![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখাটা নিয়ে হয়তো আর লেখতে বসতাম না । একটি ছেলের মৃত্যুর পর এত সমাচার করার ইচ্ছাও ছিলো না বিন্দুমাত্র । কিন্তু এই যারা
এই লেখাটি LINK পড়েছেন আর ভুল ধরেছেন । ভুল ধরার আগে যাচাই করার দরকার ছিলো আরেকবার দেখে যাচাই করা । বাচ্চাটার মৃতদেহ পাবার পর উস্কানি শুরু করলেন অথচ কতটুকু বুঝে তা আমি জানিনা । তাই এইবার বাধ্য হয়েই বাকি বিষয়ে বলতেছি প্রশ্ন থাকলে এখানেই করবেন উত্তর দিয়ে শেষ করে দিবো এই বাচ্চাটাকে নিয়ে টানার ইচ্ছাপোষণ আর করছি না যেহেতু মৃত ।
প্রথমেই আমি যেইটা দিয়ে শুরু করবো যে বিজ্ঞান আর আবেগ এক জিনিস না । বিজ্ঞান সবসময় যুক্তিতে বিশ্বাসী । এটাও সত্য যে বাংলাদেশের বিজ্ঞান এমন একটি বিজ্ঞান যা অনেক সময় বহির্বিশ্বের বিজ্ঞানের ( স্ট্যার্ডার্ড ) সাথে মিল খুজে পাওয়া যায় না । কেন ? তা পরে বলছি । আমি দেখতেছি যে এখন জিহাদ ব্যাপারে দুইটি পক্ষ হয়ে গেছে । আবেগী দল ও যুক্তিময় দল ।
মানি আবেগ থাকতেই পারে যেভাবে বাচ্চাটা উদ্ধার হবার পর মানুষ যেভাবে জিনিসপত্র ভাংগা চুরা করা শুরু করছিলো তাতে বোঝা গিয়েছিলো মানুষের ক্ষোভ কেমন আবেগ কেমন ? একটি মৃত বাচ্চা বের হয়ে এসেছে যারা এত চেষ্টা করেও পেলোনা আর কারা কোথাকার কে পেয়ে গেলো , বাচ্চা এসে গেলো । এইটা দেখা মাত্র নিজেকে ঠিক রাখা বড়ই মুশকিল । যুক্তির চেয়ে আবেগের স্থান এইখানে আগে আর এটাই স্বাভাবিক ।
আমাদের এইখানে অনেক সময় অনেক বাবাদের উদ্ভব হয় । তারা তেল পোড়া , পানি পোড়া দিলে রোগ ভালো হয়ে যায় । কিছুদিন আগে ইউটিউবে এমনও দেখলাম যে ফকির বাবা জড়িয়ে ধরতেছে পায়ে চুমু দিতেছে তাদের মহিলাগুলা এমন কি তাদের লজ্জাস্থানেও মেয়েরা চুমু দিচ্ছে । এইতো ভারতে চুমুবাবা ধরা পড়লো যে মহিলাদের চুমু খেতো আর পুরুষদের লেবু ধরায় দিয়ে বিদায় করতো । আচ্ছা এইসব কি আপনি বিশ্বাস করেন ? এইগুলা কি আপনার সত্য মনে হয় ? ( বহির্বিশ্বের বিজ্ঞান কি মানে ? হয় ওখানে এমন ?)
হয়না কারণ এই সম্পর্কে আপনার জ্ঞ্যান আছে ( আপনার ) কিন্তু তাদের নেই(সেই অন্ধবিশ্বাসীরা ) তাই তারা পাঠায় । কিন্তু আপনি যদি শুরুতে এই ভন্ড বাবাকে থাপ্পড় মারেন তাহলে তার আশেপাশের মানুষ কিন্তু আপনাকে জ্যান্ত পুতে ফেলবে যতই চেষ্টা করেন তারা অন্ধবিশ্বাস করে এইসবে ।
তারা এই আলৌকিকতায় বিশ্বাস করে । আপনি , আমি করিনা । ঠিক ক্যাচার , আধুনিক আইপি ক্যামেরা ,মাইনিং সার্ভে ক্যামেরা ,টিভি ক্যামেরা এইসব সম্পর্কে আমি,আপনি কতটুকু জানি ? অবশ্যেই নাম শুনছি কাজ সম্পর্কে কি আমরা সবাই জানি ? কোনটা কি কাজে ব্যবহার হয় ?
আচ্ছা পাইপের ব্যাস ছিলো ১৪ ইঞ্চি আর তারমাঝে আরেকটি পাইপ ছিলো তার ব্যাস ছিলো ৩ ইঞ্চি । তাহলে ১ম টার ব্যাসার্ধ ৭ আর পরের টার ব্যাসার্ধ ১.৫ ইঞ্চি । বাদ দিলে থাকে ৫.৫ ইঞ্চি । এইটা দিয়ে কি সাড়ে ৩ বছরের বাচ্চার মাথা যাবে ? ধরলাম গেলো ৩০০ ফুট নিচে সাবমেরিন পাম্প এ বাচ্চাটা আটকালো না । সম্ভব না তাও ধরি ধরুণ সে নিচে পড়লো আরো ১৫০-৩০০ ফুট নিচে সে কি বেচে থাকবে ? ভাই ৪৫ তলা থেকে আসেন লাফ দিয়ে ট্রাই করি কিন্তু আবেগী আমরা সে বেচে থাকুক,সে বেচে আছে,জুস খেয়েছে এইসব কথা ঠিকই বিশ্বাস করছিলাম ?কি বিশ্বাস করেন নি ? ( বহিবিশ্বের বিজ্ঞান ( স্ট্যান্ডার্ড ) কি তা মানবে ? )
এইবার আসি মূল পয়েন্টে প্রথমে ক্যামেরা পাঠানোর কথা ছিলো ওয়াসার উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মাইনিং সার্ভে ক্যামেরা যা দিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে তারা পানির পরিমাপ করে কিন্তু সেইটা বিকল হয়ে যাওয়ায় সেইটা ঠিক করতে দিয়ে পাঠানো হয় বুয়েট বিশেষজ্ঞদের তৈরীর যন্ত্র ক্যাচার ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা যা দিয়ে আমরা পুরোদেশ দেখেছি যে শেষ প্রান্তে চট,টিকটিকি,তেলাপোকা,ককশীট পাওয়া গিয়েছিলো আর কিছু না । বাচ্চাটি কইগেলো !! নিচে যদিও পড়েও যায় তাহলে এই ককশীট,চট থাকবে কি করে ঐগুলা সহ পড়ে যেতো ।
এবার পাঠানো হলো বেসকারী একটি বাইরের দলকে যারা আইপি ক্যামেরা পাঠালো কিন্তু তাও গিয়ে সেই একই জিনিস দেখলো তাই ফিরে এলো । মানুষ হতাশ হয়ে পড়লো সবাই ধরেই নিলো কেউ নেই আসলে । টিভি অফ করে ঘুমাতে গেলো আর যারা স্পটে ছিলো তারাও বাড়ি আসতে শুরু করলো । লোকজন কমতে শুরু করেছে আর পুলিশও সবলোককে তাড়িয়ে দিচ্ছে ।
কিন্তু সরকারী প্রতিষ্ঠান এত সহজে কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করতে পারেনা । তারা হাল ছাড়তে নারাজ । ফায়ার ব্রিগেড ঠিক করলো তারা সেই চট বস্তা তুলে আনবে তারপর দেখবে তলায় কিছু আছে কিনা । তারা তাই করলো সর্বশেষ ভোড় রাতে তারা ওয়াসার সেই মাইনিং সার্ভে ক্যামেরাটি নিচে পাঠালো এইটাই তাদের শেষ চেষ্টা কিন্তু তারা এইবার খুব ভালোমত খুজে দেখলো আশে পাশে কিন্তু মানব অস্তিত্ব খুজে পেলোনা । এইবার তারা বুঝতে পারলো আসলে কিছু নেই তারা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ,বুয়েটের বিশেষজ্ঞ সবার কাছ থেকে তারা মতামত নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সমাপ্তি ঘোষণা করলো উদ্ধারকাজের ।
ব্যস লোকজন যারাও ছিলো তারাও চলে গেলো । টিভি চ্যানেল গুলার ভিতর শুধু ৭১ তখন লাইভ দেখাচ্ছিলো বাকিরা আগেই অফ করে দিছে ।
এবার সেই উদ্ধারকারীদের একজন পাইপ সম্পর্কে দেখে গেলো আর খিলগাঁওয়ের ওভারব্রীজ থেকে লোহার রড ঢালাই করে লোকাল ক্যাচার বানিয়ে একটা সিম্পল টিভি ক্যামেরা ঢুকিয়ে তারা বের করে আনলো ।
যাদের সবাই ছাত্র । ডিপ্লোমা , একজন বেসরকারী বিশববিদ্যালয়ে ইইই পড়তেছে । ঘটনা যে এরা কেউ এদের কাউকে চিনেনা !!! এইখানে এসে তারা প্ল্যান করছে যাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই কিন্তু তারা পারছে যেখানে বুয়েটের ক্যাচার পারেনি তাদের ক্যাচার পারছে । যেইখানে বুয়েটের উচ্চক্ষমতার ক্যামেরা পারেনি , ওয়াসার মাইনিং সার্ভে ক্যামেরা যা বাংলাদেশের অন্য সরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে নেই সেই ক্যামেরায় কিছু পেলোনা ,পেলোনা সেই বাইরের বিশেষজ্ঞদের আইপি ক্যামেরা সেইখানে পারলো তাদের একটি লোহার ক্যাচার আর টিভি ক্যামেরা । আর আমরা তা বিশ্বাস করে হাত তালি দিতেছি ।
মাঝখানে কিন্তু কোন মানুষই ছিলো না !! কিছু প্রশ্ন মাথায় আসতেছে
১) মাঝখানে যখন মানুষ ছিলো না তখন তো বাচ্চাটাকে আনা হয়নি কোন বস্তায় করে উদ্ধারের নামে ?
২) উদ্ধারের পুরো ভিডিও টা কেন দেখানো হলো না কিভাবে ক্যামেরা ঢুকানো হলো ক্যামেরা যাচ্ছে বাচ্চাটাকে পেলো !! আমি সব জায়গাটাতেই দেখলাম শুধুমাত্র বাচ্চাটিকে দেখা যাচ্ছে আর পাইপের একটু ভিতর থেকে বাচ্চাটিকে তুলে ফেললো শুধু এইপর্যন্ত কিন্তু অন্যগুলার মত পুরাপুরি কেন দেখানো হলো না ?
৩) একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর যতক্ষণ না উদ্ধার কাজ চলছিলো সেইখান থেকে কেনো মিডিয়া সরে আসলো !! কেনো এই মানুষগুলোকে সরিয়ে দেওয়া হলো পুলিশ দিয়ে ??
৪) ১৪৪ ধারা জারির পর গাজীপুরের হরতাল থেকে মিডিয়া ও জনতার চোখ সরানো হলো ? কি এমন হতো এই হরতালে !! আগেও তো এমন অনেক হরতাল অবরোধ গেছে
৫) লোকের আড়ালে কি বাচাটির লাশ ধামা চাপা দিবার জন্য ঐখানেই কি বাচ্চাটার লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছিলো যে সকালের আরেকটা নাটক দৃশ্যে চালানোর জন্য ।
৬) আচ্ছা এইটা কি ঐ বাচ্চাটাই ছিলো ? ছোট বাচ্চাদের কিন্তু চেহারা একটু একই রকম থাকে !! আমরা কিন্তু তা বুঝতে পারিনা সহজে ।
৭) বাচ্চাটি এমন কোন বড় ঘরের সন্তান ছিলো না কিন্তু তাও এত বড় পাইপ থেকে পড়ে গিয়ে বাচ্চাটি মরে গেছে এইটা ভেবেই আর এইটা নিয়ে এত ধামাকা হতো না আর এইটাই স্বাভাবিক কিন্তু ফায়ার ব্রিগেড,এত মিডিয়ার কেন আগমণ !! কেনই তাদের মিথ্যা বলার ধরণ !! জুস খেলো !! উত্তর দিলো আওয়াজের !!
কি কারণ তা এই ছোট্ট মাথায় মিলাতে পারছিনা !! কিন্তু যেইটা উদ্ধারের ব্যাপারটা বৈজ্ঞানিক উপায়ে বিশ্বাসযোগ্য নয় । কেন এই নাটকের জন্ম দেওয়া !! যুক্তির ক্ষেত্রে মিলাতে পারছিনা কিছুই আপনি আবেগের ক্ষেত্রে হয়তো মিলাতে পারেন বা বিশ্বাস করতে পারেন অলৌকিক কিছুকে । তাহলে শেষ যেইটা বলবো বুয়েট হেরে গেছে ,ওয়াসা হেরে গেছে । সেই ৩ তরুণ জিতে গেছে । এইবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের কথা তো সত্য নাও হতে পারে ? তাদের মেশিনও তো ভুল থাকতে পারে তাইনা ? তাদের কথা মত মৃত তো নাও হতে পারে !!! এক কাজ করা যাতে পারে সেই বাবাদের কাছে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে ? যাদের অলৌকিক ক্ষমতা আর আমাদের অন্ধবিশ্বাসে হয়তো কিছু ঘটেও যেতে পারে তাইনা ?? আর সত্যি যদি বলি ধরেণ এই মুহুর্তে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে কেউ যদি বাচ্চাটাকে নিয়ে গিয়ে কোন বাবার মাধ্যমে ঠিক করায় যে বাচ্চাটি বেচে আছে ( যদি বাচ্চার চেহারা চেঞ্জ করে অন্য বাচ্চা এনে )। আমি শিওর এইটাই মানুষ বিশ্বাস করবে ।
অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী না আমি বলবো উপকারী !!! তাতে মানুষকে ঘোল খাওয়ানো যায় ।
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:২৭
বাংলার পথিক বলেছেন: আমি এইখানে শুরুতেই বলছি আবেগী আর বেহুদা কথা-বার্তা না বলে যুক্তিযুক্ত প্রশ্ন করুন ।
২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:১০
এম এ কাশেম বলেছেন: দালালী কাহাকে বলে কত প্রকার ও কি কি বুঝলাম।
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:৩৪
বাংলার পথিক বলেছেন: দালালীর কথা যে বলে সে নিজে একপক্ষের দালাল হয়েই শুরু হয়ে । বেহুদা ও আজাইরা কথা না বলে যুক্তিযুক্ত প্রশ্ন করলে খুশী হবো :-)
৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:০৩
এম এ কাশেম বলেছেন: বাঁচানো গেল না শিশু জিয়াদকে। এক মমতাময়ী মায়ের বুকফাটা আর্তনাদ আর দেশজুড়ে কোটি মানুষের উদ্বেগের মধ্যেই না ফেরার দেশে চলে গেল শিশুটি। অবশেষে সেই নলকূপ থেকেই স্থানীয়দের চেষ্টায় উদ্ধার হয় মাত্র চার বছর বয়সী ফুটফুটে শিশুটির নিথর দেহ। ২৩ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস উদ্ধার অভিযান শেষে যখন লোহার আংটায় বেঁধে জালে জড়ানো লাশটি সরু গর্ত থেকে উঠে আসে, সেই মর্মবিদারক দৃশ্য টিভির পর্দায় দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি নারী- পুরুষ-শিশু কেউই।
সরকারি সাঁজোয়া উদ্ধারকারী বাহিনীর নিষ্ফল চেষ্টা আর পদে পদে ব্যর্থতায় উত্তেজনা দমাতে পারেনি উপস্থিত জনতা। উদ্ধারের মাত্র ক’ঘণ্টা আগেই জিয়াদের মৃত্যু হয়েছে, তখনো শক্ত হয়ে যায়নি নিথর দেহটি। স্থানীয় যুবকদের ভেতরে ঢোকার সুযোগ দিলে হয়তো জিয়াদকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হতোÑ এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আবেগাপ্লুত মানুষ বিুব্ধ হয়ে ওঠেন। শুরু হয় ভাঙচুর। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয় সেখানকার ওয়াসার অস্থায়ী ক্যাম্প। উত্তেজনা দমাতে ডাকা হয় রায়ট কার, জলকামান ও আর্মড পুলিশ। সহিংসতা থামলেও থেমে যায়নি স্থানীয়দের হৃদয়ের ক্ষরণ। যারা প্রচণ্ড হশীত উপেক্ষা করে রাতভর দাঁড়িয়ে উদ্ধার অভিযান প্রত্যক্ষ করেছেন, নিজের অজান্তেই বিরবির করে আউড়েছেন কুরআনের বাণী, নিঃস্বার্থভাবে এগিয়ে দিয়েছেন উদ্ধারের উপকরণ, তারা জিয়াদের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন সরকারের বিলম্বিত উদ্ধার ব্যবস্থাপনাকে।
শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে শনিবার বেলা ২টাÑ এ ২২ ঘণ্টায় রাজধানীর শাহজাহানপুরে একটি নিষ্পাপ শিশুর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বিভীষিকাময় ঘটনাটি ততক্ষণে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক খবরে পরিণত হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য এবং অতিকথনে মানুষের মনে তখন ধূম্রজালের আচ্ছাদন। তথাকথিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরার মাধ্যমে নলকূপের গভীর থেকে তুলে আনা হয় টিকটিকি, ব্যাঙ ও আরশোলার দুর্লভ চিত্র। ঘোষণা দেয়া হয় ভেতরে মানুষের কোনো অস্তিত্বই নেই। সব পরিকল্পিত ও সাজানো নাটক। এর আগেই তৈরি হয়ে গেছে চরম নাটকীয়তার মঞ্চ। ভোর রাতেই স্থানীয় দুই যুবলীগ নেতার সহায়তায় পুলিশের হাতে আটক হন জিয়াদের বাবা নাসির উদ্দিন ফকির, তার শ্যালক ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ চারজন। সন্দেহের তীর ছোড়া হয় ভিকটিম জিয়াদের পরিবারের দিকে। মুহূর্তেই প্রকাশ পায় পুলিশের চিরাচরিত দক্ষতা ও আনুগত্য। নিজ সন্তানকে লুকিয়ে রেখে বিশেষ ফায়দা লুটার অভিযোগ আনয়ন করা হয় পরিবারটির সদস্যদের ওপর। থানায় পাঁচ ঘণ্টার নিরাপত্তা হেফাজতে শারীরিক নির্যাতনের হাত থেকেও রেহাই পাননি তারা। তাদের হুমকি দেয়া হয় সরকারি সংস্থাকে অহেতুক হয়রানির অভিযোগে মামলা দায়েরের।
এরই মধ্যে বেলা যখন পৌনে ২টা, তখন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মদ খান সংবাদ সম্মেলনে উদ্ধার অভিযানের ইতি টানছিলেন। দেশের সব ক’টি টেলিভিশন চ্যানেলের ব্রেকিং নিউজে যখন ভেসে উঠছিল সেই খবর। গভীর নলকূপের ভেতরে কিছুই নেই, সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার ভিডিও ফুটেজ তাদের সেই বিশ্বাসকেই স্থির করে দিয়েছে। ঠিক তখনই মাত্র ১০০ গজ দূরে চলছিল অপ্রশিক্ষিত, সার্টিফিকেটহীন কয়েক যুবকের শেষ চেষ্টা। তাদের হাতে ছিল নিজেদের তৈরি লোহা, সিসি ক্যামেরা ও নেটের সমন্বয়ে তৈরি উদ্ধার যন্ত্রটি। রশি দিয়ে তারা সেটিকে পাইপের ভেতরে নামিয়ে দেন। ২২ মিনিট ধরে চলে এ অভিযান। হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচিতে শুরু হয় ছোটাছুটি। মহাপরিচালকের বক্তব্য শেষ হতেই খবর আসে জিয়াদের উদ্ধারের সেই কাক্সিত খবরটি। পাল্টে যায় টেলিভিশনের শিরোনাম। ব্রেকিং নিউজে ভেসে ওঠে উদ্ধারের খবর।
যেভাবে উদ্ধার হলো শিশু জিয়াদ : সংবাদ সম্মেলন করে উদ্ধারকার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণার পাঁচ মিনিটের মধ্যে উদ্ধার করা হয় শিশু জিয়াদকে। গতকাল বেলা ৩টার দিকে স্থানীয় প্রযুক্তিতে বানানো একটি খাঁচা দিয়ে জিয়াদকে উঠিয়ে আনা হয়। তিনটি রডে বানানো খাঁচাটির নিচে বড়শির মতো আংটায় জিয়াদের জামা আটকে যায়। এরপরই রশি দিয়ে টেনে তুলে ওপরে আনা হয় শিশু জিয়াদকে। মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে এই কার্যক্রম শেষ করেন মিরপুর, পুরানা পল্টন, বসুন্ধরাসহ কয়েকটি স্থান থেকে আসা তরুণেরা। এর আগে গত শুক্রবার বিকেল থেকে চলে ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন সংস্থার ২৩ ঘণ্টা উদ্ধারকার্যক্রম।
খাঁচাটি বানানোর সাথে জড়িত আবু বকর সিদ্দিক নয়া দিগন্তকে বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর দেখে স্বপ্রণোদিত হয়ে কয়েকজন যুবক এখানে উপস্থিত হন। তারা কেউ কাউকে চেনেন না। কেউ মিরপুর থেকে, কেউ পল্টন, কেউ বা বসন্ধুরা এলাকা থেকে এসেছেন। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত উদ্ধারকার্যক্রম চালিয়েও শিশুটির অস্তিত্ব খুঁজে না পাওয়ায় উদ্ধারকার্যক্রম শিথিল করে দেয়। এরপর তারুণেরা নিজেদের উদ্যোগে শিশুটিকে উদ্ধারের প্ল্যান করতে শুরু করেন। মুরাদ, সিদ্দিক, আনোয়ার, বাবলু, আলমগীরসহ আরো অনেকেই খাঁচা তৈরির কাজ শুরু করেন। প্রাথমিকভাবে তারা দু’টি খাঁচা বানান। তাদের এই খাঁচা বানাতে আইকন ইঞ্জিনিয়ারিং সার্বিক সহযোগিতা করে।
মুরাদ জানান, তিনি সিসি ক্যামেরা নিয়ে কাজ করেন। বন্ধু আনোয়ারকে নিয়ে গত শুক্রবারই তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। তার সাথে ছিল ৯০০ ফুট লম্বা ডি-লিংকের ক্যাট-সিক্স তার এবং একটি অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা। পাশের বাড়ি থেকে নেয়া একটি ২১ ইঞ্চি কালার টেলিভিশন। তারা অন্যদের সাথে প্ল্যান করে তিনটি রড দিয়ে একটি খাঁচা তৈরি করেন। আরো একটি খাঁচা তৈরি করেন চারটি রড দিয়ে। মূলত তিনটি রডের তৈরী খাঁচা দিয়েই জিয়াদকে ওঠানো হয়। খাঁচাটি সম্পর্কে আইকনের ওয়েল্ডিং ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর জানান, কয়েকজন ভাই আমাকে প্ল্যান দিয়েছিলেন। আমি সেই প্ল্যান অনুযায়ী একটি খাঁচা তৈরি করে। তিনটি মোটা রডের নিচে চিকন আরো তিনটি রড (এমনভাবে যা নিচের দিক থেকে চাপ দিলে ওপরে উঠবে। ওপর থেকে চাপ দিলে একটি স্থানে আটকে যাবে)। তার নিচে বড়শির মতো তিনটি আংটা লাগানো ছিল। খাঁচার মাঝখানে ছিল ক্যামেরা ও টর্চলাইট বসানোর জন্য আলাদা একটি জায়গা। খাঁচার উপরিভাগে বাঁধা হয় ফায়ার সার্ভিসের রশি।
বেলা আড়াইটার দিকে খাঁচাটি পাইপের মধ্যে ছাড়া হয়। ধীরে ধীরে সেটি নিচে থামতে থাকে। টর্চলাইট ও সিসি ক্যামেরা চালু থাকায় ২১ ইঞ্চি টেলিভিশনে ছবি আসতে থাকে। খাঁচাটি ২৫০ ফুট নিচে নামার পরই জালে মোড়ানো একটি বস্তুর ছবি ভেসে আসতে থাকে। তাদের ধারণা ছিল খাঁচাটি ওপর থেকে নলকূপের মধ্যে ছেড়ে দিলে বস্তুর ওপর পড়বে। এতে করে চিকন রড ওপরে উঠে বস্তুটি খাঁচার মধ্যে চলে আসবে। এরপর চিকন রড আবার নিচে গিয়ে একটি স্থানে আটকে যাবে। কিন্তু জিহাদ সেভাবে উঠে আসেনি। তার জামার একটি অংশ এবং শরীরে জড়ানো জালের মতো সুতা খাঁচার নিচের অংশে থাকা বড়শির মতো আংটায় বিঁধে যায়। এরপরই রশি টেনে ওপরে তোলা হয়। জিয়াদের শরীরে এভাবে জাল পেঁচানো হলো কি করে জানতে চাইলে তারা বলেন, জাল কোথা থেকে এসেছে তা আমরা বলতে পারব না। তবে তাকে উদ্ধারে জাল ব্যবহার হয়েছে বলে আমরা শুনিনি।
হাসপাতালে মৃত ঘোষণা : বিকেল পৌনে ৪টায় জিয়াদকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। সেখানে তখন দায়িত্বে ছিলেন আবাসিক সার্জন ডাক্তার এ কে এম নিয়াজ মোর্শেদ। বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ডাক্তার জিয়াদকে মৃত ঘোষণা করেন। ডাক্তার নিয়াজ বলেন, জিয়াদের বুকের দুই পাশ ও পিঠের বাঁ পাশে জখম ছিল। ধারণা করা হচ্ছে শিশুটি যখন নলকূপের ভেতর দিয়ে নিচে পড়ে যায় তখন এই আঘাত লাগে। এ ছাড়া দুই চোখ ছিলো নীল বর্ণের ফোলা। ফুলে উঠেছিল পেট। ডাক্তার নিয়াজ বলেন, পানি খেয়ে তার পেট ফুলে যেতে পারে। শরীর ছিল নীল বর্ণ। ডাক্তার বলেন, স্বাভাবিকভাবে বলা যায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা আগে। তবে ময়নাতদন্ত করলে মৃত্যুর সঠিক সময় জানা যাবে। মৃত ঘোষণার পরে লাশটি হাসপাতাল মর্গের ফ্রিজে রাখা হয়েছে।
এ দিকে জিয়াদকে হাসপাতালে নেয়া হবে এই খবর পেয়ে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়। সেখানে হাজির হয় শত শত মানুষ। এ সময় উত্তেজিত মানুষ জিয়াদের মৃত্যুতে সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পদত্যাগ দাবি করে। একই সাথে ব্যর্থ ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা ও দায়ী ওয়াসা কর্মকর্তা কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি ও শাস্তি দাবি করে।
ফায়ার সার্ভিস ডিজির সংবাদ সম্মেলন : এ দিকে গতকাল বেলা আড়াইটায় ঘটনাস্থলের পাশে শাহজাহানপুর কলোনি মৈত্রী মাঠে চলা তাফসির মাহফিলের প্যান্ডেলে সংবাদ সম্মেলন করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান।
তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ওয়াসার একটি ১৭ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপে জিয়াদ নামে সাড়ে তিন বছরের একটি শিশু পড়ে যায়। এই খবর পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট তাকে উদ্ধারে কাজ করে। এ সময় ঢাকা ওয়াসা, রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংসহ কয়েকটি সংস্থা সহযোগিতা করে। প্রায় ২৩ ঘণ্টার উদ্ধার অভিযানে পাইপের মধ্যে চার দফা রশি, বস্তা, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা পাঠানো হয়। কিন্তু শিশু জিয়াদের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই ফায়ার সার্ভিস তাদের উদ্ধারকার্যক্রম স্থগিত করছে। তবে রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং অভিযান অব্যাহত রাখবে। এ ক্ষেত্রে তারা যদি ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতা চায় তাহলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এক্সপার্টদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অবজারভেশন থেকে আমরা ধারণা করছি ওই নলকূপের মধ্যে শিশু জিয়াদের কোনো অস্তিত্ব নেই। এর আগে ফায়ার সার্ভিসের যেসব সদস্য জিয়াদের সাথে কথা বলা ও তাকে খাবার দেয়ার কথা বলেছে তা ভুল ছিল। মূলত ইকো সাউন্ডের কারণে শব্দগুলো শোনা যাচ্ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাহলে জিয়াদ কোথায় গেলো এমন প্রশ্ন করা হলেও তিনি উত্তর দেননি। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী ওই সংবাদ সম্মেলন শেষ করে চলে যাওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে জিয়াদকে ওই নলকূপের মধ্য থেকে উদ্ধার করে সাধারণ মানুষেরা।
ঘটনার সূত্রপাত : রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির ৪১ নম্বর ভবনের দ্বিতীয় তলায় মা-বাবার সাথে দুপুরের খাবার খায় চার বছরের শিশু জিয়াদ। এরপর ঘুমিয়ে যান মা খাদিজা। ঠিক এই সময় মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বন্ধুদের সাথে খেলতে যায় শিশুটি। খেলতে গিয়ে গভীর পাইপে পড়ে যায় সে। বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করে জিয়াদ। ঠিক এ ঘটনার পরপরই ওই নলকূপের কাছে ব্যাডমিন্টনের কর্ক কুড়াতে গিয়ে শিশুটির চিৎকার শুনতে পায় আট বছর বয়সী জাহিদা ইয়াসমিন পুষ্পিতা। দৌড়ে ঘটনাটি বড় বোন ফাতেমাকে জানায় পুষ্পিতা। এরপরই শুরু হয় দৌড়াদৌড়ি হুড়োহুড়ি। তখনো শিশুটির মা খাদিজা জানেন না তার জিয়াদ গভীর নলকূপে পড়ে গেছে। বিকেল ৪টায় এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো কলোনিতে। তখন শুরু হয় জিয়াদের খোঁজাখুঁজি। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না জিয়াদকে। কলোনিবাসীর ধারণা পড়ে যাওয়া শিশুই জিয়াদ। প্রাথমিক উদ্ধারচেষ্টা শেষে স্থানীয়রা খবর দেন ফায়ার সার্ভিসে।
ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে : খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট।
ঘণ্টাখানেকের মধ্যে শুরু হয় শিশুটিকে উদ্ধারতৎপরতা। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে চলে আসেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেই শিশুটির অবস্থান নিশ্চিত করতে না পারলেও শিশুটি বেঁচে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তাই শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টায় অভিযান শুরু করেন উদ্ধারকর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা। উদ্ধারতৎপরতা সরাসরি দেখানো হয় বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলে। চলে রাতভর উদ্ধার অভিযান। এরপর আনা হয় ক্রেন। একে একে চলে আসে বিভিন্ন সংস্থার বিশেষজ্ঞদল।
তখন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানিয়েছিলেন, শিশুটি বেঁচে আছে। নলকূপের মুখে তাকে ডাকার পরে সে সাড়া দিয়েছে। তবে নলকূপটি খুবই সরু হওয়ায় ভেতরে ফায়ার সার্ভিসের কোনো কর্মী পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। নলকূপের ব্যাস ১৬ থেকে ১৭ ইঞ্চি।
ওই সময় উদ্ধারকারী দলের প্রধান মেজর শাকিল নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, নলকূপে রশির সাহায্যে শিশুটিকে জুস দেয়া হয়েছে। অন্ধকারে যাতে ভয় না পায়, সে জন্য দু’টি টর্চলাইট পাঠানো হয়েছে। শিশুটি এসব জিনিস পেয়েছে বলে সাড়া দিয়েছে। নলকূপের মধ্যে অনবরত অক্সিজেনও দেয়া হয়।
শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযান : ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা প্রথমে রশি দিয়ে শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালান। সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কয়েক দফায় পাইপের ভেতরে রশি ফেলে জিয়াদকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু জিয়াদ রশিটি ধরে কিছু দূর উঠার পরই রশি ছেড়ে দেয় বলে জানান উদ্ধারকর্মীরা। এভাবে কয়েক দফা চেষ্টা করে ব্যর্থ হন উদ্ধারকর্মীরা।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিশুটিকে উদ্ধারে রশির মাথায় পাটের বস্তা ফেলে শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হন উদ্ধারকর্মীরা।
রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে ক্রেন আনা হয়। ক্রেন দিয়ে নলকূপ উপড়ে ফেলার কাজ শুরু হয়। ওই সময় উদ্ধারকর্মীরা বলেছিলেন, ১৭ ইঞ্চি ব্যাসের নলকূপের পাইপের গভীরতা ৪০০ ফুট আবার কেউ কেউ বলেছেন ৬০০ ফুট। তবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি আসলে কত ফুট গভীর ছিল ওই নলকূপের পাইপটি। বড় ওই পাইপের মাঝে ২ ইঞ্চির একটি পাইপ রয়েছে। ওই পাইপের নিচে একটি ১০ ইঞ্চির মোটর রয়েছে। ২ ইঞ্চির ওই পাইপটিকে ক্রেন দিয়ে টেনে তুললে শিশুটি উঠে আসতে পারে। কারণ তাদের ধারণা ছিল ওই পাইটির সাথে মোটরটি উঠে আসলে শিশুটিও উঠে আসবে। এভাবে দেখতে দেখতে প্রায় রাত ৯টা বেজে যায়। এ সময়ও শিশুটির সাড়া পাওয়ার চেষ্টা করেন এক উদ্ধারকর্মী। শুনতে পাচ্ছ, শুনতে পাচ্ছ বলে ডাক দিচ্ছিলেন তিনি। অনেকণ ডাকার পর ওই কর্মী এবার জানান, আর কোনো শব্দ পাচ্ছেন না তিনি। তখন রশির কৌশল বাদ দিয়ে আনা হয় ক্রেন। কিন্তু পাম্পের কাছে আনতে ক্রেনটি আটকা পড়ে মাঠের প্রধান ফটকে। ভাঙা হয় ফটক। এসব কাজেই বেজে যায় প্রায় ১০টা। এরপর বড় পাইপটির মধ্যে থাকা চিকন পাইপ টেনে তোলা হয় ক্রেন দিয়ে। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য নানা কৌশল নিতে থাকেন উদ্ধারকারীরা।
রাত ১০টা ৪৭ মিনিটে ওই প্রক্রিয়ায় ৫ নম্বর পাইপটি উপড়ে তুলে কেটে ৬ নম্বর পাইপটি ক্রেন দিয়ে টেনে তোলা হয়। এভাবেই একে একে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ২ ইঞ্চির ওই পাইপটি তোলা হলেও শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এ দিকে রাত ৯টা ৫২ মিনিটে একটি এলসিডি মনিটর আনা হয়। একটি কোজ সার্কিট ক্যামেরা নিচে পাঠিয়ে শিশুটির অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা চালানো হয় কিন্তু অবস্থান নিশ্চিত করা যায়নি। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাভার রানাপ্লাজার উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া স্বেচ্ছাসেবক বসির আহমেদ নিজ ইচ্ছায় পাইপের নিচে নামতে চান।
রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে বসির আহমেদকে নলকূপের ভেতরে নামানোর প্রস্তুতি নেয়া হয়। এ সময় বসির আহমেদ নলকূপের ভেতরে নামার আগে সবার কাছে দোয়া চান যেন শিশুটিকে জীবিত ফিরিয়ে আনতে পারেন। যে ক্রেন দিয়ে পাইপ তোলা হয়েছিল সেই ক্রেনের সাথে রশি বেঁধে বসিরকে নিচে নামানোর কথা ছিল। কিন্তু রাত ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে তাকে আর নামানো হয়নি।
রাত দেড়টার দিকে পাইপের ভেতরে ঢোকানো হয় ক্যামেরা। তবে ক্যামেরায় পাইপের মধ্যে শিশুটির অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। রাত সোয়া ২টার দিকে ক্যামেরা থেকে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে উদ্ধারকারী দলের একজন জানান, সাদা কাপড়, তেলাপোকা ও ব্যাঙ দেখা গেলেও মানবদেহের কোনো অস্তিত্ব মেলেনি। কয়েক দফায় ক্যামেরা পাঠিয়েও শিশুটির অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি।
২টা ৫০ মিনিটের দিকে উদ্ধারকারীদল নলকূপ থেকে ক্যামেরা তুলে নেয়। ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক জানান, শতভাগ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে না।
রাত পৌনে ৩টার দিকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থাÑ এনএসআইয়ের যুগ্ম পরিচালক আবু সাইদ রায়হান দাবি করেন, গর্তে শিশু পড়ার ঘটনা গুজবও হতে পারে।
রাত ৩টা ২০ মিনিটে বেসরকারি একটি বিশেষজ্ঞ দলের প থেকে গর্তে ক্যামেরা ঢোকানো হয়। দলটি জানায়, সাড়ে ৬০০ ফুট গভীর পর্যন্ত তাদের ক্যামেরাটি গেছে। কিন্তু এতে মানবদেহের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এভাবেই রাতভর শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়েও শিশুটির অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এরপর রাত গড়িয়ে শুরু হয় আর একটি নতুন সকাল। তখন ভোর ৫টা। একটি বেসরকারি বিশেষজ্ঞদল আবারো নলকূপের ভেতরে ক্যামেরা ঢুকিয়ে শিশুটির অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইলেও সম্ভব হয়নি। তারা বলছেন, ক্যামেরাটি একটি অবস্থান পর্যন্ত গিয়ে থেমে যায়।
এভাবেই গতকাল সকাল থেকে পরপর তিনবার স্থানীয় প্রযুক্তি দিয়ে পাইপের মধ্যে শিশুটিকে খোঁজা হয়। চতুর্থবারের সময় ওই প্রযুক্তি দিয়ে বেলা ৩টায় তুলে আনা হয় শিশু জিয়াদের লাশ। এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে উদ্ধার অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক আলী আহমদ খান।
উদ্ধার অভিযানে ভাটা : রাতভর কয়েক দফায় নলকূপের গভীরে ক্যামেরা পাঠানো হয়। শেষ রাতে উদ্ধারকারী বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা ক্যামেরার ছবি বিশ্লেষণ করার পর উদ্ধারকারী দলের এক কর্মকতা জানান, সাদা কাপড়, তেলাপোকা ও ব্যাঙ দেখা গেলেও মানবদেহের কোনো অস্তিত্ব মেলেনি। এর পর থেকেই ভাটা পড়ে যায় উদ্ধার অভিযানে; কিন্তু উদ্ধারকারী বিভিন্ন সংস্থার সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও উৎসুক জনতা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেননি। এভাবেই হয়ে যায় সকাল। গতকাল সকাল থেকে সরকারিভাবে কোনো উদ্ধারতৎপরতা দেখা যায়নি; কিন্তু স্থানীয়পর্যায়ে কিছু যুবক হাল না ছেড়ে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যান। এতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের সাহায্য করেন।
ফায়ার সার্ভিসের অদক্ষতা : রাত যত গভীর হয় শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারের আশা ততই ক্ষীণ হয়ে আসছিল আর ক্ষোভ বাড়ছিল উৎসুক জনতার। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা ফায়ার সার্ভিসের কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, বড় দুর্যোগ মোকাবেলায় ভারী যন্ত্রপাতি ফায়ার সার্ভিসের নেই। গতকাল সকালে নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এত উপর থেকে একটি শিশু পড়লে সে কিভাবে বাঁচে। অথচ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নাকি তার কণ্ঠ শুনেছেন। শিশুটিতো নিচে পড়ার পরই অজ্ঞান হয়ে মরে যাওয়ার কথা। যে স্তরে গিয়ে ক্যামেরা থেকে যাচ্ছে তার নিচে কি আছে সেটা দেখার মতো যন্ত্র নেই উদ্ধারকর্মীদের। যদি বড় কোনো বিপর্যয় ঘটে তাহলে কিভাবে মোকাবেলা করবে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক সাংবাদিকদের জানান, ২৮০ ফুট গভীরে ক্যামেরা দিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে শক্ত স্তর থাকায় ক্যামেরা আর নামানো যায়নি বলে দাবি করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা দেশে প্রথম। বলা চলে পৃথিবীতেও প্রথম। অভিজ্ঞতার ঘাটতির কারণে ভুল হতে পারে। তবে ভুল ইচ্ছাকৃত নয়।
তবে তিনি গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় লোকজনের কথা শুনে সকাল থেকেই দড়ি, খাঁচা দিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ সময় সাংবাদিকেরা জানতে চান, শিশুটিকে অনেকে জুস দেয়ার কথা জানিয়েছিল। শিশুটির কথা শোনা গিয়েছিল বলেও জানা গিয়েছিল। এ সময় ডিজি জানান, নলকূপটি গভীর হওয়ায় প্রতিধ্বনি শোনা যেতে পারে। জুস পাঠানো হয়েছিল; কিন্তু সাড়া পাওয়া যায়নি।
উৎসুক জনতার ভিড় : কলোনির মৈত্রী সঙ্ঘ মাঠের কাছে পানির পাম্পের পাইপের মধ্যে জিয়াদের পড়ে যাওয়ার খবরটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। সাড়া পড়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও। রাজনৈতিক উত্তাপসহ সব আলোচনা ছাপিয়ে ওঠে এ ঘটনা। ঘটনাস্থলের আশপাশে জড়ো হয় হাজারো উৎসুক জনতা। অনেকেই রাতভর উদ্ধারকর্মীদের সহায়তা করেন। কেউ কেউ পালন করেছেন স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব। সাধারণ মানুষ হুমড়ি খেয়ে উদ্ধার অভিযান দেখতে চাইলে তাদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। উদ্ধারকর্মীরা যখন শিশুটি বেঁচে আছে বলে, নলকূপে রশি ফেলে আস্তে আস্তে রশি ওপরের দিকে ওঠাতে থাকেন তখন আশপাশে জড়ো হওয়া শত শত মানুষ উচ্চস্বরে পড়তে থাকেন দোয়া-দরুদ। রাতভর বেসরকারি টেলিভিশনগুলো উদ্ধার অভিযান লাইভ সরাসরি সম্প্রচার করে।
দেশজুড়ে উৎকণ্ঠা : এ ঘটনার পর থেকেই দেশজুড়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। রাতভর অনেকেই টিভির পর্দায় শিশু জিয়াদ উদ্ধারের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান প্রত্যক্ষ করেন। কেউ কেউ নামাজ পড়ে শিশুটির জন্য দোয়া করেন। কেউ শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারের জন্য নফল রোজা মানত করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ঘটনা শোনার পর মানুষ গণমাধ্যম কার্যালয়ে ফোন করে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিতে থাকেন। কেউ বলছিলেন বালতি ফেলতে। কেউ বলছিলেন খাঁচার কথা। কেউবা বলছিলেন রশির মাথায় ছোট বাঁশ বেঁধে দিতে। ফেসবুকসহ সর্বত্র শিশুটিকে বাঁচানোর আকুতি জানানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের বক্তব্য : শিশু জিয়াদের লাশ উদ্ধারের পর তার বাসায় গিয়ে দেখা যায়, মা খাদিজা আক্তার আহাজারি করছেন। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ যারা জিয়াদকে উদ্ধার করার নামে বিভিন্ন ধরনের কথা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি তাদের বিচার চাই।
তিনি বলেন, তারা যদি বিভিন্ন ধরনের কথা না বলতেন, যদি ভালোভাবে খুঁজে দেখতেন তাহলে আমার সন্তানকে আমি গতকালকেই পেতাম।
জিয়াদের মা অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাতে তার স্বামী ও ভাইকে থানায় নিয়ে যাওয়ার হয়েছে। বলা হয়েছে সন্তানকে তারা কোথাও লুকিয়ে রেখেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসবের বিচার চান।
এ দিকে শিশু জিয়াদের ঘটনাটি ‘গুজব’ বলে ঘোষণা দেয়ায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পদত্যাগ দাবি করেছেন শাহজাহানপুরবাসী। এ ছাড়া বিুব্ধ জনতা শিশুটিকে যথাসময়ে উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট উদ্ধারকর্মীদেরও বিচার দাবি করেন। তারা ঘটনাটি ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ বলে দাবি করেন। শাহজাহানপুরের বাসিন্দা হাফিজুল ইসলাম প্রশ্ন রাখেন, কেন জিয়াদকে আগে উদ্ধার করা হলো না? কেন বলা হলো ওই নলকূপের মধ্যে মানুষের কোনো অস্তিত্ব নেই, কেন উদ্ধার অভিযান বন্ধ করা হলো?
এ দিকে গতকাল সকালে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ জানান, তারা এখন পাইপের ভেতরে ময়লা পরিষ্কার করে ভেতরে কিছু আছে কি না তা খুঁজে দেখার চেষ্টা করছেন।
শিশু জিয়াদের বাসা ওই নলকূপের পাশেই। জিয়াদেরা তিন ভাইবোন। অপর দু’জন হচ্ছে স্বর্ণা (১৩), জিহান (৬)। জিয়াদই সবার ছোট। ওই পানির নলকূপের পাশে আরেক জায়গায় গর্ত খুঁড়ে পানির পাইপ বসানোর কাজ চলছে।
ফাতেমা আক্তার নামে রেলওয়ে কলোনি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী জানায়, সে তার ছোট বোন পুষ্পিতাকে নিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলছিল। খেলার একপর্যায়ে কর্ক ওই নলকূপের পাশে পড়ে যায়। এ সময় কর্ক আনতে ছোট বোন নলকূপের কাছে গেলে ভেতরে শিশুর চিৎকার শুনতে পায়। এরপর ছোট বোন ডাক দিলে ওখানে ছুটে যায় ফাতেমা।
ফাতেমা বলে, এ সময় আমি কে কে বলে ডাক দিলে ভেতর থেকে শিশুটি বলে, মা বাঁচাও, বাঁচাও।
ফাতেমা জানায়, এ অবস্থা দেখে আমি দৌড়ে পানির পাম্প বসানো লোকদের কাছে গিয়ে বলি আংকেল নলকূপের ভেতরে একটি শিশুর কান্নার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এ সময় তারা হেসে কথাটি উড়িয়ে দেয়। এরপর ঘটনাস্থল দিয়ে এক লোক যেতে দেখে তাকে বিষয়টি বললে তিনিও একই শব্দ পান। এভাবেই একে একে করে বিষয়টি সবাই জেনে যায়।
জাহিদ মিয়া নামে এক ব্যক্তি জানান, তার মেয়ে এসে বলে, আব্বু নলকূপে একটি শিশু পড়ে গেছে। এ কথা শুনেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি শিশুটির সাথে কথা বলেন এবং স্থানীয়রা মিলে রশিতে টর্চ লাইট ভেতরে পাঠিয়ে শিশুটির সাথে কথা বলেন। তিনিও শিশুটির সাথে কথা বলেছেন এবং শিশুটিও সাড়া দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
পাইপ বন্ধ : শিশু জিয়াদের লাশ উদ্ধারের পর পনলকূপের মুখ বন্ধ করে ওপরে কাঁটা লাগিয়ে দেখা হয়েছে।
বিুব্ধ জনতার ভাঙচুর : ২৩ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চালানোর পর ফায়ার সার্ভিস ঘোষণা দেয় নলকূপের মধ্যে জিয়াদের অস্তিত্ব নেই। ঠিক ৫ মিনিট পর সাধারণ মানুষ স্বেচ্ছাসেবীদের যন্ত্রে উঠে এলো জিয়াদের লাশ। আর তখনি ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা। জিয়াদের মৃত্যুশোক ক্ষোভে পরিণত হলো। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল গোটা শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে। তাদের রোষানলে পড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। পুলিশও প্রথম দিকে অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করে। বিুব্ধ জনতা রেললাইনের পাশের বিভিন্ন স্থাপনা, ওয়াসা অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারাও তাদের রোষানলে পড়েন।
বিােভকারীরা ফায়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে উদ্ধার অভিযানে অবহেলার অভিযোগ এনে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। তারা অভিযোগ করেন শিশু জিয়াদকে হত্যা করা হয়েছে। যে ঘটনাটি শুধু বাংলাদেশই নয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষের হৃদয়কে কাঁদিয়েছে। সে বিষয়টি নিয়ে ফায়ার সার্ভিস তামাশা করেছে। তারা জিয়াদ হত্যার বিচার চেয়ে দফায় দফায় মিছিল করে। প্রায় ২০ মিনিট বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালানোর পর ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে আনা হয় এপিসি ও জলকামান।
পুলিশের মামলার প্রস্তুতি : শাহজাহানপুরে ওয়াসার গভীর নলকূপের ভেতরে আটকে পড়ে শিশু জিয়াদের মৃত্যুর ঘটনায় ওয়াসা ও রেলের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করবে পুলিশ। গত রাতেই শাহজাহানপুর থানায় এই মামলাটি করার কথা জানিয়েছেন পুলিশের মতিঝিল জোনের ডিসি আশরাফুজ্জামান।
শিশু জিয়াদের লাশ পাওয়ার পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
আশরাফুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দায়িত্বে অবহেলার কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। তাই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ তারা কোনোভাবেই এই মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে ন.
উপরে ১টা পত্রিকার বিবরন হুবহু তোলে দিলাম
আর ও দিতে পারতাম , দিলাম না , নিজে পড়ে নিবেন,
কি বুঝলেন এবার ?
নাকি এখনও বিজ্ঞানের দোহাই দেবেন?
এত ঘুরিয়ে প্যাচিয়ে কাকে বাঁচানোর এত ব্যর্থ চেষ্টা ? কেন?
৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:২১
এম এ কাশেম বলেছেন: খাঁচা, ক্যামেরা ও কিছু উদ্যমী তরুণ -
প্রশিক্ষিত দমকল বাহিনী যখন ব্যর্থ, পাঁচ ফুট উচ্চতার একটা লোহার খাঁচা, কিছু উদ্যমী তরুণ-যুবক আর একটি ক্যামেরাই সৃষ্টি করল ইতিহাস। টানা ২৩ ঘণ্টার চেষ্টার পর উদ্ধার হলো ছোট্ট শিশু জিহাদ। তবে জীবিত নয়, মৃত।
১০-১৫ জন উদ্যমী তরুণ-যুবকের একটি দলই টেনে তুলে আনে জিহাদের দেহ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন শফিকুল ইসলাম ফারুক, আবু বকর সিদ্দিক, আনোয়ার হোসেন, কবির মুরাদ, নূর মোহাম্মদ, আবদুল মজিদ, শাহজাহান আলী, ইমরান, রাকিব, মুন ও রাহুল।
শাহজাহানপুরের রেলওয়ে কলোনিতে পাইপের ভেতর শিশু আটকে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর শুক্রবার রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন তাঁরা। নির্ঘুম রাত কাটিয়ে জিহাদকে যখন বেলা তিনটার দিকে বের করে নিয়ে আসেন, তখন তাঁরা রীতিমতো ‘হিরো’। অনেকেই তখন তাঁদের নামে স্লোগান দিচ্ছিল এবং কাউকে কাউকে মাথায় তুলে নাচছিল উপস্থিত জনতা।
এই দলের সাতজনের সঙ্গে ঘটনাস্থল ও বাইরে প্রায় দেড় ঘণ্টা কথা হয়। দলের আরেক সদস্য ফারুকের সঙ্গে কথা হয় মুঠোফোনে। এঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ক্যামেরা পাঠিয়ে কূলকিনারা করতে ব্যর্থ হলে আনোয়ার নামের এক যুবক তাঁর নিজের ক্যামেরা কয়েকবার পাইপের ভেতরে পাঠান। এর মধ্যে লোহার খাঁচাও তৈরি করে কয়েকজন তা পাইপের ভেতরে ঢোকান। কিন্তু কিছুতেই কাজ হচ্ছিল না। সব শেষে শফিকুল ইসলাম, আবু বকর সিদ্দিকসহ কয়েকজন মিলে ভারী বস্তু টেনে তোলার উপযোগী করে খাঁচা তৈরি করেন। ফারুক নিজের পকেট থেকেই টাকা দেন এ কাজে।
গতকাল দুপুরের পর ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান শেষ করলে মওকা মেলে উদ্যমী তরুণ-যুবকদের। কিছু একটা করতেই হবে—এমন মনোভাব দেখান ফারুকসহ দলের অন্যরা। স্থানীয় মানুষ ও উৎসুক জনতাও তাঁদের উৎসাহ দিতে থাকেন। অবশেষে বেলা তিনটার দিকে খাঁচার সঙ্গে ক্যামেরা যুক্ত করে একটি টর্চ লাইটসহ প্রথম পাইপের ভেতর নামানো হয়।
আনোয়ার ও নূর মোহাম্মদ বলেন, প্রায় ৭৮ মিটার যাওয়ার পর মনে হয়, খাঁচাটি কোনো কিছুতে আটকে যাচ্ছে। তখন মনিটরে ভেসে ওঠে শোলাজাতীয় কিছু এবং ইটের টুকরোর সঙ্গে কিছু আবর্জনা। কিন্তু মানবদেহের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।
এর পরের গল্প শোনা যাক আনোয়ারের মুখ থেকেই। ‘প্রথমে আমরা খাঁচা পাইপের ভেতরে রেখে এর সঙ্গে বাঁধা দড়ি আস্তে আস্তে ছাড়ছিলাম। কিন্তু বারবারই বাধা পাচ্ছিল। এবার অন্য কৌশল নিলাম। যেখানে আটকে যাচ্ছিল, সেখান থেকে খাঁচাটা কয়েক গজ টেনে তুলে জোরে ছেড়ে দিলাম। এরপর যখন টান দিই, মনে হচ্ছিল কোনো কিছুতে আটকে গেছে। বাইরে থাকা মনিটরে আর ইটের টুকরো, আবর্জনা দেখা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে, সমতল একটা বস্তু পড়ে আছে। এমন সময় দড়ি টানা শুরু করি। তখন মনে হচ্ছিল, খাঁচার ওজনের চেয়ে বেশি কিছু আটকে আছে। ২০-২৫ কেজি বাড়তি ওজন অনুভূত হতে থাকে।’
কিছুক্ষণ দম নেন আনোয়ার। এরপর বলেন, ‘তখনই মনে আশার সঞ্চার হতে থাকে। কিছু দূর টেনে আনার পর আবার মনে হলো, ভারী বস্তুটা কিছুটা নেমে যাচ্ছে। তখন ক্ষণিকের জন্য দড়ি টানা বন্ধ করে দিই। আবার ধীরে ধীরে টানা শুরু করি। একপর্যায়ে খাঁচার পুরোটাই বেরিয়ে আসে। দেখা যায়, খাঁচার হুকের সঙ্গে নাইলনের জড়ানো-প্যাঁচানো চিকন দড়ি আটকে আছে। আরও তিন-চার ফুট টেনে তোলার পর জিহাদের দেহ বেরিয়ে আসে। দড়ির সঙ্গেই জড়িয়ে ছিল জিহাদের দেহ।’
কী আছে খাঁচায়: লোহার রড দিয়ে তৈরি খাঁচাটির উচ্চতা পাঁচ ফুটের চেয়ে কিছু কম হবে। তিনটি খাড়া লোহার রডের ওপরের অংশে একটা বৃত্তাকার রড দিয়ে আটকানো হয়। এর সঙ্গে টানা দেওয়া হয় আরও দুটি আড়াআড়ি রড। ঠিক মাঝখানে বাঁধা হয় মোটা রশি।
খাঁচাটির একেবারে নিচে রড ঝালাই করে ৪৫ ডিগ্রি কোনাকৃতির আংটা তৈরি করা হয়। এই আংটায় আটকে যায় জিহাদের দেহের সঙ্গে প্যাঁচানো নাইলনের চিকন রশি।
পেশায় ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম ফারুক বলেন, খাঁচাটি তৈরি করা হয়েছে এমনভাবে যে এটি পাইপের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় আংটাগুলো কোথাও বাধা পাবে না। কিন্তু ফেরার সময় কোনো বস্তু পেলে তা আটকে দিয়ে টেনে নিয়ে আসবে।
আবু বকর সিদ্দিক বলেন, প্রথমে আরেকজন খাঁচা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু ওটাতে কাজ হয়নি। পরে ফারুকসহ অন্যদের পরামর্শে আগের খাঁচাটার আদলেই নতুন খাঁচা তৈরি করা হয়। আইকন ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ঝালাইকাজে সহায়তা করেন।
মুরাদ নামের এক যুবক বলেন, ‘আমরা ক্যামেরা নামানোর আগে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা নামানো হয়। রাত তিনটার পরে আনোয়ার তাঁর ক্যামেরা নামানোর উদ্যোগ নিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলে দেওয়া হয়, ক্যামেরা অনেক হয়েছে। এই চ্যাপ্টার ক্লোজড। আর দরকার নেই।’
আনোয়ার জানান, ক্যামেরা নিয়ে শুক্রবার রাত নয়টায় তিনি ঘটনাস্থলে যান। অনেক চেষ্টা করেও নামানোর সুযোগ পাননি। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা দামি দামি ক্যামেরা পাঠিয়ে সফটওয়্যার দিয়ে প্রোগ্রাম সেট করে চেষ্টা করে।
আনোয়ার আরও জানান, তাঁর ক্যামেরার তারটি ৩০০ মিটার লম্বা। এই তারের ৭৮ মিটার পর্যন্ত পাইপের ভেতর প্রবেশ করানো হয়। এর অর্থ হচ্ছে, জিহাদের দেহটি পাইপের ভেতর ৭৮ মিটার নিচে অবস্থান করছিল।
আলাপ করে জানা গেছে, খিলগাঁও সিপাহীবাগে আনোয়ার হোসেনের সিসিটিভির ব্যবসা রয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি স্থাপন করাই এই প্রতিষ্ঠানের কাজ। এই দলের সদস্য আবু বকর সিদ্দিক আগোরা ও স্বপ্ন সুপার শপে মালামাল সরবরাহ করে থাকেন। তিনিই বিভিন্ন সময় খাঁচা নির্মাণ ও উন্নয়নে সহায়তা করেন। তাঁদের সহযোগী আবদুল মজিদ স্থানীয় ইলেকট্রিশিয়ান। কবির মুরাদ আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আর নূর মোহাম্মদ পড়ে মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ে। শাজাহান আলী, রাকিব ও ইমরানও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন। ফারুক গাড়ির ব্যবসা করেন। এঁরা সবাই একে অপরের পূর্ব পরিচিত নন, উদ্ধার অভিযানে এসে তাঁদের পরস্পরের পরিচয় হয়। ----- প্রথম আলো
এ সব কি মিথ্যে?
আপনি যা লিখেছেন তা যদি সত্যি হয় তবে এই সংবাদ গুলো যারা লিখেছেন তারা মিথ্যেবাদী অথবা পাগল
আর সংবাদ গুলি যদি সত্য হয় তা হলে আপনি পাগল অথবা মিথ্যেবাদী অথবা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্যাচিয়ে পাঠককে বিভ্রান্ত করে কাকে যেন বাঁচানোর হীন চেষ্টা করেছেন , কিন্তু কেন?
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৬
বাংলার পথিক বলেছেন: আপনিতো মশাই খবরের নিউজ পুরোপুরি ছেপে দিলেন !!! এই খবরতো আমিও জানি !! কিন্তু ইহা দিয়ে কি বুঝাইলেন আনি তাহা সম্পর্কে জ্ঞ্যাত হতে পারলাম না । এখানে আপনার যুক্তি টাও খুজে পেলাম না আপনিতো আবেগমাখা খবরের কাগজটি পুরো তুলে দিলেন!! যেইখানে শুধুমাত্র ঘটনা উল্লেখ আছে। ঘটনার ভিতর ফাক ফোকর আছে সেই ফাক ফোকরের কথা উল্লেখ করছি । একটু বুঝে পরে সেই বিষয়ে প্রশ্ন করুন। ধন্যবাদ
৫| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:২৬
বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: আমি এখনও মানি না শিশুটি ঐ পাইপের মধ্যে ছিল। ওখানে যা কিছু ঘটেছে তা কোন রবকট সাইন্স ছির না, যারা ইন্টারমিডিয়েট এ ফিজিক্স পড়েছে তারাও এইটুকু সাইন্স বোঝার কথা।
"থানায় পাঁচ ঘণ্টার নিরাপত্তা হেফাজতে শারীরিক নির্যাতনের হাত থেকেও রেহাই পাননি তারা। তাদের হুমকি দেয়া হয় সরকারি সংস্থাকে অহেতুক হয়রানির অভিযোগে মামলা দায়েরের।" এখানে অনেক রহস্য থাকতে পারে @ এম এ কাশেম
৬| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৩৩
বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: রবকট = রকেট
৭| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৩
মাহমুদ তূর্য বলেছেন: আপনিই সেই ব্যক্তি না ? যিনি গতকাল পোষ্ট দিয়ে বলেছিলন - আর পরিস্কার এখন সবাই বুঝে গেছি যে আসল প্রপোগান্ডা কি ছিলো । ১৪৪ ধারার ব্যাপারটা কিন্তু আমরা আসলেই ভুলে গেছি !!
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৪
বাংলার পথিক বলেছেন: আমি আজকেও সেইটা বলেছি তবে মোট ৭ টি সম্ভাব্য কারণ বলেছি ।আর সেইটা সেই ৭ টি কারণের ভিতরও পড়তে পারে । আপনি মশাই কোন কিছু খুজে না পেয়ে ঐ একটাই দেখলেন? ৪৫ তলা থেকে শিশু পড়ে গিয়ে বেচে আছে আর তাকে উদ্ধারে ফায়ার ব্রিগেড,মিডিয়ার লাইভ সম্প্রচার যে শিশুটি কি বেচে আছে? আসুন দর্শক আমরা দেখতে থাকি । আর আপনি তাই দেখছেন বোধহয় । ৪৫ তলা থেকে লাফ দিয়ে দেখতে পারেন । যেই পাইপ ডাইরেক্ট সোজাসোজি নিচে চলে গেছে কোন বাধা নাই ।
৮| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৫
নতুন বলেছেন: তাহলে আপনার ধারনা ক্যামেরায় দেখার পরে ঐ পাইপে বাচ্চাটিকে ফেলা হয়েছে???
আপনার বিশ্বাস যে পাইপের কাছে এতোই জনমানব শুন্য হয়েছিলো যে একটা বাচ্চাকে ফেলে দিলো আর কেউই দেখলো না???
জটিল.... কল্পকাহিনি লেখা শুরু করেন...জে কে রাউলিং মতন নাম করতে পারবেন..
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০২
বাংলার পথিক বলেছেন: আমাদের কিছু বাংগালীদের সমস্যা হলো না বুঝে ক্যাচাল জরা আর হুদাই না জেনে কিছু বলা । ঘটনাস্থলে কি আপনি কি গিয়েছিলেন? কি বা জানেন সেই জায়গা সম্প্ররকে? আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম আর ছিলাম আমার বাসা থেকে বেশী দুরের পথ না । ভোর রাতের পর যখন ওয়াসার ক্যামেরা উঠানো হয় বাচ্চা পাওয়া যাচ্ছিলো না তখন এই শীতের সময় মানুষ খুব কম ছিলো কিছু মানুষ এসে শুধু পাইপ টা চলে যাচ্ছিলো । আর এই সকল কাজ একার পক্ষে সম্ভব না দলগত ভাবে পাইপ ঘিরেও হওয়া সম্ভব । আমিতো বললাম ৩ বার ধরে বুয়েট,বাইরের দল,ওয়াসার চেষ্টার পর না দেখা কোন কিছু বিলিভ করা ঐ বৈজ্ঞানের বিরুদ্ধে যায় । ডিস এলার ক্যামেরার ৭০-১০০ লেন্স যে রেজুলেশেন দেয় মোবাইল ক্যামেরা সেই রেজুলেশন কখনোই দেয় না । সিচুয়েশন সাপেক্ষে বললাম ক্যামেরা সাপেক্ষে না । আমিতো বললাম অন্ধভাবে আপনি বিলিভ করতেই পারেন একান্তই আপনার ব্যাপার কিন্তু অন্যকে অন্ধকে অন্ধভাবে বিলিভ করাতে যাবেন না । ধন্যবাদ
৯| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২৭
নক্শী কাঁথার মাঠ বলেছেন: বাচ্চা পড়েনাই ভাই... মেনে নিলাম, এবার অফ যান। আপনিই ঠিক, আর সব ভুল। আপনি ঘরে বসে **ল ফালায় সব বুঝে ফেলছেন, আর কেউ কিছু বোঝেনাই। এবার উপরে মন্তব্যে যেমন একজন বলেছেন, পারলে মাথার চিকিৎসা করান। আপনার ভালো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দেখানো দরকার।
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১০
বাংলার পথিক বলেছেন: আপনার কমেন্ট পড়ে মজা পেলাম । আসলে কিছু মানুষ নিজে ঘরে বসে *ল ফেলানো ছাড়া আর কোন কাজ খুজে পায়না । এরা অন্যকেও নিজেদের মত ঘরে থেকে *ল পাকনা মনে করে । আফসোস । সমস্যা টা এইখানেই বুয়েট,ওয়াসা এর বিশেষজ্ঞরা চুপ কারণ বাংলাদেশের কিছু আ*লেরা কুুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাস করে তাই এর ব্যাপারে চুপ থাকাটাই শ্রেয় মনে করেছে । অফ যাবো আগেই বলেছিলাম শুরুর অংশটা হয়তো আপনার মাথায় ঢুকেনি। আর আপনি কি আমি জানিনা একজন মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আমার আপনার থেকে মাইনিং সার্ভ ক্যামেরা থেকে জ্ঞ্যান হয়তো একটু বেশী আছে। ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৫:৪২
ভীণদেশী তাঁরা বলেছেন: দ্রুত নিজের চিকিৎসা করান