নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারণ একজন মানুষ। বলার মতো বিশেষ কিছু নেই। মনের ভাবনাগুলো তুলে ধরতে চাই। ভালো লাগে কবিতা, লিখা-লিখি আর ছবি তোলা, এইতো! https://prokashoni.net

ইফতেখার ভূইয়া

গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক

ইফতেখার ভূইয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইন্টেল টারবো বুস্ট প্রযুক্তি

১৪ ই জুন, ২০২১ রাত ৩:২২



প্রযুক্তি বিশ্বে ইন্টেল একটি অতি পরিচিত নাম এবং মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাতা কোম্পানী। একটি কম্পিউটারকে যদি মানুষের সাথে তুলনা করা হয় তবে প্রসেসরকে বলা যায় ব্রেইন। মোটামুটিভাবে পৃথিবীর সকল মানুষের ব্রেইন এর গঠনগত বৈশিষ্ট্য প্রায় একরকম হলেও কর্মক্ষমতার দিক থেকে তা সমান নয়, ঠিক তেমনি পৃথিবীর সব মাইক্রোপ্রসেসর এর গঠনগত বৈশিষ্ট্য প্রায় এক হলেও তাতে বৈশিষ্ট্যের বেশ তারতম্য লক্ষ্য করা যায়।

ইন্টেল বিগত বেশ কয়েকটি প্রসেসর এর জেনারেশনে এই টারবো বুস্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে। মূলত কোর আই৫, আই৭ এবং আই৯ বা এক্স সিরিজের প্রসেসরগুলোতে এই বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। মনে রাখা জরুরী যে এই প্রসেসরগুলো মূলত হাই-এন্ড গেমিং কম্পিউটার বা ওয়ার্কস্টেশনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। স্বাভাবিকভাবে বলতে গেলে যেসব কম্পিউটারে মূলত অনেক ক্যালকুলেশনগত কাজ করা হয় (গেমিং, ভিডিও এডিটিং বা কন্টেন্ট ক্রিয়েশন, সার্ভার, ভার্চুয়াল মেশিন ইত্যাদি) মূলত সেসব কম্পিউটারের প্রতি লক্ষ্য রেখেই এই প্রসেসরগুলো তৈরী করা হয়েছে। বোঝার সুবির্ধার্থে একটা উদাহরণ দিচ্ছি। ধরুন আপনি গেমিং করেন বা ভিডিও এডিটিং এর কাজ করেন। আপনার কম্পিউটারটি খুব সম্ভবত দিনের ২৪ ঘন্টাই সেই একই কাজ করছেনা (করলেও সমস্যা নেই), কখনো কখনো আপনি ঐ কম্পিউটারে অফিশিয়াল টুকটাক কাজ বা স্বাভাবিকভাবে ওয়েব ব্রাউজিংও করছেন। কম্পিউটারটি যখন কোন ভারী কাজ করছে না তখন ঐ কিম্পউটারের প্রসেসরটি তার স্বাভাবিক গতি বা বেইজ ফ্রিকুয়েন্সি (স্বাভাবিক গতি) /ক্লক রেট স্পীডে কাজ করছে। ঠিক যখনই আপনি অনেক ভারী কাজ শুরু করছেন (ভিডিও এনকোডিং, গেমিং ইত্যাদি) ঠিক তখনই আপনার প্রসেসরটি কাজের চাপ অনুধাবন করে তার গতি বাড়িয়ে দিয়ে তা ৪ গিগাহার্টজ বা তার চেয়েও দ্রুত গতিতে কাজ শুরু করে দেয় যাতে করে কাজটি দ্রুত শেষ করা সম্ভব হয়। মূলত স্বাভাবিক গতির চেয়ে বেশী গতিতে কাজ করার এই প্রযুক্তিকেই ইন্টেল টারবো বুস্ট প্রযুক্তি বলছে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ একটি প্রসেসর তার স্বাভাবিক গতির চেয়ে ঠিক কতখানি বেশী দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারবে তা নির্ভর করছে মূলত থার্মাল ডিজাইন পাওয়ার (টিডিপি) এর উপর। মানে উচ্চ গতিতে কাজ করার জন্য যে পরিমান বৈদ্যুতিক শক্তি প্রয়োজন তা আপনার কম্পিউটারের পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট (পিএসইউ) দিতে পারছে কি না, যে পরিমাণ বেশী তাপ উৎপন্ন হচ্ছে তা ঠিকভাবে বের হতে পারছে কি না ইত্যাদি বিষয়গুলোর উপর। মনে রাখা জরুরী ইন্টেল ডিজাইনগতভাবে এই প্রসেসরগুলোর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ২১২ ডিগ্রী ফারেনহাইট নির্ধারণ করে দিয়েছে। যে কোন কারণেই হোক না কেন, প্রসেসর এর তাপমাত্রা এর কাছাকাছি আসলেই আপনার প্রসেসর নিজে থেকেই তার কাজের গতি কমিয়ে দেবে যাতে প্রসেসর এর ফিজিক্যাল কোন ক্ষতি না হয়। তাই দীর্ঘক্ষণ ধরে প্রসেসর এর উচ্চ গতি ধরে রাখার জন্য প্রসেসর ঠান্ডা রাখা জরুরী। আর এর জন্য প্রসেসরে ভালো ফ্যান বা কুলার ব্যবহার করা উচিত।

ব্যক্তিগত অভিমতঃ ইন্টেলের টারবো বুস্ট প্রযুক্তি ক্ষেত্র বিশেষে বেশ কাজে আসলেও এর কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। যেমন, স্বাভাবকিভাবে প্রসেসরের টারবো বুস্ট প্রযুক্তি চালু থাকলে আপনার অপারেটিং সিস্টেম বেশীরভাগ সময়ই সেটা ব্যবহার করে। এমনকি আপনি হালকা কোন কাজ করলেও যেখানে স্বাভাবিক গতির তুলনায় বেশী শক্তি ব্যয় করে সে কাজটি করার চেষ্টা করে যদিও সেটার প্রয়োজন নেই। তাতে অতিরিক্ত তাপ ছাড়াও প্রচুর বিদ্যুৎ শক্তির অপচয় হয়। টারবো বুস্টে ভারী কাজে সম্পাদন কারা জন্য যে পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হয় (প্রসেসর এর জন্য + প্রসেসর ঠান্ডা রাখার কুলিং সিস্টেমের জন্য) তা দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাক্তিগত পর্যায়ে আর্থিকভাবে শাস্রয়ী নয় তবে বড় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য থাকলে সেটা ভিন্ন ফলাফল নিয়ে আসতেও পারে।

আমি প্রায় প্রতিদিনই ভিডিও এনকোডিং এর কাজ করি এবং এতে অভিজ্ঞতা হলো যে ভিডিও এনকোডিং এ প্রচুর শক্তির প্রয়োজন পড়ে এবং তা তাপ উৎপন্ন করে। ধরুন টারবো বুস্ট প্রযুক্তি চালু থাকলে ১০ মিনিটের একটি ভিডিও এডিটিং শেষ করে এনকোডিং করতে প্রায় ১৩/১৪ মিনিট লাগছে, সেই একই ভিডিও টারবো বুস্ট বন্ধ করে এনকোডিং করতে হয়তো ১৬/১৭ মিনিট লাগছে কিন্তু তেমন কোন তাপ উৎপন্ন হচ্ছে না পাশাপাশি স্বাভাবিক বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। তাই ব্যক্তিগতভাবে অভিজ্ঞতা হওয়ার পর থেকে আমি আমার প্রসেসরের টারবো বুস্ট প্রযুক্তি মাদারবোর্ডের বায়োস থেকে বন্ধ করে দিয়েছি।

ছবি কপিরাইটঃ এ্যামাজন

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুন, ২০২১ রাত ৩:৩৪

সোহানী বলেছেন: যা কইলেন তা মাথার উপ্রে দিয়ে গেছে। তারপরও ধন্যবাদ জানাই যাদের প্রয়োজন তারা বুঝে নিবে। আর হাঁ, ইন্টেল দেখে পড়লাম কারন এ প্রসেসর নিয়ে কাজ করা ছিল আমার ভাইয়ের পিএইচডি বিষয়। সে দীর্ঘদিন ইন্টেল এ কাজ করেছিল।

১৪ ই জুন, ২০২১ রাত ৩:৫০

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: বিষয়গুলো সবার কাছে সমানভাবে আকর্ষণীয় নাও হতে পারে তবুও জানার বিষয়গুলো শেয়ার করার উদ্দেশ্যেই লিখা। ইন্টেলের আরো কিছু বিষয় নিয়ে আগামীতে আরো কয়েকটা পোস্ট দেয়ার ইচ্ছে আছে।

আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো, আমরা এমন একটা সময়ে বাস করছি যখন বেশীরভাগ মানুষের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম করার জন্য খুব বেশী কম্পিউটার শক্তির প্রয়োজন নেই। তবুও বাণিজ্যিক কারণে প্রায় প্রতি বছরই বাচ্চা দেয়ার মতো করে এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো না ধরনের ফিচারের কথা বলে নতুন নতুন পণ্য বাজারে নিয়ে আসছে। সমাজের স্বাভাবিক দশজন মানুষ এগুলো নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন মনে করেন না আর এটাই স্বাভাবিক। প্রশ্ন হলো ভোক্তার দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি যে মূল্য পরিশোধ করছেন পণ্যের জন্য তা আদৌ আপনার শতভাগ উপযোগীতা দিতে পারছে কি না! হয়তোবা ক্ষেত্র বিশেষে তার চেয়ে বেশীই দিচ্ছে কিন্তু তার অপরচুয়িনিট কস্ট কি তা আমরা ভাবছি না।

উদাহরণ দিচ্ছি। ধরুণ আপনি আইফোন ৮ ব্যবহার করছেন, কিন্তু বাজারে এখন আইফোন ১২ চলছে। আপনিও সেটা কিনে ব্যবহার শুরু করে দিলেন। প্রশ্ন হলো ৮০০/৯০০ ডলার খরচ করে আপনার হালের নতুন ফোন কেনা কতটা যুক্তিযুক্ত? আপনি কি আপনার পুরোনো ফোনের শতভাগ উপযোগীতা বা ফিচার ব্যবহার করতে পেরেছেন? না পারলে আইফোন ১২ কিনে ব্যবহার করলে আপনি ভোক্তা হিসেবে কতটুকু ঠকছেন?! আগামী বছর আইফোন ১৩ বা ১৪ কিনলেন। এভাবে ভোক্তা হিসেবে আপনি এ্যাপলকে বছরের পর বছর ধরে ধনী বানিয়ে দিলেও নিজে আর্থিকভাবে লোকসানে আছেন উপযোগীতা আর প্রয়োজনের পার্থক্যের কারণে। কম্পিউটারও তার ব্যতিক্রম নয়। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৪ ই জুন, ২০২১ ভোর ৪:০৮

অনল চৌধুরী বলেছেন: আমার কম্পিউটারে র‌্যাম ৪ জিবি।
ভিডিও সম্পাদনা করার পর এ্যাডোবিতে রেন্ডার হতে অনেক সময় লাগে।
কিন্ত ভিডিও প্যাড এডিটরে দ্রুত রেন্ডার হয়।
এর কারণ কি?

১৪ ই জুন, ২০২১ ভোর ৪:১৯

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: ভিডিও রেন্ডারিং এর জন্য প্রসেসর, মাদারবোর্ড, র‌্যাম এর মডেল, গ্রাফিক্স কার্ড, ভিডিও রেজুলেশন ও অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে জানা জরুরী। স্বাভাবিকভাবে ভিডিও রেন্ডারিং হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার বেইজড হতে পারে। দুটো সফটওয়্যারের কোনটা কিভাবে সেটিংস করা হয়েছে সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হার্ডওয়্যার বেইজি এনকোডিং এর জন্য এনভিদিয়ার কার্ড ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব তবে সেটাও নির্ভর করছে অনেকগুলো বিষয়ের উপর। যেমন কোন ফরম্যাটে এনকোড করা হচ্ছে, ভিডিওর ফ্রেইম রেট কতো ইত্যাদি। ধন্যবাদ।

৩| ১৪ ই জুন, ২০২১ সকাল ৮:৩৫

জলকামান বলেছেন: ইনটেল কি তাদের backdoor সমস্যার সমাধান করেছে?

১৪ ই জুন, ২০২১ সকাল ৯:১৭

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: ইন্টেল প্রসেসরের বিরুদ্ধে ব্যাকডোর রাখার অভিযোগ বেশ পুরোনো। তবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এই সমস্যা শুধুমাত্র ইন্টেলের ক্ষেত্রে নয় বরং এএমডি প্রসেসরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ব্যাকডোর বলতে মূলত ইন্টেলের প্রসেসরের এ্যাকটিভ ম্যানেজমেন্ট টেকনোলজি এবং এএমডি প্রসেসরের প্ল্যাটফর্ম সিকিউরিটি প্রসেসর প্রযুক্তিকে দায়ী বলে মানা হয়। এখানে মনে রাখা প্রয়োজন এই প্রযুক্তিগুলো মূলত এন্টারপ্রাইজ লেভেল বা বড় কোম্পানীগুলোকে লক্ষ্য করে বানানো হয়েছে যা হয়তো স্বাভাবিক ব্যবহারকারীদের তেমন কোন কাজে আসবে না। এই ফিচারগুলো মূলত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের সমন্বয়ে তৈরী করা হয়েছে তাই সাধারণ ব্যবহারকারীদের উচিত হবে সুর্নিদিষ্ট প্রয়োজন ছাড়া সম্ভব হলে ফিচারগুলো বায়োস থেকে বন্ধ করে দেয়া। এছাড়া ব্যবহারকারীদের তেমন বিশেষ কিছু করার নেই।

তবে তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যদি ব্যবহারকারীর মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে তবে আমি সাজেস্ট করবো কম্পিউটারে ট্রাস্টেড প্ল্যাটফর্ম মডিউল (টিপিএম) ব্যবহার করার জন্য। যদিও এটাও হ্যাকারদের দৃষ্টিসীমার বাইরে নয় তবুও এটি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশী নিরাপদ বলে আমি মনে করি। এ সংক্রান্ত একটা লিখা আমি ক'মাস আগেই লিখেছিলাম ওটাও পড়ে দেখতে পারেন। ধন্যবাদ।

৪| ১৪ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৫২

আখেনাটেন বলেছেন: চমৎকার টেকি লেখা। টারবো বুস্ট নিয়ে বিশদ জানা গেল। তারমানে কম্পুতে ছোটখাট কাজ করলে টারবো বুস্ট অপশন বন্ধ রাখায় ভালো যদি ওভারহিটিং সমস্যা থাকে পিসির। এর অন্য কোনো সমাধান যখন টারবো বুস্ট চালু রাখা হয়।

১৫ ই জুন, ২০২১ রাত ২:৩৭

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সাধারণভাবে বলতে গেলে পিসিতে যদি অফিসিয়াল (ওয়ার্ড, এক্সেল, ইমেইল, ব্রাউজিং ইত্যাদি) কাজ করেন তবে টারবো বুস্ট এর প্রয়োজন নেই বলেই আমি মনে করি। যদি ব্যক্তিগত পিসি হয় এবং ভারী কাজ না করেন সেক্ষেত্রে এটার প্রয়োগ না করাই শ্রেয় কারণ আপনাকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল গুণতে হবে। আর টারবো বুস্ট ব্যবহার করলে ভালো এরায় সার্কুলেশন থাকা জরুরী। মনে রাখতে হবে তা প্রসেসরের জন্য ক্ষতিকর তাই যতটা তাপ কমানো সম্ভব ততই ভালো। আগামীতে ইন্টেল এর হাইপার-থ্রেডিং নিয়ে কিছু লিখার ইচ্ছে আছে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১২:৫৩

জাহিদুল ইসলাম ২৭ বলেছেন: সবকিছু সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

০৭ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৩:৫৩

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সময় নিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.