![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সিসমোলজির অনুমানে আঁকা পৃথিবীর ভিতরের বিভিন্ন স্তরের ছবি অন্যভাবে প্রমাণ করতে গেলে কি সমস্যা?
বিরাট সমস্যা !
কারণ এতে পৃথিবীর ভিতরের থিওলজিক্যাল মডেলের আলোচনা আবার ফিরে আসবে। যতক্ষন পর্যন্ত ভুপৃষ্ঠের অভ্যন্তরে ড্রিলিং প্রজেক্টগুলোকে কোন না কোন ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে, ততক্ষন পর্যন্ত প্রচলিত অতি সরলিকৃত সেকু্লার গল্প বিক্রি করে যাওয়াও সম্ভব হবে।
স্নায়ুযুদ্ধের সময় আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রথম দুইটা ফ্ল্যাগশিপ ড্রিলিং প্রজেক্টের ইতিহাস ঘাটলে উপরের কথার সত্যতা পাওয়া যায়।
প্রোজেক্ট মো-হোল
===========
প্রথম প্রজেক্টটির নাম প্রোজেক্ট মো-হোল (Project Mohole)। আমেরিকার মেইনস্ট্রিম (জায়নিষ্ট লবির আশির্বাদ পুষ্ট) বৈজ্ঞানিক কমিউনিটির বাইরের একটা গ্রুপ (American Miscellaneous Society) এই প্রকল্পের স্বপ্নদ্রোষ্টা ছিল। সমুদ্রের তলদেশে, যেখানে ধারণা করা হয় যে পৃথিবীর উপরিভাগের ক্রাস্ট সবচেয়ে পাতলা ( ৫- ১০ কি.মি.), সেখানে ড্রিল করে ক্রাস্টের নীচে আসলে কি আছে তা জানা ছিল এই প্রোজেক্টের উদ্দেশ্য।
শুরু থেকেই প্রোজেক্ট মো-হোল বাস্তবায়নে বিভিন্নরকম বিরুপ মন্তব্য, বাঁধা, নানান রকমের ষড়যন্ত্র হতে থাকে। অনেক বাঁধা অতিক্রম করে প্রকল্পটির প্রাথমিক ফেইজ অত্যন্ত সফল ভাবে শেষ করার পর এই প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট সবার সাথে রীতিমত যুদ্ধ ঘোষনা করা হয় এবং শেষমেশ নানান অপবাদ গায়ে নিয়ে প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকজন পদত্যাগ করে কোন রকমে পালিয়ে বাঁচে। ১৯৬৩ সালে মার্কিন কংগ্রেসে যখন এই প্রকল্প নিয়ে শুনানি চলছিল, তখন প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির জিওলজির অধ্যাপক হোলিস হেডবার্গ অত্যন্ত জোর দিয়ে বুঝনোর চেষ্টা করছিলেন যে "..this project can readily be one of the greatest and most rewarding scientific ventures ever carried out. I must also say that it can ..." এই কথা বলার কারণে উনাক্বে তিরষ্কার করা হয় এবং উনি পদত্যাগ করেন এবং প্রোজেক্ট মো-হোল খতম করে দেওয়া হয়। এর পরবর্তিতে নেওয়া এইধরণের প্রোজেক্টগুলো জায়নিষ্ট লবি নিয়ন্ত্রন করে। এবং পরবর্তি কোন প্রজেক্টেই এখন পর্যন্ত ক্রাস্টের নীচে আসলে কি আছে তা জানার চেষ্টা করা হয় নাই।
কোলা সুপারডিপ বোরহোল প্রোজেক্ট
======================
২য় প্রোজেক্টটির নাম Kola Superdeep Borehole Project, আমেরিকান মো-হোল প্রোজেক্টের মত এইখানে অবশ্য পৃথিবীর ক্রাস্টের নীচে কি আছে তা বের করা উদ্দেশ্য ছিল না। স্থলভাগের উপরে নেওয়া এই প্রোজেক্টটা ছিল সোভিয়েত ফিনল্যান্ড বর্ডারে। বৈজ্ঞানিক গবেষনার জন্য পৃথিবীর যতটা গভীরে যাওয়া যায় - এইরকম একটা উদ্দেশ্য নিয়ে সোভিয়েতরা এই প্রোজেক্টটা আরম্ভ করেছিল। ১৯৬৫ সালে হাতে নেওয়া এই প্রোজেক্ট পরবর্তী ৩০ বছর ধরে চলতে থাকে, এবং ১৯৭০ থেকে ৯২ সাল পর্যন্ত এইখানে কয়েকটা ফেইজ-এ ড্রিলিং চলে। একাধিক ফেইলুরের পরেও সোভিয়েতরা প্রায় ১২ কিলোমিটারের মত গভীরে যেতে সমর্থ হয় এবং এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে গভীর বোর হোল। কোলা সুপারডিপ বোরহোল প্রকল্প করতে যেয়ে কয়েকটি অপ্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া যায়।
সিসমিক সার্ভে অনুযায়ী ধারণা করা হয়েছিল যে ৭ কিলোমিটার গভীরে একটা গ্রানাইট-ব্যাসল্ট ডিকন্টিনিউইটি আছে। অর্থাৎ ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত গ্রানাইট পাথরের স্তর শেষ হলে ব্যাসল্টের স্তর পাওয়া যাবে। কিন্তু ড্রিলিং করে ৭ কিলোমিটারের পরও শুধু গ্রানাইটই পাওয়া গিয়েছিল। - এই পয়েন্টটা খুব গুরুত্বপূর্ন, কারণ এই আবিষ্কার রিফ্লেকটিভ/ রিফ্র্যাকটিভ সিসমোলজির গ্রহনযোগ্যতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয় এবং সিসমোলজির অনুমানের উপরে ভিত্তি করে তৈরী পৃথিবীর ভিতরের নানান স্তরের যেই বর্ননা দেওয়া হয়, তার ভিত্তিমূলে কুঠারাঘাত করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেংগে যাওয়ার পরে ইউরোপ আমেরিকার (জায়নিষ্ট সমর্থনপুষ্ট) বিজ্ঞানীদের একটি দলকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সিসমোলজির যন্ত্রপাতি নিয়ে কোলা বোরহোল প্রকল্পের এই গ্রানাইট-ব্যাসল্ট anomaly পরীক্ষার করে একটা গোঁজামিল টাইপের ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর জন্য ব্যপক দৌড়ঝাপ করতে দেখা যায়।
কোলা বোরহোলের ৩-৬ কিলোমিটার গভিরতায় পানি পাওয়া যায়, ভুপৃষ্ঠের এত নীচে পানি থাকবে এইটা কেউ আশা করে নাই। ৬ কিলোমিটার গভিরে কিছু মাইক্রো অর্গানিজমের ফসিল পাওয়া যায় - এইটাও কেউ আশা করে নাই। আরেকটা অপ্রত্যাশিত আবিষ্কার ছিল বিপুল পরিমান হাইড্রোজেন গ্যাস। এছাড়াও অনেক গভীরে সোনার খনির অস্তিত্ব পাওয়া সহ আরও অনেক কিছু পাওয়া যায়।
রাশিয়ার সাইবেরিয়ায় আরেকটি বোরহোল খুড়তে গিয়ে নাকি সোভিয়েতরা দোজখ পর্যন্ত চলে গিয়েছিল- এরকম একটা বিষয় অলটারনেটিভ মিডিয়ায় এত বেশি পরিমান প্রচার হয়, যে জায়নিষ্ট নিয়ন্ত্রিত মেইনস্ট্রিম মিডিয়াকে এই কথা রেগুলার বেসিসে ডিবাংক করতে হয়। অনেকে বলে কোলা সুপারডিপ বোরহোলেই এই ঘটনা ঘটেছিল এবং এজন্যই রাশিয়ান সরকার এই প্রজেক্ট বন্ধ করে দিছে।
রিফ্লেকটিভ/ রিফ্র্যাকটিভ সিসমোলজির অতি সরলিকৃত অনুমানে আঁকা পৃথিবীর ভিতরের কয়েক লেয়ার ডিমের কুসুমের মত যেই ছবি জায়নিষ্টরা প্রচার করে সেইটা সম্ভবত বিবর্তনবাদের পরে এদের তৈরী করা সবচেয়ে বড় গাঁন্জা। স্টিফেন মেয়ারের ডারউইনস ডাউট, সিগনেচার ইন দ্যা সেল - বইগুলি প্রকাশের পরে নিও ডারউইনবাদের গাঁন্জার মেয়াদ উত্তীর্ন হয়ে গেছে। যদিও কিছু জায়নিষ্ট লবি জান-প্রাণ দিয়ে এই মেয়াদ উত্তির্ন গাঁন্জা এখনও টেনে যাচ্ছে। আশা করা যায় আগামী কয়েক দশকের মধ্যে সেকুলারিজমের সমস্ত দর্শন আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
তথ্যসুত্র:
https://en.wikipedia.org/wiki/Project_Mohole
https://en.wikipedia.org/wiki/Kola_Superdeep_Borehole
https://en.wikipedia.org/wiki/Reflection_seismology
https://en.wikipedia.org/wiki/Well_to_Hell
https://www.youtube.com/watch?v=L0-hgSjnomA&t
https://www.youtube.com/watch?v=eW6egHV6jAw&t
https://en.wikipedia.org/wiki/Earth's_inner_core
(সংগৃহীত)
©somewhere in net ltd.