নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইচ্ছা মানব, দানবদের ধ্বংস করি

পলাতক মুর্গ

পলাতক মুর্গ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঠিক কী কারণে আপনি একজন খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারক হওয়ার পরেও ইসলাম গ্রহণ করলেন? কী সেই সত্য?

১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:২৮

শাইখ ইউসুফ এস্তেস ১৯৪৪ সালে আমেরিকার টেক্সাসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন ক্যাথোলিক খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারক ছিলেন। ১৯৯১ সালে ৪৭ বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। Dubai International Peace Convention-এ গ্যাব্রিয়েল নাম্নী এক খ্রিষ্টান যুবক তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, কেন তিনি খ্রিষ্টান ধর্মযাজক হয়েও ইসলাম গ্রহণ করলেন? কোন বিষয়টি তাঁকে ইসলামের প্রতি এতটা আকৃষ্ট করলো? শাইখ ইউসুফ এস্তেস সবিস্তারে তাঁর সত্য খুঁজে পাওয়ার গল্প বলেন এবং সেই খ্রিষ্টান যুবককে ইসলামের দাওয়াত দেন, সেই যুবকও সত্য উপলব্ধি করে সাথে সাথে ইসলাম গ্রহণ করে।অসাধারণ সেই প্রশ্নোত্তর পর্বটি #আল্লাহর_কাছে_আসার_গল্প'র পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হল।
...
প্রশ্ন : আমার নাম গ্যাব্রিয়েল। আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার বন্ধুর কথা শুনে আমি এই পীস কনফারেন্সে এসেছি। এই ক্যাটালগে লেখা আছে যে ইউসুফ এস্টেস একজন স্ট্রং ক্যাথোলিক খ্রিষ্টান হিসেবে বড় হয়েছিলেন। তিনি জীবনে অনেক সফলতা পেয়েছিলেন। মিউজিক স্টোর, টিভি শো - এসবের মালিক ছিলেন। তিনি একজন খ্রীষ্টান ধর্মপ্রচারক ছিলেন। স্যার, আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করতে চাই, ঠিক কী কারণে আপনি একজন খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারক হওয়ার পরেও ইসলাম গ্রহণ করলেন? কী সেই সত্য?
...

শাইখ ইউসুফ এস্তেস : গ্যাব্রিয়েল, আজকে এখানে আপনাকে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। আপনি খুবই চমৎকার একজন মানুষ। আমি যখন খ্রিষ্টান ছিলাম, আমি আপনার মতন এত ভাল ছিলাম না। সত্যটা আমি আমার বাইবেলের মাধ্যমেই প্রথম খুঁজে পেয়েছিলাম। কারণ আমি অনেক নামধারী খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারকের সাথে ঘুরে বেড়াতাম। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ছিল যারা সত্যিকারের খ্রিষ্টান ধর্মকে প্রচার করত না। যদিও তাদের সাথে আমি ঘুরে বেড়াতাম, তারপরও আমি তাদেরকে বিশ্বাস করতে পারতাম না। বিশেষ করে যখন তারা বাইবেল হাতে নিয়ে মানুষজনকে বলত- “বাইবেলে এটা বলা আছে, বাইবেলে ওটা বলা আছে।” তারপর আমি তাদেরকে বলতাম যে, বাইবেলে তো সেগুলো বলা নেই। তারা আমাকে উত্তর দিত- ”যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ এগুলো বিশ্বাস করে, ততক্ষণ কী যায় আসে? Who cares?”
.
এগুলোতে আমার খুবই খটকা লাগতো। তাই আমি নিজেই বাইবেলের বিভিন্ন ভার্সনের অনুবাদ পড়া শুরু করলাম। কিন্তু একটার সাথে আরেকটার কোনো মিল নেই! তাই আমি ঠিক করলাম যে, আমাকে কনি গ্রীক ভাষা (Koine Greek) জানতে হবে। এর আগে আমি ল্যাটিন শিখেছিলাম, কিন্তু ল্যাটিনও আসলে কনি গ্রীকেরই একটা অনুবাদ। আমি কনি গ্রীক শেখা শুরু করলাম। এটা প্রচন্ড কঠিন একটা ভাষা, অক্ষরগুলো খুবই দুর্বোধ্য। এরপর আমি আবার আবিষ্কার করলাম যে, যীশুখ্রীষ্টের আসল ভাষার নাম ছিল অ্যারামাইক (Aramaic)। এটা সেমেটিক অঞ্চলের এক ধরনের হীব্রু ভাষা। এই ভাষা সম্পর্কে আমার বিন্দুমাত্র ধারণাও ছিলনা।
.
যাই হোক, আমি গবেষণা শুরু করলাম। আমার বাবার কাছে একটা অতি বিশাল সাইজের বই ছিল এই নামে “Strong’s Concordance of the bible, Greek and Hebrew”। আমি এই বইটা উল্টাতাম আর একটা একটা করে শব্দ দেখতাম। হীব্রু ভাষার একটা শব্দ কনি গ্রীকে কি হবে, সেটার শব্দমূল (Root), সেটা বাইবেলে কোথায় আছে, সেটা কিসের সাথে সম্পর্কিত - এই সবকিছু আমি ঐ বইটা থেকে বের করতাম। এভাবে একদিন হঠাৎ করে আমি একটা বিশাল জিনিস আবিষ্কার করে ফেললাম।
.
আমি দেখলাম যে, বাইবেলে প্রচুর অসঙ্গতি আছে। ডিকশনারীতে একটা শব্দের এক অর্থ, বাইবেলে সেই শব্দেরই আরেক অর্থ। আমি এটাই দেখলাম যে, মানুষ বাইবেল নিয়ে যেসব কথা বলে, তার অনেকগুলোই সত্য নয়। আমি যদি এখন আপনাদেরকে কুর’আন থেকে কিছু পড়ে শোনাই, আমি অবশ্যই আরবিতে সেটা বলব। কিন্তু আপনি কয়জন খ্রিষ্টানকে চেনেন যে মূল এরামাইক ভাষায় বাইবেল থেকে কিছু পড়ে শোনাতে পারবে? তেমন কেউ নয়, তাইনা?
.
গ্যাব্রিয়েল, আপনি এই হলরুমেই খেয়াল করুন। এই যে এখানে এত হাজার হাজার মানুষ, এখানের কাউকেই আমি চিনি না। কিন্তু আমি যদি কুর’আন খুলি, তারপর ইচ্ছামতন যেকোন একটা পাতা থেকে কিছু পড়ি, আমি আপনাকে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, আমি একটা শব্দও ভুল বললে এখানে কেউ না কেউ সেটা অবশ্যই ধরে ফেলবে। যেমন ধরেন, আমি প্রথম পাতা খুললাম। আমি একটা লাইন একটু ভুল করে পড়ি- “গাইরিল মাগদুবি আলাইহুম ওয়ালাদ্দ-লিন।” দেখেন কী হয় এখন (অডিয়েন্স সমস্বরে শুধরে দেয়- আলাইহিম)। একইভাবে আমি যদি একদম শেষ পাতা থেকে কিছু একটা পড়ি – "ক্বুল হু আল্লাহু আহাদ।" (অডিয়েন্স বাকি সুরা পড়ে দেয়)
.
গ্যাব্রিয়েল, আমি আপনাকে যেটা দেখাতে চাচ্ছি সেটা হল যে, আমরা মুসলিমরা সবাই জানি যে এই কুর’আন আরবি ভাষায়। পৃথিবীর ১৬০ কোটি মুসলিমের প্রত্যেকে এটা জানে। এমনকি এই পুরো বইটা অনেক মুসলিম পুরো মুখস্ত করে রেখেছে। আমি আপনাকে দেখাই। এই রুমে আপনারা কত জন আছেন যে অন্তত একজন একজন হলেও কুর’আন হাফেয কে চেনেন? (অসংখ্য মানুষ হাত তুলে)
.
আমি ঠিক এই একই প্রশ্ন আমেরিকায় একটি ইউনিভার্সিটিতে খ্রিষ্টানদের করেছিলাম। আমি তাঁদের জিজ্ঞেস করেছিলাম - আপনারা কয়জন একজন খ্রিষ্টানকেও চেনেন যে পুরো বাইবেল হিব্রু আর কনি গ্রিক ভাষায় মুখস্ত পারে? আপনি বিশ্বাস করবেন না তাদের চেহারা দেখার মতন হয়েছিল! তাদের মুখ দেখে মনে হয়েছিল এই ভাষার নাম তারা জীবনেও শুনেনি।
.
বাইবেলকে ছোট করা আমার উদ্দেশ্য না। আমার উদ্দেশ্য তাদেরকে চিনিয়ে দেয়া, যারা বাইবেল নিয়ে মিথ্যা কথা বলে মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে। আমি কনি গ্রীক আর হিব্রু ভাষায় যত বেশি বাইবেল পড়তে থাকলাম, আমি আবিষ্কার করলাম যে সেগুলোর কথা আর কুর’আনের ইংরেজী অনুবাদের মধ্যে হুবহু একই কথা বলা আছে। বিশেষ করে আমি আপনাকে সূরা ইখলাসের যেই লাইনটা বললাম :
.
লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ- তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি।
.
এবার বাইবেলের একটা লাইন শুনুন :
God is not a man, that He should lie; neither the son of man, that He should repent.

দেখুন এই দুইটি লাইনের মধ্যে কি হুবহু মিল! এটা বাইবেলের Numbers এর ২৩ নং চ্যাপ্টারের ১৯ নম্বর বাক্য। (Click This Link)
.
এটা পড়ার পর আমি চিন্তা করলাম যে, এইখানে বলছে যে স্রষ্টা কোনো মানুষের সন্তান নন। তাহলে নিউ টেস্টামেন্ট এ কীভাবে আবার বলছে যে যীশু হচ্ছেন মানুষের সন্তান (Jesus is the son of man), তাহলে কিভাবে যীশু স্রষ্টা হলেন? তখন আমি এই বাক্যগুলো নিয়ে আমার খ্রিষ্টান ধর্ম-প্রচারক বন্ধুর কাছে গেলাম। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম এটার ব্যাখ্যা কী? আপনি জানেন সে আমাকে কী বলল? সে আমাকে বলল যে, প্রথম Son হচ্ছে বড় হাতের S , আর দ্বিতীয় son হচ্ছে ছোট হাতের s.
.
কিন্তু আসল কথাটা হচ্ছে যে আরবি, হিব্রু আর এরামাইক ভাষায় ইংরেজির মতন কোনো বড় হাতের বা ছোট হাতের অক্ষর নেই!!! যার মানে হচ্ছে আমার সেই বন্ধু মিথ্যা কথা বলেছিল আমার সাথে।
.
আরেকটা জিনিস বলি। খ্রিষ্টানরা বলে – ইসলাম তলোয়ারের জোরে প্রচার হয়েছে (Islam was spread by the sword)। বহু পাদ্রী আমাকে বলেছে- এই সব মুসলিমদের কাছ থেকে দূরে থাকো। কারণ ইসলাম হচ্ছে তলোয়ারের ধর্ম। এবার শুনুন আসল সত্য। কুর’আনে ১১৪ সূরার ৬২৩৬ আয়াতের মধ্যে আমি তলোয়ার শব্দটি কয়বার পেয়েছি জানেন?
.
একবারও না! আর বাইবেলে তলোয়ার (Sword) শব্দটি আছে ২০০ বারের উপর ।
.
এরপর আমি বাইবেল নিয়ে আবার পাদ্রির কাছে গেলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম – এখানে লেখা আছে, যীশু বলেছেন-
.
“Think not that I am come to send peace on earth: I came not to send peace, but a sword. ” Matthew 10:34 (Click This Link)
.
আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এইসবের অর্থ কী? আপনি জানেন সে কী বলল আমাকে ? না শুনলে আপনি বিশ্বাস করবেন না, ভাল করে শুনেন!
.
সে আমাকে বলল, "আরে, তুমি কি জানো না যে বাইবেলের এই লেখার কাজগুলো ইটালির রোমে করা হয়েছিল? সেখানে তারা মোমের আলোয় কাজ করত আর সেই আলোতে ভাল দেখা যেতো না। তো যখন তারা কাজ করছিল তখন তারা স্প্যাগেটি (একধরনের নুডুলস) খাচ্ছিল। আসলে শব্দটা Sword ছিল না, শব্দটা ছিল Word। যিশু আসলে বলেছিলেন, "I came with a word." কাজ করার সময় একটা প্যাচানো স্প্যাগেটি Word এর সামনে পড়ে সেটা Sword হয়ে গেছে!"
.
এই যুক্তিটার সমস্যা কোথায় জানেন? কনি গ্রীক ভাষায় Word এর প্রতিশব্দ হচ্ছে LOGOS. কীভাবে LOGOS এর সামনে নুডুলস পড়ে সেটা Sword হয়ে যায় ???!!! যতই আমি তাদের সাথে কথা বলি, আমি দেখলাম যে সেখানে মিথ্যা, মিথ্যা আর মিথ্যা। অবশেষে ফাইনালি আমি তাদেরকে বললাম, আমি এই মিথ্যুকদের ধর্মের মধ্যে আর নেই ।
.
এরপরে আমি স্রষ্টাকে ডাকলাম। আমার সমস্ত হৃদয় দিয়ে, আমার অন্তরকে খালি করে, উজাড় করে আমি তাঁকে ডাকলাম। আমার মনের ভিতরের সমস্ত ভুল ধারণা, নোংরা আবর্জনা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আমি তাঁকে বললাম যে- "গড, আমি শুধু তোমারই। গড, গাইড মি। প্রভু, আমাকে পথ দেখাও।"
.
এটা জিজ্ঞেস করার পরই এক অদ্ভুত কারণে আমার মনে হল, আমার মাথা মাটিতে লাগানো উচিত। তাই আমি সেটাই করলাম।
.
(ইউসুফ এস্তেস স্টেজে সিজদা করলেন)
.
গ্যাব্রিয়েল, আমার মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে আমি এই কথাগুলো বললাম, “হে স্রষ্টা ! তুমি যদি সত্যিই থাক, আমাকে পথ দেখাও।” সেইদিন থেকে আজ পর্যন্ত এই ১৯ বছর ধরে প্রতিদিন ১৭ বার আমি এই কথাগুলো বলছি- ইহদিনাস সিরাত আল-মুস্তাকিম, ইহদিনাস সিরাত আল-মুস্তাকিম (আমাদেরকে সরল প্রতিষ্ঠিত পথ দেখাও)।
.
গ্যাব্রিয়েল, আমি হাজার হাজার মানুষকে ইসলাম গ্রহণ করতে দেখেছি। ঠিক আপনি যেভাবে আজকে এখানে সত্যের সন্ধানে এসেছেন, একইভাবে হাজার হাজার মানুষ সত্যকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। তারা ইসলাম খোঁজে না, তারা কুর’আন খোঁজে না, তাঁরা খোঁজে শুধুই সত্য! আর যেহেতু স্রষ্টা কেবল একজনই, তাই তাঁকে সত্যিকারভাবে খুঁজে পাবারও রাস্তা ঠিক একটিই।
.
কুর’আনে বলা হয়েছে :
“আল্লাহর কাছে একমাত্র দ্বীন হচ্ছে ইসলাম।” (৩ : ১৯)
.
গ্যাব্রিয়েল, আমি আপনাকে ৫টা শব্দ বলব- Surrender, Submission, Obedience, Sincerity, Peace. আপনি কি আপনার জীবনে এই ৫টি জিনিস চান?
.
গ্যাব্রিয়েল : হ্যাঁ, আমি চাই।
.
ইউসুফ এস্তেস : হ্যাঁ আমিও চাই। আমরা সবাই চাই। এই ৫ টি শব্দকেই একসাথে বলা হয় “ইসলাম”।
.
এই উত্তর শোনার পরে গ্যাব্রিয়েল কান্নায় ভেঙে পড়েন, শাইখ স্টেজ থেকে অডিয়েন্সের মাঝে গিয়ে গ্যাব্রিয়েলকে জড়িয়ে ধরেন এবং এর কিছুক্ষণ পরেই গ্যাব্রিয়েল ইসলাম গ্রহণ করেন।
______
#সূত্র :
‘christian bursted in tears after Yusuf Estes answered his question!’

collected

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৫২

পলাতক মুর্গ বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.