নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

pramanik99

আমার স্কুল জীবনের স্মৃতিগুলো বার বার মনে পড়ে। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই দিনগুলোতে।

প্রামানিক

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

প্রামানিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা ভাষার দুর্দশা ও কিছু কথা

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৯



আমি তখন অসুস্থ্য, মাত্র পাঁচদিন আগে বুকে পেসমেকার লাগানো হয়েছে। বুকে কাঁটা ছেঁড়ার ব্যাথা নিয়েই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আমার ছোট ছেলের সাথে ভারতের বেঙ্গালরের হৃদয়েলা হাসপাতালের অদূরেই একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে গেলাম। তিন তলা বিশাল ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, নাম ”ডি মার্ট”।

স্টোরে ঢোকার জন্য তিনটি গেট কিন্তু তিনটি গেটেই স্ক্যানার লাগানো। যেহেতু আমার বুকে পেসমেকার লাগানো তাই স্ক্যানারের ভিতর দিয়ে যাতায়াত করা বারণ। গেটের দারোয়ানকে আমার সমস্যার কথা বলে কোন লাভ হলো না। সে হিন্দিও বুঝে না ইংরাজিও বুঝে না বাংলা তো বুঝেই না। অবশেষ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা এসে স্ক্যান ছাড়া আমাকে ভিতরে ঢোকার ব্যাবস্থা করে দিল। ভিতরে গিয়ে দেখি অফার চলতেছে, একটা কিনলে একটা ফ্রি, দুইটা কিনলে তিনটা ফ্রি আরো কত কি।

হালকা পাতলা কিছু ক্রয় করার পর মনে করলাম এতো আগে কেনাকাটা না করে বাড়ি যাওয়ার আগে আগে পুরো কেনাকাটা করবো। ক্যাশিয়ারকে বিল দেয়ার সময় হিন্দিতে জিজ্ঞেস করলাম, “ইয়ে অফার কাব তক চলেগা”। ক্যাশিয়ার আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, পরে ইংলিশে বললাম, তখনো দেখি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, এরপর বাংলায় বললাম, অফার কয়দিন চলবে, সে তখনো আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। অর্থাৎ সে লোক হিন্দি বোঝে না বাংলা বোঝার তো প্রশ্নই আসে না। আমার কথা বুঝতে না পেরে কর্নাটকের ভাষায় কিছু একটা বলল তবে আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না কারণ আমি তো কর্নাটকের ভাষা জানি না। তার কথা আমি বুঝি না আমার কথা সে বুঝে না, পড়লাম মহাবিপদে। সে বুঝতে না পেরে তার পাশের ক্যাশিয়ারকে ডেকে আনল সেও হিন্দি বোঝে না, সে তার পাশের ক্যাশিয়ারকে ডাকল সেও বোঝে না এইরকম করে পরপর পাঁচজন এসেও যখন হিন্দি বাংলা ইংরেজি কিছুই বুঝল না তখন বাধ্য হয়ে হাত ইশারায় বললাম আর কাউরে ডাকার দরকার নাই, এই যে টাটা দিয়ে গেলাম এইটা বুঝলেই হলো।

এই ঘটনাটি বললাম এই জন্য কর্নাটকের মানুষ তাদের মাতৃভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলা পছন্দ করে না এবং বলার চেষ্টাও করে না অথচ পশ্চিম বঙ্গের কোলকাতায় পুরো উল্টো, হিন্দি আর উর্দু ভাষার দাপটে পশ্চিম বঙ্গের বাঙালিদের বাঙলা ভাষা ভুলে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। বেঙ্গালোরে অন্যরাষ্ট্রের লোকজন কাজে গেলেও তাদেরকে কর্নাটকের ভাষা শিখতে বাধ্য করা হয় অথচ কোলকাতায় বিভিন্ন রাজ্যের লোকজন কাজ করলেও তারা বাংলা না শিখে উল্টো বাঙালিদেরকেই হিন্দি শিখতে বাধ্য করে। বাংলা ভাষাকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ ভাষা বলা হয়। প্রায় ৩৪কোটি লোক বাংলায় কথা বলে, সেই জনবহুল ভাষা পাকিস্তান আমলে উর্দু ভাষার জাতাকলে পড়েছিল বর্তমানে পশ্চিম বঙ্গে হিন্দি ভাষার যাতাকলে পড়েছে।

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৮

বিজন রয় বলেছেন: প্রামানিক ভাই ভালো আছেন?
অনেক দিন পর আপনার পোস্টে এলাম।

বড়টা সবসময় ছোটটাকে গিলে ফেলতে চায়, ভাষাও এর ব্যতিক্রম নয়।
১৯৭১ বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বাংলাভাষার কি হতো কি জানি?

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৮

প্রামানিক বলেছেন: জি ভাই ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন? ভাই কি আর বলবো, কোলকাতায় গিয়ে যতনা বাঙালি পেয়েছি তার চেয়ে বেশি পেয়েছি বিহারী, দোকানদারও হিন্দি বলে, রিক্সাওয়ালাও হিন্দি বলে, টেক্সির ড্রােইভারও হিন্দি বলে হিন্দির ঠেলায় আমি কোলকাতায় আছি না বিহারে আছি বোঝা মুশকিল।

২| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৩

শাহ আজিজ বলেছেন: প্রামানিক , শরীর ভাল বোঝাই যাচ্ছে । লেখা চলুক , ভাল্লাগছে ।

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৯

প্রামানিক বলেছেন: জী আজিজ ভাই মোটামুটি ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন?

৩| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ভারতীয় বাঙ্গালীরা মূলতঃ আত্মসন্মানহীন এবং নির্লজ্জ প্রকৃতির। বাংলার প্রতি এদের কোন ভালোবাসা নাই। কোলকাতায় দেখেছি, হিন্দিতে কথা বলতে পারাটাকে এরা বিশাল কিছু একটা মনে করে। ভাষার প্রতি অপমানের কঠিন জবাব দিয়েছিলাম আমরা, বাংলাদেশের বাঙ্গালীরা। আর এরা দিল্লীর পা চাটতে চাটতেই গলা শুকিয়ে ফেলে। ভবিষ্যতে দেখবেন, বাংলা ভাষা শুধুমাত্র বাংলাদেশেই টিকে থাকবে। ওরা আস্তে আস্তে পুরাই হিন্দিভাষী হয়ে যাবে।

আপনার লেখাটা দু'বার এসেছে। ঠিক করে দিবেন।

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৮

প্রামানিক বলেছেন: পশ্চিম বঙ্গের বাঙালিরা বাংলা ভাষা নিয়ে অনেকটা হাবুডবু খাচ্ছে, ওদের মাতৃভাষা ওদের পক্ষে ধরে রাখা খুব কঠিন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে যখন বাঙালি খেদাও আন্দোলন শুরু হয়েছে, কথায় কথায় মার খাচ্ছে তখন পশ্চিম বঙ্গের লোকজন বাংলাভাষা রক্ষার জন্য একটু নড়াচড়ার চেষ্টা করছে। এই সতর্কটা ওদের আগেই হওয়া উচিৎ ছিল।

৪| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৫

রাজীব নুর বলেছেন:



ভাষা, সাহিত্য, শিক্ষায় ও পেশায়, কোন বাংলার লোকেরা এগিয়ে আছে?

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪০

প্রামানিক বলেছেন: পশ্চিম বাংলা আর বাংলাদেশের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে

৫| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পড়ে ভালো লাগলো।

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪০

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৬| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৬

কামাল১৮ বলেছেন: এর মূল কারণ হলো অর্থনৈতিক।অন্যের ভাষা শিখে অর্থনৈতিক কারণে,নিজের ভাষা ভুলে যায় সেটাও অর্থনৈতিক কারনে।অর্থনৈতিক কারণই সব কিছু নির্নয় করে।

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪২

প্রামানিক বলেছেন: ঠিক বলেছেন, তবে কোলকাতার বিষয়টি একটু আলাদা, তারা হিন্দি ভাষাকে কোলকাতায় এতো গুরুত্ব না দিলে বাংলা ভাষার এই দুর্দশা হতো না।

৭| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪২

নজসু বলেছেন:


ভাষা হারালে সংস্কৃতি হারায়, আর সংস্কৃতি হারালে পরিচয় হারায়।

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:৩৯

প্রামানিক বলেছেন: কথা ঠিক, ভাষার সাথে সংস্কৃতি জড়িত।

৮| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৮

শেরজা তপন বলেছেন: অন্য ভাষা একেবারে না জানাটা ঠিক পছন্দ হয় না আমার। বাইরের লোককে নিজের ভাষা শেখা বাধ্য করতে গেলে তো সমস্যা- স্বভাবতই তারা পর্যটক হারাবে।

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:৪৫

প্রামানিক বলেছেন: কোলকাতার বিষয়টি পর্যটক সমস্যা নয়, তাদের রাজ্য ভিত্তিক আভ্যান্তরিণ সমস্যা। অন্য রাজ্যের লোকজন এসে এই রাজ্যকে এমনভাবে গ্রাস করেছে তারা বাংলা শিখবে না বরঞ্চ বাঙালিদেরকেই তাদের ভাষা শিখতে হচ্ছে। শুধু তাই নয় অনেক ঘটনায় দেখা যায় বাঙালিরা তাদের সাথে হিন্দিতে কথা না বললে অপমানসহ নাজেহাল করে ছাড়ে।

৯| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫২

কামাল১৮ বলেছেন: কলকাতার বেশির ভাগ ব্যবসাই নিয়ন্ত্রন করে অবাঙালিরা।বাঙ্গালীরা করে ছোট ব্যবসা।তাদের বেশিরইভাগই চাকুরিজীবী।

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:৪৮

প্রামানিক বলেছেন: আপনি ঠিক বলেছেন। কোলকাতার ব্যাবসা এবং চাকুরির অর্ধেকটাই বিহারীদের হাতে। আর এই বিহারীরা অনেকটা উগ্র স্বভাবের। পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশের বিহারীরা যেমন বাঙালিদের উপর চোটপাট নিত কোলকাতাতেও এখন একই অবস্থা।

১০| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন:



লেখক বলেছেন: পশ্চিম বাংলা আর বাংলাদেশের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে।

-ভাষা, সাহিত্য, শিক্ষা ও পেশায়, কোন বাংলার লোকেরা এগিয়ে আছে?

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:৫৩

প্রামানিক বলেছেন: ভাষা, সাহিত্য, শিক্ষা এবং পেশায় বাংলাদেশকেই আগানো মনে হয়। কারণ তাদের রাষ্ট্রিয় ভাষা হিন্দি আর আমাদের রাষ্ট্রিয় ভাষা বাংলা, আমরা অফিস আদালতসহ সব জায়গায় বাংলা চর্চা করি কিন্তু পশ্চিম বঙ্গের লোকজনকে বাংলার চেয়ে হিন্দি চর্চা বেশি করতে হয়।

১১| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:২৬

রাজীব নুর বলেছেন:



ওদের দেশে ১৪টি বড় ভাষা আছে; সেখানকার বাংগালীরা ৩ ভাষা ( বাংলা, হিন্দি, উর্দু ) ব্যবহার করছে; ওরা ইংরেজীতে বাংলাদেশের থেকে ভালো; ওরা সাহিত্যে আমাদের চেয়ে ভালো; ওরা ভালো প্রফেশানেল, ওরা শিক্ষায় ভালো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.