![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-তোমাকে না কতবার বলছি বিষ্টিতে ভিজবা না.....!!!!?
-সরিইই......
-কিসের সরি....!!!!কোনো সরি নাই।তুমি আমার কথা শোনো না কেন....!!!?
-.......
-ও...এখন আমার কথা শোনতেও ভাল লাগে না,তাই না....!!!?
-সরি বল্লাম তো..... কালকে একটু বাহিরে গিয়েছিলাম,তখনি আর কি.....!!
-ও.. আগে পরে যাওয়া যেত না....!!!?
-উম......
-বুঝছি...আমি চল্লাম।
-শুনো.....?
মেয়েটা ব্যাক করে আবার আমার সামনে আসল।মুখে রাগি ভাব ফোটানোর বৃথা চেষ্টা করছে
-কি হল...ডাকছো কেন....!!?
-ভালবাসি....
ব্যস.. মেয়েটা গলে গেছে।এখন জড়িয়ে ধরলেই রাগ সব পানি
-হু...জানি তো...পারোই তো এই একটা ডায়লগ।এইটা ছাড়া কি আর কিছু জানো....?
-ভালবাসি........
-হ্যা...বুঝলাম।কিন্তু ভালবাস যখন কথা শোনো না কেন...!!?
-ভালবাসি......
এবার মেয়েটা চুপ হয়ে বল্ল
-আমিও...
-কি...?
-ভালবাসি....
-তাহলে কাছে আসো......!!!
মেয়েটি ধীরপায়ে আমার কাছে আসল।এবং তাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরলাম।ব্যস,রাগ পানি হয়ে চোখ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু হল
মেয়েটা এত চঞ্চল ছিল না।চঞ্চল ছিলাম আমি।ভাসিটি তে জোকার হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি পেয়েছিলাম।ভাসিটির ম্যাম রা পযন্ত আমার প্রতি ইম্প্রেস ছিল।যাই হোক,সেদিকে না যাই আমরা ......
ফাস্ট ইয়ারেই আমি সিনিয়র আপুদের সাথে মজা করতাম।তারাও আমার সাথে মজা করত।জোকার হিসাবে আমার অনেক ফ্রেন্ডস হয়ে গেল।ওদের সাথে সারাদিন মজা-মাস্তি করতাম।সিনিয়র আপুদের সাথে ঘুরতে যেতাম বাট যাবতীয় খরচ তাদের দিয়ে করাতাম।
ছাত্র হিসেবেও আমি খারাপ ছিলাম না।এজন্য প্রতিটি স্যার আমাকে খুবই আদর করতেন।আর ম্যাম দের কথা তো...উহুম..উহুম........
আমি প্রেম প্রীতি তে বিশ্বাসী ছিলাম না।আমার অনেক মেয়ে ফ্রেন্ড বলত...."নিল,চল আমরা প্রেম করি"
-আরে প্রেম করছি তো....
-যাহ....!!!!!!ফাজলামি করবি না।
-কেন রে....তোকে কি এখন জড়িয়ে ধরতে হবে নাকি....কিস টিস......
-অসভ্য.....
-যা বাবা... তাহলে কেমনে কি!!!!!
-যখন প্রেমে পড়বি তখন বুঝবি..
আমি ওর কথা আমলে দেই নি...কিরে ভাই...!!!কি প্রেম এ পড়ার কথা বলে.....অদ্ভুদ।
কিন্তু আমি যে প্রেমে পড়বো এটা কি কেউ বিশ্বাস করবে....!!!আমি প্রেমে পড়বো...!!!!আমি!!!!!!!!!!????
আমাদের পরীক্ষার বাকি মাত্র ১ মাস।তাই আমি সব মজা বাদ দিয়ে পড়াশোনায় মনোযোগী হলাম।সিনিয়র আপুরাও আমাকে সাহায্য করে।কিন্তু......
আমাদের ডিপার্টমেন্ট এ নাকি নতুন একটা মেয়ে এডমিট হয়েছে।খবরটা পাই আমার এক ফ্রেন্ড এর কাছে।আরো ইনফরমেশন পেলাম মেয়েটা নাকি দেখতে অনেক কিউট।যারে বলে কিউটের ডিব্বা।বাট একদম চুপচাপ।কারো সাথে তেমন কথা বলে না।
ইনফরমেশন গুলি আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং লাগে।ভাবলাম এতদিনে হয়তো একটা মেয়ের সন্ধান পেলাম।
যথারিতি পরদিন গেলাম ভাসিটি।ক্যাম্পাসের সামনে একটা জায়গা আছে যা খুব নিরব।মেয়েটা কে দেখলাম সেখানে বসে বসে বই পড়ছে।আমি একটু ভাল করে তাকালাম।হু... ইনফরমেশন ইস সত্যি।
-হাই.....
-জি আমাকে বলছেন.....?
-তুমি ছাড়া তো এখানে আর কেউ নেই।
-ও আচ্ছা বলেন....?
-আমি নিল....
-ওকে।আমি আসি।ক্লাস আছে।
বলেই চলে গেল।আমি পুরাই বেকুব হয়ে গেলাম।
ক্লাসে এসে দেখি চুপচাপ বসে আছে।ম্যাম আসছে ক্লাসে।আমি তো আবার ম্যাম দের সাথে....ইয়ে মানে....ফ্রি....
-মিস.....(ম্যামদের আমি মিস বলে সম্বোধন করি)
-হ্যা নিল বল।
-আমাদের ডিপার্টমেন্ট এ নতুন কে নাকি আসছে....?পরিচয় তো করে দিলেন না.....!!!
-ও তাই তো...। এই লামিয়া......
ও মেয়ের নাম তাহলে লামিয়া....!!!!!!
মেয়েটা ধীরপায়ে উঠে দাড়ালো।দেখলাম গাল দুটো লাল হয়ে গেছে।কিরে বাবা....এত লজ্জা কেন এই মেয়েটার।
-এ হচ্ছে লামিয়া।খুবই ভাল স্টুডেন্ট।
সবাই হাই বাই বল্ল।আমি আমার মত বসে আছি।আমি মেয়েটাকে দেখছি।
তারপর থেকেই শুরু হল আমার বাদরামী।মেয়েটাকে সারাদিন জালাতাম।একদিন হল কি......
ক্লাসে আসতে আসতে দেরি হয়ে গেছে।আমি এসে দেখি ক্লাস শুরু হয়ে গেছে।লামিয়ার সাথের সিট টা কেবল খালি পড়ে আছে।আমি ধপ করে ওর পাশে বসে পড়লাম
-এ চাশমিস...ডানে চাপ দে
আমি ততদিনে ওরে তুই বলে ডাকা শুরু করছি কিন্তু সে এখনো আপনিতেই পড়ে আছে।
-দেখেন....আপনি অন্য কোথাও বসুন।
-তুই তো আসলেই কানা...এই খানে এত জায়গা থাকতে আমি অন্য কোথাও বসবো কেন.!! তোর বয়ফ্রেন্ড বসবে এখানে .....?
-দেখেন....খারাপ কথা বলবেন না....
-যা বাবা.... এইটা খারাপ কথা....!!!
-হু।
দেখতে দেখতে মেয়েটার চোখ দিয়ে টুপ করে দুফোটা পানি পরে গেল।আরে এই মেয়ে তো দেখি শুধু কিউটের ডিব্বা না,ইমোশনের ডিব্বাও......
লামিয়াকে জালাতে ভালই লাগত।আমার সব অত্যাচার সহ্য করতো।কখনো চোখ তুলে তাকিয়ে কথা বলতো না।ওর নিরব চোখের অশ্রু আমাকে ওর প্রতি ইম্প্রেস করে তুলছে।
ওর একটা জিনিস আমার খুব ভাল লাগতো।আমি যখন গিটার বাজাতাম তখন আমার বিপরীত পাশে বসত এবং আমার গান শুনত।কিন্তু গান শেষ করার আগেই ওঠে চলে যেত।
-কি ব্যাপার.. কি ভাবছো...??
আমি চমকে ওর দিকে তাকালাম।সেই চুপচাপ মেয়েটি আজ বড়ই চঞ্চল।আর এখন আমি হয়ে গেছি চুপচাপ
-না কিছু না।সরি কি এক্সসেপ্ট করছো....?
-হু....এইবারের মত করে দিলাম।
আমি ওরদিকে তাকিয়ে হাসলাম।আগে আমি জোর খাটাতাম আর এখন ও...।
লামিয়াকে ভাসিটি তেই প্রপোজ করেছিলাম।ওর সেইদিনের অবস্থা মনে পড়লে এখনো হাসি আসে।
সেদিন খুবই বিষ্টি পড়ছিল।আমার মাথায় একটা আইডিয়া আসল।আজকেই ওকে প্রপোজ করে ফেলি।মেঘলাময় দিন।প্রপোজ করার উপযুক্ত সময়
-লামিয়া.....?(ওকে দেখে ডাক দিলাম)
ভীতভাবে আমার সামনে এসে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকল।
-জি বলেন....?
-তোমাকে একটা কথা বলবো....?
লামিয়া অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো....আমি ওকে তুমি করে বলছি এই জন্য....
-জি....!!?
-আম...উম....ইয়ে মানে.....আমাকে তোমার কেমন লাগে....?
-(আস্তে আস্তে) গুন্ডা....
বলে ও নিজেই হাত দিয়ে ওর মুখ চেপে ধরল
-গুন্ডা.....!!!!!!!?? ও শিট......!!!!!এরকম মনে হওয়ার কারন.....?
-আপনাকে রাস্তার টি-স্টলের সামনে সিগারেট খেতে দেখেছিলাম।
-ও তাই....!!!!এই জন্য আমি গুন্ডা....!!!
বলে ওর দিকে এগিয়ে যেতে থাকলাম।ও ভয়ে পিছনে হাটা শুরু করল এবং একসময়.....ধপ করে কাদার মধ্যে পড়ে গেল।একদম অবস্থা পেরেশান।
আমি হাসবো না কাদবো ঠিক বুঝলাম না কিন্তু ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল।ওর চোখে পানি....
-আরে আরে...বোকা মেয়ে... এইভাবে কেউ পড়ে যায়।
-আপনার জন্যই তো পড়ে গেলাম।
বলেই চলে যেতে থাকল...
-আরে আরে কই যাও....!!!!আমার কথা তো শেষ হয়নি....আরে শোন...আমি তোমাকে ভালবাসিইইইই......
কথাটা মনে হয় শুনতে পেয়েছে।একবার পিছনে ফিরে তাকালো আমার দিকে।তারপর চলে গেল।
আমি ভেবেছিলাম ও হয়তো পরের দিন স্যারের কাছে নালিশ করবে।কিন্তু....করে নি।
তারপর থেকে ভাবলাম থাক....মেয়েটাকে জালাতন করার দরকার নেই।ও যেহেতু আমাকে পচ্ছন্দ করেই না,তাহলে ওর পিছনে ঘুরার দরকার কি....
তাই ওর চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল্লাম।আমার আগের লাইফ স্টাইলে চলা শুরু করলাম।
ভাসিটিতে একদিন একটা অনুষ্ঠান ছিল।অনেক রাত করে অনুষ্ঠান শেষ হয়।আমি আমার ফ্রেন্ড ফারিয়ার সাথে কথা বলছিলাম আর লামিয়ার দিকে নজর দিচ্ছিলাম।ফারিয়া ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে
-কিরে ডাক দেব...?
-কারে ডাক দিবি....?
-যার দিকে তাকাইয়া আছিস...
-হু...!!!বলছে তোরে....
-যা যা....বুঝি।
লামিয়াকে দেখলাম একা একা বের হচ্ছে।ওর সাথের ফ্রেন্ড কই....!!!ওকে বাসা পযন্ত এগিয়ে দিয়ে আসা দরকার।কিন্তু আবার কি ভাবে কে জানে....এই মেয়েটার তো খালি সন্দেহ......
আমি বাইকটা স্টাট দিলাম।ওর সামনে গেলাম আর যথারিতি ভয়ে মাথা নিচু করে ফেলছে
-বাসায় যাবে না....?
-হু....
-বাইকে ওঠো....তোমাকে দিয়ে আসি।
-না....!!!!!আমি রিক্সায় যেতে পারবো..।
-এত রাতে রিক্সা পাবে না।
-পাবো....
-ওঠ বলছি...(ধমক দিয়ে)
লামিয়ার চোখ টলমল করে উঠল।মেঘ আসার সংকেত আর কি.....
-এই মেয়ে...তোমার সমস্যা কি..!!!! কথায় কথায় কাদ কেন...!!!!রাত কয়টা বাজে দেখছো...?উঠ আমার পিছনে
এবার আর কথা বাড়ালো না।আমার পিছনে উঠে বসল।
-ভাল করে ধরে বস নাহলে পড়ে যাবে।
মেয়েটা শক্ত করে আমার কাধে হাত রাখল।
খুব চমৎকার সময় কাটালাম।তখন মনে হয়েছিল সবসময় যদি ওকে নিয়ে এভাবে ঘুরতে পারতাম.......!!!!!!
বাসায় নামার পর লামিয়া আস্তে করে হেটে চলে যেতে থাকলো।একটা থ্যাংক্স ও দিল না।মনটা খারাপ করে বাইকে বসে রইলাম।হঠাৎ.....
-নিল......?
আমি ভুল শুনলাম মনে হয়....!!!!!!মেয়েটা আমার সামনে.....
-হ্যা বল.....?
-আমি জানি তুমি আমাকে পচ্ছন্দ কর....কিন্তু আমার ফ্যামিলি কখনো কোনো রিলেশন মেনে নেবে না।কাজেই আমার পিছু ছেড়ে দাও।মায়া বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই...
-আরে মিয়া বিবি রাজী,তো কেয়া কারেগা কাজি...!!!আংকেল আন্টি রে আমি সেটিং দিব।নো চিন্তা।
-উফ..!!! তোমার সাথে কথা বলাই ভুল হইছে।আমি গেলাম...
-আরে শোনো না...তোমার মুখে তুমি ডাক শুনতে কিন্তু অসাম লাগে।বাই দা ওয়ে,তুমি কি আমাকে ভালবাসো....?
-না.....আমি গেলাম
আমি জানি মেয়েটা প্রেমের সাগরে ডুব দিছে।নাও ওয়েট ফর এ চ্যান্স।
রাতেই সব কয়টা বান্দর মানে আমার ফ্রেন্ড গুলিরে ফোন দিয়া একজায়গায় আনলাম পরামশ করতে।
-ওক্কে মামা,এই প্লানটাই কাজে লাগামু।কে কি করবি বুঝছোস তো.....!!!!
-হ.....(সবাই)
-ওকে।সেই অনুযায়ী কাজ করিস
প্লান টা ছিল এরকম.. আমার ফ্রেন্ড লামিয়াকে খবর দিবে যে আমার এক্সিডেন্ট হয়েছে।মারা যাবার অবস্থা।একটু ফিল্মি স্টাইল আর কি....এখন কাজে দিলেই হয়।
পরদিন হাত পায়ে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে শুয়ে রইলাম।বাসায় কেউ ছিল না।তাই নো চিন্তা....
-মামা...অয় আইতাছে...তাড়াতাড়ি রেডী হ।
আমি চোখ বুঝে ফেল্লাম।অনুভব করলাম কেউ আমার পাশে বসেছে এবং আলতো করে আমার হাতটা ধরছে।
-নিল.....?
আমি আস্তে আস্তে চোখ খোলার অভিনয় করলাম।মেয়েটার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরল
-কিভাবে হল.....?
-তোমাদের বাসা থেকে আসার সময়....তুমি তো আমাকে পচ্ছন্দ কর না।তোমাকে বিরক্ত করি এই জন্য আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিছে।
আমার মুখে হাত দিয়ে বল্ল
-এত বেশি বুঝো কেন....!!!আমি কি কখনো বলছি তুমি আমাকে বিরক্ত কর....?তোমাকে আমিও পচ্ছন্দ করি কিন্তু তোমার চলাফেরায় আমার কাছে মনে হত তোমার এই আবেগ কয়েকদিন পরই চলে যাবে।তাই ভয়ে তোমার সামনে আসি নি।
-এখন কি মনে হল....?
-জানি না....
লামিয়ার হাত টা ধরলাম
-ভালবাসো আমায়...?
নিরবে মাথা ঝাকালো
-ভালবাসলে বিশ্বাস করতে হয়।করবে....?
-হুম।
সেই থেকে একসাথে পথ চলা শুরু।আস্তে আস্তে ওর মনের ভয় দুর হয়ে গেল।এখন আমাকে ওর জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনে করে।আমিও করি।
-ও হ্যালো......!!!!!একা একা হাসো কেন....????
আমি হাসছি...!!!!!ওয়েল হাসারি কথা.....
-একদমই না।
-দেখো...ন্যাকামি করবা না।তাহলে কিন্তু বিয়ে কেনসেল।
-আচ্ছা,এখন কিছু হইলেই তুমি আমাকে এই হুমকি দাও কেন....!!!!
-হিহি....তোমার করুন চেহারা টা অনেক ভাল লাগে... তাই...
-তবে রে....
হুম....মেয়েটার আর আমার বিয়ের ডেট ফাইনাল।সবাইকে অগ্রিম নিমন্ত্রণ.....
©somewhere in net ltd.