নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম। অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম, অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমিই কৃষ্ণকান্ত নন্দী ( ২য় খণ্ড )।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪০

আমিই কৃষ্ণকান্ত নন্দী
-------------------------

১৭৫৭ সালে ডিসেম্বর মাসে হেস্টিংসের পুত্র জর্জের জন্ম হয়। ১৭৫৯ সালে ১১ জুলাই, হেস্টিংসের নবজাত কন্যা সন্তান এবং তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। জর্জকে ইংল্যাণ্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
১৭৬০ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে,ক্লাইভ ইংল্যাণ্ডে চলে গেলো এবং অক্টোবর মাসে নবাব মীরজাফর অবসর নিলো। ১৭৬১ সালে আহমেদ শাহ আবদালি পানিপথে মারাঠাদের পরাজিত করলো। ব্রিটিশ আরও ক্ষমতাশালী হয়ে উঠলো।
নবাব মীরকাসেমের সাথে ব্রিটিশদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেলো। ১৭৬৩ সালে জুলাই মাসে নবাবের সেনাদল কাশিমবাজার ফ্যাক্টরি দখল করে নিলো। ১৭৬৪ সালে অক্টোবর মাসে বক্সার যুদ্ধ হয় এবং ব্রিটিশ জয়ী হয়। ১৭৬৪ সালে হেস্টিংস কোম্পানির কাজ ছেড়ে দিলো এবং ১৭৬৫ সালে জানুয়ারি মাসে ঘরের অভিমুখে যাত্রা করলো। ১৭৬৫ সালে ২৬ জুন ক্লাইভ দ্বিতীয়বার গভর্ণর নিযুক্ত হলো। মীরজাফর ১৭৬৫ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি মারা গেলো এবং তার নাবালক পুত্র নবাব হলো। ১৭৬৪ সালে ৪ঠা এপ্রিল কৃষ্ণককান্ত নন্দীর একমাত্র পুত্র সন্তান লোকনাথের জন্ম হয়। লোকনাথের মা,কৃষ্ণককান্ত নন্দীর দ্বিতীয় স্ত্রী। তার নাম অনঙ্গমঞ্জরী এবং বর্ধমান জেলার কুরুম্বা গ্রামে তার জন্ম।
কৃষ্ণকান্ত বা কান্তবাবু এবং তার পরিবারের সঙ্গে বর্ধমান জেলার বাহান্ন গাঁও সমাজের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল। কান্তবাবু জাতিতে তিলি সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল।
কান্তবাবু ১৭৬২ সালে কলকাতায় ছিল। এই শহরের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল ১৭৬০ সাল থেকে। এই সময় কাশিমবাজার ফ্যাক্টরির প্রধান ছিল হেস্টিংস। ১৭৬২ সালে ৫ই এপ্রিল কলকাতায়, একটা ডকুমেণ্টে সাক্ষী হিসাবে কৃষ্ণকান্ত নন্দী বাংলায় স্বাক্ষর করেছিল এবং কৃষ্ণকান্ত দাস নামে স্বাক্ষর করেছিল। ১৭৬৩ সালে কান্তবাবু জগন্নাথ দর্শনের জন্য পুরী গিয়েছিল। জগন্নাথ মন্দির থেকে কিছু মাইল দূরে লোকনাথ শিবের মন্দির ছিল। সেখানে কান্তবাবু পুত্র সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেছিল। তাই ১৭৬৪ সালে পুত্র সন্তানের জন্ম হলে কান্তবাবু পুত্রের নাম রাখলো লোকনাথ। কান্তবাবুর প্রথম স্ত্রী ছিল অসুস্থ। প্রথম স্ত্রী মারা গেলে,কান্তবাবু দ্বিতীয়বার বিয়ে করে। ১৭৬০ সালে কান্তবাবু দ্বিতীয়বার বিয়ে করে। কান্তবাবুর এক পুত্র সন্তান লোকনাথ এবং দুই কন্যা সন্তান- যমুনামনি,গঙ্গামনি। ১৭৬০ সালে ফ্রান্সিস সাইকেস ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির কাজ ছেড়ে দিয়ে বাড়ি চলে গেলো এবং ১৭৬৫ সালে ক্লাইভের সাথে ভারতে চলে এলো। কান্তবাবু ১৭৬৬ সালে এপ্রিল মাস থেকে ফ্রান্সিস সাইকেসের বেনিয়ান হলো। ১৭৬৯ সাল পর্যন্ত সাইকেসের বেনিয়ান ছিল কান্তবাবু। ১৭৬৫ সালে কান্তবাবু কান্তনগর পরগণা তৈরী করলো। ১৭৬৫ সালে অক্টোবর মাসে কান্তবাবু, এক ব্রাহ্মণ তথা কাশীনাথ ভট্টাচার্যের নামে একটি বাড়ি কিনলো যা শ্রীপুর রাজবাড়ি নামে পরিচিত। বাড়িটি কেনা হলো রামরাম সাহার কাছ থেকে।
১৭৮১ সালে আগস্ট মাসে কৃষ্ণকান্ত নন্দী,গভর্ণর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের সাথে চুনার দুর্গে গিয়েছিল। সেখানে কান্তবাবু,চৈত সিংহের মা পান্নাকে বিজয়গড় দুর্গ থেকে উদ্ধার করেছিল এবং ডিসেম্বর মাসে কান্তবাবু বাড়ি ফিরে এসেছিল। ১৭৭২ সালে হেস্টিংস গভর্ণর হয়ে ভারতে এসেছিল।
বাহারবান্দ পরগণা উত্তরবঙ্গে রঙ্গপুর জেলায় অবস্থিত। বাংলা এবং আসাম সীমানার মাঝে অবস্থিত। বাহারবান্দ পরগণার পূর্ব দিকে ধরলা নদী উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্রনদে মিশেছে। বাহারবান্দের পশ্চিমদিকে তিস্তা নদী প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্রনদে মিশেছে। এটি রঙ্গপুর জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম পরগণা। প্রকৃতপক্ষে বাহারবান্দ পরগণা দিনাজপুর জেলার একটি অংশ। রঙ্গপুর জেলা, দিনাজপুর থেকে আলাদা হয় ১৭৭০ সালে। বাহারবান্দ ১৭৭২ সালে জেলা হিসাবে পরিগণিত হয়।
১৭৬৮ সালে জুন মাসে কান্তবাবু হিজলিতে লবণ ব্যবসা শুরু করেছিল। ১৭৭৩ সালের মধ্যে কান্তবাবুর লবণের ব্যবসার উন্নতি হয়েছিল। লবণ উৎপাদনের জায়গা ছিল - হিজলি, তমলুক, সুজামুথা এবং মহিষাদল। ১৭৭৪ সালে কান্তবাবুর লবণ তৈরীর ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলো। কান্তবাবু লবণ তৈরীর ব্যবসা শুরু করেছিল ১৭৬৮ সালে জুন মাস থেকে এবং এই ব্যবসা বন্ধ করে দিল ১৭৭৪ সালে মার্চ মাসে। এই ব্যবসা ছিল হিজলি, তমলুক, সুজামুথা এবং মহিষাদলে।
১৭৭৪ সালে ৭ই মে অর্চদেকিন, ফিলিপ এম ডাকরেসের কাছে অভিযোগ করলো যে, কান্তবাবু লবণ চুরি করছিল, কিন্তু সেই নৌকা খুঁজে পাওয়া গেলো না। অর্চদেকিন, লোকনাথ নন্দীর গোমস্থাকে দোষী সাব্যস্থ করলো,কিন্তু নৌকা হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগটাকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারলো না। অর্চদেকিন ১৭৭৪ সালে ১৩ই জুন কাঁথি থেকে জানালো নৌকা হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। কামালউদ্দিনের আবেদন আরও সন্দেহ বাড়িয়ে তুললো। যদি গোমস্থা, লোকনাথ নন্দীর লবণ ওজন ছাড়াই গ্রহণ করে,তাহলে কি করে বুঝবো, গোমস্থা কতটা লবণ গ্রহণ করেছে। কান্তবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, নৌকায় যে পরিমাণ লবণ থাকার কথা তার চেয়ে বাড়তি লবণ নৌকায় থাকছে। সেজন্য দুটো নৌকাকে থামিয়ে দেওয়া হয়। সুজামুথা থেকে লবণ সহ যেসব নৌকা লোকনাথ পাঠিয়েছিল, তার আংশিক তনকা বা অনুমতি ছিল। কান্তবাবু সরকারী লবণ এবং টিকা কলারিস লবণের ব্যবসা করতো।
১৭৭৪ সালে ১২ই জানুয়ারি অর্চদেকিন অভিযোগ করলো যে, কান্তবাবু লবণ ব্যবসায় স্মাগলার। কিন্তু অভিযোগ ভিত্তিহীন হয়ে পড়লো। অর্চদেকিন দ্বিতীয়বার অভিযোগ করলো ১৭৭৪ সালে ৭ই মে যে, কান্তবাবু লবণ ব্যবসায় স্মাগলিং করছিল। আর তৃতীয় অভিযোগ ছিল ১৭৭৪ সালে ১০ই আগস্ট যে কান্তবাবু লবণ ব্যবসায় একজন স্মাগলার।
কিন্তু সব অভিযোগ ছিল ভিত্তিহীন। কমিটি আদেশ দিল যে,লবণ ওজন হিসাবে সরবরাহ করা হবে, ঝুড়ি হিসাবে লবণ সরবরাহ করা হবে না। লবণ ব্যবসার ক্ষেত্রে কান্তবাবুর অনুমতি পত্র ছিল, কিন্তু অনুমতি পত্রের বৈধতা নিয়ে কান্তবাবুর অজ্ঞতা ছিল।
কান্তবাবুর লবণের ব্যবসায় নানা রকম অভিযোগ উঠেছিল। কান্তবাবুর একটি নৌকা পরওয়ানা ছাড়াই লবণ নিয়ে রাতে সোনেয়া ঘাট থেকে পালিয়ে গেলো। আবার অর্চদেকিন অভিযোগ করলো,রসুলপুরে কান্তবাবুর নৌকায় নতুন লবণের পরিবর্তে পুরানো লবণ ছিল এবং যেখানে তনকা বা অনুমতি ছিল। আর সেই নৌকাটাকে থামানো হয়েছিল।
কালি নন্দী উত্তর বর্ধমানে অবস্থিত সিজনা গ্রাম থেকে কাশিমবাজারে এসেছিল। কালি নন্দী তার বড় ছেলে সীতারামকে নিয়ে গঙ্গা নদী অতিক্রম করে কাশিমবাজারে এসে কাপড়ের ব্যবসা গড়ে তুললো। পরে সীতারামের একমাত্র পুত্র রাধাকৃষ্ণ চৌদ্দ কাঠা জমি কিনে তিনটে মাটির ঘর তৈরী করলো। একটা ঘরে রেশমের ব্যবসা ছিল এবং সেই সঙ্গে ঘুড়ি বিক্রী করা হতো।
কান্তবাবু ১৭৬০ সালে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিল। ১৭৬৪ সালে তার পুত্র সন্তান লোকনাথের জন্ম হয়েছিল। ১৭৮১ সালে কান্তবাবু তিনবার বিজয়গড় দুর্গে গিয়েছিল। ১৭৯১ সালে কান্তবাবু বেনারস গিয়েছিল।
১৭৪৪ সালে রাধাকৃষ্ণ তার প্রথম নাতিকে আশীর্বাদ করলো,নরসিংহের পুত্র বৈষ্ণব চরণ। ১৭৫৪ সালে কান্তবাবু ধনী ব্যক্তি ছিল না।
ব্রিটিশ ফ্যাক্টরি ১৭৫৬ সালে ৩রা জুন দখল করা হলো। ১৭৫৬ সালে ৯ই জুন হেস্টিংসকে নবাব গ্রেপ্তার করলো। কান্তবাবু ডাচ ফ্যাক্টরির প্রধান ভার্নেটের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নিয়ে হেস্টিংসের জন্য জামিন দিল। হেস্টিংস ছাড়া পেলো। নবাব ১৬ জুন কলকাতা আক্রমণ করলো। হেস্টিংস ১৭৫৬ সালে জুলাই মাসে কাশিমবাজারে ছিল। হেস্টিংসের দায়িত্ব ছিল নবাব এবং অন্য ইউরোপীয় কোম্পানির গতিবিধি লক্ষ্য করা। ২৪ সেপ্টেম্বর রাজা মোহনলালের নেতৃত্বে এক সেনাদল পূর্ণিয়ার নবাবের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলো। মনিহারির কাছে যুদ্ধ হলো। ১৭৫৬ সালে ১৬ অক্টোবর যুদ্ধে পূর্ণিয়ার নবাব সৌকত জং নিহত হলো। এই খবর শুনে হেস্টিংস কাশিমবাজার ছেড়ে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিলো। ১৭৫৬ সালে ২০ অক্টোবর হেস্টিংস কাশিমবাজার ত্যাগ করলো। সেখান থেকে হেস্টিংস চুঁচুড়ায় চলে এলো।
ক্লাইভের নেতৃত্বে ব্রিটিশ কোম্পানি পলাশীর যুদ্ধে জয়ী হলো। ১৭৫৭ সালে ৩০ জুন সিরাজউদ্দৌলা বন্দী হলো এবং ২রা জুলাই নিহত হলো। মীরজাফর বাংলার নবাব হলো।
১৭৬৪ সালে অক্টোবর মাসে বক্সার যুদ্ধে নবাব মীরকাসেম পরাজিত হলো। মীরজাফর পুনরায় বাংলার নবাব হলো। লর্ড ক্লাইভ দ্বিতীয়বার বাংলার গভর্ণর হয়ে ১৭৬৫ সালে ৩রা মে ভারতে এলো। ফ্রান্সিস সাইকেস কাশিমবাজার ফ্যাক্টরির প্রধান হলো। হেস্টিংস ইংল্যাণ্ডে চলে যাবার সময়, কান্তবাবুকে সাইকেসের বেনিয়ানের জন্য সুপারিশ করলো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.