নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম। অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম, অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমিই কৃষ্ণকান্ত নন্দী (১ম খণ্ড)।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭

আমি কাশিমবাজার রাজবাড়িতে আমার দুটো জীবনের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছিলাম - রাজা কৃষ্ণনাথ রায় এবং বিজয় কৃষ্ণ দুলাল পাল। কিন্তু কাশিমবাজার রাজবাড়িতে আমি আমার আরও একটি জীবনের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছি,আর সেটি হলো- আমি ছিলাম কৃষ্ণকান্ত নন্দী। আমি জাতিস্মর। আমার ষষ্ঠবার মানব জীবন।

আমি প্রথমে ছিলাম কৃষ্ণকান্ত নন্দী ( প্রথম জীবন), তারপর ছিলাম কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায় ( দ্বিতীয় জীবন), তারপর ছিলাম বিজয় কৃষ্ণ দুলাল পাল ( তৃতীয় জীবন), তারপর আমি ছিলাম হরিদাস মুখার্জী ( চতুর্থ জীবন), তারপর আমি ছিলাম রমেশ সাহা ( পঞ্চম জীবন), তারপর আমি হলাম প্রদীপ হালদার ( ষষ্ঠ জীবন)।

আমিই কৃষ্ণকান্ত নন্দী-
-------------------------

বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার অন্তর্গত সিজনা গ্রাম অথবা রিপ্পি গ্রামের একজন চাষি ছিলেন কালি নন্দী অর্থাৎ কালিন্দী চরণ নন্দী (১৬৪০ - ১৬৯৬) । তিনি সিল্ক কেথনের ডিলার ছিলেন। এক ধরণের কাপড় তৈরী করা হতো যাতে রেশম এবং সুতা থাকতো। কেথনের ব্যবসা ভালোভাবে চলতো মুকসুসাবাদ অথবা মুর্শিদাবাদে। কালি নন্দীর দুই পুত্র সন্তান ছিল। বড় ছেলের নাম সীতারাম নন্দী (১৬৬৪ - ১৭১৫) । অন্য ছেলের নাম অদ্বৈত চরণ নন্দী। সীতারামের পুত্র সন্তান হলেন রাধাকৃষ্ণ নন্দী ( ১৭০০ - ১৭৫৪) । সতেরোতম শতাব্দীতে কালি নন্দী কাশিমবাজারে এসেছিলেন।
শ্রীপুরে রাধাকৃষ্ণ নন্দীর চৌদ্দ কাঠা জমি ছিল। এই জমিতে রাধাকৃষ্ণ তিনটে মাটির ঘর তৈরী করেছিলেন,খড়ের ছাউনি ছিল। একটা ঘরে তিনি একটা মুদিখানা দোকান করেছিলেন। সেখানে তিনি বিক্রি করতেন- ঘুড়ি, চাউল,ঘি,লবণ এবং অল্প মূল্যের অন্যান্য জিনিষ। তার পরিবারে অনেক আগে রেশম এবং সুপারির ব্যবসা ছিল। রাধাকৃষ্ণ নন্দীর বড় পুত্র সন্তান হলেন কৃষ্ণকান্ত নন্দী (১৭২০ - ১৭৯৪) । কৃষ্ণকান্ত নন্দীর চার ভাই- জয়রাম ( ১৭২২ - ১৭৯৩), কৃষ্ণ চন্দ্র ( ১৭২৪ - ১৭৯৪), নৃসিংহ (১৭২৬ - ১৭৯৯) এবং গোরাচাঁদ (১৭৪৫ - ১৭৯৯)। গোরাচাঁদের অন্য নাম ছিল গোকুলচাঁদ এবং গোকুলচন্দ্র।
১৬২০ সালে কাশিমবাজার ইনল্যাণ্ড বন্দর হিসাবে পরিচিতি লাভ করে এবং সেইসাথে ব্যবসা বাণিজ্যের জায়গা হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। কাশিমবাজারে গঙ্গা নদীর নিকটবর্তী জায়গায় তিনটে ফ্যাক্টরি ছিল। এই ফ্যাক্টরি তিনটে ছিল - ফরাসী, ব্রিটিশ, ওলন্দাজদের।
১৬৬৩ সালে ওলন্দাজদের কাশিমবাজার ফ্যাক্টরিতে সাতশ কর্মী নিয়োজিত ছিল,সেখানে ব্রিটিশ বা ফরাসীদের ফ্যাক্টরিতে কর্মী সংখ্যা অল্প ছিল। ১৭৩৪ সালে ডুপ্লেক্সের মাধ্যমে কাশিমবাজারে ফরাসীদের ব্যবসার উন্নতি হয়েছিল। ১৬৫৮ সালে ব্রিটিশদের কাশিমবাজার ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠিত হয়। জন কিন ফ্যাক্টরির প্রধান ছিলেন। ১৬৮০ সালে জব চার্ণক ফ্যাক্টরির প্রধান ছিলেন।
বারাণসী হিন্দুদের পবিত্র তীর্থস্থান ছিল। পরবর্তী দিনে কাশিমবাজার রেশম ব্যবসার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছিল এবং শিবের মন্দিরের জন্য কাশিমবাজার হিন্দুদের কাছে দ্বিতীয় বারাণসী হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিল।
১৭০৪ সালে বাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে মুকসুসাবাদে স্থানান্তরিত হয়েছিল। অউরঙ্গজেবের দেওয়ান ছিলেন কর্তালাব খাঁ। তিনি দাক্ষিণাত্যে গিয়েছিলেন। অউরঙ্গজেব তাকে মুর্শিদ কুলি খাঁ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। মুর্শিদ কুলি খাঁ নাম থেকে মুকসুসাবাদের নাম হয়েছিল মুর্শিদাবাদ।
মুর্শিদ কুলি খাঁর সাথে ঢাকা থেকে একজন ব্যাঙ্কার মুর্শিদাবাদে এসেছিলেন, নাম মাণিকচাঁদ,যিনি জগৎ শেঠের বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কাশিমবাজারের তিন মাইলের মধ্যে বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদ শহর ছিল। ১৭০৭ সালে সম্রাট অউরঙ্গজেবের মৃত্যু হয়। তার পুত্র বাহাদুর শাহ - ১ সিংহাসনে বসেন। ১৭০৭ সালে ১৮ই অক্টোবর দিয়া আল্লাহ খাঁ বাংলার দেওয়ান এবং মুর্শিদাবাদের ফৌজদার হলেন। শামসের খাঁ বিহারের দেওয়ান হলেন। ১৭০৮ সালে ৪ঠা মার্চ সরবুলান্দ খাঁ বর্ধমান এবং আকবরনগর ( রাজমহল) এর ফৌজদার হলেন। ১৭০৮ সালে ২৬ জানুয়ারি মুর্শিদ কুলি খাঁকে বাংলা,বিহার উড়িষ্যার সব পদ থেকে সরিয়ে দক্ষিণ ভারতের দেওয়ান করা হলো। সরবুলান্দ খাঁকে দিল্লীতে ফিরিয়ে নেওয়া হলো। ১৭১০ সালে জানুয়ারি মাসে মুর্শিদাবাদে সড়কে দিয়া আল্লাহ খাঁ নিহত হলেন। এবং মুর্শিদ কুলি খাঁ দ্বিতীয়বার বাংলার দেওয়ান হলেন। ১৭১৭ সালে বাংলার নবাব হলেন মুর্শিদ কুলি খাঁ। মুর্শিদ কুলি খাঁ এক পরওয়ানা জারি করলেন। মুর্শিদ কুলি খাঁ মারা গেলেন ১৭২৭ সালে ৩০ জুন। তিনি বাংলাকে ১৬৬০টি পরগণায় বিভক্ত করেছিলেন। ১৭৩২ সালে চন্দননগরের গভর্ণর ছিলেন ডুপ্লেক্স। তার সময়ে ফরাসী বাণিজ্যের উন্নতি হয়েছিল।
১৭৩০ থেকে ১৭৪১ সালের মধ্যে নবাবের ক্ষমতা কমে গিয়েছিল। বাংলার শাসন ব্যবস্থা নির্ভরশীল ছিল জগৎ শেঠ ফতেহ চাঁদ, হাজি আহমেদ খাঁ এবং দেওয়ান আলমচাঁদের ওপর। এইসব ব্যক্তিদের ক্ষমতা এতই বেড়ে গিয়েছিল যে, নবাব তাদেরকে সম্মান করতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু এইসব ব্যক্তিদেরকে সন্তুষ্টি না করার ফলে এইসব ব্যক্তিরা ষড়যন্ত্র করে এবং এর ফলে নবাব সরফরাজ খাঁ ১৭৪০ সালে ৯ই এপ্রিল গিরিয়ার যুদ্ধে পরাজিত এবং নিহত হন। হাজি আহমেদের ছোট ভাই আলিবর্দী খাঁ বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন এবং বাংলার নবাব হলেন। সরফরাজ খাঁ নিহত হওয়ার পূর্বে নবাব ছিলেন সুজাউদ্দিন খাঁ। আলিবর্দী খাঁর নাতি হলেন মির্জা মহম্মদ সিরাজউদ্দৌলা,জন্ম ১৭৩৩ অথবা ১৭৩২ সালে বিহারে এবং ওয়ারেন হেস্টিংস জন্মেছিলেন ১৭৩২ সালে ইংল্যাণ্ডের এক গ্রামে।
১৭৪০ সালে কাশিমবাজার এক বড় শহরে পরিণত হলো। গুজরাটি বণিকেরা গঙ্গার তীরে বসতি গড়ে তুললো,যাদেরকে বলা হতো মহাজনতুলি এবং গুজরাটিতুলি। এমনকি জগৎ শেঠ এখানে একটি বাড়ি তৈরী করলো এবং প্রায়ই এখানে বসবাস করতো। জগৎ শেঠের বাড়ির বিপরীত দিকে নেমিনাথের মন্দির তৈরী করা হলো। হিন্দুরা বৈষ্ণব ছিল এবং চৈতন্যের অনুগামী ছিল। মৃদাঙ্গ এবং করতাল সহ কীর্তন হতো। ১৭৪২ সালে ৬ই মে মারাঠা ঘোড়সওয়াররা মুর্শিদাবাদ শহরে ঢুকলো এবং জগৎ শেঠের বাড়ি থেকে তিন লক্ষ টাকা লুঠ করলো। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লো। এমনকি নবাব আলিবর্দী খাঁ তার পরিবারকে ঢাকায় পাঠিয়ে দিলেন। ১৭৪২ সালে অক্টোবর মাসে কৃষ্ণকান্ত নন্দী একটি কাঁঠাল গাছের ফলগুলি কিনলো। ১৭৪৫ সালে ১০ই এপ্রিল কৃষ্ণকান্ত, গোকুল বিশ্বাসের কাছ থেকে একটি বাগান কিনলো। ১৭৪৯ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষ্ণকান্ত বাগান সহ একটি বাড়ি কিনলো। মারাঠাদের আক্রমণের সময় ছিল ১৭৪২ থেকে ১৭৫১ সাল, এই সময় সম্পত্তির মূল্য অনেক সস্তা ছিল। ব্রিটিশ কোম্পানি কাশিমবাজার ফ্যাক্টরিতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলো। ১৭৫১ সালে মারাঠা চুক্তি হলো। মারাঠারা বাংলা এবং বিহারে লুঠতরাজ চালাতো, এরা বর্গী নামে পরিচিত ছিল। উত্তর ভারতে যারা ডাকাতি করতো, তাদেরকে সন্ন্যাসী এবং ফকির বলা হতো। ওয়ারেন হেস্টিংস পরবর্তীকালে এইগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। ১৭৫২ সালে আগস্ট মাসে ওয়ারেন হেস্টিংস কাশিমবাজার ব্রিটিশ ফ্যাক্টরিতে যোগ দিয়েছিল। ১৭৫৬ সালে ৯ই এপ্রিল, আশি বছর বয়সে নবাব আলিবর্দী খাঁর মৃত্যু হলো। ১৭৫৪ সালে কৃষ্ণকান্ত নন্দীর পিতা রাধাকৃষ্ণ নন্দীর মৃত্যু হলো। জয়রাম নন্দী মুর্শিদাবাদে ওদিচরণ শাহ এবং গোরাচাঁদ শাহর অধীনে চাকরি নিয়েছিল এবং পরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত কৃষ্ণকান্ত নন্দীর ওপর নির্ভরশীল ছিল। রাধাকৃষ্ণের শ্রাদ্ধ গরিবানা মতে করা হয়েছিল। ১৭৫৭ সালে ২৩ জুন পলাশিতে সিরাজউদ্দৌলার সাথে ব্রিটিশদের যুদ্ধ হলো। যুদ্ধে ব্রিটিশরা জয়ী হলো। বাংলায় মুসলিম শাসনের অবসান ঘটলো। এক বছর আগে সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৬ সালে ২রা জুন কাশিমবাজারে ব্রিটিশ ফ্যাক্টরি আক্রমণ করলো। ৫ই জুনে ফ্যাক্টরির প্রধান উইলিয়াম ওয়াটস আত্মসমর্পণ করলো। ওয়াটস এবং কালেক্টকে বন্দী করা হলো। বাটসন এবং সাইকেস পালিয়ে গেলো। লেফটেন্যান্ট এলিওটের মাথা উড়ে গেলো। হেস্টিংস ধরা পড়লো এবং ৯ই জুন তাকে বন্দী করা হলো। যখন নবাব কলকাতা অভিযান করলো,তখন সঙ্গে বন্দী হিসাবে ওয়াটস এবং কালেক্ট ছিল। কৃষ্ণকান্ত নন্দী হেস্টিংসকে নবাবের কারাগার থেকে মুক্ত করার জন্য ওলন্দাজ ফ্যাক্টরির প্রধান ভার্নেটের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নিয়ে নবাবকে দিলো। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে হেস্টিংস কাশিমবাজার ফ্যাক্টরিতে ছিল ১৭৫৬ সালে জুলাই মাস অবধি। ১৭৫৬ সালে ২৭ অক্টোবর হেস্টিংস চুঁচুড়াতে ছিল। ফলতায় ছিল নভেম্বর মাসে। ডিসেম্বর মাসে বিবাহ করলো এবং কাশিমবাজারে ফিরে এলো ১৭৫৭ সালে মার্চ মাসে। মীরজাফর নবাব হলো ১৭৫৭ সালে ২৯ জুন। সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হলো ১৭৫৭ সালে ২রা জুলাই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৩

প্রামানিক বলেছেন: ইতিহাসের নিরিখে লেখা ভাল লাগল। ধন্যবাদ

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৮

নিমচাঁদ বলেছেন: দাদা আপনি পঞ্চম , ষষ্ঠ , সপ্তম এতোবার পুনর্জীবন পাচ্ছেন কিন্ত আমরা দোষ্টা কি করেছি যে খালি একটাই জীবন পেলুম !! কোথাও কিছু জল পানি বাবত জমা খরচ কি দিয়েচেন নাকি , দিব্যি করে বলুন দেকি ?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.