নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
১৯৬৯ সালের অগ্রাহায়ন মাস। ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাড়ি বাড়ি নতুন ধানের মাড়াই চলছে। আমাদের বাড়িতেও দুই দাউন* গরু দিয়ে ধানের মলোন* দেয়া হয়েছে। আমার বড় মামা বেড়াতে এসেছেন। আমরা তিন ভাইবোন কাচারী ঘরে পড়তে বসেছি। সন্ধ্যা অনেকক্ষণ হয় পার হয়েছে। চাঁদনী রাত। হঠাৎ আমাদের বাড়ির দক্ষিণ পার্শ্বে চিৎকার চেচামেচির শব্দ-- কে আছো গো, তাড়াতাড়ি আগাও গো, বড়ই গাছের তলে নতুন বউ মরে গেল গো - -- -।
বড় মামা উঠানে বসে বড় ভাইয়ের সাথে গল্প করছিলেন। চিৎকার শুনে মামা আমাদের পড়ার টেবিল থেকে হ্যারিকেন নিয়ে দৌড়ে গেলেন। পিছনে পিছনে আমরাও দৌড়ে গেলাম। গিয়ে দেখি রাস্তায় একটি গরুর গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তার পঞ্চাশ হাত পশ্চিম পার্শ্বে ক্ষেতের আইলে বড়ই গাছ। গাছের নিচে নতুন শাড়ি পরিহিতা অল্প বয়স্কা তরুণী চিত হয়ে শুয়ে আছে। হুশ নেই, অচেতন। গাড়োয়ানের সাথে নয়/দশ বছরের একটি মেয়ে আছে। মামা অজ্ঞান মহিলাকে ধরার জন্য বার বার গাড়োয়ানকে অনুরোধ করলেন কিন্তু গাড়োয়ান ধরতে রাজি হলো না। গাড়োয়ান বার বার বলছে আমি তার ভাসুর, আমার ধরা যাবে না।
ভাসুরেরা শত বিপদেও ছোট ভাইয়ের বউয়ের গায়ে হাত দিতে পারবে না এমন নিয়ম অত্র এলাকায় চালু থাকায় লোকটি চিৎকার চেচামেচি করলেও মরানাপন্ন ছোট ভাইয়ের বউয়ের গায়ে হাত দেয়নি। বর্তমান ভাসুরেরা কি করবে জানিনা? তবে এলাকার আঞ্চলিক নিয়ম মেনে গাড়োয়ানের দাঁড়িয়ে থাকাটা সামাজিক নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধই বলা চলে। মামা ভাসুরের বিষয়টি বুঝতে পেরে বাধ্য হয়ে মেয়েটির মাথা ধরে ঝাঁকি দিয়ে জ্ঞান ফিরানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু চেষ্টা করেও জ্ঞান ফিরাতে পারলেন না। মহিলাকে মাঠের মাঝে বড়ই গাছের নিচে রাখাও ঠিন নয়। অগত্যা ভাই এবং মামা মহিলাকে অজ্ঞান অবস্থায় ধরাধরি করে আমাদের বাড়িতে নিয়ে এলেন। বাড়ির ভিতর জল চৌকির উপর শোয়ায়ে মা মাথায় পানি ঢাললেন। কয়েক কলসি পানি ঢাললেও জ্ঞান ফিরে এলো না। মেয়েটির বাপের বাড়ি খুব বেশি দূরে নয়। আমাদের বাড়ি থেকে আধা মাইলের রাস্তা। মেয়ের বাড়িতে খবর পাঠানো হলো। মেয়ের বাবা খবর পেয়ে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলেন। মেয়ের বাবা আসার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত উপস্থিত যারা ছিলেন তারা যে যতটুকু টোটকা চিকিৎসা জানে তা প্রয়োগ করেও মেয়ের জ্ঞান ফিরাতে পারল না। মেয়ের বাবা মেয়েকে অজ্ঞান অবস্থায় গরুর গাড়িতে করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন। রাতেই কবিরাজ ডেকে এনে ভুতের চিকিৎসা করালেন। ভুতের নাম আয়তন্নেছা। সহজে ভুত ছাড়তে চায় না। অনেক চেষ্টা তদবীর করার পর ভুত ছাড়তে বাধ্য হলো। ভুত যাতে আর না আসে তার জন্য কবিরাজ সাহেব পানি পড়া, তেল পড়া, তাবিজ-কবজ অনেক কিছু দিলেন। কবিরাজের চিকিৎসায় মেয়েটি এযাত্রা সুস্থ্য হলো।
নববধুর এই অবস্থা দেখে ভাসুর গাড়োয়ান নাইওরী না নিয়েই খালি গাড়ি নিয়ে ফিরে গেল। যাওয়ার সময় আমরা চাঁদনী রাতে সামনের উঠানে বসে গল্প করছিলাম। আমাদের চাকর দুইজন আর কাজের মহিলারা মাড়াই ধান পরিস্কার করছিল। এমন সময় সেই গরুর গাড়ি আর গাড়োয়ানকে দেখে মামা গাড়ি থামিয়ে দিলেন। জিজ্ঞাস করলেন মেয়েটি কেমন করে বড়ই গাছের নিচে পড়ে গেল। ঘটনা সম্পর্কে মেয়ের ভাসুর যা বললেন তা হলো এই, এক মাস হলো মেয়েটির বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর আচার অনুষ্ঠান সব পার হয়েছে। বিয়ের পরে মেয়ে বাপের বাড়ি বেড়াতে এসেছে। নতুন বউ নেয়ার জন্য তার ছোট বোনকে সাথে নিয়ে এসেছে। নিজেদের গরুর গাড়ির নিজেই গাড়োয়ান। বিকাল বেলা নাইওরী নিয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু খাওয়া দাওয়া করে বিদায় নিতে নিতে রাত হয়ে যায়। ছৈয়ের পিছনে ফাঁকা জায়গা শাড়ী কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। ছৈয়ের সামনে ছোট বোন এবং পিছনে নতুন বউ। ছৈয়ের বাইরে ভাসুর গাড়োয়ান হয়ে গরু তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বড়ই গাছের কাছে আসতেই হঠাৎ গাড়ি ঝাঁকি দিয়ে উঠে। ভাসুর তার ছোট বোনকে গাড়ি ঝাঁকি দেয়ার কারণ জিজ্ঞেস করতেই বলে, ভাবী গাড়ি থেকে লাফ দিয়েছে। বাম দিকে তাকিয়ে দেখে শাড়ীর আঁচল ছড়ানো অবস্থায় নতুন বউ বড়ই গাছের দিকে দৌড়ে যাচ্ছে। গাছের তলে গিয়েই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এই অবস্থা দেখে সে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে।
এই ঘঠনার ঠিক সাতদিন পড়ে আমরা সন্ধ্যার সময় পড়ার ঘরে পড়তে বসেছি। মামাও আমাদের সাথে বসে আছে। এমন সময় বাড়ির দক্ষিণ পার্শ্বে তিন চারটি কণ্ঠে চিৎকার দিয়ে উঠল। কিছু বুঝে উঠতে না পেরে মামা এবং আমাদের বাড়ির দুই চাকর দৌড়ে গেল। গিয়ে দেখে বড়ই গাছের নিচে আবার সেই মহিলা পড়ে আছে। গাড়োয়ান সেই মহিলার ভাসুর। সাথে আরো দুটি মেয়ে। মামা এবং আমাদের বাড়ির চাকর এন্তাজ ভাই ধরাধরি করে মহিলাকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে এলো। জলচৌকির উপর শোয়ায়ে কেউ মাথায় পানি ঢালে, কেউ তেল পড়া দেয়, কেউ নাকে মরা গরুর হাড্ডি আগুনে পুরে ধরে। ইত্যাদি করতে করতে একসময় মেয়ের হুশ হলো। হুশ হওয়ার পরপরই মেয়ের বাড়ি থেকে মেয়ের বাপ মাসহ কয়েকজন চলে এলো। মেয়ের বাপ রাজী হলেও মেয়ের মা মেয়েকে এ অবস্থায় স্বামীর বাড়ি পাঠাতে রাজী হলো না। অগত্যা গরুর গাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে নাইওরী ছাড়াই ফেরত গেল।
আজকেও নাইওর নিতে এসেছে ভাসুর এবং সাথে দুইজন মেয়ে। সেদিনের সেই দশ বছরের মেয়েটির সাথে আরও একটি তের চৌদ্দ বছর বয়সের মেয়ে এসেছে। ছৈয়ের ভিতর নতুন বউকে মাঝখানে বসিয়ে সামনে দশ বছরের মেয়ে এবং পিছনে তের চৌদ্দ বছর বয়সের মেয়েটি নতুন বউয়ের চুল ধরে আছে। দুইজনেই সতর্ক যাতে নতুন বউ লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে না যেতে পারে। ঠিক বড়ই গাছের কাছে আসার সাথে সাথে চুল ধরা অবস্থায় নতুন বউ কিভাবে যে লাফ দিয়ে নেমে গেছে মেয়েটি বলতেই পারে না। নামতে গিয়ে যখন গরুর গাড়ি ঝাঁকি খেয়েছে তখন মেয়েরা চিৎকার দিয়ে উঠে, ভাই, বউ গেল, বউ গেল। নতুন বউ এক দৌড়ে বড়ই গাছের নিচে যেতেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। পরপর দুইদিন এই ঘটনা ঘটায় বড়ই গাছটি ভুতুরে গাছ হিসাবে পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে আয়তন্নেছা ভুতের বড়ই গাছ নাম হয়।
এই ঘটনার পরে ক্ষেতওয়ালা ভয় পেয়ে যায়। গাছ কাটার ইচ্ছা থাকলেও ভুতের ভয়ে আর গাছ কাটেনি। গাছ কাটলে কি জানি যদি ভুতে আবার ক্ষতি করে ফেলে! গাছওয়ালা গাছ না কাটলেও দেশ স্বাধীনের কয়েক বছর পরে বড়ই গাছটি এমনি এমনি মরে যায়।
এই ভুতের আছড়ওয়ালা বউকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন আর নিতে আসেনি। কয়েক মাস পরে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। ডিভোর্স হওয়ার পর মেয়ের বাবা মেয়েকে অনেক দিন আর বিয়ে দেয়নি। সুস্থ্য হওয়ার পর অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়েছে।
ঘটনাটি আমার জীবনের বাস্তব ঘটনা। কয়েক মাস আগে ঘটনাটি মনে পড়তেই গাঁয়ে গিয়ে সেই মহিলার খোঁজখবর নেই। মহিলা এখনও বেঁচে আছেন। সন্তানাদি বড় হয়ে নাতিপুতি হয়েছে। তবে এখন আর সেই ভুতের আঁছড় নেই।
* দাউন = ধান মাড়াই করার জন্য বিশেষ কায়দায় তৈরী যে রশিতে গরুগুলোকে আটকানো হয় সেই রশির নাম দাউন। দুই দাউন অর্থ হলো দুই সারিতে গরু দিয়ে ধান মাড়াই করা। এক সারি গরু সামনে আরেক সারি গরু পিছনে থাকে।
* মলোন = গরু দিয়ে ধান মাড়াই করা।
১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২৬
প্রামানিক বলেছেন: রহস্যটা আমিও আর আবিষ্কার করতে পারি নাই। কারণ ঐ সময় ভুতের কাহিনী নিযে আর কেউ ঘাটাঘাটি করে নাই। তবে এই ঘটনার আট দশ বছর পরে সেই বড়ই গাছের নিচে আরেক ভুতের ঘটনা স্বচক্ষে দেখেছি। ঘটনাটি পরে দিব।
২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২৫
জুন বলেছেন: অসম্পুর্ন মনে হলো প্রামানিক ভাই । কারনটা বুঝলাম না । নাকি সত্যি সত্যি ভুত আছে ? ভদ্রমহিলাটির হয়তো কোন মানসিক রোগ ছিল ? যাই হোক ভালোলাগলো
১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪০
প্রামানিক বলেছেন: আমি তখন ছোট ছিলাম। ভুত বিশ্বাস করতাম। সেই কারণে ওটাকে ভুতই মনে করতাম। মহিলা মানসিক রুগীও হতে পারে। বড় হওয়ার পর ভুত আছে বলে কোন কিছু আর বিশ্বাস করি না, তারপরেও এই ঘটনার ঠিক আট দশ বছর পরে ঐ বড়ই গাছের নিচে আমিও বাস্তবে একটি ভুতের ঘটনা স্বচক্ষে দেখেছিলাম।
৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৩৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
মহিলাটি উনার প্রথম স্বামীকে পবন্দ করেননি।
ঐ গাছটাকে উনি একটা টুলল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন; ভালো যে, উনার আরেকটা বিয়ে হয়েছিল।
১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪১
প্রামানিক বলেছেন: আপনার অনুমান সত্যও হতে পারে। তবে পরপর দু'টি ঘটনা ঐ বড়ই গাছের নিচেই ঘটিয়েছিল।
৪| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:২৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
২ কেন আরো বেশী ঘটতো, যদি ঐ মহিলাকে আগের স্বামীর কাছে জোর করে পাঠানো হতো।
১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৩৪
প্রামানিক বলেছেন: দু'টি ঘটনা ঘটার পরেই তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়, যে কারণে আর কোন নতুন ঘটনা ঘটে নাই। আগে না বুঝলেও এখন বুঝতে পারছি যদি আগের স্বামীর কাছে জোর করে পাঠানো হতো হয়তো আরো অনেক নতুন নতুন ভুতের কাহিনী ঘটত।
৫| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৩
গোধুলী রঙ বলেছেন: আমার অনুমান, মহিলাটি অনেক চালাক। তার স্বামীর কোন সমস্যা বা পরিবারের কোন সমস্যার কারনে শ্বশুর বাড়ী যেতে চায়নি। তাই সে ওই বরই গাছটাকে বাহানা বানাইছে। আজকাল এরকম সমস্যা মোটামুটি সবাই গ্রামেই হোক বা শহুরে সব মেয়েই মুখ ফুটে বলতে পারে, তাই এ জামানায় আর বরই বা শ্যাওড়া গাছের এমন ঘটনা পাবেন না।
১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৬
প্রামানিক বলেছেন: কথা ঠিকই বলেছেন। তখন মহিলারা নিজেদের কথা আসলেই কাউকে বলতে পারতো না এবং বললেও কেউ পাত্তা দিত না। একারণে অনেক মহিলা নিজেকে ঐ স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যও ভুতের অভিনয় করতো।
৬| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৫
আকবর উদ্দীন ভূঁঞা বলেছেন: আগ্রহটা রয়েই গেল। :-)
১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:১১
প্রামানিক বলেছেন: পরে আর ঘটনা দেখি নাই যে কারণে আর বলতে পারছি না।
৭| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:১১
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আপনার অনেক অভিজ্ঞতা! গল্পের ঝুলি খুলতে থাকুন
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:২৬
প্রামানিক বলেছেন: প্রত্যেকের জীবনেই স্মৃতি কাহিনী আছে, কেউ সেসব কাহিনী মগজে ধরে রেখেছে কেউ ভুলে গেছে পার্থক্য এটুকুই। আপনার জীবনের স্মৃতি কথাগুলো মনে করে লিখতে থাকুন দেখবেন ওগুলাই মজাদার কাহিনীর মত মনে হবে।
৮| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:২২
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: ভুতের গল্প পড়তে ভয় লাগে তারপরেও পড়লাম।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:৪৩
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই শাহরিয়ার কবীর। অনেক অনেক শুভেচ্চা রইল।
৯| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৫১
ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: গল্পটি পড়ে বেশ ভাল লাগল ।
আমার কাছে ভূতের গল্প শুনতে ভাল লাগে । যদি এরকম আরো ঘটনা থাকে প্লীজ শেয়ার করবেন ।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:৪৩
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ব্লগ সার্চম্যান। আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল।
১০| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৩:৪৪
কোলড বলেছেন: I always learn something new from your writing and I truly love that, i.e, daun.
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৪২
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই কোলড। আপনার মন্তব্য পড়ে খুশি হলাম। শুভেচ্ছা রইল।
১১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ ভোর ৫:৫৮
উর্বি বলেছেন: অনেক কিছুরই ব্যখ্যা থাকে না,এমন অনেক কিছুই আছে
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৪৩
প্রামানিক বলেছেন: ঠিকই বলেছেন বোন উর্বি। ভৌতিক কিছু কাহিনী আছে যার কোন ব্যাখ্যা আমিও খুঁজে পাইনি অথচ বাস্তবে দেখেছি।
১২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৭:২৯
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: মেয়ের আগে কোথাও প্রেম ছিলো হয়তো, আর ঐ ভুতের মাধ্যমে সঠিক প্রেমিকের কাছে যাওয়ার সুযোগ হয়ে গেলো :-D
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৪৭
প্রামানিক বলেছেন: মেয়েদের ভুতের গবেষণায় প্রেম কাহিনীসহ অনেক কাহিনীই পাওয়া যায়, তবে ঐ সময় প্রেম করার আগেই বিয়ে হয়ে যেত যে কারণে অন্য কোন সমস্যার কারণে এরকম দৃশ্যের অবতারণা হতে পারে কিন্তু প্রেমের কাহিনী এখানে ছিল না।
১৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:০৩
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: ভালো লিখছেন ভাই।
সম্ভাব্যতা অনেককিছুই হইতে পারে। অজানা থাকলেও ক্ষতি নাই
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫০
প্রামানিক বলেছেন: জি ভাই, যে টুকু জেনেছি তাই এখানে উল্যেখ করেছি, কাজেই অজানা কাহিনী অজানাই থাকল।
১৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:১৬
ভিটামিন সি বলেছেন: ঐ গাছের নিচে আপনার স্বচক্ষে দেখা ভুতের অবিজ্ঞতাটা তুলে ধরেন প্রামাণিক দা।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫১
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ভিটামিন সি, আপনার আগ্রহের কারণে আজ রাতেই দেয়ার চেষ্টা করবো।
১৫| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৩৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: থাকুক কিছু রহস্য অমিমাংসিত।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫২
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই হাসান মাহবুব, আপনার কথাই ঠিক থাকুক কিছু রহস্য অমিমাংসিত। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
১৬| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫৪
সাইলেন্স বলেছেন: মজা পেলাম। ভুতের গল্প পড়তে ও লিখতে মজা পাই।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:০১
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই সাইলেন্স। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
১৭| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫৭
দর্পণ বলেছেন: ভুত কেমনে করে গেলো সেটা তো বললে না ভাইয়া!
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:০৪
প্রামানিক বলেছেন: কবিরাজ এসে নাকে মুখে তেল পড়া দিয়ে দুই কানে কায়েকবার ফু দিতেই চোখ মেলে তাকায়। ঝাড়ুর পেটন দিতে হয় নাই। ধন্যবাদ ভাই।
১৮| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:০০
দর্পণ বলেছেন: আমাদের গ্রামেও এমন ভুতের প্রকোপ ছিলো কিন্তু তাদেরকে ঝাঁড়ুপেটা করা হত। অধিকাংশ সময় দেখা যেত প্রেম ভালুবাসা কেইস। মাঝে মইধে্ মানুষিক রোগেও এমন জ্বীনভুতের আসর মনে করা হয়।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:০৭
প্রামানিক বলেছেন: বেশির ভাগ ভুতের রোগীদের প্রেম ভালবাসা কেইস পাওয়া যেত। আবার মানসিক রুগীদেরও ভুতের চিকিৎসা করা হতো। আপনার কথা ঠিক আছে। তবে এই মহিলার কোন ভালবাসার কাহিনী শোনা যায় নি।
১৯| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:০২
দর্পণ বলেছেন: মানসিক রোগ বনাম জ্বিন ভূতের
আছর
রিতা একমাস ধরে কথা বলেনা। সারাদিন
বোবার মত তাকিয়ে থাকে। একেবারেই চুপ,
তাও না হয় সহ্য করা যেত কিন্তু গত
পনের দিন সে হাত পা কুকড়ে ঝাকানি শুরু
করেছে। একবার শুরু হলে ৫ থেকে ১০
মিনিট চলতে থাকে। শ্বশুরবাড়ীর লোকজন
এই অদ্ভূত কান্ড দেখে ভীষন ভয় পেয়েছে।
মৃগী রোগ কিনা বোঝার জন্য হাত
পা ঝাকানোর সময়
জুতা শুকিয়ে দেখা হয়েছে। খারাপ কোন
কিছু আছর করেছে কিনা মসজিদের ইমামের
পড়াপানি খাইয়ে দেখেছে। এরপরও কাজ
না হওয়ায় বাবার বাড়ী পাঠিয়ে দিয়েছে।
রিতার বাবা মা থানা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে গিয়েও সুরাহা পায়নি।
মেয়েকে যে জ্বিনেই
ধরেছে সে ধারনা পাকাপোক্ত হয়েছে। নিজ
গ্রামের, ভিন গ্রামের পীর-ফকির, কবিরাজ
সবার কাছেই ছুটোছুটি করেছেন
মেয়েকে নিয়ে। রিতার বয়স আঠারো চলছে।
দুই বছর ধরে বিয়ে হয়েছে, তার অমতে।
স্বামী বিদেশ থাকত, মাসখানেক
ধরে দেশে এসেছে। জ্বিনে ধরা বউ
নিয়ে তো আর সংসার চলেনা তাই নতুন
করে পাত্রী দেখা হচ্ছে।
রিতার সাথে আমার পরিচয় জাতীয় মানসিক
স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটে। অনেক পথ
পাড়ী দিয়ে তার এই হাসপাতালে আসা।
পানিপড়াসহ ওঝা ফকিরের লাঞ্জনাও
সহ্য করতে হয়েছে। তখনও
সে কথা বলেনা এবং হাত
পাগুলোকে অদ্ভূতভাবে ঝাকায়।
রিতা কনভারসন ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত
ছিলো যার প্রচলিত নাম হিস্টিরিয়া। এক
ধরনের মানসিক রোগ।
সাইকোথেরাপী যেখানে চমতকার কাজ
করে। রিতা একসপ্তাহের মধ্যেই
সাইকোলজিস্টের সাথে কথা বলে।
সে ছোটবেলা থেকেই নানুর বাসায় মানুষ।
বাবার আর্থিক অবস্থা অত খারাপ না,
সুযোগ সুবিধা বেশী বলে নানুর বাসায়ই
থাকা হত। ক্লাস টেনে ওঠার পর এই বিয়ের
প্রস্তাবটি আসে। ছেলে বিদেশ থাকে,
অনেক পয়সা কামাই করে, টাউনে নিজেদের
বাড়ী আছে। পাত্রপক্ষের এত আগ্রহ
দেখে রিতার মামারা রাজী হয়ে যায়। রিতার
মতামত কেউ জানার প্রয়োজন
মনে করেনা। বিয়ের পর রিতা বিস্মিত
হয়ে লক্ষ্য করলো যতটা আগ্রহ
দেখিয়ে তাকে বিয়ে করিয়ে আনা হয়েছে
বিয়ের পর তার বিন্দুমাত্র লক্ষণ নেই।
ছোটখাট বিষয়ে তাকে কথা শোনানো হয়।
বিয়ের পরপরই স্বামী বিদেশ চলে যায়।
রিতার শ্বাশুড়ী তার স্বামীর সৎ মা, নানান
ছুতায় তাকে অপমান করেন।
কাজকর্মে অদক্ষতার জন্য পদেপদে ভুল
ধরা হয়। রিতা কোন কথা বললে তা আবার
ব্যাঙ্গ করে তাকে শোনানো হয়।
স্বামী ফোন করে শুধু তার পরিবারের
লোকজনদের সাথেই কথা বলেন। রিতার
অনুভূতির কোন মূল্য দেয়া হয়না।
পড়াশুনা চালিয়ে না যাতে পারার দুঃখ আর
এত আগ্রহের বিয়ের এই ফলাফল, বিভিন্ন
সময়ে অপমানিত হবার অভিজ্ঞতা রিতার
ভিতরে ভিতরে তীব্র দ্বন্দ্ব তৈরি করে।
যার বহিঃপ্রকাশ শারীরিক এই লক্ষণের
মাধ্যমে ঘটে, কথা বন্ধ হয়ে যায়।
হিস্টিরিয়ার বা কনভার্সন ডিসঅর্ডারের
মূল কারণটাই হলো মানসিক কোন দ্বন্দ্ব
যা ব্যাক্তির মনে অসচেতনভাবে কাজ
করে এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার
মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
সাইকোথেরাপী মূলতঃ এই মানসিক
দ্বন্দ্বটাই আবিস্কার করে। মানসিক চাপ
কমে গেলে শারীরিক
লক্ষণগুলো কমে আসে। যেমন
সাইকোথেরাপীর কয়েকটি সেশনের পর রি
তার শারীরিক
লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে কমে আসে। রিতার
কোন শারীরিক সমস্যা ছিলোনা,
সমস্যাটা পুরোপুরি মানসিক কিন্তু রিতার
মতো অনেকেই এরকম জ্বিন ভূতের আছর
সংক্রান্ত ভুল ধারণার শিকার হয়। জ্বিন
ভূতের আছর তাড়ানোর
নামে চলে অপচিকিতসা । তার অন্যতম
কারণ হচ্ছে মানসিক রোগগুলোর বিচিত্র
লক্ষণসমূহ। শুধুমাত্র কনভারশন
ডিসঅর্ডারেই এত ধরনের লক্ষণ দেখা যায়
আর সেগুলো এতই অদ্ভূত যে তা মানসিক
রোগ হিসাবে সাধারণের বোঝা সত্যি দুরূহ।
তাছাড়া আমাদের সমাজে মানসিক রোগ
সম্পর্কে রয়েছে নেতিবাচক ধারনা। মানসিক
রোগ মানেই মনে করাই পাগল। মানসিক
রোগ সম্পর্কে রয়েছে নানা রকম
কুসংস্কার। এই কুসংস্কার দূর করার জন্য
চাই যথাযথ পদক্ষেপ। মানসিক রোগ
সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির
একটি গুরুত্বপুর্ণ উপায়
হতে পারে পাঠ্যবইতে কিছু প্রচলিত
মানসিক রোগের ধারণার অন্তর্ভূক্তি।
প্রাথমিক শিক্ষায় শারীরিক রোগগুলোর
মতো মানসিক রোগগুলোকেও পরিচয়
করিয়ে দিলে মানুষ অনেক ভ্রান্ত
ধারণা থেকে মুক্তি পাবে।
২০| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:১৮
প্রামানিক বলেছেন: আপনার লেখা পুরো ঘটনাই পড়লাম। আসলে ভুত বলে কিছু আছে এটা আমিও বিশ্বাস করি না। আমার চোখেও অনেক ঘটনা চোখে পড়েছে যা ভুতের ঘটনা হিসাবে এলাকায় প্রচলিত বাস্তবে অন্য কিছু। আমার ছোট ছেলেটিকে নিয়েও আমি সমস্যায় পড়েছিলাম। আমিও ভেবেছিলাম ভুতের আঁছড়ই হবে। পরে মাথা পরীক্ষা করে দেখা গেল ইপিলেপ সমস্যা। চিকিৎসার পরে ছেলেটি এখন মোটামুটি সুস্থ্য। তবে দু'একটি ভৌতিক কাহিনী আমার প্রতক্ষ্য নজরে এসেছে সেগুলোর উত্তর আমি আজো খুঁজে পাইনি। ধন্যবাদ আপনাকে।
২১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:১৫
লীন প্রহেলিকা বলেছেন: লেখায় পাঠক ধরে রাখার যে শক্তি রয়েছে তা সত্যি প্রশংসনীয়। ভালো লেগেছে।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৩১
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ লীনা প্রহেলিকা। মূল্যবান মন্তব্যর জন্য আন্তরিক শুভ্চেছা রইল।
২২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৯
সুমন কর বলেছেন: লেখায় সমাজের কুসংস্কারের প্রতিফলন ফুঁটে উঠেছে।
ভাগ্য ভালো আপনারে আয়তন্নেছা ভর করেনি....হাহাহা...
পরের ঘটনা জানার অপেক্ষায়....
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৫১
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই সুমন কর। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
২৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:২০
আমি মিন্টু বলেছেন: লেখা ভালো লাগলো আমি ভূত ।
১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই মিন্টু। শুভেচ্ছা রইল।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:১৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: রহস্যটা তো রয়েই গেল!!!
ভুতের গপ্প মন্দ নয়!