নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আতা কাহিনী

২৪ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২১

আতা ফল কোনটি?
আতা আর সীতা কি একই ফল?
আতা আর সরিফার পার্থক্য কি?
আতার আরেক না কি নোনা?

আতা

অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : সীতা ও শরিফা বা সরিফা।
Common Name : Custard-apple, Sugar-apple, sugar-pineapple or sweetsop.
Scientific Name : Annona squamosa L
ছবি তোলার স্থান : শ্বশুর মশায়ের ছাদ বাগান, বাড্ডা, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ০৩/০৫/২০১৬ ইং





এই প্রশ্নগুলি মাঝে মাঝেই দেখতে পাই। মাঝে মাঝে বেশ ভালো রকমের যুক্তি-তর্কও দেখার সুযোগ হয়। অনেক দিন ধরেই ইচ্ছে ছিল এই বিষয়ে কিছু তথ্য উপস্থাপন করবো, আজ তাই করছি। মনে রাখতে হবে আমি শুধু কয়েকটি বইয়ের তথ্য এখানে উপস্থাপন করছি। লেখার শেষ অংশে আমার উপলব্ধি প্রকাশ করবো। আপনাদেরও তা প্রকাশের সমান সুযোগ রইলো।



আতা বিষয়ে কয়েকটি বইয়ের আলোচনা
১। কালীপদ বিশ্বাস ও এককড়ি ঘোষ লিখিত “ভারতীয় বনৌষধি” প্রথম খণ্ডের ১৩ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে আতা। বইটির ১১ ও ১২ নাম্বার পাতায় আতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে - ফলটির বাংলা নাম - আতা, হিন্দি নাম – সীতাফল আর তামিল নাম – সীতা, বৈজ্ঞানিক নাম - Annona squamosa L.।
মাঝারী আকারের গাছ, ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু। পাতা ২-৩ ইঞ্চি লম্বা, আধ ইঞ্চি চওড়া।


২। শ্রীহরিমোহন মান্না প্রণীত “ফলের বাগান” বইতে ৪ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে আতা বইটির ১৪০ নাম্বার পাতায় আতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আতা সম্পর্কে সেখানে বলা হয়েছে -
“ফলগুলির গাত্রদেশ খাঁজকাটা বন্ধুর। ভিতরে শাঁস অতি কোমল।”


৩। নলিনীকান্ত চক্রবর্তী প্রণীত “ত্রিপুরার গাছপালা” বইতে ৫ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে আতা। বইটির ১৩ নাম্বার পাতায় আতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ফলটির বাংলা নাম -আতা, অন্য নাম – সীতা ফল, বৈজ্ঞানিক নাম - Annona squamosa L.
“squamosa” অর্থ অসমান, এতে ফলের অসমান গায়ের কথা বুঝায়। এই ছোট বৃক্ষটি আমেরিকার উষ্ণ মন্ডলের আদিবাসী। ফল অসমান গাত্র বিশিষ্ট গোলাকার। ফলত্বকের একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। উহা নরম সবুজাভ রঙের কতগুলি গোলাকার আঁশ জুড়ে যেন তৈরি। পাকা ফলে এই আঁশের মত অংশগুলি আলাদা করা যায়। ফলের মধ্যে মিষ্টি সাদা রঙের আঁশ থাকে।”


৪। শ্রীঊর্ণচন্দ্র সাহার সঙ্কলিত “আয়ূর্ব্বেদোক্ত উদ্ভিদ সংগ্রহ” বইতে ১৬ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে আতা বইটির ১৬ নাম্বার পাতায় আতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ফলটির বাংলা নাম -আতা, সংস্কৃত নাম - আতৃপ্য, হিন্দি নাম – সরিফা, তৈ নাম – সিতাফলম। (“তৈ” তে ভারতের কোন একটা প্রদেশের নাম বুঝানো হয়েছে।) ইংরেজি নাম - custard apple এবং বৈজ্ঞানিক নাম - Annona squamosa L.।



নোনা বিষয়ে কয়েকটি বইয়ের আলোচনা
১। কালীপদ বিশ্বাস ও এককড়ি ঘোষ লিখিত “ভারতীয় বনৌষধি” প্রথম খণ্ডের ১৪ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে নোনা। বইটির ১২ নাম্বার পাতায় নোনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ফলটির বাংলা নাম – নোনা আর সাঁওতালি নাম – গম, ইংরেজি নাম - true custard apple এবং বৈজ্ঞানিক নাম - Annona reticulata L.
মাঝারী আকারের গাছ, ২০ থেকে ৪০ ফুট উঁচু। পাতা ৫-৮ ইঞ্চি লম্বা, দেড় থেকে ২ ইঞ্চি চওড়া।


২। শ্রীহরিমোহন মান্না প্রণীত “ফলের বাগান” বইতে ২৬ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে নোনা। বইটির ১৯৭ নাম্বার পাতায় নোনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নোনা সম্পর্কে সেখানে বলা হয়েছে -
“নোনা আতা জাতীয় ফল, কিন্তু গুণে ইহা আতা হইতে নিকৃষ্ট। ইহা আতার মত অত রসাল ও সুগন্ধি নহে। আতা হইতে নিকৃষ্ট হইলেও খাইতে এ ফলও বিশেষ সুস্বাদু। এ ফলগুলির উপরিভাগে আতার মত খাঁজ নেই। ইহা পাকিলে পীতাভ লালবর্ণ হয়।”

৩। নলিনীকান্ত চক্রবর্তী প্রণীত “ত্রিপুরার গাছপালা” বইতে ৪ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে নোনা বইটির ১২ নাম্বার পাতায় নোনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ফলটির বাংলা নাম -নোনা, অন্য নাম – রাম ফল, নোনা আতা, বৈজ্ঞানিক নাম - Annona reticulata L.
reticulata অর্থ জালিকাকার, ইহা ফলের উপরের অস্পষ্ট জালিকার বুঝায়। আতা গাছের সাথে এর পার্থক্য এর পাতা অনেক লম্বাটে, ফলের গা সমান,অবশ্য তাতে অস্পষ্ট জালিকাকার খাঁজ রয়েছে। ফলের ভেতরটা অনেকটা আতার মত তবে শাস অনেকটা বালির মত দানাদার এবং এর গন্ধ ততোটা ভাল নয়। ফলের আকার প্রাণীর হৃৎপিণ্ডের মত।

নোনা

Common Name : wild, sweetsop, soursop and bullock's heart
Scientific Name : Annona reticulata L
ছবি তোলার স্থান : বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ৩১/০১/২০১৮ ইং

উপরের সূত্রগুলি মোতাবেক আমার ধারনা হয়েছে “যাহা লাউ, তাহাই কদু।” থুক্কু, “যাহা আতা, তাহাই সীতা বা সরিফা।” কারণ সীতা ও সরিফা নামগুলি শুধুমাত্র আতার সাথে ব্যবহার করা হয়েছে, নোনার সাথে কখনোই ব্যবহার করা হয়নি। আর আতার বৈজ্ঞানিক নাম - Annona squamosa L. এর squamosa থেকে এবং বইগুলির আলোচনা থেকে সহজেই বুঝা যায় যে আতার পৃষ্ঠদেশ হবে অসমান অমসৃণ।

অন্যদিকে নোনার ক্ষেত্রে সকল বইতেই তার নাম নোনা পাওয়া যাচ্ছে। নোনাকে কোন বইতেই সীতা বা সরিফা বলা হয়নি। আর নোনার বৈজ্ঞানিক নাম - Annona reticulata L. এর reticulata থেকে এবং বইগুলির আলোচনা থেকে সহজেই বুঝা যায় যে নোনার পৃষ্ঠদেশ হবে মসৃণ এবং অস্পষ্ট জালিকাকার।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২৮

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: আতা গাছে ময়না পাখি
ডালিম জগাছে মৌ
....

জগা দা?
আমাদের এলাকায় সরিফাকে তো সফেদা বলে!!!

২৪ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সেকি কথা??

২| ২৪ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮

শায়মা বলেছেন: আমি ভেবেছিলাম নোনা মানে খীরা বা শশা টাইপ কিছু।

২৪ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এবার ভুল ভাঙ্গরো।

৩| ২৪ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:০৬

সিগন্যাস বলেছেন: এই ফলকে তো ভুলেই গেছি

২৪ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এখন দেখি বাজারে খুব পাওয়া যায়।

৪| ২৪ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: আতা ফলটা আমি কখনও খাইনি।

২৪ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সেকি!!
খুবই উপাদেয় একটা ফল।

৫| ২৪ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫

কাইকর বলেছেন: আমাদের বাড়ীতে এই গাছ আছে। তবে,এ বছর আর খাওয়া হয়নি

২৪ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমার বাড়িতেও একটা আছে, এখনো ফল আসেনি।

৬| ২৪ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৯

জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: পগলা জগাই ভাইএর লেখাটা পড়ে আতা সম্পর্কে আরো কিছু জানলাম। আমার খুব পছন্দের এই ফলটি। আতার মৃদু ও মোহনীয় সুঘ্রাণ আমাকে খুব আকৃষ্ট করে। এর রং, টেকচারও ভাল লাগে বেশ। একটা বনেদি বনেদি ভাব আছে। শৈশবে পাকা আতা খুলে খাওয়ার আগে ফলটির ঘ্রাণ নিতাম অনেক সময় ধরে। অনেকদিন হলো এই প্রিয় ফলটির ঘ্রাণ, স্বাদ কোনটাই নেওয়া হয় না। আপনি আমার বিস্মৃত শৈশব স্মৃতিতে নাড়া দিয়ে দিলেন।
যাহা আতা তাহা কিন্তু শরিফা নয়। আতা আর শরিফায় অভ্যন্তরীণ কিছু সামঞ্জস্য থাকলেও স্বাদে গন্ধে কিছু পার্থক্য রয়েছে।
অভিনন্দন পগলা জগাই ভাই, এমন সুন্দর একটা বিষয় উপস্থাপনের জন্য।

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল ভাই, শরিফা বা নোনা কিন্তু সফেদা না। সফেদা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ফল।

২৪ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: মাস কয়েক আগে গিয়েছিলাম নরসন্দীর দিকে। হঠাত করেই দেখি একটা গাছে একটি নোনা পেকে আছে। ছোট খাটো একটা লাফ দিয়ে ফলটা পেরে নেই।

৭| ২৪ শে জুন, ২০১৮ রাত ৮:৪৪

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: @জহিরুল ইসলাম সেতু,
ধন্যবাদ!
ছবি দেখে বিষয়টি ক্লিয়ার হল:)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.