![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন অর্থোপেডিক্সের ডাক্তার।মানুষের সেবা করার চেষ্টা করি।বাকীটা উপরওয়ালার ইচ্ছা।
অস্টিওপরোসিস বা হাড়ক্ষয়/অস্থিক্ষয় রোগ (Osteoporosis): নীরব ঘাতক।
৩০ বৎসর বয়সের পর প্রাকৃতিক নিয়মে মানবদেহের হাড়ের ঘনত্ব ও পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হতে থাকে যা সামান্য আঘাতেই ভেঙ্গে যায়।এ রোগের নাম অস্টিওপরোসিস বা হাড়ক্ষয় রোগ। গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে ৫০ ঊর্ধ্ব প্রতি তিনজন নারীর একজন এবং প্রতি পাঁচজন পুরুষের একজন অস্টিওপরোসিস বা হাড়ক্ষয় রোগে আক্রান্ত। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ২০ কোটি নারী-পুরুষ হাড়ক্ষয় রোগে আক্রান্ত।প্রতি তিন সেকেন্ডে একজন হাড় ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ।
কেন হয় এই রোগ?
হাড় গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া যার প্রধান উপাদান হচ্ছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি । ৪০ বছর বয়সের আগে হাড়ের বৃদ্ধি বেশি হয় আর ক্ষয় কম হয়। এর পর থেকে হাড়ের ক্ষয় বেশি হয়, বৃদ্ধি কম হয়। হাড়ক্ষয় নির্ভর করে ১৫ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হাড়ের ঘনত্বের সঙ্গে সঙ্গে ক্যালসিয়াম, ফসফেট, কোলাজেন ফাইবারের উপস্থিতি কেমন ছিলো।
এই রোগে ঝুঁকিপূর্ণ কারা?
১। ৬৫ ঊর্ধ্ব যে কেউ।
২। মেনোপজ-পরবর্তী নারী
৩। যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম/শারীরিক পরিশ্রম করেন না
৪। উচ্চতা অনুযায়ী যাঁদের ওজন কম
৫। যাঁরা নিয়মিত পরিমাণমতো ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি খান না
৬। ধূমপায়ী ও মদ্যপানকারীরা
৭। ইস্ট্রোজেন, টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে
৮। থাইরয়েড ও প্যারাথাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বেশি হলে
৯। এই রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে
১০।বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া- বিশেষত স্টেরয়ড জাতীয় ওষুধ।
১১। ডায়াবেটিক, লিভার, কিডনি রোগে এ রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
এই রোগের উপসর্গ
নীরব ঘাতক এটি।
সাধারণত এই রোগীরা আগে থেকে কিছু বুঝতে পারেনা।
হিপ বা মেরুদন্ডএর হাড় ভেঙ্গে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়।
শরীরে ব্যথার অনুভূতি থাকতে পারে যার স্বাভাবিক হাঁটাচলা বা কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
রোগ নির্ণয়
এক্স-রে করে এই রোগ নির্ণয় যখন হয় তখন ৫০-৭০ ভাগ হাড় ক্ষয় হয়ে যায়। তবে বর্তমানে ডেক্সা স্ক্যান করে হাড়ের ঘনত্ব মেপে এই রোগ নির্ণয় করা যায়, যা একটু ব্যয়বহুল ও সহজলভ্য নয়।যারা এই রোগের ঝুঁকিতে আছে
প্রতিরোধ
এই রোগটির চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম।
১। ওজন কমানো,লাইফ স্টাইল মডিকিকেশন ।
২। নিয়মিত ব্যায়াম/শারীরিক পরিশ্রম করা : এতে হাড়ের শক্তি বাড়ে। এতে হাড়ের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে জয়েন্টগুলো সচল রাখে। শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে হাড়ক্ষয় কমায়।
৩। নিয়মিত সুষম খাবার গ্রহণ – বিশেষত পরিমাণমতো ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-জাতীয় খাবার।ক্যালসিয়ামের জন্য নিয়মিতভাবে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও দুধজাতীয় খাবার খান।ভিটামিন ডি-এর ৯০ ভাগ উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো। তাই প্রতিদিন ১৫-৩০ মিনিট রোদ পোহান আর পাশাপাশি খান সামুদ্রিক মাছ ।
৪।ধূমপান ও মদ্যপান বিরত থাকা
৫। ডায়াবেটিস, লিভার, কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
৬। হাড় ভাঙা রোধে বাথরুমে পিচ্ছিল ভাব দূর করুন।
৭। রাতে ঘরে মৃদু আলো জ্বালিয়ে রাখুন। অন্ধকারে চলাফেরা করবেন না।
৮। অতিরিক্ত ওজন বহন করবেন না।
এই রোগের প্রতিরোধে চাই আগে থেকে সচেতনতা, যত্ন, জীবনের শৃঙ্খলা।
ডাঃ কামরুজ্জামান,অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ।
©somewhere in net ltd.