নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আয়নাঘর – হুমায়ূন আহমেদ (কাহিনী সংক্ষেপ)

০৬ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:৩৪

বইয়ের নাম : আয়নাঘর
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : আদি ভৌতিক উপন্যাস
প্রথম প্রকাশ : নভেম্বর ১৯৯২
প্রকাশক : সময় প্রকাশন
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৭৮



সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট

কাহিনী সংক্ষেপ :
আমেরিকায় ডাক্তারি পড়ার সময় লিলিয়ানের সাথে প্রথম পরিচয় হয় তাহেরের, পরে তা বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়। লিলিয়ানা তাদের রক্ষণশীল পরিবারের গণ্ডি পেরিয়ে সবাইকে ছেড়ে তাহেরকে বিয়ে করে। দু’জন দু’জনকে প্রচণ্ড ভালোবাসে, সহজ সরল এক সুন্দর সময় কাটতে থাকে তাদের। এরমধ্যে লিলিয়ানা তাহেরকে নিয়ে কিছু দুঃস্বপ্ন দেখে। স্বপ্নে দেখে তার অদেখা তাহেরের গ্রামের বাড়ি আর সেখানকার নদীকে। স্বপ্নের মধ্যে তাকে কেউ তাহেরের ভীষণ বিপদ সম্পর্কে সাবধান করার চেষ্টা করে যেন।

এরমধ্যে অনেক দিন কেটো গেছে, তাহের তার ডাক্তারি পেশায় ভালো আয় রোজগার করছে, বড় একটা বাড়িতে তারা উঠে এসেছে। তারপর তাহের ঠিক করে লিলিয়ানাকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাবে। যদিও গ্রামে তার আপন বলতে কেউ নাই। তার এক চাচা আর চাচাত ভাইয়েরা তার পৈত্রিক বাড়ি দেখাশুনা করে। বাড়িটা পরিত্যক্ত হয়ে আছে, দরজা জানালাও চুরি হয়ে গেছে। বাড়ির সামনে আছে বিশাল আম কাঁঠালের বাগান। তাছাড়া আরো সম্পত্তি যা আছে সবই সেই চাচা ভোগ করছে। বাড়ি দেখাশুনা আর ঠিক করার জন্য তাহের মাঝে মাঝে কিছু টাকা তার চাচাকে পাঠায়।

তাহেররা যখন তাদের বাড়ির সামনে পৌঁছল তখন দিনের আলো শেষ হয়ে সন্ধ্যা মিলিয়ে গেছে। চারিদিকে অন্ধকার, তার চাচা ও দুই চাচাত ভাই দাঁড়িয়ে আছে হারিকেন হাতে। তাহেরের বাড়ির অবস্থা অতি সূচনীয়, বসবাসের অযোগ্য। তাহের বাড়ি মেরামতের জন্য যে টাকা পাঠাত তার কোন কাজ হয়নি। তাহেরদের থাকার জন্য বাড়ির দোতলায় একটি ঘর পরিষ্কার করে রেখেছে। তার চাচা তাকে সাপের আর ডাকাতের ভয় দেখাল, নিচে নামতে নিষেধ করে দিল। তাহের লক্ষ‍্য করলো চাচার ছেলে দুজন সেই প্রথম থেকে লিলিয়ানের দিকে লোভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

রাতে সুন্দর পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে। লিলিয়ান হাতে হারিকেন নিয়ে একটা একটা করে ঘর ঘুরে ঘুরে দেখল। পরে তাহের তাকে দেখাতে নিয়ে গেলো আয়না ঘরটি। এ ঘরটি তৈরি করেছিলো তাহেরের দাদার বাবা। তিনি তার স্ত্রী তিতলী বেগমের জন্য এটি তৈরি করে ছিলেন। ঘরটিতে ছিল বিশাল এক আয়না, এখানে বসেই তিতলী বেগম সাজুগুজু করতেন। আয়না ঘর তিতলী বেগমের খুব প্রিয় ছিল। তার এক মাত্র পুত্র জন্মের সময় তিনি মারা যান, মৃত্যুর আগে আগে তিনি আয়না ঘরে চলে যান, আয়না ঘরেই তার মৃত্যু হয়। তার মারা যাওয়ার পরে তার স্বামী আয়না ঘরটি বন্ধ করে দেন।

অনেকদিন পরে তাহেরের মা হঠাৎ করে তালাবন্ধ আয়না ঘরে চুড়ির শব্দ শুনতে পান। রাতের বেলা হারিকেনের আলো জালিয়ে তিনি তালা খুলে সেই ঘরে ঢুকেন, ঘরে তিনি কাউকে বা কিছু দেখতে পান। তারপর থকে তিনি মাঝে মাঝেই আয়না ঘরে থাকতে লাগলেন। বিষয়টা জানতে পরে তাহেরের বাবা সবাইকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন। কিছুদিনের মাঝে তাহেরের মার মাথায় সমস্যা দেখা দেয়, সে বলতে থাকে গ্রামের বাড়িটাতে তিনি একা একা মন খারাপ করে আছেন, তাদের সবার জন্য অপেক্ষা করছেন।

প্রথম রাত তাহেররা বাড়িটাতে মোটামুটি নিবিগ্নে কাটিয়ে দেয়। দ্বিতীয় দিন রাতে তার চাচার ছেলে এসে খবর দেয় তার বাবার শরীর খারাপ, কিন্তু জরুরি একটা কথা এখনই তাহেরকে বলতে চান তাই এখনই তাহেরকে তার সাথে যেতে বলেছেন। তাহের লিলিয়ানকে বাড়িতে রেখে মেঘলা রাতে ঘোলা চাঁদের আলোয় বেরিয়ে পরে। চারটি ছেলে ঘিরে নিয়ে যাচ্ছে তাহেরকে। একসময় নদীর পারে এলে সেখানে একটা নৌকোতে তোলা হয় তাহেরকে। বুড়ো মত একজন লোক তার চাদরের নিচে ছুড়ি নিয়ে বসে আছে নৌকা মাঝ নদীতে যাওয়ার অপেক্ষায়। সাঁতাড় না জানা তাহের প্রচণ্ড স্রোতের দিকে তাকিয়ে বসে আছে, এক সময় সে ঝাঁপিয়ে পরে সেই স্রোতের মাঝে।

অন্যদিকে লিলিয়ান হঠাৎ করে ভয় পেয়ে যায়। তার মনে হতে থাকে তাহেরের কোন বড় বিপদ হবে। এরমধ্যে দোতলার সিঁড়ির দরোজায় কড়ানারার শব্দ হয়। ভয় পয়ে সে লুকিয়ে পরে আয়না ঘরের একটি কাবাডের মধ্য। দরজা ভেঙ্গে কয়েকজন লোক ঢুকে পরে ঘরে। এই সময় অন্ধকার কাবাডের মধ্যে কেউ একজন তার চুড়ি পরা হাত রাখে লিলিয়ানের পিঠে, নীরবে সাহস যোগায় তাকে। সেই চুড়িপরা হাত এক সময় তার হাত ধরে লোকগুলির চোখে ধূলি দিয়ে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসে। তারপর সেই ছায়ামূর্তির পিছনে পিছনে ছুটতে ছুটতে এক সময় লিলিয়ান পৌঁছে যায় নদীর পারে, ছায়ামূর্তির নির্দেশিত দিকে তাকিয়া দেখতে পায় তাহেরের অচেতন দেহ পরে আছে নদীর তীরে।

সে যাত্রায় বেঁচে যাওয়ার ১৫ বছর পরে তাহের আর লিলিয়ান তাদের দুই মেয়েকে নিয়ে আবার বেড়াতে আসে তাদের সেই বাড়িতে। এবার আসার আগে বাড়ির কাজ করিয়ে বাস উপযোগী করানো হয়েছে। উঠনের গাছে তাহের তার দুই মেয়ের জন্য গাছের ডালে দোলনা বেধেছে। উপরে দোতালাতে লিলিয়ান আয়না ঘরের দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে মনে মনে বলে - আমাদের দুই মেয়েকে নিয়ে এসেছি আপনাকে দেখাতে।

----- সমাপ্ত -----


=======================================================================

আমার লেখা হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ

আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ

ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:২৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: প্রিয় একটা লেখা !!

০৭ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:৪৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: বইটা আমার খুব প্রিয়। বইটা আমার ছিলো। কে যেন নিয়ে গেছে।

০৭ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:১৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এমন অনেক বইই কে যেনো নিয়ে যায়, পরে আর পাওয়া যায় না।

৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৭:২৬

আশীষ কুমার বলেছেন: @রাজীব নূর, বই ধার দিতে হয় না।

০৭ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:২১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সব সময় এই থিউরি কাজে লাগানো যায় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.