবলি টা সামরিক স্বৈরাচার, যারা মুলত পাকিস্থানেরই ছদ্মবেশি এজেন্ট - তারা আবার সেটা পরিয়ে দিল । উপমহাদেশের বিশাল দেশ ভারত, যার হিন্দু জন সংখ্যা ৮০% । অথচ ভারত সত্যি ই ধর্ম নিরপেক্ষ । এমনকি ঘোর সাম্প্রদায়িক একটা সরকার থাকলেও , সে পাগড়ি টুপি সব পড়তে পারে । কারন সে ইংরেজি সেক্যুলার নয় - যেমন ফ্রান্স । ভারত পৃথিবীতে এমন একটি দেশ যার রয়েছে বিশাল রিলিজিয়াস ডাইভারসিটি । এমন বৈচিত্র্য পূর্ণ দেশ আর দুটি নেই । অগ্নি উপাসক জরাথুস্ত্রিয়ান থেকে বাহাই,,ইহুদি সব ধর্মের সহবস্থান। ভারত এই ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র ধর্মীয় গষ্টিকেদিয়েছে সম মর্যাদা ...। আর তার দুদিকে দুই প্রতিবেশী অন্য আর এক ভুবনের বাসিন্দা । ভাবছি, ভারত হিন্দু রাস্ট্র হলে কিন্তু মন্দ হতো না। কি বলেন ?? এবার আমাদের নিকট দূর প্রতিবেশী দক্ষিন এশিয়া র দেশ গুলোর রিলিজিয়াস ডেমগ্র্যাফি গুলো দেখা দরকার। মিয়ানমার বৌদ্ধ প্রধান দেশ, যার মাত্র ৪% মুসলিম,কিন্তু সেখানে সাংবিধানিক রাষ্ট্র ধর্ম নেই । এথনিক রহিংগ্যা ছাড়া সেখানে বাকি সব মুসলিম শান্তিতে বসবাস করে আসছে, যা শোনা নয়, চোখে দেখা । শ্রীলঙ্কা বৌদ্ধ প্রধান দেশ,যার ৭% মুসলিম, কিন্তু সাংবিধানিক রাষ্ট্র ধর্ম নেই, বরং হালাল ফুড স্টাফ বিপননের কারনে সংখ্যা গরিষ্ট প্রায় ৯০ % সিংহলী , বৌদ্ধরা রা মাইনক্যা চিপায় আছে । থাইল্যান্ড বৌদ্ধ প্রধান দেশ, যার ৪.৫০% মুসলিম । বৌদ্ধ রাজাই সেখানকার রাজতন্ত্রের মালিক। কিন্তু কোন রাষ্ট্র ধর্ম নেই ,নেই কনা মাত্র ধর্মীয় নিপীড়ন । নেপাল ছিল একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র। হ্যাঁ ছিল , এখন আর নেই । সেখানকার ৮০% হিন্দুরা কিছু কাল আগে সেই রাষ্ট্রটার গা থেকে হিন্দু নামাবলি খুলে ফেলে তাকে উদোম করে সেক্যুলার বানিয়ে দিল ! তার মানে এরা কেউ রাষ্ট্রকে মাথা মুড়িয়ে দীক্ষা দেয়নি । এ জন্যে এদের কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা কোনদিন জানতে পারিনি বা জানার প্রবৃত্তি হয়নি । যাহোক, পাকিস্থান বরং তার জায়গায় ঠিকই আছে । সে যে জায়গায় ছিল সে জায়গায় তেই আছে । কিন্তু বাংলাদেশ ঠিক নেই, সে প্রতারক, ভন্ড , মুখোশ ধারী শয়তান । যারা দেশের জন্যে আত্মাহুতি দিয়েছে,তাদের অন্তর্নিহিত মর্ম বোধের সাথে এই প্রতারনা । সে পাকিস্থান থেকে বিভক্ত হয়েছে বাঙালী জিঙ্গইজম এর মন্ত্র নিয়ে পাকিস্থানী স্ট্যান্ডার্ড কে উৎরে যাবার জন্যে, ক্ষুদ্র এবং বৃহৎ ব্যাংক ডাকাতি করে দেশের গরীব মানুষের টাকা হাতিয়ে নেবার জন্যে, রাতারাতি আকাশ চুম্বি হবার জন্যে। আর পোষাকে আশাকে, চলনে বচনে কে কত বেশি ধর্মপ্রান হতে পারে তার প্রতিযোগীতা দেখনর জন্যে। ভিতরে যাই ই থাক। এটা খারাপ না , কারন এটাই বাস্তবতা । যারা নিজেদের জীবন দিয়ে যে জিনিষটা আমাদের দিয়ে গেছে, সেই স্বাধীনতা কে বাঙালী আলাদিনের চেরাগ বানিয়েছে মাত্র । ৪৭ এর দেশ ভাগের পরও এ দেশ ছিল এখনকার চেয়ে অনেক বেশি ধর্মীয় বৈচিত্র্যময়। ঘরে বাইরে নারীদের পোশাকে আশাকে ধর্মীয় করন ছিল একেবারে নগন্য । দুর্গা পুজা ছিল গ্রাম বাংলার উৎসব,তা ছিল ব্যাপক এবং অভূতপূর্ব । স্বাদহীন দেশে সেটা পুলিশ পাহারায় শহরে এসে ঠেকেছে । ১৯৯৩ সালে আমার পাকিস্থান ভ্রমনের সময় রমজান মাস ছিল । হরপ্পায় আমি সেহেরি খেয়েছিলাম, মনে পড়ে । যান বাহনে সেহেরি ইফতার খেতে হলেও, যাদের আতিথ্য নিয়েছিলাম , তাদের কাছে ঠিক মতই ছিলাম। আমার মতো বিধর্মী নাস্তিক এর কোন অনাদর হয়নি । এমন কি আমার নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাকে সীমান্ত পথে আফগানিস্তান যেতে নিবৃত্ত করেছিল । সত্য বলতে কি, মিয়ানমারে,নেপালে,শ্রীলংকায়,থাইলান্ড এ ও এমন উষ্ণতা পাইনি । বাংলাদেশ একটি ধর্ম রাষ্ট্র। এটাই এখন বাস্তবতা । এর জন্যে দায়ী হয়তো তার ২ নম্বরী সিটিজেন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান,পাহাড়ি আদিবাসীরা। একাত্তর সালের মতো ডান্ডি কার্ড সিস্টেম নাই এখন যে,যা দেখালে মালাউন এবং পাহাড়ি দের কে বাংলাদেশের পাকি প্রেতাত্মা রা ছেড়ে দেবে । এর বহুবিধ কারন দৃশ্যমান । এই দুই নম্বরী সিটিজেন গুলো না থাকলে এটাকে ধর্ম-রাষ্ট্র বানাবার প্রয়োজন হতো না । এর জন্যে নিশ্চয় একটু একটু করে একদিন এদের উপর চূড়ান্ত লানত নেমে আসবে ।
©somewhere in net ltd.