নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার প্রিয় দেশ বাংলাদেশ

আমার প্রিয় দেশ বাংলাদেশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতীয় চেতনাতে সাঁড়াশী আক্রমণ

১০ ই আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৫:১৯

চেতনাতে আবার আক্রমণ হয় কি করে? এটা কি কোনো বিশ্বাসযোগ্য কথা হলো? মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করেনি এমন ব্যক্তিবর্গের ক্ষেত্রে উল্লিখিত প্রশ্নগুলো একান্ত স্বাভাবিক, সহজে বুঝার জন্য যদি বলা হয়, ব্যাবসা-বাণিজ্যে তৈরি পণ্যের বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য প্রচার একটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি যে, ‘প্রচারেই প্রসার।’ আর সে কারণেই আমরা রেডিও টেলিভিশনে দেখতে পাই এত বিজ্ঞাপন আর শহরজুড়ে ছোট বড় হাজারো বিলবোর্ড। মনস্তাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা চিন্তা করলেন, প্রচারের মাধ্যমে যদি একটি পণ্য সাধারণ জনগণকে ক্রয় করতে বাধ্য করানো যায়,তবে একটি স্বাধীন জাতিকে একই পদ্ধেিত পরাধীন করা যাবে না কেন? ধ্বংস করা যাবে না কেন? শুনতে বিষয়টি জটিল মনে হলেও বুঝতে সহজ। শুধু গত দুই দশকের ইতিহাসের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে যে, পৃথিবীর সকল মুসলমান দেশে চলছে ব্যাপক হানাহানি, রক্তের বন্যা আর নারকীয় ধ্বংসযোগ্য। অথচ পাশের অমুসলিম দেশগুলো দ্রুত উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। অমুসলিম দেশসমূহে চলছে গণতন্ত্র চর্চা আর মুসলমান দেশসমূহে হয় চলছে রাজতন্ত্র কিংবা গণতন্ত্রের ভয়ঙ্কর রূপ, যেখানে গণহত্যা ক্ষমতাশীনদের গণতান্ত্রিক অধিকার।



আমাদের দেশের কথায় আসা যাক, ৪৪ বৎসর হয়েছে দেশ স্বাধীন। তথাকথিত গণতন্ত্র চর্চা করছি তবে সার্বক্ষণিক একটি যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব। নেতারা রাজনৈতিক সংলাপকে জলাঞ্জলী দিয়ে ব্যস্ত অশ্লীল বাক্য বিনিময়ে আর রণহুংকারে। ক্ষমতা আর শক্তি প্রয়োগের দক্ষতা এখানে মূল পার্থক্য নির্ণয় কারী, প্রজ্ঞা এবং বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা এখানে অপাংতেয়। চরম মূর্খতা আর নির্লজ্জ চাটুকারীতাকে এখানে তুলনা করা হয় স্বর্গের সিঁড়ির সাথে। তাই মুসলমান দেশসমূহ যখন মনস্তাত্ত্বিক আক্রমনের স্বীকার হয় তখন তারা উপলব্ধি পর্যন্ত করতে পারে না। দায়িত্বপ্রাপ্ত পেশাজীবি এবং নেতৃবৃন্দরা তখন গভীর আনন্দে মগ্ন থাকে ক্ষমতার মধুময় সুখসুধা পানে। যখন দেশসমূহে জেএমবি, তালেবান, আইএসএল’এর মতো দলসমূহ হঠাৎ আবির্ভাব, হয় তখনই শুরু হয় ছুটাছুটি। ততদিনে হয়ে যায় অনেক দেরি। দু’পক্ষের কাছেই চলে আসে অনেক অস্ত্র, গোলাবারুদ, দেশ তখন পতিত হয় ধ্বংসের ধারাবাহিকতায়।

বাংলাদেশের উপর যে দীর্ঘমেয়াদী মনস্তাত্ত্বিক আক্রমণ চালু হয়েছে তার জন্য শত্রুপক্ষ তেমন কোনো রাখঢাকের ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন বোধ করে না। কারণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘুষের বিনিময়ে নির্লিপ্ত কিংবা পেশাগত দক্ষতার অভাবে তা বুঝতে অক্ষম। ভারতীয় সিরিয়াল এদেশের পারিবারিক বন্ধনকে ঠুনকো করে দিচ্ছে। সরকারকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে শিশু/কিশোরদের জন্য যৌন শিক্ষা চালু করেছে।

রাস্তার পার্শ্বে বড়/ছোট বিলবোর্ডসমূহ নগ্নভাবেই যৌনাত্মক ইঙ্গিতের প্রচারণা চালানো হচ্ছে, এর ভয়ঙ্কর ফলাফল জানতে হলে পড়ুন

দেশে ধর্ষণের মতো ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে।

ব্লগ এবং ফেসবুকের মাধ্যমে একটি দল হাজার কোটি টাকা খরচ করছে নাস্তিকতা প্রচার/প্রসারে

এ ছিল সাঁড়াশীর একটি হাতল। অপর হাতলটি হচ্ছে এদেশে সালাফী সন্ত্রাসী কিংবা আত্মঘাতী বোমারু তৈরি করার প্রচেষ্টা। এর দায়িত্বে আছে জামাত শিবিরের তথাকথিত হুজুরেরা। সৌদি এ্যাম্বেসী প্রতি তিন মাসে প্রতিটি ডিভিশনে ১০০ করে মোট ৭০০ হুজুরদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। নাম রেখেছে ‘ইমাম প্রশিক্ষণ।’ আসলে বিষয়টি হচ্ছে সালাফি মগজ ধোলাই। এই সৌদি ইহুদী রাজবংশ তৈরি করেছে আলকায়েদা, আমেরিকা ও ইসরাইলি সহায়তায়। আর এরাই তৈরি করছে ইরাকের আইএসআইএল, আফগানিস্তানের তালেবান, আমাদের দেশের আহলে হাদীছ/জেএমবি এবং পৃথিবী জুড়ে ইসলামের নামে ভ্রান্ত আক্বীদার সকল সন্ত্রাসীদের দল। বাংলাদেশের প্রত্যান্ত গ্রাম অঞ্চলে তারা তৈরি করে সুন্দর সুন্দর মসজিদ, মাদ্রাসা, সহযোগিতায় কাতার কিংবা কুয়েত ইসলামিক সোসাইটি। ঐসব মসজিদে ওরা ইমাম নিয়োগ দেয় সমাজে ওহাবী চেতনা বিস্তারের জন্য।

এসব প্রচেষ্টার কারণেই আজকে আমাদের সমাজ থেকে ‘মীলাদ শরীফ’ বিদায় নিচ্ছে, চালু করা হয়েছে ‘দোয়া মাহফিল।’ জানাযার নামাযের পর হাত তুলে দোয়া করা যাবে না, ওহাবী প্রচারণার কারণে মেয়েরা মসজিদে যেতে শুরু করেছে। তারাবীহ নামায ২০ রাকায়াতের স্থলে ৮ রাকায়াত পড়া, নামাযে রফেদাইন করা, পবিত্র ঈদের সময় কোলাকুলি তিন বার নয় একবার, হানাফী মাযহাব থেকে লা-মাযহাবী কিংবা আহলে হাদীছ হওয়া। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যে উপলব্ধি স্বল্প জ্ঞানের মুসলমানদের দেয়া হচ্ছে, তা হলো আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরি নন, তিনি মাটির তৈরি। নাউযুবিল্লাহ! এ সকল ভ্রান্ত আক্বিদা আমাদের দেশের মুসলমানদের মনে প্রবেশ করিয়েছে ওহাবী নিয়োগকৃত হুজুরেরা। অথচ মহান আল্লাহ পাকের প্রেরীত প্রথম বানীর ২য় আয়াত শরীফটিই হচ্ছে, “তিনি সৃজন করেছেন মানুষকে রক্তপিন্ড থেকে।” আমরা সাধারণ মানুষ সৃষ্টি হয়েছি পবিত্র রক্তপিন্ড থেকে অথচ নবীদের নবী, রসূলদের রসূল, যিনি মহান আল্লাহ পাকের প্রথম সৃষ্টি (হাদীছ শরীফ) তিনি মাটির তৈরি। আখিরী যামানায় মুসলমানদের দুর্ভাগ্য যে, ওহাবী হুজুরেরা এই ভ্রান্ত ব্যাখ্যা দিয়ে ভুল চেতনা প্রবেশ করিয়ে বর্তমান যামানার অধিকাংশ মুসলমানকে জাহান্নামী করছে।



বাংলাদেশের ভ্রান্ত আক্বীদার আত্মঘাতী বোমারু জেএমবি সদস্যদের ৯৯% হচ্ছে আহলে হাদীছ, নাম ভিন্ন, “আহলে হাদীছ” কিন্তু চেতনাতে ওহাবী। অনেকেই হয়তো অতীতে হানাফী মাযহাবের ছিলো। ওহাবী সৌদি রাজা সত্যিকার অর্থে ইহুদী। ইহুদী জন পল খ্রিস্টান হয়ে, বাইবেল লিখে খ্রিস্টানদের বুঝিয়েছে যে, তাদের নবী সাধারণ মানুষ নন, তিনি গড-এর পুত্র তথা স্বয়ং গড। নাউযুবিল্লাহ! ঐ একই ইহুদী, আরবের রাজা হয়ে মুসলমানদের ধারণা দিচ্ছে যে, আমাদের নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের নবী নন, সাধারণ মাটির মানুষ। তিনি হায়াতুন নবী নন, হাজির নাজির নন। তিনি আমাদের কার্যকলাপ দেখতে পাচ্ছেন না, তবে ক্বিয়ামতের মাঠে তিনি আমাদের শাফায়াত (সাক্ষী এবং সুপারিশ) করবেন কিছু না দেখেই। নাউযুবিল্লাহ! এভাবেই আমাদের সমাজে একদিকে তৈরি করা হচ্ছে তথাকথিত প্রগতিবাদী নাস্তিক এবং অপরদিকে ভ্রান্ত আক্বীদার ওহাবী ফেনাটিক।



দেশ ও জাতির শ্রত্রুরা আমাদের প্রিয় সেনাবাহিনীকে নিয়ে কি করছে? ওখানেও চলছে অত্যান্ত সূক্ষ্ম পরিকল্পনার মগজ ধোলাই। আমেরিকা আমাদের সেনাবাহিনীতে সালাফী চেতনার মগজধোলাই করার জন্য অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য(?) এক প্রস্তাব উত্থাপন করে। তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চেপলিন কোর (ধর্মীয় কোর) চালু করার প্রস্তাব দেয়। মহাশক্তির অধিকারী (?) আমেরিকার প্রস্তাব ধর্ম সম্বন্ধে অজ্ঞ প্রতিটি মুসলমান দেশের সেনাবাহিনীর কাছে শিরোধার্য। যেখানে সমস্ত মুসলমান দেশগুলোকে ইহুদীদের গোলাম আমেরিকা ধ্বংস করে দিচ্ছে সেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে তারা একটি ধর্মীও উইং (কোর) খুলতে চায়। দূর্ভাগ্য যে, এ নাছারা আমেরিকার প্রস্তাব অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৩ জন মেজর এবং একজন মহিলা ক্যাপ্টেনকে দীর্ঘ ৫ মাসের প্রশিক্ষণের জন্য আমেরিকা প্রেরণ করেছে। আসলে আমেরিকার চেপলিন কোর (ধর্মীয় কোর) চালু করার প্রস্তাবটি সম্পূর্ণ এক ভাওতাবাজী। ওরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে একদল কট্টর সালাফী চেতনার দল তৈরি করতে চায়। উদ্দেশ্য? বাকী মুসলমান দেশসমূহের মত বাংলাদেশকেও ধ্বংস করা।



পাকিস্তান সেনাবাহিনী তালেবানদের সাথে যুদ্ধ করছে গত ১৪/১৫ বৎসর ধরে। কিন্তু কিছুই তারা করতে পারছে না মানুষ মারা ছাড়া। কারণ তাদের নিজেদের মধ্যেই অনেকে আছে যারা তালেবান চেতনায় বিশ্বাসী। আমাদের সেনাবাহিনীকে যদি ঐ ধরনের চেতনায় প্ররোচিত করা যায়, তবে এ দেশেও একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের সূত্রপাত করা যাবে। অমুসলিমদেরকে আমাদের দেশ আক্রমন করার প্রয়োজন নেই, তারা শুধু অস্ত্র চালান দিবে আর আমরা নিজেরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ চালিয়ে যাব। মহান আল্লাহ পাক শত্রুর এই সাঁড়াশি মনস্তাত্ত্বিক আক্রমণ থেকে আমাদের দেশকে রক্ষা করুন। আমীন!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.