নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
।। গ্রন্থগাথা ।।
আমার ক্ষেত্রে বই বন্ধ করা মানেই
জীবনে প্রবেশ করা।
এর মধ্য দিয়েই শুনতে পাই
বন্দরে বন্দরে
কম্পমান ক্রন্দনধ্বনি।
তামার আংটা
বালুভর্তি কন্টেইনার
ঠেলে নিচ্ছে তকোপিলার দিকে।
রাত্রিকাল।
দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে
আমাদের সমুদ্র
ধড়ফড় করছে মাছ হয়ে,
স্পর্শ করছে আমার দেশের
পদতল, ঊরুযুগ,
তার কার্বন-পাথুরে পাঁজর।
সারাটা রাত
সৈকতকে জড়িয়ে ধরে, প্রত্যূষে
জেগে উঠছে সংগীতময়
যেন গীটারের তাল উজ্জীবিত করলো তাকে।
সমুদ্রঢেউ ডাকছে।
হাওয়া
ডাকছে আমাকে
আর রদ্রিগেজ ডাকছে,
এবং হোসে আন্তনীয়__
খনি শ্রমিক ইউনিয়নের
একটা তারবার্তা পেয়েছি
এবং তার কাছ থেকে যাকে ভালোবাসি
(তার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমি)
বুকালেমুতে তারা আমাকে চায়।
কোনও গ্রন্থই সক্ষম নয়
কাগজের পৃষ্ঠায় আমাকে মুড়িয়ে ফেলতে
মুদ্রিত অক্ষরে ভরিয়ে দিতে,
কিংবা স্বর্গীয় মুদ্রণও
কদাচিৎ পেরেছিলো
আমার দৃষ্টিকে আটকে ফেলতে,
গ্রন্থ থেকে বেরিয়ে
জ্বলন্ত ধাতুর কাজে
কিংবা হাউহাউ গরম গোমাংস খেতে
পাহাড়ঘেঁষা উনুনসমুহের পাশে
ধাতব গীতবিতান নিয়ে
আমি এসেছিলাম মানবকাননে।
আমি পছন্দ করি
রোমাঞ্চগ্রন্থ ,
বনভূমি বা তুষারসংক্রান্ত বই,
রসাতল অথবা সাত-আসমান
কিন্তু ঘৃণা করি
মাকড়সার বই
যেগুলোর ভাবনাজুড়ে থাকে
বিষজাল
তরুণ-তরুণীদের
আর ঘূর্ণায়মান মাছিদের ফাঁদে আটকাতে।
গ্রন্থ, ছাড়ো আমাকে।
ভারি ভারি পুস্তকে
আচ্ছাদিত হতে চাই না আমি,
রচনাসমগ্রের ভেতর থেকে
আমার জন্ম নয়,
আমার কবিতাগুলো
গিলে-খাওয়া কবিতা নয়___
ওরা গ্রাস করে
উত্তেজক আনন্দকে,
বেঁচে থাকে বিরূপ আবহাওয়ায়,
আর তাদের খাদ্যসংস্থান করে
জগত ও জনতাকে খনন করে করে।
ধূলিজীর্ণ জুতো পায়ে
পুরাণ ও কিংবদন্তীহীন
আমি চলেছি আমার পথে:
গ্রন্থগুলোকে যার যার তাকের মধ্যে ঢুকিয়ে দাও,
রাস্তায় নেমে যাচ্ছি আমি।
জীবনের কাছেই
জীবন শিখেছি,
একটি মাত্র চুম্বনের কাছে শিখেছি ভালোবাসা
এবং কাউকে শেখাতে পারিনি কিছুই
পরিবর্তে জনসাধারণের মধ্যে যা কিছু সাধারণ
তাকেই আশ্রয় করে বেঁচে থেকেছি,
লড়াই করেছি তাদের সঙ্গে
নিজের কণ্ঠে গেয়েছি তাদেরই সমস্ত গান।
©somewhere in net ltd.