![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ক্ষমতায় আরোহণ এবং তথায় অবস্থান বিষয়টির সাথে সব চেয়ে বেশী মিল হচ্ছে মানবজীবনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া এবং সংসার করার সাথে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সকল মানুষই বিবাহ করে। তবে অনেকের সংসার আবার সুখের হয় না, এমনকি অনেকের বিবাহ, বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়ায়। বিবাহিত ব্যক্তি অনেক চিন্তা, চেতনা, গবেষণা এবং আলাপ-আলোচনা করে বৈবাহিক জীবন সুখের করতে কিন্তু দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যর্থতাই হয় একমাত্র পরিণতি। বিষয়টির আশ্চর্যজনক মিল রয়েছে তৃতীয় বিশ্বের কোন নেতা বা দলের ক্ষমতায় যাওয়া এবং সেখানে থাকার মধ্যে। বাংলাদেশের গত ৪৩ বছরের ইতিহাস বারংবার আমাদেরকে একই শিক্ষা দিচ্ছে তারপরও আমরা শিক্ষা নিতে ব্যর্থ।
প্রশ্ন হচ্ছে- কেন শিক্ষা নিতে ব্যর্থ ? উত্তর অনেক- যা জানলে কিংবা শুনলেই যে চেতনা/উপলোব্ধির পর্যায়ে পৌঁছাবে তার গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না। তথাপিও বিষয়টি আলোচনা করা প্রয়োজন। ৬/৬টি দৃষ্টি থাকার পরও মানুষ অন্ধের মতো আচরণ করে ২টি সময়। না, অন্ধকারে নয়; এক হচ্ছে প্রেমে পরলে অপরটি হচ্ছে ক্ষমতায় বসলে। প্রেমের অন্ধত্ব ধীরে ধীরে সচ্ছতা লাভ করে, অপরদিকে ক্ষমতার অন্ধত্ব ধীরে ধীরে গাঢ় হতে থাকে।
বর্তমান সময়, ক্ষমতাকে খোদাপ্রদত্ত দায়িত্ব হিসেবে না নিয়ে অধিকাংশ সময়েই উপভোগের সুযোগ হিসেবে নেতারা মনে করে, বিড়ম্বনার শুরুটা ওখানেই। ক্ষমতায় আসীন ব্যক্তিটি তোষামদী আসা করতে পারে, সেক্ষেত্রে ততবেশি বিপদ নেই। পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণা করে যখন ওই ক্ষমতাসীন ব্যক্তির চতুর্পার্শ্বে আত্মসম্মানহীন চাটুকার আর তোষামদকারীরা ভিড় করে। ক্ষমতায় আসীন ব্যক্তিটি তখন নিজের অজান্তে অন্ধত্ব বরণ করে নেয় এবং ধীরে ধীরে তা গভীরতা লাভ করতে থাকে।
চাটুকার আর তোষামোদকারী দিয়ে যে দেশ চালানো যায় না, এ কথাটি যতদিন তৃতীয় বিশ্বের নেতারা বুঝবে না ততদিন প্রথম বিশ্ব হওয়ার ধারণা করাটা হবে ‘কল্পনার অলিক উদ্ভাবন।’ এখানে যে বিষয়টি নেতার বুঝতে হবে, তা হচ্ছে যখন কোনো ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক অন্তর্দৃষ্টি, দুরদৃষ্টি এবং প্রজ্ঞাসম্পন্ন হয়, সেই সাথে যে বিশেষ গুণটি সংযোজিত হয়, তা হচ্ছে আত্মসম্মানবোধ। এইসব গুণে গুণান্বিত ব্যক্তির পক্ষে কখনই তোষামোদী কিংবা চাটুকারী সম্ভব নয়। আর এখানেও তৃতীয় বিশ্বের নেতারা আত্মঘাতি মূলক ভুলটি করেন। আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে তৃতীয় বিশ্বের নেতারা পছন্দ করেন না। কারণ তারা নেতার তোষামোদী চাহিদা পূর্ণ করতে ব্যর্থ।
বৃক্ষ তোমার নাম কি? ফলে পরিচয়। একজন নেতার চরিত্র কি তা বুঝা যায়, তার নিযুক্ত উপনেতা এবং উপদেষ্টাদের চরিত্র অবলোকন করলে। যদি দেখা যায় যে, অধিকাংশ নেতা এবং উপদেষ্টারা নাস্তিক, মাতাল এবং ইসলামবিদ্বেষী, সেক্ষেত্রে নেতা যত ভোড়ে উঠেই নামায পড়–ক না কেন, দৈনিক যতই পবিত্র কুরআন শরীফ পাঠ করুক না কেন, তিনি একজন ইসলামবিদ্বেষী এবং মুসলমানদের শত্রু। রাজনৈতিক নামায এবং রাজনৈতিক পবিত্র কুরআন শরীফ তেলাওয়াত কখনই মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক গ্রহণযোগ্য হবে না। সংসার সুখের হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা এবং সুখ-দুঃখ ভাগাভাগির মধ্যে। জোর করে কখনই সংসার সুখের হয় না।
ঠিক তেমনি, বন্দুকের ভাষায় কথা বলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতায় থাকা সম্ভব নয়, গায়ের জোরে স্ত্রীকে খুশি করা যায় না। যদি যেতো, তবে শুধু মাত্র বডি বিল্ডারদের স্ত্রীরাই সংসার করতো আর বাকীদের হতো বিবাহ বি”্ছদে। কোন প্রকার শাসন পদ্ধতিতেই জনগণকে গায়ের জোরে খুশি করা যায় না, বরং সেক্ষেত্রে ক্ষমতা থেকে বিদায়টা হয় অত্যন্ত বেদনাদায়ক, ক্ষেত্র বিশেষে মর্মান্তিক। আমাদের জাতীয় ইতিহাসে অতীতের স্বইরাচারদের পরিনতি শিক্ষার জন্য যথেস্ট। ক্ষমতায় সুখে/শান্তিতে থাকতে হলে তাকে হতে হবে অতীতের খুলাফায়ে রাশিদীনদের মতো কিংবা নিদেন পক্ষে মালয়শিয়ার মহাতীর এর মত। মহাতীরের ২২ বছর এমনকি পশ্চিম বংগের জ্যোতি বসুর ২৫ বছরে যত রাজনৈতিক হত্যাকা- হয়েছে, গত পাঁচ বছরে আমাদের দেশে হয়েছে তার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি। বিষয়টি নিশ্চই গভীর চিন্তার অবকাশ রাখে।
©somewhere in net ltd.