নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুধু স্বপ্ন দেখাই শেষ কথা নয়। স্বপ্নের বাস্তবায়ন দরকার। এজন্য উদ্যোগী মানুষজন দরকার।

প্রতিবাদি রাজ খান ইমন

প্রতিবাদি রাজ খান ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবে শেষ হবে সালমানশাহ জননীর কান্না.....?

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৫৪

মহাকালের হিসেবে চির সবুজ নায়ক সালমানশাহ গত হয়েছেন ২০ বছর হল। এই ২০ বছরে কত কিছুই না ঘটে গেল।কত কিছুর উদয় হয় অস্ত গেল , প্রকৃতির কত পালা বদল হল , পদ্মা-মেঘনায় কত জল গড়াল কিন্তু ৯৬ থেকে ২০১৬ এই ২০ বছরে একজন মা এর চোখের পাতা যে এখন ও শুকায়নি।হৃদয়ের যে ক্ষত এই ২০ বছরে বয়ে বেড়াচ্ছেন পৃথিবীর কোন ডাক্তার কবিরাজের ই যে সাধ্য নেই সেই ক্ষত সারানোর।মা জীবিত থাকতে কোন সন্তানের অকাল মৃত্যু শোক সহ্য করতে পারে ? গত ২০ বছরে সালমানশাহ জননীর চোখ তাই এখন ও ভেজা !

সালমানশাহ মারা যাওয়ার পর তার মৃত্যুকে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারেনি সালমান পরিবার।বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী রমনা থানায় ১০ জন কে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।আসামী করা হয়ে ছিল ১ . সামিরা ( সালমানশাহ স্ত্রী ) ২. আজিজ মোহাম্মদ ভাই ৩ . লতিফা হক লুসি ( সালমানশাহর শ্বাশুড়ি ) ৪. ডন ৫. ডেভিড ৬. ফারুক ৭. রুবী ৮ . আবদুস সাত্তার ৯ . সাজু ১০ . শফিকুল হক হীরা ( সালমানশাহর শ্বশুর )

এত দিনেও সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি।সময় যত গড়িয়েছে সালমানশাহ হত্যা মামলার ফাইলে জমেছে ধুলো ।মামলা যখনেই একটু গতি পেয়েছে অদৃশ্য কোন ক্ষমতাবানের হাত এসে থামিয়ে দিয়েছেন মামলার গতি।মামলার বাদী সালমানশাহর পিতা কমর উদ্দীন ও ইহলোক ত্যাগ করেছেন অনেক দিন , এখন তাই মামলা টেনে নিয়ে যাচ্ছেন সালমান জননী নীলা চৌধুরী।

২০১৪ সালে ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতে বিচারক বিকাশ সাহার কাছে যে তদন্তের রিপোর্ট দেন ম্যাজিষ্ট্রেট ইমাদাদুল হক সেখানে সালমানের মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলায় ২০১৫ সালে ১০ ফেব্রুয়ারী নারাজি দেন নীলা চৌধুরী।আদালত মামলা পুন:তদন্তের ভার চাপান র্যাবের উপর।

এরপর মামলার রায় আজ দিব কাল দিব বলে তালবাহানা চলতে থাকে।আর গত ২১ আগষ্ট ঢাকার বিশেষ জজ -৬ এর বিচারক ইমরুল কায়েস রায় দিয়ে দেন " এই মামলার পুনরায় তদন্ত করতে পারবে না র্যাব "।

গত বছর মামলার বিষয়ে সালমান জননীর সাথে কথা বলার জন্য ফোন করলাম

ফোন করতেই ভেসে এল ওয়েলকামটিউন " বাবা বলে ছেলে নাম করবে, সারা পৃথিবী তাকে মনে রাখবে " সালমানশাহ অভিনীত প্রথম সিনেমা কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবির গান।সালমানশাহ গত হয়েছেন 20 বছর হল, ছেলের স্মৃতি যে এখন ও মায়ের প্রতিটি শ্বাস -প্রশ্বাসে জড়িয়ে আছে তা স্পষ্ট হল ওয়েলকামটিউন বাজতেই।

: আসসালাম ওয়ালাইকুম , হ্যালো কে বলছেন ?
- ওয়ালাইকুমসালাম , বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডট কম থেকে দিবাকর বলছি।নীলা ম্যাডাম বলছেন ?
: জ্বি বলুন।

সালমানশাহ প্রসঙ্গ আসতেই বললেন " কিছুটা অসুস্থ আমি ।আজ রোযা রেখেছি ।আমার বাসায় চলে আস , দুপুর ২:৩০ টার ভিতর অথবা সন্ধ্যা ৭ টার পর "।সন্ধ্যা ৭ টার পর হাজির হলাম তার বাসায় ।লিফট দিয়ে ৯ তলায় তার ফ্লাটে পৌঁছুতেই হাসি মুখে আমন্ত্রন জানালেন তিনি।

আমার সামনে দাঁড়িয়ে তখন রত্নগর্ভা ।এটাই তার সাথে প্রথম দেখা , ঘোর যেন কিছুতেই কাটছিলনা ।এই রত্নগর্ভার গর্ভেই জন্মে ছিলেন বাংলা সিনেমার চির সবুজ নায়ক সালমানশাহ ।পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতেই আমাদের নিয়ে ড্রয়িংরুমে বসালেন। দিলেন দীর্ঘ সাক্ষাতকার। ছেলের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন মা।বললেন " ইমনের মৃত্যুর পর এখন ও রাতে ঠীকভাবে ঘুমাতে পারিনা।মনে হয় ও ফিরে আসবে।কেন ফিরে আসেনা বলতে পার" ?

সাক্ষাতকার নিতে গিয়ে কখন যে ২ ঘন্টা সময় পার করে ফেলেছি টেরেই পেলাম না।

বাসার দিকে পা বাড়াই।পথে ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন ঠিকভাবে বাসায় পৌঁছেছি কিনা। চলে আসার আগে নিজ হাতে দেখিয়ে দিয়েছেন এটা আমার ফেসবুক আইডি ।রিকোয়েস্ট পাঠালাম ।এত কম সময়ের পরিচয়ে এতো আন্তরিক ব্যবহার করবেন আর এত ভালোবাসা পাব ভাবতেই পারিনি। আসলে প্রত্যেকটি মায়ের মাতৃ হৃদয় ভালোবাসা আর মমতা দিয়ে পূর্ন, সেটা কখনেই শেষ হবার নয় ।

বাসায় আসতে আসতে সারাটা পথ একদম চুপচাপ ছিলাম।২০ বছর ধরে যে মা সন্তান হারানোর কষ্টটা বুকে চেপে রেখেছেন সেই কষ্টটা অনুভব করার চেষ্টা করছিলাম।

বারবার শুধু চোখের সামনে ভেসে আসছিল আমাদের সামনে তার ঝরঝর করে কেঁদে ফেলার দৃশ্যটা।এত অভিমান যে বুকে জমিয়ে রেখে ছিলেন বুঝতেই পারিনি।

টাইম মেশিনে চড়ে আবার এসেছে ৬ সেপ্টেম্বর সালমানের অকালে চলে যাওয়ার দিন ।এবার তিনি দেশে নেই ইংল্যান্ডে আছেন।আর সালমান ? তিনি তো সেই সিলেটে শাহ জালালের মাজারে শুয়ে আছেন চির নিদ্রায় ।আদালত রায় দিয়েছে " র্যাব সালমানের হত্যা মামলার পুন:তদন্ত করবে না "।বাংলাদেশে বসেও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি সন্তান হারা এক মা ইংল্যান্ডে বসে অভিমানী হয়ে কিভাবে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন " ।

তিনি হয়ত জানেন না তার এই কান্নার পানি এখনো কোটি কোটি সালমানশাহ ভক্তদের চোখে অঝর হয়ে ঝরছে।কবি হেলাল হাফিজ লাইনগুলো যেন তার জন্যই লিখেছেন...

" কষ্ট নেবে কষ্ট
হরেক রকম কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট !

লাল কষ্ট নীল কষ্ট কাঁচা হলুদ রঙের কষ্ট
পাথর চাপা সবুজ ঘাসের

লিখছেনঃ দিবাকর বিশ্বাস

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


কান্না কখনো থামবে না; সালমান না বুঝে বিয়ে করেছিল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.