নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনোয়ারা মণি

মনোয়ারা মণি

ব্লগপাতায় কামরুন নাহার

কামরুন নাহার আমার নাম নয় আমার নাম মনোয়ারা মণি

ব্লগপাতায় কামরুন নাহার › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিতা হক ও আমার কিছু কথা

১২ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:২৪

রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী মিতা হকের সাম্প্রতিক টেলিভিশন বক্তব্যের রাজনৈতিক দিকটি বাদ রেখে নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে আমার কিছু কথা।

একটি গণতান্ত্রিক দেশে প্রত্যেকটি মানুষের বাক স্বাধীনতা রয়েছে। আলোচনার সময় তিনি তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে গতানুগতিক স্বভাবে বাক-বিতর্ক শুরু হয়েছে যা কোনো অন্যায় নয় তবে এই বাক-বিতর্ক যখন ভিন্ন ধাঁচে বইতে শুরু করে তখনই বিষয়টি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার প্রয়োজনীয়তা বাড়ে।

নীচে দুই লিঙ্কে একই ব্যক্তির মন্তব্যের নমুনা-

এক: ‘অনুষ্ঠানে মিতা হক বলেন, ‘এই সরকারই একমাত্র দল যারা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের কথা বলছে। আমাদের একটি আইডেন্টিটি ক্রাইসিস আছে। আমাদের দেশ বাংলাদেশ। এখানে বিভিন্ন ধরনের লোক বাস করে। এই দেশে শুধুমাত্র আদিবাসীরাই আদিবাসী, কিন্তু বাংলাদেশি। বাকি সবাই কিন্তু আমরা বাঙালি...

আজকাল বাংলাদেশে রাস্তায় বেরিয়ে, কোনো ডাক্তারখানায় বা হাসপাতালে গিয়ে, যেখানে একটু লোকজনের সমাগম বেশি, যেখানে ওয়েটিং রুম আছে, লোকজন অপেক্ষা করছে, সেখানে দেখি যে, একমাত্র আমিই বাঙালি। আমি শাড়ি পড়ে গেছি আর আমার মাথায় ঘোমটা নেই। আজকাল তারা এইটুকু মুখ (নেকাব বা হিজাবের শুধু চোখ ছাড়া সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা ) বের করে রাখছে। এতে তারা আর যাই হোক বাঙালি নয়।’



দুই: ‘সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তরে ‘সংস্কৃতিজনের রাজনীতি ভাবনা’ শীর্ষক টকশোতে তিনি বলেন, যারা ঘোমটা পড়ে তারা বাঙালি নয়।

টকশোতে তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি আইডেন্টিটি ক্রাইসিস আছে। আমাদের দেশ বাংলাদেশ। এখানে বিভিন্ন ধরনের লোক বাস করে। এই দেশে শুধুমাত্র আদিবাসীরাই আদিবাসী কিন্তু বাংলাদেশি। বাকি সবাই কিন্তু আমরা বাঙালি...

তিনি আরো বলেন, আমাদের আইডেন্টিটি ক্রাইসিসটা এতো বাজে, আজকাল বাংলাদেশে রাস্তায় বেরিয়ে, কোন ডাক্তারখানায় বা হাসপাতালে গিয়ে, যেখানে একটু লোকজনের সমাগম বেশি, যেখানে ওয়েটিং রুম আছে, লোকজন অপেক্ষা করছে, সেখানে দেখি যে, একমাত্র আমিই বাঙালি। আমি শাড়ি পড়ে গেছি আর আমার মাথায় ঘোমটা নেই। আজকাল তারা এইটুকু মুখ (শুধুমাত্র চোখ খোলা থাকে) বের করে রাখছে। এতে তারা আর যাই হোক বাঙালি নয়’।



দু’টি লিংকেই ‘এইটুকু মুখ’ শব্দ দু’টি উচ্চারণ করেছেন তিনি। হিজাব নিকাব অর্থাৎ ব্র্যাকেটের ব্যাখ্যা কি তাঁর নিজের না মিডিয়ার সেটা বুঝতে পারছি না। ঘোমটা শব্দটি তিনি আভিধানিক অর্থে নয় সাধারণ ভাবে বলেছেন বলে ভাবছি যাকে আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় মাথায় কাপড় দেয়া।

তাঁর কথার ভাবার্থে হিজাব নিকাবের কথাই বুঝিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।

কণ্ঠশিল্পী মিতা হক ধর্মকে নাকি প্রথাকে প্রাধান্য দিয়েছেন প্রশ্ন আসতে পারে।

আমি মনে করি ‘এইটুকু মুখ’ বেরিয়ে থাকা বলতে তিনি আরব কালচারের কথা বুঝাতে চেয়েছেন। এসবের অন্তরালে কত রকমের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে সে সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন বলেই তাঁর কথায় অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে বলে ধারণা করছি অথবা ‘এতে তারা আর যাই হোক বাঙালি নয়’ বলতে এটা বাঙালিদের কালচার নয় বুঝাতে চেয়েছেন।

তাঁর সব কথায় ওয়ার্ড ফর ওয়ার্ড ব্যাখ্যা হবে বুঝতে পারলে হয়তো তিনি শব্দ উচ্চারণে আরো সতর্ক হতেন।

লিডসে আমাদের জন্য দু’টি অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। তাঁকে তিনি স্পষ্টবাদী মনে হয়েছে।

শিল্পী ঘোমটার উদাহরণে ‘আইডেন্টিটি ক্রাইসিস’ বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে চেয়েছেন বলে বিশ্বাস করি।

নিজস্ব পরিচয় আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বহন করে যেটা দিনে দিনে আমরা হারাতে বসেছি।

কি কি কারণে হারাতে বসেছি সেটা এই আলোচনার মুখ্য বিষয় নয়।

মেয়েরা কি শুধু প্রথা পালনের জন্য নাকি স্বামী বা শ্বশুর বাড়ি বা সামাজিক চাপে নাকি পুরুষদের পাশবিকতার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হিজাব নিকাব পড়েন এখানে সে প্রসঙ্গে কথা বলাও সমীচীন বলে মনে করি না।

বাংলাদেশী এবং বাঙালিদের (পরিচয়ের আর এক নব্য ধারা) কালচার প্রায় একই রকম ।

যে সব কারণে আমরা সেগুলো স্বীকার করি না বা মানি না সেটাও আলাদা প্রসঙ্গ।

সবার উপরে যে কথা বলতে চাই জাতী হিসাবে আমাদের আলাদা পরিচয় ছিলো এবং আছে যেটা আজ অনেক ক্ষেত্রেই বিপর্যস্ত। একজন শুভাকাঙ্ক্ষী ধর্মে পর্দা করা ফরজ সম্পর্কে আমার মতামত জিজ্ঞাসা করেছেন। ধর্মে পর্দা করার তাগিদ রয়েছে আর সেই পর্দা করার প্রকৃত অর্থ বোরখা হিজাব নাকি অন্যকিছু জ্ঞানী ব্যক্তিগণ আমার চেয়ে বেশি ভালো বলতে পারবেন।

একটা সময় ছিলো যখন আমাদের দেশে অবিবাহিত মেয়েরা সাধারণত স্কুল কলেজে সালওয়ার কামিজ পড়তো আর বউ বা মায়েরা পড়তেন শাড়ী।

বাঙালিদের জাতীয় পোশাক শাড়ী এই কালচার কমে যাচ্ছে। ব্রিটেনে একটা পাকিস্তানী গ্রুপ আছে যারা জাতীয় পরিচয় অবমাননা হবে মনে করে শাড়ি অথবা স্কার্ট পরিধান করবেই না। আরব দেশেও সবাই নয় বিশেষ জায়গায় বিশেষ গ্রুপের মানুষেরা হিজাব বা নিকাব ব্যবহার করে। এগুলোর ব্যবহার আমাদের দেশে আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।

সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে পোশাক, ভাষা আর খাদ্যাভ্যাস আমাদের পরিচয় বহন করে।

যে কোনো দুইটি কালচারের মাঝখানে পড়লে কম বেশি ‘আইডেন্টিটি ক্রাইসিস’ হবেই।

শুধু সামাজিক ভাবেই নয় একই ব্যক্তি দুইটি চাকুরী করতে গেলেও ‘আইডেন্টিটি ক্রাইসিস’ হতে পারে।

দুইটি পার্টটাইম চাকুরী করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছিলো সাধারণ কঞ্জুমার্স দোটানায় পড়বে এ জন্য আমি ইচ্ছে করে একটা কাজ ছেড়ে দিয়েছিলাম।

শিল্পী মিতা হক আদিবাসী বলতে নন ইমিগ্রেন্ট বা যাদের রুট বাংলাদেশে তাঁদের কথা বলতে চেয়েছেন বলে মনে করি। বাংলাদেশী আর বাঙালি শব্দের পার্থক্য তিনি জানেন না একথা ভাবা অনুচিত ভাবতে সাচ্ছন্দ বোধ করছি।

দুঃখ জনক হলেও সত্য বর্তমানে অনেক সময়ই আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি বিষয়ে আমরা যা বুঝাতে চাইছি ঠিক সেভাবে ভাষা ব্যবহারে ব্যর্থ হচ্ছি অথবা

অন্যপক্ষ সেটাকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় নিজের মতো করে বুঝে এবং তার উপরে ভিত্তি করে তোলপাড় শুরু করছে।

এই মানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে তা না হলে আমরা সার্বিক ক্রাইসিস এর মাঝে নিমজ্জিত হবো আর আজীবন ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পাবো না।

পরিশেষে কন্সপিরেসি থিওরি ছিলো এবং থাকবে।

মানুষ ভয়ে ভয়ে নিজের মনের কথা বলতে পারবে না এটা একধরণের কারাবাস।

এই যন্ত্রণা নিয়ে বেশীদিন বেঁচে থাকা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৩৩

দিদিমা বলেছেন: তিনি যদি বলতেন, 'আজকাল রাস্তাঘাটে টাইট জিন্স আর শার্ট পড়া মেয়ে দেখা যায়। এরা আর যাই হউক বাঙালি না।'

১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৫

ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন:
লেখাটি কষ্ট করে পড়ে মন্তব্য করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই দিদিমা ।

২| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:০১

ফালাক বলেছেন: চাকমারা আরাকান থেকে ৪০০ বছর আগে এখানে আসে। তারা আদিবাসি হয় কি করে? গো হেল উইদ ইওর মিতা হক! পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিপু মনিও আদিবাসি না বলে তাদের উপজাতি সম্বোধন করেছেন। মিতা হকে গান গেনে মানুষকে এন্টারটেইন করে যাবে। জাতিতত্ত্ব নিয়ে তাকে কেশ বিসর্জন না দিলেও চলবে। আশা করি মিতা হক ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বিষয়টি শুধরে নিবে।

১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৬

ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন:
লেখাটি কষ্ট করে পড়ে মন্তব্য করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই ফালাক ।

৩| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:১৬

ধানের চাষী বলেছেন: মিতা হক কে ? বাঙালি ?

১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৭

ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন: লেখাটি কষ্ট করে পড়ে মন্তব্য করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই ধানের চাষী ।

৪| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮

নয়ামুখ বলেছেন: ঘোমটা দেয়ার কারণে যদি মিতা হকের কাছে বাঙালিত্ব হারাতে হয়, তবে শাড়ির নিচে ব্লাউজ আর পেটিকোট পরার পরও মিতা হকদের বাঙালিত্ব থাকে কি করে ।
নাকি মিতা হকরা পরেন বলে আজ কাল ব্লাউজ-পেটিকোট বাঙালিয়ানার অংশ হয়ে গেছে ।

১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৭

ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন: লেখাটি কষ্ট করে পড়ে মন্তব্য করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই নয়ামুখ ।

৫| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৩

কামাল উদ্দিন ফারুকী জুয়েল বলেছেন: বাঙ্গালিত্বের উপস্থাপ্ন নিয়ে মিতা হক বা অন্য কারো হীনমন্যতা থাকতে পারে, আমাদের নাই।

১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৩০

ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন: লেখাটি কষ্ট করে পড়ে মন্তব্য করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই কামাল উদ্দিন ফারুকী জুয়েল।

৬| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৪

কামাল উদ্দিন ফারুকী জুয়েল বলেছেন: বাঙ্গালিত্বের উপস্থাপন বা পরিচিতি নিয়ে মিতা হক বা অন্য কারো হীনমন্যতা থাকতে পারে, আমাদের নাই।

১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৩১

ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন: লেখাটি কষ্ট করে পড়ে মন্তব্য করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই কামাল উদ্দিন ফারুকী জুয়েল।

৭| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: তুমি গুছিয়ে লিখেছ, এজন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য। ধন্যবাদ।

যাঁরা কমেন্ট করছেন, তাঁদের সবাইকে একই উত্তর না দিয়ে সরাসরি জবাব দিলে ভালো হতো।

মিতা হক গানের মানুষ, তিনি সবকিছু জানবেন এটাও কিন্তু আশা করা যায় না। তাঁর বক্তব্য শুনবার সময় মনে হচ্ছিল তিনি খুব আবেগাক্রান্ত ও এক্সাইটেড। তিনি কথার খেই হারিয়ে ফেলছিলেন। চোখ খোলা থাকলেও চোখে দেখছিলেন না যে তাঁর সামনে বসা স্বয়ং তারিক আনামই শ্মশ্রুমণ্ডিত। তাঁর কথাগুলো সুসংহত ছিল না। খেই হারানোর ফলে তিনি এই খাপছাড়া কথাগুলো বলে ব্লগ ও ফেইসবুকে আগুন জ্বেলে দেন।

যে বিষয়ে তাঁর জ্ঞান নেই, যেখানে তিনি একজন সুপরিচিত জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী, তখন এই বোকামির কোনো দরকারই ছিল না।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৯

ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন: তুমি কষ্ট করে পড়েছো তার জন্য তোমাকেও অশেষ ধন্যবাদ।
মিতা হকের দুটো লিংক পড়ে আমার দৃষ্টিকোণ থেকে নিজস্ব মতামত লিখেছি যাতে আমি পক্ষপাতিত্ব করেছি বলে মনে করি না।
যারা মতামত জানিয়েছেন তারা আমার ব্যাখ্যা চান নাই তাই আমি তো তাঁদের শুধু ধন্যবাদই জানাতে পারি।
শিল্পী মিতা হক যে কথাই বলুন যে ভাষাই বলুন তিনি কী বুঝাতে চেয়েছেন সে কথা কতটুকু সত্য তোমার মতো বুদ্ধিমান লেখকের না বোঝার কথা নয় এটা আমার বিশ্বাস।
আমার মতে তিনি শ্মশ্রুমণ্ডিত বা ঘোমটা দেয়া শব্দ ব্যবহার করলেও বোঝাতে চেয়েছেন অন্যকিছু।
‘আইডেন্টিটি ক্রাইসিস’ এবং তার গুরুত্ব এতো সহজ বিষয় নয় যা স্বল্প কথায় ব্যাখ্যা করা যায়। তিনি এই টারমিনোলজির সাথে পরিচিত এবং একটু অগোছালো হলেও উদাহরণ সহ বলেছেন এটা যথেষ্ট নয় কী?
বাকিটুকু বিজ্ঞজনেরা প্রচার করে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এ ক্ষেত্রে তোমার নিরপেক্ষ ব্যাখ্যা থাকবে এটা আমার কাম্য ছিলো এবং এখনো আছে।
আমি আরো আশা করি ধীরে সুস্থে যাতে আমরা আগুন জ্বালাতে অভ্যস্ত হতে পারি সে বিষয়ে তুমি কিছু লিখবে।
এ লেখার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো।
আশাকরি সবাইকে নিয়ে ঈদ আনন্দে কেটেছে।
ভালো থেকো নিরন্তর।

৮| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমি তো নিরপেক্ষ কমেন্টই দিলাম ;) তুমি কি ভিডিও দেখো নি? না দেখে থাকলে দেখে নিও। কোট করার জন্য ২টা লিংক হয়তো প্রয়োজন ছিল না। তাঁর বক্তব্য বেশ বড়। যে অংশটুকু বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, একেক ব্যক্তি ছোটো বা বর্ধিত আকারে সেই অংশটুকু তুলে ধরেছেন। ব্যাপারটা এই আর কী?

নিরপেক্ষতা কী? যখন কেউ অপরাধ করে তাকে অপরাধী বলাটাই হলো নিরপেক্ষত্ব। এর উলটোটা, অর্থাৎ, আমি অপরাধ করেছি, আমার সাথে তোমার আত্মীয়তা বা বন্ধুত্বের কারণে, অথবা অন্য কারণে আমাকে নিরপাধী হিসাবে বেকসুর খালাস করে দিচ্ছ, সেটা হবে অ-নিরপেক্ষতা বা পক্ষপাতিত্ব। মিতা হক সাধারণ অপরাধ করেন নি। তাঁর অপরাধ বুঝবার জন্য বাঙালিত্বের ঐতিহ্য ও বাঙালিতত্ত্বের ইতিহাস জানা আবশ্যক। যাঁরা লাইভ টকশো দেখেছেন, তাঁরাই বলেছেন, মিতা হকের বাগ্মিতা খুব সাধারণ মানের। পুরো টক শোতে তিনি মোটামুটি নীরব ও নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলার মতো তেমন কিছু পাচ্ছিলেন না বলে। কিন্তু যখন ফ্লোর পেলেন, বলতে বলতে খেই হারিয়ে ফেললেন। তুমি নিশ্চয়ই জানো, যাঁদের ভোকাল এক্সপ্রেশন নিম্ন মানের, তাঁরা গুছিয়ে কথা বলতে পারেন না, মুখের মধ্যে কথাগুলো উপর্যুপরি বের হয়ে আসতে চায়, ইত্যাদি, এবং একসময় মুখ কথা বলে, কিন্তু কী বলে মগজ তা জানে না। আমার ধারনা, মিতা হকের বেলায় এ ব্যাপারটাই ঘটেছিল। আমার দীর্ঘদিনের পেশাজীবনেও দেখেছি প্রকাশভঙ্গি দুর্বল হলে প্রশিক্ষণার্থীগণের মধ্যে ঠিক এ ধরণের ঘটনাই ঘটে থাকে।

যাই হোক, প্রত্যেক মানুষের মন স্বতন্ত্র ও স্বাধীন চিন্তার অধিকারী। তোমার মনের মধ্যে ফার্স্ট ইনস্ট্যান্সে যা ঢুকে গেছে, তা পালটানো অসম্ভব, তেমনি আমারও।

ভালো থেকো নভোচারিনী ;)

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:০৪

ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ সোনাবীজ;
মিডিয়াও যে বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে সেটা দুইটা লিঙ্ক দেখে বুঝতে সুবিধা হয় বিশেষ করে যেখানে কনফ্লিক্ট এর সুযোগ রয়েছে। নেট ঝামেলা করছিলো তাই ভিডিওটি প্লে করতে পারি নাই ইনফ্যাক্ট তোমার লেখা না দেখলে বিষয়টি হয়তো দৃষ্টি এড়িয়ে যেতো।
আজ ফোন থেকে বক্তব্যটি একাধিক বার শুনলাম। ধন্যবাদ আবারো ভিডিওটি দেখার সাজেস্ট করার জন্য। প্রোব করে কথা বলানো কিন্তু একসেপশনাল কোয়ালিটি। :) যাহোক কিছু বলার আগে একটা শোনা গল্প শেয়ার করছি। এক ভদ্রলোকের বিয়ে ঠিক হয়েছে। সব ঠিক ঠাক হওয়ার পরে বর বলছে ‘আমি শ্বশুর বাড়ি থেকে সবই নেব শুধু একটা জিনিস বাদ দিয়ে এবং সেই একটা জিনিস হলো শ্বশুরের মেয়ে’...
ঘটনাগুলো কিন্তু এভাবেই ঘটে আর বিষয়টি যদি হট কেক হয় তাহলে তো কথাই নাই। ছোটো স্ক্রিনে শিল্পীর বডি ল্যাংগুয়েজ ভালো বুঝতে পারলাম না। তবে ভিডিওটি বার বার শোনার পরে আমার ধারণা যে বেঠিক নয় সে কথা আরো বেশি করে ভাবতে পারছি। পরিচয় প্রকাশে বিভ্রান্তির জটিলতা নিয়ে আগেই কথা হয়েছে। তোমার কথায় সহমত ‘প্রকাশভঙ্গি দুর্বল হলে প্রশিক্ষণার্থীগণের মধ্যে ঠিক এ ধরণের ঘটনাই ঘটে থাকে’।
‘বাঙালিত্বের ঐতিহ্য ও বাঙালিতত্ত্বের ইতিহাস’ এ সীমিত ধারণা থাকার জন্যই অতি সহজে আমরা নিজেকে অন্য কালচারে গুলিয়ে ফেলছি এ কথায় নিশ্চয়ই অমত করবে না।
শিল্পী মিতা হক কথা বলার সময় বাঙালি ‘কালচার’ কথাটা মিস করেছেন আর ‘আদিবাসী’ বলতে যা বুঝাতে চেয়েছেন সেটাও মিস-ইন্টারপ্রেট হয়েছে বলে আমার ধারণা কারণ আমরা বিশেষ কিছু মানুষের জন্য ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার করি।
বায়াস ও প্রেজুডিস পুরোপুরি বাদ দিয়ে খোলা মনে দু’পক্ষের চুলচেরা বিচার করে আমরা কয়জন নিরপেক্ষ হতে পারি? তবুও যতটুকু পারা যায়।
আমরা একটা জটিল সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। প্রসিকিউটারদের প্রমাণাদি আর জাস্টিসদের ভারডিক্ট দেয়ার অপেক্ষা কী আদৌ আমরা করছি? আমরা সবাই রাজা তো হতেই পারি কিন্তু সবাই বিচারক হলেই যতো সমস্যা।
‘প্রত্যেক মানুষের মন স্বতন্ত্র ও স্বাধীন চিন্তার অধিকারী’ অবশ্যই একথা মানি।
আমার মনের মধ্যে ফার্স্ট ইনস্ট্যান্সে যা ঢুকে গেছে, তা পালটানো অসম্ভব একথায় রাজি হতে পারছি না বলে দুঃখিত।
যুক্তি প্রমাণের কাছ থেকে নিজের চিন্তা শুধরে নিতে কোনো কার্পণ্য নাই আমার আর যুক্তিহীন ভাবে কারো কথা না শুনে নিজের কথাই বহাল রাখবো এমন মানসিকতার ঊর্ধ্বে পথ চলতে চাই কতোটুকু পারি জানি না।
ভালো থেকো নিরন্তর। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.