নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের খোঁজে.........

আমি রিক্ত শুন্য, নাই কোনো পুন্য।

সত্যের পূজ়ারী

সত্যকে বাসি আমি সবার চেয়ে ভাল

সত্যের পূজ়ারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মের নামে আজগুবি খবর ও কিছু কথা!

৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৪২

ইসলাম ধর্ম মতে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর সময় আল্লাহ জিব্রাইল ফেরেস্তার মাধ্যমে নবীজির কাছে ওহি পাঠাতেন। এখন সময় পাল্টেছে। কিছু ঘটনার বিবরণ পড়ে মনে হচ্ছে, নবীজি এখন নিজেই স্বপ্নের মাধ্যমে বিভিন্ন জনের কাছে ওহি পাঠাচ্ছেন! রেগে যাবেন না প্লিজ। আগে ধৈর্য সহকারে পুরোটা পড়ুন।



বেশ কয়েকবছর আগের ঘটনা। গ্রামের সবার মুখে মুখে একটি ঘটনার কথা গুনগুন করে বাজছে। সেই গুনগুনানির ভেতরেই একটি কাগজ আমার হাতে এসে পৌছুলো। কাগজটিতে লেখা ঘটনার বর্ণনা মোটামুটি নিম্নরুপঃ



মধ্যপ্রাচ্যের একদেশের ঘটনা। এক ব্যক্তি মারা গেছেন। কিন্তু মৃত ব্যক্তিকে জানাজা শেষে কবরে নামানো যাচ্ছে না। কারণ, কবরে নামাতে গেলেই সবাই ভয়ে দূরে সরে যাচ্ছেন। কবরে একটি ইয়া বড় সাপ। মুর্দা নামাতে গেলেই সাপটি ফণা তুলে ফোঁসফোঁস করে উঠছে। কয়েকটি বিকল্প কবর খুড়েও কোন লাভ হয় নি। যেখানেই কবর খোড়া হয়, সেখানেই সাপটি আশ্চর্যজনকভাবে হাজির হয়! উপায়ান্তর না দেখে অবশেষে একজন কামেল ব্যক্তিকে ডেকে এনে দোয়া করানোর পর সাপটি উধাও হয়ে যায়। মুর্দাটি তড়িঘড়ি করে কবরে রেখে উপরে উঠে আসতেই উনারা সাপটি দেখতে পান। সাপটি মুর্দাটিকে পেচিয়ে ধরে মুখে ক্রমাগত ছোবল মারতে থাকে। কামেল ব্যক্তিটির কথায় ওইভাবেই তারা কবরের ওপর মাটি ফেলে দাফনকার্য সম্পন্ন করে।



রাতে ওই কামেল ব্যক্তিটি স্বপ্নে নবীজিকে দেখতে পায়। নবীজি ওই মুর্দা সম্পর্কে বিস্তারিত তাকে বলেন। ওই ব্যক্তি জীবিতাবস্থায় পরহেজগার ছিল না। বিভিন্ন পাপাচারে লিপ্ত ছিল। ফলে কবরে নামানোর সাথেসাথেই তার ওপর সর্পের দংশন শুরু হয়ে যায়। নবীজি কামেল ব্যক্তিটিকে আরও বলেন যে, পৃথিবীর মানুষ ইসলামের পথ থেকে দূরে সরে গেছে। তিনি কামেল ব্যক্তিটিকে এই ঘটনাটি সারা বিশ্বে প্রচার করে মানুষকে সতর্ক করার দায়িত্ব দিলেন।



এরপর ওই কামেল ব্যক্তি সাপে পেচানো একটি মুর্দার ছবিসহ ঘটনাটি সারা বিশ্বে প্রচারের কাজ শুরু করলেন। ঘটনাটি এই পর্যন্ত এসে থেমে গেলে ঠিকই ছিল। কিন্তু আরও ব্যাপার আছে। ছবি সংবলিত খবরের পাতাটি যে পড়বে তাকেই ছবিটি আরও প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ওমুক ওমুক ছবিটি ৫০/১০০ কপি ছাপিয়ে প্রচার করার তিনদিনের মধ্যে তারা সুফল পেয়েছে। কেউ লটারি পেয়েছে, কারও চাকুরি হয়েছে। আবার কাগজটি কেউ ছিড়ে ফেলায় তার ছেলে দুদিন পরেই মারা গেছে। কেউবা ঘটনাটি অবজ্ঞা করায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।এমনি বলে ভয় দেখিয়ে প্রায় বাধ্য করেই ছবিসহ কাগজটি প্রচারের সুবন্দোবস্ত নেয়া হয়েছে।



আমি সে সময় পাঁচ ওয়াক্ত আযান দিয়ে নামাজ পড়ি। তারপরেও কিছুটা সংশয় থেকে কাগজটি নিয়ে আমার হুজুর টাইটেল পাশ মাওলানার কাছে গেলাম। তিনি কাগজটি পড়ে বললেন যে এমন হতেই পারে। অস্বাভাবিক না। কি আর করা, আমিও দুর্মূল্যের বাজারে মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ১০০ কপি ছাপিয়ে বিলি করে দিলাম।তবে ওই খবরের ১০০ কপি বিলি করার পরে সেরকম কোন সুসংবাদ আজও পাই নি।



এই তো গেল বেশ ক’বছর আগের কথা।আজ সকালে আমার ছোট কাকি ডাক দিয়ে একটি কাগজ জোরে জোরে পড়ে শোনাতে বললেন।কাগজটি হাতে নিয়ে এক পলক বোলাতেই বুঝতে পারলাম, পুরোনো কেস।এক নিঃশাসে নিঃশব্দে পড়লাম। কাহিনী ভিন্ন হলেও মর্মার্থ একই। ঘটনাটি সংক্ষেপে নিম্নরুপঃ



মদিনা শরিফের এক লোককে নবীজি স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলেছেন যে, এ বছর প্রায় ৭০০০ মানুষ মারা গেছে (কোন এলাকায়, কোন দেশে নির্দিষ্টভাবে বলা নেই। আজকাল বাচ্চারাও জানে এক বছরে কেন, প্রতিদিন সারা বিশ্বে ৭০০০ হাজারের চেয়ে ঢের বেশি মানুষ মারা যায়)। তাদের মধ্যে একজনও ইমানদার ছিল না। দিন দিন আল্লাহর হুকুম পালনকারী মানুষের সংখ্যা কমেই যাচ্ছে (অতি সত্য কথা)। এভাবে চলতে থাকলে সামনে ভয়াবহ গজব আসবে। তুমি আমার পক্ষ থেকে সারা বিশ্বের মানুষকে সতর্ক করে দাও। শেষমেষ খবরটি প্রচারের জন্য সেই একই ভয় এবং লোভ দেখানো হয়েছে।



এরই মধ্যে কাকি বলে উঠলো, কি পড়স? জোরে জোরে পড়! আমি অধিক স্বরে ধমক দিয়ে বললাম, কই পাও এইগুলা। ঘোড়ার ডিম কোনহানকার। কাকি বলে, ওই কোথায় জানি উল্টা-পাল্টা বলায় একজনের বড় ছেলে মইরা গেছে। আমি বললাম, তাই নাকি? তাহলে যাও ১০০ কপি ছাপায়া তুমি বিলাও। তাইলে তুমি স্বর্নের কলসি পাইবা। এসব কথা শুনে মা এগিয়ে এসে বললেন, থাম, এইগুয়া ভুয়া। এইগুলায় বিশ্বাস করাও পাপ। মানুষেরে ধোকা দেয়ার জন্য দুইদিন পরপর একটা ফতমা (গুজব সমার্থক শব্দ) বের করে। মা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। রোজা রাখে। তারপরেও মায়ের এমন কথা শুনে বুঝলাম, দিন পাল্টাইছে। সাধারণ মানুষও কিছুটা হলেও সচেতন হচ্ছে।



এবার আসি আসল আলোচনায়। এ ধরনের খবর একজন সচেতন মানুষ দেখলেই বুঝতে পারবেন যে, এগুলো একটি ধোয়া তুলতে তৈরি করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে এগুলো প্রচার-প্রসার করা হচ্ছে। মাঝখান থেকে লাভ হচ্ছে ফটোস্ট্যাট/ফটোকপি ব্যবসায়ীদের। মাদ্রাসার হুজুররাও এসব দেখে ভুয়া/মিথ্যা বলতে পারছেন না। কারণ এতে ধর্মীয় ব্যাপার আছে, আল্লাহ-নবীর নাম রয়েছে। ফলে এই ধরনের বহু ছলচাতুরীমূলক কাজ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটেই যাচ্ছে।



এ ছাড়াও সমাজে ধর্মের নামে নানা অপরাধমূলক কাজ, ছলচাতুরী চলে।তা রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে ভিক্ষাবৃত্তি, মাজার ব্যবসা পর্যন্ত ব্যাপী চলে। ধরা খেলে আমরা যখন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেই তখন ধর্ম পালন না করা কিন্তু ধর্মের পক্ষে গলা ফাটানো মডারেট ভাইয়েরা বলে উঠেন, ইহা সহিহ ইসলামের কাজ না।ইহা ঠিক না ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আপনারা নিজ থেকে এর বিরুদ্ধে কখনো কোন প্রতিবাদ করেন না। আর প্রতিবাদ না করাই মানে সেখানে মৌন সমর্থণ কাজ করে। যাইহোক, আপনাদেরকে বলি, ধর্মের নামে অধর্মকারীদের বিরুদ্ধে মাঝেমদ্ধ্যে একটু প্রতিবাদ করেন। না হলে আপনাদের চোখের সামনেই নাস্তিকরা না, এসব ধর্মের নামে অধর্মকারীরাই ধর্মটাকে গিলে খেয়ে ফেলবে। তখন পালন করার জন্য ধর্মকে আর খুঁজেও পাবেন না।



সব ধরনের কুসংস্কার ও কুবিশ্বাস থেকে মানুষ বেড়িয়ে আসুক, মুক্তি পাক।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৪৮

নিষ্‌কর্মা বলেছেন: ভাল কথা বলেছেন ভাই।

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০৭

আহেমদ ইউসুফ বলেছেন: এ ধরনের লেখা আমিও পড়েছি। তবে বিশ্বাস করিনি। ইসলাম একটি পুর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। কিয়ামত পর্যন্ত যে কোন সমস্যার সমাধান একমাত্র ইসলামেই সম্ভব বলে মনে করি। সুতরাং মানুষকে সতর্ক করা ও হেদায়েত করার বিষয়ে মহাগ্রন্থ আল কোরআনেই রয়েছে শত শত আয়াত। এছাড়া হাদীসেও রয়েছে হেদায়েতের শিক্ষা। যাই হোক মহান আল্লাহ আমাদের অসত্য ও গুজব থেকে রক্ষা করুন। আমিন........

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২০

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধর্মে কু-বিশ্বাস থাকবেই।

বলা আছে নবী রসুল আল্লা নিয়া সন্দেহ প্রকাশ করলে সে কাফের। আর কাফের হত্যা করা অতি সোয়াবের কাজ।

কাজেই স্বার্থবাদীরা তাদের কাজ ঠিকই উদ্ধার কইরা নিবে। যেমন জ্বলজ্যান্ত বেদাত হচ্ছে আমাদের পীরসাবরা, দেওয়ানবাগীদের মতন কিছু ভণ্ড। সাধারণ মানুষের সরল বিশ্বাস যাদের পুঁজি।

৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৪২

মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: মাদরাসায় পড়া অবস্থায় এ ধরনের লেখা সম্বলিত কিছু কাগজ হাতে পেয়েছিলাম। তারপর মাদরাসার উস্তাদদের দেখালে বললেন এগুলো পুরাই ভুয়া খবর। তারপর থেকে মাদরাসার বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে এ সমস্ত ব্যাপার নিয়ে সাধারন মানুষকে সতর্ক করা হয়। তারপর থেকে এলাকায় এগুলোর আর প্রচার দেখা যায়নি

৫| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫০

আলাপচারী বলেছেন: বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না। একই রকম খবর সম্বলিত একই টোনে লেখা হিন্দু দেব দেবীদের নিয়ে লিফলেট আমি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পেয়েছিলাম।

বলাই বাহুল্য, হিন্দু ধর্মভীরুদের উদ্দেশ্যে।

৬| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫২

আদু চাচা বলেছেন: জুলিয়ান সিদ্দিকী@ সমকামী হইয়োনা। না হয় তোমার স্যারের মত কোলন ক্যন্সার হইতে পারে।

৭| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৫২

মুহাম্মাদ মাহফুজুর রহমান শরীফ বলেছেন: ওমুক ওমুক ছবিটি ৫০/১০০ কপি ছাপিয়ে প্রচার করার তিনদিনের মধ্যে তারা সুফল পেয়েছে। কেউ লটারি পেয়েছে, কারও চাকুরি হয়েছে। আবার কাগজটি কেউ ছিড়ে ফেলায় তার ছেলে দুদিন পরেই মারা গেছে। কেউবা ঘটনাটি অবজ্ঞা করায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে

কোন রসিক ফটোকপি-আলা মনে হয় এগুলো বের করছে।
যত কপি হবে তত তাদের লাভ।

৮| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:০৭

জাভেদ৫০ বলেছেন: এটি এখন অনলাইনে শুরু হয়েছে। মানুশ ধ্মীয় কিছু দেখলেঈ লাইক দিয়ে বসে থাকে।

৯| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩৯

দি সুফি বলেছেন: কয়েক বছর আগে মোবাইলে এসএমএসেও এগুলো পাঠানো হত!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.