নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারণ একজন মানুষ। বলার মতো বিশেষ কিছু নেই। মনের ভাবনাগুলো তুলে ধরতে চাই। ভালো লাগে কবিতা, লিখা-লিখি আর ছবি তোলা, এইতো! https://prokashoni.net

ইফতেখার ভূইয়া

গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক

ইফতেখার ভূইয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন এন্ড্রু কিশোর ও বাংলা সংগীত

১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০৬

যতটুকু মনে পড়ে আশির দশকের শেষার্ধে আমাদের বাসায় সাদা-কালো টেলিভিশন ছিলো, ছিলো দু'ব্যান্ডের রেডিও। সে সময়টাতে রেডিও বিনোদনের একটা বেশ জনপ্রিয় মাধ্যম ছিলো। সকালবেলা রেডিওতে বাবা সংবাদ শুনতেন নিয়ম করে, ভুল না করে থাকলে সে সময় সম্ভবত বিবিসিও শোনা যেত রেডিওতে। তবে সে সময় সবচেেয়ে ভালো অনুষ্ঠানগুলো হতো, দুপুর বেলায়। অনুরোধের আসর গানের ডালি, বেবী লজেন্স সংগীতমালার মতো অনুষ্ঠানগুলো ছিলো বেশ হৃদয়গ্রাহী। সৈনিক ভাইদের নিয়েও খুব সম্ভবত একটা অনুষ্ঠান হতো, নামটা ঠিক মনে করতে পারছি না এই মুহূর্তে। তবে অনেক জনপ্রিয় বাংলা গানের সাথে আমার প্রথম পরিচয় এই অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমেই।

ছোটবেলা থেকে আমার বয়সী অনেকের মতো ঠিক এভাবেই আমারও পরিচয় হয়েছিলো সদ্য প্রয়াত শ্রদ্ধেয় এন্ড্রু কিশোর স্যারের গানের সাথে। তার সেই ভরাট গলা, সেই পুরোনো গান আজও আমাদের উদ্বেলিত করে। ভুল না বলে থাকলে, বাংলাদেশের কয়েকটা প্রজন্ম তার গান শুনে বড় হয়েছে, ভালোবেসেছে তার স্বকীয় গায়কীকে। সেদিক থেকে আমি বা আমাদের প্রজন্মটা বেশ ভাগ্যবান বলতে হবে। আমাদের এই একটা প্রজন্ম দেখেছে বা উপভোগ করেছে রেডিও থেকে অডিও ক্যাসেট, সিডি থেকে এমপিথ্রি, ইন্টারনেট এবং হালের এইচডি বা ফ্ল্যাক মিউজিক। সন্দেহ নেই আগামীতে আরো নতুন মাধ্যম হয়তো আসবে কিন্তু এ্যানালগ থেকে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রবেশের এই সময়টা, বাংলা মিউজিক এর জন্য অনেক বড় একটা মাইলফলক। এর মাঝেই স্বমহিমায় উজ্জ্বল ছিলেন আমাদের প্রিয় এন্ড্রু কিশোর। তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন হাজারো গান, সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সংগীতকে। তার অনেক জনপ্রিয় গান পরবর্তীতে ক্যাসেট এবং সিডি মাধ্যমে আসায় তা ব্যক্তিগত এবং জাতীয়ভাবে সংরক্ষণের সুযোগ তৈরী হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, জাতি হিসেবে আমাদের উচিত শুধু এন্ড্রু কিশোর নয়, আরো অন্যান্য যারা বিশিষ্ট গুণী শিল্পী আছেন বা ছিলেন, তাদের কর্মগুলোকে সংরক্ষেণের উদ্যোগ নেয়া। আমাদের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় এ বিষয়ে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। বর্তমান ডিজিটাল মাধ্যমে বা ইন্টারনেটে এগুলো সংরক্ষণ এখন আর কোন কঠিন বিষয় নয়। প্রয়োজন শুধু ইচ্ছের।

কিছুদিন আগেই আমরা হারিয়েছি, শ্রদ্ধেয় আইয়ুব বাচ্চুকে। যিনি বাংলা ব্যান্ড মিউজিকে নিয়ে গেছে ভিন্ন মাত্রায়, যায় অবদান এই জাতি মনে রাখবে দীর্ঘদিন। কিন্তু তারপরেও শুধু শিল্পীর গুনগান করেই আমাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। আমি বিশ্বাস করি একজন গুণী শিল্পী কোন না কোনভাবে একটা সমাজেরই প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেন তার কাজের মাধ্যমে। তাদের অকাল প্রয়াণে কিছুটা উহ্ আহ্ করেই যেন আমরা ক্ষান্ত না হয়ে যাই। বরং তিনি বা তারা যা দিয়ে গেলেন আমাদের, তা সংরক্ষণ করে ভবিষ্যত প্রজন্মের হাতে তুলে দেয়ার একটা মানবিক এবং জাতিগত দায়িত্বও আমাদের রয়েছে। নয়তো এই লোক দেখানো মিথ্যে কান্না আর আস্ফালন আমাদের জাতিগত মানসিক দৈন্যতার বহিঃপ্রকাশ হয়েই থেকে যাবে অনন্তকাল ধরে।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:০০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




সৈনিক ভাইদের জন্য রেডিও অনুষ্ঠান "দুর্বার" প্রচারিত হতো সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে - রেডিও বাংলাদেশ ঢাকা চট্টগ্রাম সহ সমগ্র দেশে একযোগে প্রচারিত হতো।

১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:১৮

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: জ্বী এখন মনে পড়েছে। ধন্যবাদ।

২| ১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: সৃষ্টিশীল মানুষের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা দরকার।

১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:১৯

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সেটা যেহেতু আমাদের হাতে নেই, তাই তার কাজগুলোকে অন্তত আমরা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করতে পারি। ধন্যবাদ।

৩| ১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:৫৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: এমন নক্ষত্রদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করা এবং কাজগুলো সংরক্ষণ করা উচিৎ। এত বড় তারকা যারা তারা যদি জীবিত অবস্থায় অসহায় বোধ করেন দুঃখ করেন সেটা আমাদের জন্য ও দুঃখের।

১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:১০

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আপনার সাথে পুরোপুরি একমত। ব্যক্তিগত পর্যায়ে আমি বাংলা লিখিত সাহিত্যকর্ম ছাড়াও বাংলা সংগীত সংরক্ষণের কাজ করেছি। এ বছর "প্রকাশনী ডট নেট" নামে একটা সাইটের মাধ্যমে সাহিত্যকর্মগুলো সংরক্ষণ করার কাজও শুরু করেছি। গত বছর বাংলাদেশে গিয়ে প্রায় শতাধিক এ্যালবাম আমার সাথে করে নিয়ে এসেছি ডিজিটাল ফরম্যাটে। এগুলো দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে আর্ন্তজালে এবং ব্লু-রে ডিস্কে সংরক্ষণ শুরু করেছি। আরো গান সংরক্ষণের কাজ চলছে। তবে এসব কাজের জন্য সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। ধন্যবাদ।

৪| ১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:০৪

রাকু হাসান বলেছেন:

আমারম মনে হচ্ছে লিজেন্ডদের আমরা ঘনঘনই হারাচ্ছি। :(

১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:১১

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: বিগত এক দশক এবং আগামী এক দশকে আমরা পুরো একটা প্রজন্মকে হারিয়ে ফেলবো খুব সম্ভবত।

৫| ১১ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৫:৪৬

একাল-সেকাল বলেছেন:
স্মৃতিকাতর করে দিলেন !!
রেডিওর সিলেট কেন্দ্র হতে শুক্রবার সকাল ৮ টায় ছারাছবির গান নিয়ে অনুরোধের আসর হতো। আমি ছিলাম নিয়মিত শ্রোতা, ভৌগলিক কারনে ফ্রিকোয়েন্সি পেতে একটু আড়াআড়ি করে ধরে রাখতে হত।
এই সব গুনি শিল্পীদের মুল সুর করা গানের আর্কাইভ জরুরি। হারিয়ে যাওয়ার পর রিমিক্স করে বাঁচিয়ে রাখাতে, বানিজ্য ছাড়া শ্রদ্ধা, স্বকীয়তা কিছুই অবশিষ্ট থাকেনা।বারি সিদ্দিকির সংগৃহীত লোক সঙ্গীত গুলুও আমাদের জন্য সম্পদ। ময়মনসিংহ গীতিকা কোনরকমে টিকে আছে, তবে বাংলা সংস্কৃতির মাইল ফলক গুলু মাথা উচু করে বেঁচে থাকুক, এটাই প্রত্যাশা ।

১১ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৫০

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: ভালো বলেছেন। হালের কিছু ছেলেপেলে দেখি ইদানীং রবীন্দ্রসংগীতকেও তাদের নিজের মতো করে গেয়ে ফেলছে। হারমোনিয়ামের স্থানে কী-বোর্ড, বেহালার স্থানে গীটার, তবলার জায়গায় ড্রাম। বলছিনা এক্সপেরিমেন্ট করা যাবে না, তবে স্বকীয়তা যেন নষ্ট না হয় সেদিকটাতে নজর দেয় জরুরী। ক্ল্যাসিকাল বা রাগ প্রধান গানের বাণিজ্যিক আকার ছোট হয়ে এলেও এগুলোর দিকে নজর দেয়াও জরুরী। আবারও বলছি, ব্যক্তি পর্যায়ের পাশাপাশি সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। ধন্যবাদ।

৬| ১১ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:২৩

মোঃ ইকবাল ২৭ বলেছেন: নিয়ম যাহা তাহা চিরকালই নিয়ম। কেহ পৃথিবীতে থাকতে পারবে না। সবাইকে যেতে হবে আগে আর পরে। স্মৃতি গুলো থেকে যাবে, কাহারো বেশী, কাহারো কম, কাহারো বহু দিন, কাহারো অল্প দিন। সৃষ্টি কর্তার সৃষ্টি, সৃষ্টি কর্তার নিয়মেই চলবে।

১১ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৫৪

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছে নিয়ে কেউ প্রশ্ন করার নেই, তবুও মানুষ হিসেবে আমাদের হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকারও কোন কারণ নেই। কোনকিছুই তার ইশারা ছাড়া সম্ভব নয়।

৭| ১১ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:১৯

ঢুকিচেপা বলেছেন: সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড একটি দেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
চমৎকার একটি উদ্যোগের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রতিবারই কেউ না কেউ এমন প্রস্তাব রাখেন। ভিতরে ভিতরে কাজ হচ্ছে কিনা বোঝা যায় না।
আগে কোন গানের লিরিক সার্স দিলে পাওয়া যেত না, এখন যায় (প্রায়শঃ) তবে গীতিকার ও সুরকারের নাম থাকে না। আমি মনে করি এটাও সংরক্ষণ করা উচিত।

শুভেচ্ছা রইল ।

১২ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৫৩

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। সরকারের বা প্রশাসন থেকে তেমন কোন উদ্যোগের কথা আমার জানা নেই। তবে এ ধরনের উদ্যোগ ভীষণ প্রয়োজন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বরাবরই রিসোর্স-এর ঘাটতি থেকে যায়, যেমন আমাদের হাতে প্রচুর তথ্য থাকা সত্ত্বেও সামুতে অনুরোধ জানিয়ে পোস্ট দেয়ার পরেও তেমন কারো সহযোগীতা কিংবা কোন ধরনের আশ্বাসও পাইনি। ব্যাপারটা অবশ্যই হতাশাজনক, তবে অপ্রত্যাশিত নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এ ধরনের সব কাজে সরকারের প্রত্যক্ষ ইনভলভমেন্ট দরকার নেই, তবে সহযোগিতা এবং সমর্থন অত্যন্ত প্রয়োজন। ধন্যবাদ।

৮| ১৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৩:৩৯

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: তার অবদান চির অমলিন

১৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৩:৪৭

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: নিঃসন্দেহে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.