![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
--- : শর্ত প্রযোজ্য : ---
যে মানুষটিকে নিয়ে এই লেখা কিংবা যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে তা কোন গল্প নয় কিংবা কোন ইতিহাসও নয়, একজন সংগ্রামী মানুষের জীবন থেকে নেওয়া সত্য এবং বাস্তব ঘটনা। ঘটনার স্বাক্ষী আমি স্বয়ং। যে অনুভূতি বা আবেগ সে মুহূর্তে কাজ করেছিল সে সত্য আবেগের বিন্দুমাত্র হয়ত এ লেখায় তুলে ধরতে পারবনা তার ব্যার্থতা নিয়েই শুরু করছি।
ছেলেটি আমার পরিচিত কেউ নয়, কাজ কিংবা ব্যবসায়ীক সূত্রে দেখা, এতটুকুই। আমি তখন অফিসের বাহিরে একটি কাজে, যেখানে কাজ সারছি ঠিক সেখানেই ছেলেটি আমার সামনে। তখন আমার মোবাইলে একটি ফোন আসে, ’জরুরী রক্ত প্রয়োজন’, ফোনেই কথা বলছিলাম কি রক্ত, কখন লাগবে এই বলে দেখছি বা জানাচ্ছি বলে ফোনটি রেখে দিলাম। ছেলেটি আমার সব কথাগুলোই শুনছিল, ফোন রাখার পরপরই জানতে চাইল কোন গ্র“পের রক্ত প্রয়োজন, বললাম, ছেলেটি জানাল এই গ্র“পের রক্ত ও তার, এবং কোন অনুরোধ ছাড়াই রক্ত দেবার ইচ্ছে পোষন করল। অনেকটা আশ্চর্যই হলাম, তাকে কিছু না বলতেই এভাবে রাজী হওয়ায়। এও ভেবে ভাল লাগছিল আমাদের যুব সমাজের মূল্যবোধ দেখে। ছেলেটিকে নিজেই সাথে নিয়ে গেলাম, টেস্ট কমপ্লিট করে রক্তও নেয়া হল। রক্ত দেয়া শেষে তার বিশ্রাম এবং নাস্তা শেষ করে তাকে কিছু সম্মান করতে চাইলাম। ছেলেটি নিতে নারাজ, সে কিছুতেই তা গ্রহণ করবেনা শুধু একটি আমার ভিজিটিং কার্ড চাইল। আশ্চর্যের মাত্রাটা আরো বেড়ে গেল, কোন দ্বিধা না করে তাকে ভিজিটিং কার্ডটি দিলে ছেলেটি বিদায় নিল।
অনেকদিন পর, অফিসের গেষ্ট রুমে একজন আমার জন্য অপেক্ষা করছে জেনে রুমে গিয়ে ঠিকই তাকে চিনতে পারলাম, সেই ছেলেটি যে আমার রিলেটিভকে রক্ত দিয়েছিল। যথাসাধ্য আপ্যায়ন করার চেষ্টা করলাম। জানতে চাইলাম হঠাত এতদিন পর। ছেলেটি একটি বায়োডাটা হাতে দিল, শুধু জানাল আমি যদি পারি তার জন্য কোন উপকারে আসতে তাহলে এই বায়োডাটা দিয়ে একটি চাকরী যোগাড় করে দিতে। আমার বলার কোন ভাষা ছিলনা বায়োডাটাটি রেখে তাকে বিদায় করেছি।
পরেরদিন তাকে আবার অফিসে আসতে বলি। কথা হয় তার পরিবার, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে। “ছেলেটি বি.এ পাশ কিন্তু যোগ্যতানুযায়ী কোন চাকুরী মিলছেনা, সংসারে বাবা-মা, ভাই-বোন আছেন তারা থাকেন গ্রামে, সেই সংসারের বড় সন্তান, ভরণপোষনের দায়িত্ব তার উপর, ঢাকায় এক মেসে থাকে, ছোট-খাট অল্প বেতনের কাজ করে যা দিয়ে তার সংসার চলেনা। যখনই এরকম কারও রক্ত দেয়ার উপলক্ষ আসে নিজের রক্ত দান করে কিন্তু তার প্রতিদান অর্থ দিয়ে নেযনা, শুধু একটি ভিজিটিং কার্ড নেয়, যা পরে সেখানে বায়োডাটা দিয়ে আসে একটি ভাল চাকুরীর প্রত্যাশায়।” - এই হল ছেলেটির জীবনের সত্য ঘটনা।
আমি অবাক হই, ভাবতে কষ্ট হচ্ছিল যখন জানতে পারি জিবীকার তাগিদে রক্ত বিক্রী করে। শুধু সংসার জীবনে ছোট্ট একটি আশা নিয়ে বেচে থাকার তাগিদে। জানি, এসব সংগ্রামী মানুষগুলোর জীবনকথা কখনো পত্রিকার পাতায় শিরোনাম হবেনা কিংবা রঙ্গিন টেলিভিশনের পর্দায়ও কষনও উঠে আসবেনা, তবুও এরা আমাদের আশেপাশেই জীবন যুদ্ধে যোদ্ধা হয়ে বেচে থাকে।
ঘটনাগুলো আমাদেরকে সাময়িক সময়ের জন্য আলোড়িত করে, আবেগ, বিবেককে নাড়া দেয়। সবই ক্ষনিকের জন্য আবার ভুলে যায়, ভুলে গিয়ে আমাদের আগের অবস্থানে ফিরে যাই, কিন্তু ওই সংগ্রামী মানুষগুলোর জীবনে কতইবা পরিবর্তন আসে !
আমিও ভুলে গিয়েছিলাম, হঠাতই ওর কথা মনে পড়ে যায়, পুরোনো সব বায়োডাটা খুজেও ওরটা পাইনি। নিজের সমস্ত সীমাবদ্ধতা আর সংগ্রামী মানুষটির জীবনের কাছে পরাজিত হয়ে যায় আমার বিবেকবান আত্মা।
আমার নিবেদিত সমস্ত শ্রদ্ধা এবং সম্মান সেই সব সংগ্রামী মানুষের জন্য।
২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:২৬
নাদান বলেছেন: আমার নিবেদিত সমস্ত শ্রদ্ধা এবং সম্মান সেই সব সংগ্রামী মানুষের জন্য।
৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:৫০
অন্যরকম বলেছেন: গলার কাছটায় কি যেন একটা দলা পাকিয়ে আছে।
সিলি, জানি।
দুনিয়ার ইতিহাসে এদেরকে কেউ জানবে না। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার খাতায় এদের নাম সোনালী হরফে লেখার থাকবে!
৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:৫৩
প্রচেত্য বলেছেন: @আিরফুর রহমান@
ধন্যবাদ
@নাদান@
আসলে বিস্মিত হয়েছিলাম সেদিন, আজ উদ্যোগী হয়ে লেখাটি দিলাম
@অন্যরকম@
সবচেয়ে সত্য বলেছেন এবং উপযুক্ত মন্তব্যও বটে !
তাদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে সৃষ্টিকর্তার খাতায়
৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:৫৬
ষড়যন্ত্রকারীদের জম বলেছেন: স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সবাই সম্মান(?) করতে চায় ।আমার অভিগ্ঞতাও তাই বলে ।
৬| ১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:১৪
ভাসমান বলেছেন: আপনার মত একজন উচুমানের লেখককে উপদেশ দেয়ার সাহস আমার নেই।তবুও বলছি ছোট ছোট প্যারা করে লিখলে পাঠকের পড়তেস সুবিধে হয়।
৭| ১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ রাত ৮:০২
আনন্দময় বলেছেন: আমরা যখন নিজের অজান্তে ভুলে যাই এবং সময় শেষ হওয়ার পর যখন মনে পড়ে তখন অসম্ভব কষ্ট হয় বিবেকের দংষনে দংশিত হতে থাকি।
দোয়া করি ছেলেটি ভালো একটি চাকরি পাক।
অন্য রকমের সাথে একমত।
৮| ১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:৪৭
রাশেদ বলেছেন: আমার নিবেদিত সমস্ত শ্রদ্ধা এবং সম্মান সেই সব সংগ্রামী মানুষের জন্য।
৯| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৭ রাত ১২:০৪
প্রচেত্য বলেছেন: @ষড়যন্ত্রকারীদের জম@
আসলে তার দানের সামনে, সম্মান করার ব্যপারটা কোনভাবেই তুলনা করা যায়না
@ভাসমান@
ধন্যবাদ, পরামর্শের জন্য, আর হ্যা আমি সবসময় তাদেরকে স্বাগত জানাই যারা যেকোন পরামর্শ দিয়ে সামনে এগিয়ে নেবার সংঙ্গী হয়, তারাই তো প্রকৃত বন্ধু
@আনন্দময়@
আপত এখনও মনে হয়, মানুষ যেন কেমন ভূল করে ভূলে যাই, ব্যস্তময় জীবন আমাদেরকে অনেক মানবিক গুণাবলী থেকে দূরে সরিয়ে রাখে,তবুও মানুষ আমরা সৃষ্টির সেরা জীব
@রাশেদ@
সংগ্রামী মানুষের জীবন আমার আদর্শ
১০| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৭ সকাল ৮:২২
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: কি করে আপনি এত ভাল লেখেন? ৫।
১১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১২:৪৮
প্রচেত্য বলেছেন: @উম্মু আবদুল্লাহ@
সেই উত্তর অজানা এই ভেবে আমি ভাল লিখি কিনা।
ভাবনার জগতে সীমাবদ্ধতা আমাকে কুড়ে কুড়ে খায় কিন্তু বাস্তবতা আমার শক্তি এবং সাহসও বটে ! সেই সাহসের উপর ভর করেই এই ব্লগে এই লেখায় এগিয়ে চরা, আর লেখার বড় উপদান বা সার্থকতা হল আমার পাঠকের উতসাহমূলক মন্তব্য, যা আমাকে সঞ্চারিত করে প্রভাবিত করে, যেমনটি অনুভূত হয়েছে আপনার মন্তব্য থেকে
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:২৩
আরিফুর রহমান বলেছেন: গলার কাছটায় কি যেন একটা দলা পাকিয়ে আছে।
সিলি, জানি।