নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক
এই মাত্র মা চলে গেলেন, সাথে বাবাও। ঠিক কবে আবার তাদের সাথে দেখা হবে বা আদৌ আর কোনদিন দেখা হবে কিনা ঠিক জানিনা। বেশ কিছুদিন আমাদের সাথে ছিলেন, অনেক আদর আর মমতায় আগলে রেখেছিলেন আমাকে। সময় করে খেতে ডাকা, মাঝে মাঝেই এটা সেটা খেতে দেয়া, এক সাথে আন্টি, আঙ্কেল, আমি রাতে হাটতে যাওয়া, পার্কে বসে বসে উনাদের সাথে গল্প করতে করতে কফি খাওয়া, সবকিছুই কেমন যেন একটা রুটিন হয়ে গিয়েছিলো আমার। যাবার বেলায়ও সেই মমতার পরশ বুলিয়ে গেলেন মাথায় হাত দিয়ে, দোয়া করলেন আর হাতে দিয়ে গেলেন একটা ফল। এ যেন সেই চিরচেনা বাঙালী মায়ের মমতা আর ভালোবাসা।
নানা ব্যস্ততায়, সমস্যায় বাংলাদেশে যেতে পারিনি বলতে পারেন যাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। মা-বাবার সেই আদর, মমতা থেকে অনেকটা অনিচ্ছাকৃতভাবেই দূরে আাছি দীর্ঘদিন। হঠাৎ বন্ধুর মা-বাবার অার্বিভাবে কিছুদিনের জন্যে হলেও ভুলে গিয়েছিলাম সব। কিন্তু আজ যখন ওনাদের যাবার সময় হলো, ভীষণ খারাপ লেগেছে। পায়ে হাত দিয়ে আমি কেবল আমার মা-বাবাকেই সালাম করি, সঠিক বা ভুলের প্রশ্নে যাচ্ছিনা তবে ওটা কেবল পরম শ্রদ্ধাবোধ থেকেই আসে। আজও তাই হলো। পায়ে ধরে সালাম করতেই, আমার মাথায় হাত দিয়েই আন্টি কান্না করে দিলেন, আমারও চোখ টলমল হয়ে এলো মুহূর্তেই। গাড়িতে বসেও দেখতে পাচ্ছিলাম আন্টি কাদছেন, পরে আর কান্নাটা ধরে রাখা যায়নি।
হাওমাও করে কান্না চাইলেও করতে পারিনি, কিন্তু ভীষণ খারাপ লেগেছে আন্টি-আঙ্কেলকে বিদায় জানাতে। মানুষ বলে আমরা বড় হয়ে গেছি, কিন্তু মা-তো বলে আমার ছেলে এখনো সেই ছোটটিই আছে। হয়তো সত্যিই তাই, খুব সম্ভবত সে কারণেই মা-য়ের চলে যাওয়াতে বাচ্চাদের মতো কান্না করছি। উনাদের মমতায় যে বিন্দুমাত্র ভালোবাসার কমতি নেই, সেটা আমি খুব ভালোই বুঝতে পারি।
উনারা এসেছিলেন এমন একটা সময় যখন আমার কোন জব ছিলোনা। ভীষণ রকম একটা ফ্রাস্টেশনে ছিলাম। উনাদের আদর-মমতায় কিছুটা সময়ের জন্য হলেও ভুলে থাকা যেত সব সমস্যা। বেশ ভালোলাগতো যখন আঙ্কেল জোক করতেন, বেশ প্রাণচঞ্চল মানুষ তিনি। অবশেষে সবার দোয়াতেই একটা বেশ ভালো জব হলো। প্রথম খবরটা আন্টি-আঙ্কেলকেই জানালাম। নিজের মা-বাবা তো বাংলাদেশে। ইন্টারভিউ দিয়ে যখন বের হই তখন ঢাকায় গভীর রাত। সুতরাং জব পাবার খবরটা আমার মা-বাবা পেলেন কিছুটা দেরীতেই। আন্টি বারবারই বলতেন, তোমার একটা ভালো জব পাওয়ার খবরটা জেনে বাংলাদেশে যেতে পারলে ভীষণ ভালোলাগতো। আমি নিশ্চিত, আন্টি এখন কিছুটা নিশ্চিন্তেই দেশে যেতে পারবেন। বাংলাদেশে গিয়ে আমার মা-বাবার সাথে দেখা করার একটা দাওয়াত আমি আরো আগেও দিয়েছি। তবুও যাবার বেলায় মনে করিয়ে দিলাম। আমার মা-বাবাকেও জানিয়েছি, তারাও বেশ খুশি মনেই আমন্ত্রন জানিয়েছেন।
মজার ব্যাপার হলো আমার বন্ধুটির নামও কাকতালীয়ভাবে "ইফতেখার"। নামে মিল থাকলেও মানুষ হিসেবে খুব সম্ভবত আমরা দু'জনই বেশ ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ। কিন্তু বাঙালী ছেলে হওয়ার সুবাদে কিছু মিলতো ছিলোই। মা-বাবাকে আমি যতটা মিস করি ও ঠিক ততটাই করে, তবে ওর মা-বাবা প্রায়ই এখন নিউ ইয়র্কে বেড়াতে আসেন ছেলেকে দেখতে। আমার মা-বাবার জন্য এ্যাপ্লাই করতে হবে। তার পরেই তারা আসতে পারবেন।
যেখানেই থাকি, যতদূরেই থাকি, মা-বাবার এই মমতা, আদর কখনোই ভোলার নয়। মন থেকে প্রার্থনা করি, পৃথিবীর সব মা-বাবার আদর, ভালোবাসা আর মমতায় আমাদের সবার জীবন আরো বেশী সুন্দর হোক। তাদের স্নেহের ছায়াতলে যেন বেঁচে থাকতে পারি জীবনের বাকিটা সময়। আন্টি-আঙ্কেল তোমরা অনেক অনেক ভালো আর সুস্থ থেকো।
২৯ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৩৭
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সত্যিই তাই।
২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টি পড়ে ভালো লাগলো।
২৯ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৩৭
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সময় করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:০২
ক্লে ডল বলেছেন: সত্যিই মা বাবার আদর, স্নেহ , ভালবাসা আমাদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রাখে সারাক্ষণ! যেখানেই থাকি, তা ভোলা যায় না কখনওই!!