নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারণ একজন মানুষ। বলার মতো বিশেষ কিছু নেই। মনের ভাবনাগুলো তুলে ধরতে চাই। ভালো লাগে কবিতা, লিখা-লিখি আর ছবি তোলা, এইতো! https://prokashoni.net

ইফতেখার ভূইয়া

গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক

ইফতেখার ভূইয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্যান্টসির - আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

২৮ শে মে, ২০২৫ ভোর ৪:১৭


আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় মূলত তিনটি স্তর রয়েছে। স্বল্প, মধ্যম ও দূর-পাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেখানে বিভিন্ন ধরনের সিস্টেম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। হতে পারে সেটি রকেট, প্রথাগত আর্টিলারি, লেজার কিংবা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সিস্টেম। আলোচনার সুবিধার্থে আজ শুধু রাশিয়ার তৈরী "প্যান্টসির" এয়ার ডিফেস্ট সিস্টেম নিয়ে একটু আলোচনা করবো। এটি মূলত একটি হাইব্রিড আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেখানে মূলত ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য মিসাইল এবং এ্যান্টি এয়ারক্রাফট আর্টিলারি সিস্টেম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মজার বিষয় হলো এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি স্বল্প কিংবা মধ্যম পাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। এটি মূলত সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরী "টুঙ্গুসকা" আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আধুনিক সংস্করণ।

এই সিস্টেমটির একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি আট চাকার ট্রাক অথবা ট্র্যাকড হুইল (মূলত ট্যাংক ও কিছু এ.পি.সি-তে ব্যবহার করা হয়) কিংবা কোন সামরিক সামুদ্রিক জাহাজে স্থাপন করা যায়। প্রয়োজনে কোন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অথবা কোন বিল্ডিং এর ছাঁদেও স্থাপন করা সম্ভব। সিস্টেমটি এতটাই নির্ভরযোগ্য যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ক্রেমলিনের কিছু সরকারি বিল্ডিং এর ছাদেও এগুলো স্থাপন করা হয়েছিলো। এই সিস্টেম একাধারে যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, প্রিসিশান বম্ব, ক্রুজ মিসাইল, ইউ.এ.ভি. কিংবা ড্রোন সিস্টেমের আক্রমণ প্রতিহত করতে পারে।

অস্ত্র হিসেবে এটিতে সাধারণত ১২ টি ৫৭ই৬ সার্ফেস টু এয়ার গাইডেড মিসাইল এবং ৩০ মি.মি. এর দুটো এ্যান্টি এয়ারক্রাফট গান ব্যবহার করে থাকে যা স্বাভাবিকভাবে ১৪০০+ রাউন্ড গুলি বহন করতে সক্ষম। স্বাভাবিকভাবে উল্লেখিত মিসাইলগুলো ১-২০ কি.মি. দূরত্বে ও ৫-১৫ কি.মি উচ্চতায় যে কোন লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করতে সক্ষম। সাম্প্রতিক সময়ে ৫৭ই৬এম-ই মডেলের নতুন মিসাইল সংযোজন করা হয়েছে যা সর্বোচ্চ ১৮ কি.মি উচ্চতায় ২০-৩০ কি.মি. দূরত্বের টার্গেটকেও ধ্বংস করতে পারে। যে কোন আধুনিক অস্ত্রের মতোই এখানে বিভিন্ন ধরনের মডিফিকেশন করা সম্ভব। প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে রয়েছে বিভিন্ন মানের সক্ষমতা।

যেমন ইউক্রেন যুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে প্যান্টসির সিস্টেমেও কিছু নতুন ফিচার সংযোজন করা হয়েছে। যেমন ১২ টি মিসাইল সিস্টেমের পরিবর্তে ৬ টি ৫৭ই৬ মিসাইল ও সাথে ২৪ টি ছোট আকারের ড্রোন ধ্বংসকারী তুলনামূলকভাবে কমদামী মিসাইল ব্যবহার করা যায় তাতে ড্রোন ও সেটা ধ্বংসকারী মিসাইলেরর দামের পার্থক্যের যে রেশিও তা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। এই মিসাইল সিস্টেমটির ব্যাপারে ভালোভাবে বোঝার জন্য নিচের প্রতিবেদনটি দেখতে পারেন।


বিশ্বের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো মধ্যে যে মিসাইল সিস্টেমগুলো সবচেয়ে বেশী সফল ও পরীক্ষিত, তার বেশীর ভাগই মূলত ইউরোপ, আমেরিকার তৈরী। তবে রাশিয়া ও ইসরায়েলের তৈরী কিছু কিছু সিস্টেমও বেশ দক্ষতা ও সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিনিয়তই আধুনিকায়ন হচ্ছে তাই সুর্নিদিষ্ট কোন সিস্টেমকে এককভাবে খুব বেশী ক্রেডিট দেয়া কঠিন বিশেষ করে রণাঙ্গনের ট্র্যাক রেকর্ড ছাড়া ঢালাওভাবে ক্রেডিট দেয়া কঠিন।

বাংলাদেশের স্বল্প পাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী মূলত প্রতিরক্ষামূলক বা আত্মরক্ষামূলক মতবাদ অনুসরণ করে। সাধারন বাংলায় বলতে গেলে আমাদের সামরিক বাহিনী অস্ত্রসস্ত্রসমূত মূলত বহিঃশত্রুর হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহার বা ক্রয় করে থাকে। বাংলাদেশ সেনা, বিমান ও নৌ বাহিনী মূলত নিজ নিজ বাহিনীর জন্য উপযোগী চাইনিজ এফএম-৯০ সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে। এফ.এম.-৯০ মূলত ৭০ এর দশকে ফ্রান্সের আর৪৪০ ক্রোটেল স্যাম সিস্টেমের রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারড চাইনিজ কপি। আমাদের সামরিক বাহিনী এগুলো পাশাপাশি সেই সাথে কাঁধে পরিবহণযোগ্য কিছু ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করে। এগুলোকে অত্যাধুনিক কোন কিছু বলা যাবে না। মোটাদাগে আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা আহামরি কিছু নয়।

প্যান্টসির সিস্টেমটি, এফএম-৯০ এর তুলনায় অনেক বেশী সক্ষম ও ব্যয়বহুল। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ প্যান্টসির সিস্টেমকে এড়িয়ে গেছে। যদিও একটি দেশের সামরিক বাহিনীর জন্য বরাদ্দ বাজেট একটা বড় ফ্যাক্টর। সেদিক থেকে ভাবলে বাংলাদেশের জন্য খুব বেশী অপশন হাতে নেই। ধন্যবাদ।

তথ্যসূত্র: প্যান্টসির সিস্টেম, এফ.এম-৯০

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০২৫ সকাল ৯:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি যে বিষয়টা নিয়ে লিখেছেন, সে বিষয়টা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। কখনও ভাবিও নাই।
খুবই গুরুত্বপূর্ন একটা বিষয় অথচ কিছুই জানি না। বুঝি না।

০৮ ই জুন, ২০২৫ রাত ১১:৫৬

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: বোঝার চেষ্টা করতে হবে। ধন্যবাদ।

২| ২৮ শে মে, ২০২৫ সকাল ৯:৫৩

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরো জোরদার হওয়া দরকার।

০৮ ই জুন, ২০২৫ রাত ১১:৫৬

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: শতভাগ একমত পোষণ করছি। ধন্যবাদ।

৩| ২৮ শে মে, ২০২৫ সকাল ১০:৩৬

অল্প বিদ্যা ভয়ংকর বলেছেন: জানার আছে অনেক কিছু।

০৮ ই জুন, ২০২৫ রাত ১১:৫৬

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: জ্বী, ধন্যবাদ।

৪| ০৯ ই জুন, ২০২৫ রাত ১:৩৬

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: কোল্ড ওয়ারের সময় আমেরিকা ইউ-২, এস আর ৭১, নাইট হক বিমানগুলো
বানিয়ে এক পর এক চমক দিচ্ছিল তখন‌ সোভিয়েত রাশিয়া বুঝতে পেরেছিল যে,
স্টেলথ প্রযুক্তি আর অত্যাধুনিক বিমান তৈরির প্রতিযোগিতা আমেরিকাকে হারানো অসম্ভব!!
তখন তারা মনোনিবেশ করে আর প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করে এন্টি এয়্যার ডিফেন্স সিস্টেম এর উপর।
এই জন্যই রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স বিশ্বসেরা!!! তবে বিশ্বের কোন এয়ার ডিফেন্স ই শতভাগ কাযর্করী নয়।

বাংলাদেশের ডিফেন্স বাজেট হয়তো ৩-৪ বিলিয়ন ডলার। এই বাজেটে তিন বাহিনীর জন্য
অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদি কিনা অসম্ভব!! আর ভারতের নানা রকম প্রভাবে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর একটি নির্দিষ্ট
সীমার মধ্যেই আবদ্ধ ছিল।

০৯ ই জুন, ২০২৫ রাত ২:৫৫

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আপনার মন্তব্য সঠিক। বাংলাদেশের সামরিক বাজেট কম সন্দেহ নেই তবে ধীরে ধীরে হলেও এই অঞ্চলের দেশ হিসেবে সামরিক সক্ষমতার দিকে আমাদের নজর দিতেই হবে। আমি প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রাখার পক্ষে। তবে তাদের সাথে পারস্পারিক সম্পর্ক হতে হবে ন্যায় সঙ্গত ও দেশের স্বার্থের পক্ষে। সর্বপোরি ভারতীয় আগ্রাসন থেকে নিজস্ব স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর জোর দেয়া অত্যাবশ্যক। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.