![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার আত্মকথা !!
আমি বেগুন। কেউ বলে বাগুন! আমার গালভরা একটা ইংরেজী নামও আছে। দক্ষিন এশিয়ায় আমার ইংরেজি নাম Brinjal আর বৈজ্ঞানিক নাম lanum melongena. অনেকের ধারণা আমার আদি নিবাস দক্ষিন এশিয়ার ভারতে, যেখানে আমার ব্যপক বৃদ্ধি হতে থাকে। আবার অনেকের মতে আমার বৃদ্ধি আফ্রিকাতেও হতে পারে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসাব মতে বিশ্বে অন্তত ২৪৭ টি বেগুনের জাত আছে। বাংলাদেশের এলাকাভেদে কৃষকরা কমপক্ষে ৪০ জাতের বেগুন চাষ করেন। বাংলাদেশে আমার অনেক প্রজাতি ও আকৃতি আছে। যেমন, তাল বেগুন, সবুজ বেগুন, কাঁটা বেগুন, লম্বা বেগুন (যাকে এক বিশেষ কারনে কলেজ বেগুনও বলে)। কাঁটা বেগুন নামে ডাকলেও তা আমি হজম করে নেই কিন্তু কলেজ বেগুন নামে ডাকলে শরীরটা কেনো যেনো ঘৃনায় রীরী করে ওঠে। সে যা হোক আমাদের দেশের কৃষক ও নারীদের জন্যই বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকাতে টিকে আছে বিভিন্ন জাতের বেগুন। আকার ও প্রজাতি ভেদে এর রয়েছে অনেক ব্যবহার ও স্বাদ। কেউ কেউ লম্বা বেগুন ও শুটকী মাছের চচ্চরি, কেউ তাল বেগুন ভাজি, কেউ সবুজ বেগুন ও ইলিশ মাছের ঝোল তরকারী পছন্দ করেন। তবে অনেক নিষ্ঠুর গৃহিনী বেগুনকে চুলার গন গনে আগুনের পুঁড়ে বেগুন ভর্তা খেতে খুব পছন্দ করেন। বেগুন ভর্তা হল একপ্রকার বাঙালি খাবার। তিলে তিলে কি যন্ত্রনা দিয়ে লবন মরিচ, পেয়াজ, ধুনে পাতা আর সরিষার তেল দিয়ে বেগুন এর ভর্তা বানানো হয় দেখুন তার মর্মন্তুদ করুন কাহিনীঃ
বেগুন ভর্তা একটি নিরামিষ খাবার। বেগুন ভর্তা বানাতে প্রথমে আমাকে গ্যাসের চুলার গনগনে আগুনে অথবা কাঠকয়লার আগুনের আঁচে পুড়ে পুড়ে বা গরম পানিতে সিদ্ধ করে আমার গায়ের সমস্ত চামড়া ছিলে নিয়ে তেল, লবণব পেয়াজ, মরিচ ধুনে পাতাসহ অন্যন্য উপদান সহযোগে দলাই মর্দনে মিহি করে প্রস্তুত করা হয়। মাখার উপরও কিন্তু ভর্তার স্বাদ হেরফের হয়। প্রবাদ আছে "নুন মরিচ চর্তা এই তিনে মিলে হয় ভর্তা"। অর্থাৎ লবণ মরিচ এবং মাখানো এই তিনটি সঠিক মাত্রায় হলেই ভর্তা মজা হয়। কাঠকয়লার আগুনের আঁচে পুড়ে ভর্তা করা হলে ভর্তায় কিছুটা ধোঁয়াটে গন্ধ থাকে। বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানে বেগুন ভর্তা খাওয়া হয় তবে অঞ্চলভেদে এটা তৈরির পদ্ধতি এবং খাওয়ার রীতি কিছুটা ভিন্ন হয়। আমাদের দেশে সাধারণত গরম ভাতেই বেগুন ভর্তা খাওয়া হয়। তবে পান্তাভাত, কালাইরুটি বা সাজেরপিঠা, ছিটারুটি দিয়েও বিভিন্ন ভর্তা খাওয়া হয়। বেগুনী বানাতেও বেগুনের জুড়ি নেই। এটি গ্রামবাংলার অনেক সুস্বাদু ও জনপ্রিয় একটি খাবার। বিশেষত রমজান মাসে ইফতারের জন্য বেগুনী একটি জনপ্রিয় খাবার। তবে রমজান মাসে এই নগন্য বেগুনের দাম অত্যাধিক হারে বেড়ে যায়। এ কারনে এ মাসে বেগুন থাকে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। বেগুনের কোনও গুণ নেই, এ কথা যারা বলেন তারা এই সবজিটির অনেক গুণের কথাই জানেন না। বেগুনে আছে ভিটামিন এ, বি, সি, শর্করা, চর্বি, আমিষ, আয়রন। পুষ্টিবিদদের মতে, বেগুন এর উদ্ভিজ্জ আমিষ শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করে। পুষ্টিগুণে ভরা বেগুন আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যার মতো একাধিক শারীরিক সমস্যার সমাধানে বেগুন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বেগুনে flavedon, kolinergik এসিড নামে এক ধরনের এসিড রয়েছে, যা শরীরে প্রবেশকৃত রোগ জীবাণু, টিউমারের জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। বেগুনে ফাইবার, ভিটামিন বি ১, বি ৬, বি ৩, সি, কে তে ভরপুর থাকে। এছাড়াও এতে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে বলে বেগুন হৃদপিন্ডের জন্য উপকারি একটি খাবার। হৃদপিন্ডের জন্য অপরিহার্য ফ্ল্যাভোনয়েড যা বেগুনেই বিদ্যমান থাকে। তাই নিয়মিত বেগুন খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় অনেক ক্ষেত্রে। বেগুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের টক্সিক উপাদানের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। বেগুনে থাকা ফাইবার কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।বেগুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের খাদ্যতালিকায় বেগুণ রাখতে পারলে উপকার পাওয়া যায়। বেগুনে থাকা ফলিক অ্যাসিড গর্ভবতী মহিলাদের শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও বেগুনে রয়েছে উচ্চমাত্রার আঁশ-
জাতীয় খাদ্য উপাদান যা বদ হজম দূর করে।
তবে অনেকে অভিযোগ করেন যে বেগুনে রয়েছে এলার্জির উপাদান। বিশেষ করে শীতকালে বেগুন খেলে তাদের চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়। কোন ময় মুরুব্বীর পরোয়া না করে অ-যায়গায়, বে যায়গায় শুধু চুলকাতেই থাকে!
বেগুন বাংলাদেশের একটি বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় সবজি। আমাদের দেশে সারা বছরই বেগুনের চাষ হয়ে থাকে। স্বাদ ও পুষ্টিমান বিবেচনায় বেগুন একটি ভালো সবজি। আমার এত গুন থাকা সত্ত্বেও অতি মাত্রায় কেউ যদি বেগুন খেয়ে অথবা দেহে এলার্জি প্রতিরোধের ক্ষমাতা না থাকায় চুলকানি হবার দায় আমার উপরে চাপিয়ে দেন তা হলে বলতেই হয় পোঁড়া বেগুনের পোঁড়া কপাল।
দুঃখিনি পোঁড়া বেগুন!
তথ্য সূত্র ও ছবিঃ উইকিপিডিয়া/জিনিউজ অনলাইন ও গুগল।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৫
পোড়া বেগুন বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মরুভুমির জল দস্যু ভাই।
খান যত পারেন বেগুন ভর্তা নিষেধ নাই তবে সাইড এফেক্ট
হলে আমাকে দোষারোপ করবেন না।
ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৫৭
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: বেগুন আমার প্রিয় সব্জি গুলোর মধ্যে একটি। ঝাল ঝাল কাঁচা মরিচ, পেয়াজ আর সরিসার তেল দিয়ে আমাদের বাসায় বানায়। খেতে অসাধারণ।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৯
পোড়া বেগুন বলেছেন:
ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশের সব পরিবারেই কম বেশী বেগুন ভর্তা
খাবার প্রচলন আছে, তবে রীতি পদ্ধতি ভিন্ন। বেগুন অনেক পুষ্টিকর সবজী,
খেতে বাধা নাই তবে পরিমীত খাবেন।
৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:২০
জুল ভার্ন বলেছেন: বাহ বেগুন নিয়ে অসাধারণ সুন্দর গুণী পোস্ট। বেগুন ভর্তা, বেগুন ভাজি আমার অন্যতম প্রিয় খাবার। বেগুনের এত গুন বর্ননা করলেন কিন্তু রমজান মাসে পেঁয়াজ বেগুনের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগুন সম্পর্কে বলেছিলেন - "যার নাই কোনো গুণ, তার নাম বেগুন! বেগুন না খেলে কি হয়, ইফতারে বেগুনীর পরিবর্তে পেপেনী খাবেন, পিয়াজুর বদলে পেপেজু খাবেন। আমরাতো খাই"!
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫৮
পোড়া বেগুন বলেছেন:
ধন্যবাদ জনাব।
আমার পছন্দ কড়কড়া মুচমুচে তাল বেগুন ভাজি।
পান্তা ভাত আর মুচমুচে বেগুন ভাজিতে ইলিশ মাছের সাদ
পাওয়া যায়।
বেগুনী আর পেপেনিও এখন
জনপ্রিয় খাবার।
৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৫৭
শেরজা তপন বলেছেন: পোড়া বেগুনের প্রথম বেগুনময় পোষ্ট!! বেশ বেশ
আহা বেগুনের ভীষন কষ্টের কাহিনী পড়ে চোক্ষর জল সংবরণ করতে পারলাম না
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:১১
পোড়া বেগুন বলেছেন:
যা হউক আমার দুঃক্ষে আপনার চোক্ষে পানি আইছে সেই জন্য
আমি স্বর্গসুখ অনুভব করলাম। পরের দুঃক্ষে কাঁদবার জন্য এখনো
মানুষ আছে ভাবতেই অবাক লাগছে।
৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: মনে হচ্ছে কলেজের স্কুলের ব্যাকারন বই তে একটি পোড়া বেগুণের আত্মকথা পড়লাম।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ২:২২
পোড়া বেগুন বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ আপু, সবার আত্ম কাহিনী
সবার ভালো লাগেনা, তবে আপনি মন দিয়ে পড়েছেন
সে জন্য কৃতজ্ঞ আমি। নিজের দুঃক্ষের কথা বলতে পেরে
হাল্কা লাগছে অনেক।আপনাকে ধন্যবাদ আপু, সবার আত্ম কাহিনী
সবার ভালো লাগেনা, তবে আপনি মন দিয়ে পড়েছেন
সে জন্য কৃতজ্ঞ আমি। নিজের দুঃক্ষের কথা বলতে পেরে
হাল্কা লাগছে অনেক।
৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৪৩
কামাল৮০ বলেছেন: নামে বেগুন।আসলে অনেক গুন।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ২:৩১
পোড়া বেগুন বলেছেন:
বেগুনের গুণ আছে তবে আমার কিন্তু
কোন গুণ নাই।
৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:১৭
ঢাবিয়ান বলেছেন: বেগুন এর যে কোন পদই মজা। তবে একবার কোন এক রিয়েলিটি শোতে বেগুনের হালুয়া বানানো দেখিয়েছিল। বেগুনের এই পদটা একেবারেই ভাল লাগে নাও।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২৭
পোড়া বেগুন বলেছেন:
মানুষ চায় নিত্য নতুন কিছু একটা করতে। তাই এক্সপেরিমেন্ট করে নতুন কিছু করতে, তার কোনটা ভাল হয়; কোনটায় ব্যর্থ হয়। তবে তাই বলে পরিক্ষা নিরীক্ষা থেমে থাকেনা।এই পরিক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়াই একদিন সফল হয়। এটাই নিয়ম।
ভালো থাজবেন ঢাবিয়ান ভাই।
৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আহারে! সত্যই দুঃখিনী পোড়া বেগুন্রর
পোঁড়া কপালই বটে। এত গুন থাকার পরেও
তাকে চুলকানির হোতা বলে নিন্দার অপবাদ
নিতে হলো। দুঃখ করবেন না; একদিন তারা
আপবার কদর বুঝবেই!
কলেজ বেগুন নামের মাহত্য বলবেন কী?
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৩
পোড়া বেগুন বলেছেন:
এই দূনিয়া এখনতো আর সেই দূনিয়া নাই,
মানুষ নামের মানুষ আছে, দরদী মানুষ নাই।
আমার কষ্টে সমব্যথি হবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ নূরু ভাই।
ভালো থাকবেন।
৯| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:০৩
অপ্সরা বলেছেন: পোড়া বেগুনের বদলে পোড়া কপাল নিক নিলে কি লিখতে ভাবছি।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩৮
পোড়া বেগুন বলেছেন:
আকাশ পাতাল যা ইচ্ছা তাই ভাবুন, ভাবতে সমস্যা নাই, তব সাপকে দড়ি ভেবে সাপের ছোবল খাবেন না কিংবা চুনকে দই ভেবে মুখ পোড়াবেন না। তা হলে কিন্তু মুখপুঁড়ি বলবে মানুষ!
১০| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
বেগুনের অনেক গুন। লিখতে থাকুন।+++
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৫৯
পোড়া বেগুন বলেছেন:
বে- গুন= যার কোন গুণ নাই।
তবে এখন জানলাম বেগুনের অনেক গুণ। শুধু আমারই কোন গুণ নাই।
আপনাকে ধন্যবাদ + দেবার জন্য।
১১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২০
সোনালি কাবিন বলেছেন: এখনো কি পুড়ছেন
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০৪
পোড়া বেগুন বলেছেন:
জন্ম থেকেই পুড়ছি আমি; আর কত কাল পুড়বো?
ভাবছি এবার সুযোগ পেলে ভাঙ্গনের খেলা খেলবো।
১২| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৫২
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: পোড়া বেগুনের ভর্তা আমার অন্যতম প্রিয় খাবার।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০৭
পোড়া বেগুন বলেছেন:
কারো সর্বনাশ
কারো পৌষ মাস!
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৫৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
বেগুন সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হলো।
বেগুন ভর্তা এবং তরকারি আমি বেশ আনন্দ নিয়েই খাই।