নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের খোঁজে.........

আমি রিক্ত শুন্য, নাই কোনো পুন্য।

সত্যের পূজ়ারী

সত্যকে বাসি আমি সবার চেয়ে ভাল

সত্যের পূজ়ারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ষণ ও ধর্ষক অতঃপর বিচার!

১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:১৩

- স্যার আজকের ফাইলটা।

অফিসারঃ হ্যাঁ দাও। যাও ছেলেগুলোকে নিয়ে এসো।



হাবীলদার রইস মিয়া ফাইলটি অফিসারের সামনে রেখে থানা কাস্টডির দিকে পা বাড়ায়। গতরাতে বেশ কয়েকজনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। ধর্ষণের দায়ে। কতকের ছবি পত্রিকায়ও এসেছে।



নিয়ে এসেছি স্যার।

- লাইন করে দাড়াতে বলো।



#১ম জন।



নাম কী?

- মানিক।

পরিচয়?

- স্যার আমি ছাত্রনেতা।

কোন দলের?

- সরকারি দলের স্যার।

(অফিসার ব্যতিব্যস্ত হয়ে) আরে বলেন কি! আগে বলেন নি কেন! আপনার সরকারি দলের ছাত্রনেতা। আপনার তো দ-একটু ইয়ে করতেই পারেন। চাইলে হাফ-ফুল যেকোন সেঞ্চুরিও করতে পারেন। সেন্ট্রি, উনার হাতকরা খুলে নাও। উপরে আবার কিছু জানায়েন না প্লিজ! সরি, মিসটেক হয়ে গেছে।



হাসতে হাসতে থানা থেকে বেড়িয়ে আসে মানিক। থানার গলি পার হয়ে মোড়ের দোকান থেকে সিগারেট ধরিয়ে দীর্ঘ একটি টান দেয়। সিগারেটের ফুঁক ছাড়তে ছাড়তে সামনে এগিয়ে যায় সে।



#২য় জন।



নাম কী?

- জ্বী স্যার সোহেল।

পরিচয়?

- স্যার আমিও ছাত্রনেতা।

সরকারি নাকি বিরোধি দলের?

- বিরোধি দলের স্যার।

ফাজলামি পাইছোস? মগের মুল্লুক মনে করিস সবকিছু? ক্ষমতায় নাই তাও এমন করিস? কত্ত বড় সাহস তোর! বাইড়াইয়া গিরার হাড্ডি ছুটাই ফালামু।

- স্যার আমার মামা সরকারি দলের এমপি।

ও! তাইতো বলি এত সাহস কই থিকা আসে। লিংক তো ভালই আছে। ক্ষমতায় থাকলেই কি আর না থাকলেই কি। এবারের মত যান। তয় সাবধানে থাইকেন ঠিকাছে?

- জ্বী আচ্ছা।

থানার বাইরে এসে দুইবার জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেয় সোহেল। মনে মনে বলে, হাহ, সাবধানে থাকবে! কত্ত করলাম। তোমার মত অফিসার কত্ত দেখলাম।



#৩য় জন।



নাম কী?

- মাশহুর।

দেখে তো মনে হচ্ছে বড়লোকের পোলা। তা পরিচয় কী?

- ঠিকই বলেছেন স্যার। আমার বাবা বিশিষ্ট শিল্পপতি।

হুম, এক দেখাতেই বুঝতে পেরেছি। আপনাদের টাকা-পয়সা আছে। দু-একটু আকাম-কুকাম না করলে কি আপনাদের হয়? যান, আপনার বাবাকে আমার সাথেই আজই দেখা করতে বলবেন।



মাশহুর বেড়িয়ে আসে। বন্ধুকে ফোন দেয়। ১০ মিনিটের মধ্যেই বন্ধু গাড়ি নিয়ে চলে আসে।গাড়িতে উঠে বন্ধুকে ধর্ষণ এবং থানার কাহিনী বলতেই দুবন্ধু হো হো করে হেসে ওঠে। পলকেই গাড়ি টান দিয়ে মিশে যায় রাস্তার গাড়ির ভিড়ে।



৪র্থ জন।



নাম কী?

- জ্বী মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন।

দাড়ি-পাঞ্জাবী দেখে তো মনে হচ্ছে হুজুর। মাদ্রাসায় পড়ান নাকি?

- জ্বী স্যার। আমি মাদ্রাসার শিক্ষক।

তো একজন হুজুর হয়ে এ কাজ কিভাবে করলেন?

- স্যার, আমি ওকে পড়াতাম। কিন্তু স্যার মেয়েটার কাপড়-চোপড় একদম ঠিক থাকতো না। আর আপনেই বলেন, খোলা খাবারে কি মাছি না বসে পারে? সেদিন বাসায় কেউ ছিল না তাই আমি আর ঠিক থাকতে পারিনি স্যার। তবে এখন বুঝছি, একটু ভুল হয়ে গেছে স্যার। আমাকে ক্ষমা করে দিন। এই তওবা করছি আস্তাগফিরুল্লাহ…… আর কখনো এ কাজ করবো না স্যার।

হুম, বুঝলাম। আপনারা আল্লাওয়ালা লোক। তবে এসব করলে মানুষ খারাপ বলে। একটু বুঝে-সুঝে চলবেন।



থানা থেকে বের হয়ে আসে ইসমাইল।আকাশের দিকে চেয়ে চোখের পলকেই দুহাত তুলে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে নেয় সে।



৫ম জন।



নাম?

- জ্বী স্যার জগদীস।

আঃ কি! হিঁদু?

- জ্বী স্যার।

তোর তো সাহস কম না! হিঁদুর বাচ্চা হয়ে এ কাজ করিস। পরিচয় কী তোর?

- স্যার আমি বিশেষ জেলার লোক।

ও! তাই বল। যা এখান থেকে দূর হ।



হাঁফ ছেড়ে বাঁচে জগদীস। মনে মনে ভগবানকে প্রণাম জানায় তাকে বিশেষ জেলায় পাঠানোর জন্য।



৬ষ্ঠ জন।



নাম কি তোর?

- স্যার, আমি জলিল।

পরিচয়?

- তেমন কিছু নাই স্যার।

কোনো দলের নেতা?

- না স্যার।

নেতা মামা-খালু আছে?

- না স্যার।

বাপের টাকা-পয়সা আছে?

- জ্বী না।

কোন বিশেষ জেলায় বাড়ি?

- না।

ওই চুদির ভাই। সবই না না করছোস, তাইলে ধর্ষণ করছোস ক্যান?

- স্যার আমি তো পুরুষ।

ও! তুই পুরুষ না? তোর সাথে কিছু আছে না? না না, কিছু থাকলে তো কিছু করতেই হয়, তাই না?

- জ্বী স্যার। বুঝেনই তো। আপনি নিজেও তো একজন পুরুষ।

থাপড়াইয়া দাঁত ফালাইয়া দিমু হারামজাদা। দূর হ আমার চোখের সামনে থিকা।



এক দৌড়ে থানা থেকে বেড়িয়ে আসে জলিল। স্রেফ পুরুষ হওয়ার কারণেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আজ সে বেঁচে গেল।



ওদিকে এদের দ্বারা ধর্ষিত হওয়া ছয়জনের মধ্যে ২ জন আত্মহত্যা করেছে। তিনজন হাসপাতালে আছে। একজনের মস্তিষ্ক বিকৃতি দেখা দিয়েছে। মেয়েগুলোর ফ্যামিলির লোকেরা অশ্রুসজল চোখে স্তব্ধ হয়ে বসে আছে হাসপাতালের বারান্দায়, মৃত মেয়ের পাশে। কেউ আবার বৃথাই দৌড়াদৌড়ি করছে প্রহসনের বিচারের আশায়।



কি? খুব কষ্ট হচ্ছে? বেশি বলে ফেলেছি? নিচের চিত্রটা দেখুন তোঃ

গত দশ বছর



ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা



ঢাকা -------ঘটনা-৩৯৮০টি, মামলা----------১৫৫৬টি,শাস্তি-----------৪০টি

রাজশাহী----ঘটনা-৪১৬৯টি, মামলা----------৪১৪টি শাস্তি------------২৫টি

চট্টগ্রাম -----ঘটনা-২০৩৭টি, মামলা ---------৪৯৯টি শাস্তি------------৫টি

সিলেট -------ঘটনা-২২১৯টি, মামলা----------৩৮৬টি শাস্তি-------------২টি

খুলনা -------ঘটনা-২০৩১টি, মামলা----------২৯৩টি শাস্তি--------------২টি

বরিশাল -----ঘটনা-১২০০টি, মামলা----------৩৫৩টি শাস্তি--------------৪টি

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৩৬

রিফাত হোসেন বলেছেন: শুরুটা ... ওকে.. কিন্তু ধীরে ধীরে অতিরঞ্জিত করে ফেলেছেন ...

এটা অপরাধের থেকে সামাজিক ব্যাধীই বেশী মনে হয় ।

চোখকে সংযত রাখতে হবে, অবস্থা সম্পন্ন হলে বিয়ে করতে হবে, মেয়েদের পর্দাতে উত্তম । এতে অবশ্যই এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব ।

শাস্তি স্বরূপ এদেরকে পুরুষত্বহীন করে দেওয়া হোক । বুঝবে... ..

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.