নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রথম ফুল

প্রথম ফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

এথেনা

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:১৬

গ্রীক দেবী এথেনা এক অসামান্য চরিত্র।

গ্রীকরা তাঁকে একাধারে যুদ্ধ ও জ্ঞানের দেবী হিসাবে পূজা করত। এদিক থেকে দুর্গা ও সরস্বতী দু'জনের সাথেই তাঁর মিল আছে। আবার এথেনার সঙ্গী ছিল প্যাঁচা, যা গ্রীকদের কাছে জ্ঞানের প্রতীক। সেদিকে লক্ষ্মীর সাথেও এথেনার মিল আছে।

এথেনার বাবা ছিলেন দেবরাজ জিউস। জিউসের মতো শক্তিশালী কোনো দেবতা ছিল না। তিনি মহাদৈত্য টাইটানদের লড়াইয়ে হারিয়ে পাতালে বন্দী করে রেখেছিলেন। একবার এক দেবতার ওপর রেগে গিয়ে জিউস তাঁকে স্বর্গ থেকে ছুঁড়ে আছাড় মেরে পৃথিবীতে ফেলে দিয়েছিলেন। সব দেবতারা সবসময় জিউসের ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকতেন। একমাত্র একজন দেবতাকে জিউস কোনোদিন ঘাঁটাতেন না, তিনি হলেন এথেনা। কেন ভয় পেতেন জিউস এথেনাকে?

একবার বহুক্ষণ মদ্যপান করে জিউস মাতাল হয়ে যান। সব দেবতাকে ডেকে বলতে থাকেন যে তার মন্দিরে তার চেয়েও ওপরে জিউসকে জায়গা দিতে হবে, কারণ জিউসের শক্তি সবচেয়ে বেশী। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মেরে পঙ্গু করে দিতে থাকলেন। সবাই ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে মাতাল জিউসের দাবী মেনে নিতে থাকল। শেষে জিউস এথেনার মন্দিরের সামনে এসে দেখেন দেবী এথেনা নিজে চুপচাপ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।

এথেনা বললেন - আপনি মাতাল হয়ে গেছেন, ঘরে ফিরে যান। এসব করলে বিপদ হবে। জিউস শুনলেন না। বললেন, সরে যা যদি নিজের ভালো চাস। তুই আমার মেয়ে বলে ছেড়ে দেব না। এথেনা বললেন, ঠিক আছে। আমি দাঁড়িয়ে থাকছি। তোমার এত শক্তি, তুমি এসে আমার পা এখান থেকে সরিয়ে দাও।

জিউস প্রচণ্ড রেগে গিয়ে এথেনার পা দুটো ধরে তুলে তাকে আছাড় মারতে গেলেন। কিন্তু পা দুটি ধরে দেখলেন, তিনি এথেনাকে নড়াতে পর্যন্ত পারছেন না। আবার চেষ্টা করলেন, পারলেন না।

জিউসের কপাল বেয়ে ঘাম ঝরতে থাকল। এথেনার পাদুটি যেন শ্বেতপাথরের কোঁদা থামের মতো দাঁড়িয়ে থাকছে, জিউসের চাপে কিছুই হচ্ছে না। তিনি প্রাণপণে সর্বশক্তি লাগিয়ে ঠেলতে লাগলেন, কিন্তু এথেনা নড়লেন না। জিউস দম হারিয়ে এথেনার পায়ের ওপর পড়ে গেলেন। তারপর দেখলেন, এথেনার পায়ের সৌষ্ঠব কী অসম্ভব বলিষ্ঠ। যুদ্ধের দেবীর দুই উরু এমন শক্তিশালী যে জিউসকে যেকোনো মুহূর্তে গুঁড়িয়ে দিতে পারতেন। হাঁটুর নীচে দুই পায়ের জঙ্ঘা পিতলের মতো নিটোল পেশী ফুলিয়ে অপেক্ষা করছে, যেন জিউসের পেলেই চেপে পিষে দেবে। জিউস ভয়ে কাঁপতে থাকলেন। এথেনার দুই পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চাইলেন। এথেনা একটা আলতো লাথি মেরে জিউসকে মন্দিরের চাতালের বাইরে ফেলে দিলেন। বললেন, ঘরে যাও। এদিকে আর এসো না।

এই ঘটনার পর থেকে জিউস আর কোনোদিন এথেনাকে বিরক্ত করেননি।

এই বহুপ্রাচীন গ্রীক ছবিটিতে এথেনাকে দেখা যাচ্ছে। এথেনার বলিষ্ঠ পায়ের আকৃতি এবং সঙ্গী প্যাঁচাটিকেও দেখা যাচ্ছে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:৪২

মোবায়দুল সাগর বলেছেন: তাহলে জিউসের আশঙ্কা সত্যি হয়। অ্যাথিনা যখন তার মায়ের গর্ভে ছিলেন তখন জিউস আশঙ্কা করেন তার এই সন্তানটি তার উপর প্রভাব বিস্তার করবে। তাই তিনি তার গর্ভবতী স্ত্রীকে গিলে ফেলেন। কিন্তু তার কিছুপরে জিউস তার মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করেন। একপর্যায়ে তার মাথা ফেঁটে বেরিয়ে আসেন পূর্ণ যুবতী দেবী অ্যাথিনা।

আপনার লেখার মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আশা করি গ্রীক পুরাণ নিয়ে আপনি আরো লিখবেন।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০৯

প্রথম ফুল বলেছেন: হ্যাঁ, একমাত্র এথেনাকেই জিউস কখনো চ্যালেঞ্জ করেননি বা সামর্থ্যে কুলাতে পারেননি। এথেনা জন্ম থেকেই জিউসের প্রভাব থেকে স্বাধীন ছিলেন।

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:০০

বিটপি বলেছেন: সমস্ত দেবদেবীদের মধ্যে এথেনা সত্যিই ব্যতিক্রম। জিউসও তাকে আলাদা নজরে দেখত। সারা জীবন কোন প্রণয় বা শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়নি। দেব দেবীদের ক্ষেত্রে যা সত্যিই বিরল। ট্রয় যুদ্ধে সমস্ত দেবদেবী ট্রয়ের পক্ষে থাকলেও একমাত্র এথেনা ছিলেন গ্রীকদের পক্ষে। সেই যুদ্ধে গ্রীকদের বিজয়ের একটি অন্যতম কারণ ছিল সেটি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.