নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খবর গৃহ থেকে আপনি যদি পৃথিবীতে বাস করেন

ষড়যন্ত্রকারীদের জম

একজন সাধারন বাংলাদেশী,বাংলাদেশকে ভালবাসি আর সব সাধারন বাংলাদেশীর মত । ম' আহমেদ,হোসেনদের মত বেশী না। বেশী সবকিছুই খারাপ,তাই বোধ হয়।

ষড়যন্ত্রকারীদের জম › বিস্তারিত পোস্টঃ

খাম্বা সিন্ডিকেট

২১ শে মে, ২০০৯ বিকাল ৩:০৫





লুৎফর রহমান: খাম্বা আছে, তার নেই, বিদ্যুৎ নেই। কবে বিদ্যুৎ আসবে তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। পাঁচ থেকে সাত বছর ধরে পুঁতে রাখা হয়েছে এ খাম্বা। জোট আমলের পাঁচ বছরে ৬০ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা হলেও এখনও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। আগামী এক-দেড় বছরেও এসব লাইনে সংযোগ দেয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ খাতে জোট সরকারের পাঁচ বছরে হাজার কোটি টাকা খরচ করা হলেও এর সুফল পাননি সাধারণ গ্রাহকরা। আট হাজার টাকার খুঁটি কেনা হয়েছে ১৮ হাজার টাকায়। সরকারি টাকার মচ্ছবের খেলায় কেউ কারও চেয়ে কম যাননি। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ৮৭৫ কোটি টাকার খুঁটির এ ব্যবসায় ছিল সর্বদলীয় সিন্ডিকেট। তারা নিজেরা একাট্টা হয়ে নিয়ন্ত্রণ করেছে পুরো ব্যবসা। আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান কাজ করলেও লভ্যাংশ পেয়েছেন সবাই। কাজও হয়েছে ভাগ-বাটোয়ারা মাফিক। জোট সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পর এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনায় সে সময়ের আলোচিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের নাম বেশি শোনা গেলেও খুঁটির ব্যবসার সিন্ডিকেটে ছিলেন সব দলের ব্যবসায়ী। তখন দেশের এমন অনেক এলাকায় খুঁটি ও বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা হয় যেখানে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে খাম্বা দুর্নীতিসহ বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি তদন্তে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর সাবেক ভিসি আবদুল মতিন পাটোয়ারীর নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টও এখন পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ সময় ১০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের খুঁটি সংগ্রহ করেছে এমন চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটিই ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ পাঁচ বছরে আরইবি’র মোট খুঁটির বেশির ভাগ সরবরাহ করে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসায়ী কাজী শাহেদ আহমেদের মালিকানাধীন জেমকন গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। এ গ্রুপ একাই ৫১১ কোটি ৩০ লাখ টাকার কাজ পায়। এছাড়া, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আরইবি’র খুঁটির পুরোটাই যোগান দেয় এ প্রতিষ্ঠান। ২০০২-২০০৩ সালে বিএনপি সমর্থিত ঠিকাদারদের ছোট ছোট আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ পেলেও ১০০ কোটি টাকার বেশি কাজ করেছে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের মালিকানাধীন খাম্বা গ্রুপের দু’টি প্রতিষ্ঠান। তবে জোট সরকারের পাঁচ বছরের প্রথম এক বছর এ প্রতিষ্ঠান কোন কাজ পায়নি। আরইবি সূত্র জানায়, তখনই এ প্রতিষ্ঠান প্রতিটি কনক্রিট খুঁটির দাম নেয় ১৮ হাজার টাকা করে। জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নেয়া পিডিবি’র এক লাখ কিলোমিটার পুরনো বিদ্যুৎ লাইন সংস্কার পরিকল্পনার কাজ শুরু হয়। এ কাজের আওতায় শুরু হয় পিডিবি’র পুরনো লাইন অধিগ্রহণের কাজ। জোট সরকারের পাঁচ বছরে আরইবি’র লাইন অধিগ্রহণের আওতায় মোট ৮৭৯ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার টাকার কনক্রিট খুঁটি কেনা হয়। এর মধ্যে জেমকন গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান খুঁটি সরবরাহ করে ৫১১ কোটি ৩০ লাখ টাকার। কনফিডেন্স গ্রুপ সরবরাহ করে ১১৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকার খুঁটি। খাম্বা গ্রুপের দু’টি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করে ১০২ কোটি ১০ লাখ টাকার খুঁটি। কনটেক গ্রুপ সরবরাহ করে ৮৫ কোটি চার লাখ টাকার। এছাড়া, টেসকো পাওয়ার লিমিটেড ২৪ কোটি, রয়াল গ্রিন ১৩ কোটি, লুমেক লুম্বার ২০ কোটি এবং অন্য একটি প্রতিষ্ঠান ২৫ লাখ টাকার খুঁটি সরবরাহ করে। আরইবি সূত্র জানায়, ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পিডিবি’র এক লাখ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে এনে লাইন পরিবর্তনের একটি চুক্তি হয়। এ অনুযায়ী এ কাজে অর্থ সহায়তা দেয় ব্যাংক ও এডিবি সহ কয়েকটি বিদেশী প্রতিষ্ঠান। এ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুতের পুরনো পাকা ও স্টিলের খুঁটি সরিয়ে কনক্রিটের খুঁটি বসানো হয়। এতে প্রথম বছর একচেটিয়া ব্যবসা করে জেমকন গ্রুপ। এ বছর এ গ্রুপ মোট ৬৮ কোটি ১৩ লাখ টাকার খুঁটি তৈরি করে। এর পরের বছর বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। এ বছর কাজ পায় মোট চারটি প্রতিষ্ঠান। এ সময় জেমকন গ্রুপ পায় ১৯১ কোটি টাকার কাজ। এর মধ্যে জেমকন ৬৯ কোটি, চরকা ৩২ কোটি, পাথর ২০ কোটি, পোলস অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড পাঁচ কোটি আঠারো লাখ, ক্যাসল কনস্ট্রাকশন ৬৯ কোটি টাকার কাজ পায়। গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের খাম্বা গ্রুপের খাম্বা ৬১ কোটি টাকার কাজ পায়। আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঠিকাদারের মালিকানাধীন ইন্ডিপেনডেন্ট গ্রুপের কনফিডেন্স পাওয়ার পায় ৩৪ কোটি টাকার কাজ। জেমকন থেকে আলাদা হওয়া প্রতিষ্ঠান কনটেক কনস্ট্রাকশন লিমিটেড পায় ২৪ কোটি টাকার কাজ। এছাড়া, এ বছর লুমেক লুমবার নামের অন্য একটি প্রতিষ্ঠান পায় ২০ কোটি টাকার কাজ। ২০০৩-২০০৪ সালে আরইবি মোট খাম্বা কিনে ২১৪ কোটি টাকার। এর মধ্যে জেমকন ১০৪ কোটি, খাম্বা ৪১ কোটি, কনফিডেন্স ৩১ কোটি, কনটেক ২৬ কোটি, টেসকো পাওয়ার ২০ কোটি, রয়াল গ্রিন পাঁচ কোটি টাকার কাজ পায়। ২০০৪-২০০৫ সালে আরইবি মোট খুঁটি কেনে ১৯৪ কোটি টাকার। এর মধ্যে জেমকন ৮৭ কোটি, খাম্বা ২৯ কোটি, কনফিডেন্স ২৭ কোটি, কনটেক ২১ কোটি, রয়াল গ্রিন পাঁচ কোটি ও অন্য একটি কোম্পানি দুই কোটি টাকার কাজ পায়। ২০০৫-২০০৬ সালে ১২৭ কোটি টাকার কাজের মধ্যে জেমকন ৬৮ কোটি, খাম্বা ২৫ কোটি, কনফিডেন্স ২৫ কোটি, কনটেক ১১ কোটি ও রয়াল গ্রিন দুই কোটি টাকার কাজ পায়। দাতাদের পরামর্শে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে খুুঁটি কেনায় এর দামেও ছিল নয়ছয়। কাজে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতা থাকায় তারা একজোট হয়ে উৎপাদন খরচের দ্বিগুণ দামে এ খুঁটি সরবরাহ করে। আরইবি’র একজন প্রকৌশলী জানান, সে সময় উপকরণের দাম বিবেচনা করলে ২৫ ফুটের একটি খুঁটি তৈরি করতে খরচ হয় ছয় থেকে সাত হাজার টাকা। এ খুঁটিই তখন কিনতে হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়। এছাড়া, ১৮ হাজার টাকায় যে খাম্বা কেনা হয় তখন এর খরচ পড়তো আট থেকে নয় হাজার টাকা। বাড়তি দামে খুঁটি কেনার বিষয় স্বীকার করে সে সময়ের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানান, আগে একটি মাত্র কোম্পানি কাজ করতো। বেশি দাম নেয়ার বিষয়টি ধরা পড়ার পর টেন্ডারে বেশি কোম্পানির অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়ে প্রতিযোগিতা আনা হয়। এতে পরের বছর খাম্ব^ার দাম অর্ধেকে নেমে যায়। দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে ইকবাল হাসান মাহমুদ জানান, সে সময়ে নিয়ম মেনেই টেন্ডারের মাধ্যমে সব কাজ দেয়া হয়। দুর্নীতির অভিযোগ একটি রাজনৈতিক সেøাগান। তখন সব দলের ঠিকাদাররা কাজ করেছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে করা তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশেরও দাবি জানান। এ বিষয়ে আরইবি’র সদস্য (প্রকৌশল) নাজমুল হোসেন চৌধুরী জানান, সে সময়ের সব কাজই নিয়ম মেনে করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা সে কাজ মিলে করলে তো আরইবি’র কিছু করার নেই। একটি প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ কাজ করার বিষয়ে তিনি জানান, জেমকন এ দেশের খুঁটির ব্যবসায় পুরনো। এক সময় তারা ছিল একমাত্র প্রতিষ্ঠান। তখন বিদেশ থেকে খুঁটি আমদানি করতে হতো। দেশে এখন অনেক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় তা করতে হয় না বলে জানান তিনি। এদিকে জোট সরকারের সময়ে আরইবি’র হাজার কোটি টাকার কাজ হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে থমকে আছে উন্নয়ন কাজ। অর্থের অভাবে অতি জরুরি কাজও করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। দুই লাখ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন সচল রাখতে এখন আরইবিকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সূত্র জানায়, অতীতে নেয়া অনেক প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। এসব প্রকল্পের লোকবল এখন অলস সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আরইবি’র ক্রয় ও সংগ্রহ শাখার পরিচালক মোহাম্মদ নবী নুর জানান, গত দু’ বছরে নতুন প্রকল্প না থাকায় বোর্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। তিনি জানান, অর্থের অভাবে বিকল ট্রান্সফরমার ও মিটার পুনঃস্থাপনে বোর্ডের সমিতিগুলো হিমশিম খাচ্ছে



http://www.manabzamin.net/lead-01.htm



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.