নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১৪

১২ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৫০



চাঁদের কতগুলি ডাকনাম আছে জানেন?

অম্ভোজ, অর্ণবোদ্ভব, ইন্দু, উড়ুপ, ঋক্ষেশ, এণকতিলক, ওষধিনাথ, ওষধিপতি, কলাধর, কলানাথ, কলানিধি, কলাভৃৎ, কান্তিভৃৎ, কুমুদনাথ, কুমুদপতু, কুমুদবান্ধব, কৌমুদীপতি, ক্ষীরাদ্ধিজ, ক্ষীরোদনন্দন, চন্দ্র, চন্দ্রক, চন্দ্রমা, চন্দ্রিমা, চাঁদ, ছায়াঙ্ক, তারাধিপ, তারাধিপতি, তারানাথ, তারাপতি, তারাপীড়, তুহিনাংশু, দ্বিজপতি, দ্বিজরাজ, দ্বিজেন্দ্র, নক্ষত্রপতি, নক্ষত্রাধিপতি, নক্ষত্রেশ, নিশাকর, নিশানাথ, নিশাপতি, নিশামণি, নিশারত্ন, নিশিকান্ত, নিশিনাথ, নিশিপতি, পক্ষচর, পক্ষজ, পক্ষধর, বিধু, মৃগাঙ্ক, যামিনীকান্ত, যামিনীনাথ, যামিনীপ্রকাশ, রজনীকর, রজনীকান্ত, রজনীপতি, রজনীরাজ, রজনীশ, রজনীসখা, রাকাপতি, রাকেশ, রাত্রিকর, রাত্রিমণি, রেবতীরমণ, শশধর, শশবিন্দু, শশভৃৎ, শশলক্ষণ, শশলাঞ্ছন, শশাঙ্ক, শশী, শিতরশ্মি, শীতকিরণ, শীতময়ূখ, শীতাংশু, শ্বেতধাম, সিতকর, সিতরশ্মি, সিতরুচি, সিতাংশু, সুধধার, সুধাংশু, সুধাকর, সুধাধামা, সুধানিধি, সুধাবর্ষী, সুধাময়, সোম, হরিণাঙ্ক, হিমকর, হিমকিরণ, হিমধামা, হিমাংশু ইত্যাদি।

চাঁদ নিয়ে ঘাটাঘাটি করার সময় হঠাৎ মাথায় এলো রবিবাবুর কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদের উপস্থিতি আছে তা খুঁজে দেখি। প্রথম ৮টি পর্বে সেগুলি দেখিয়েছি। এরপর চাঁদের সমার্থক শব্দ চন্দ্র নিয়ে কবিতাংশ ৯ থেকে ১৫ তম পর্ব পর্যন্ত দিয়েছি। তারপর চাঁদের সমার্থক শব্দ শশীকে উপস্থাপন করেছি ১৬ ও ১৭তম পর্বে। ১৮তম পর্বে ছিলো ইন্দু নামের কবিতাংশ গুলি। আর সব শেষে ১৯ মত পর্বে ছিল চাঁদের আরেক নাম বিধু সংক্রান্ত কবিতাংশ। সব মিলিয়ে ১৯ পর্বে ১৮১টি চন্দ্র পংক্তি দিয়েছে।

এবার কাজী নজরুল ইসলাম তার কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদেকে তুলে এনেছেন তার খোঁজ করলাম। এবার দেখুন কি কি পেলাম।



১৩১।
সেই রবিয়ল আউয়ালেরই চাঁদ এসেছে ফিরে
ভেসে আকুল অশ্রুনীরে।
আজ মদিনার গোলাপ বাগে বাতাস বহে ধীরে
ভেসে আকুল অশ্রুনীরে।।
তপ্ত বুকে আজ সাহারার
উঠেছে রে ঘোর হাহাকার
মরুর দেশে এলো আঁধার শোকের বাদল ঘিরে।।
চবুতরায় বিলাপ করে কবুতরগুলি খোঁজে নবীজীরে।
কাঁদিছে মেষশাবক, কাঁদে বনের বুলবুলি গোরস্থান ঘিরে।।
মা ফাতেমা লুটিয়ে প’ড়ে
কাঁদে নবীর বুকের পরে
আজ দুনিয়া জাহান কাঁদে কর হানি শিরে।।




১৩২।
কোথা চাঁদ আমার!
নিখিল ভুবন মোর ঘিরিল আঁধার।।
ওগো বন্ধু আমার, হ’তে কুসুম যদি,
রাখিতাম কেশে তুলি’ নিরবধি।
রাখিতাম বুকে চাপি’ হ’তে যদি হার।।
আমার উদয়-তারার শাড়ি ছিঁড়েছে কবে,
কামরাঙা শাঁখা আর হাতে কি রবে।
ফিরে এসো, খোলা আজো দখিন-দুয়ার।।



১৩৩।
তোমার আকাশে উঠেছিনু চাঁদ, ডুবিয়া যাই এখন।
দিনের আলোকে ভুলিও তোমার রাতের দুঃস্বপন।।
তুমি সুখে থাক আমি চলে যাই,
তোমারে চাহিয়া ব্যথা যেন পাই,
জনমে জনমে এই শুধু চাই — না-ই যদি পাই মন।।




১৩৪।
মোহররমের চাঁদ এলো ঐ কাঁদাতে ফের দুনিয়ায়।
ওয়া হোসেনা ওয়া হোসেনা তারি মাতম শোনা যায়।।
কাঁদিয়া জয়নাল আবেদীন বেহোশ হল কারবালায়
বেহেশ্‌তে লুটিয়ে কাঁদে আলী ও মা ফাতেমায়।।
কাশেমের ঐ লাশ লয়ে কাঁদে বিবি সাকিনা।
আস্‌গরের ঐ কচি বুকে তীর দেখে কাঁদে খোদায়।।
কাঁদে বিশ্বের মুসলিম আজি গাহে তারি মর্সিয়া।
ঝরে হাজার বছর ধরে অশ্রু তারি শোকে হায়।।



১৩৫।
ঈদজ্জোহার চাঁদ হাসে ঐ এলো আবার দুস্‌রা ঈদ
কোর্‌বানি দে কোর্‌বানি দে শোন্‌ খোদার ফর্‌মান তাকিদ।।
এমনি দিনে কোর্‌বানি দেন পুত্রে হজরত ইব্‌রাহীম,
তেমনি তোরা খোদার রাহে আয় রে হবি কে শহীদ্।।
মনের মাঝে পশু যে তোর আজকে তা’রে কর্ জবেহ,
পুল্‌সেরাতের পুল হ’তে পার নিয়ে রাখ্ আগাম রসিদ্।।
গলায় গলায় মিল্ রে সবে ভুলে যা ঘরোয়া বিবাদ,
মিলনের ঈদগাহ্‌ গড়ে তোল্‌ প্রাণ দিয়ে তার তোল্‌ বুনিয়াদ।।
মিলনের আর্‌ফাত ময়দান হোক আজি গ্রামে গ্রামে,
হজের অধিক পাবি সওয়াব এক হ’লে সব মুসলিমে।
বাজবে আবার নূতন ক’রে দ্বীনি ডঙ্কা, হয় উমীদ্।।
ইসমাইলের মতন যদি কোর্‌বানি পারিস হতে
দেখব আবার তোদের মাঝে দিশারি মুসা, খালিদ।।




১৩৬।
উঠেছে কি চাঁদ সাঁঝ গগনে
আজিকে আমার বিদায় লগনে।।
জানালা পাশে চাঁপার শাখে
‘বউ কথা কও’ পাখি কি ডাকে?
ফুটেছে কি ফুল মালতী বকুল —
আমার সাধের কুসুম বনে সাঁঝ গগনে।।



১৩৭।
চাঁদের কন্যা চাঁদ সুলতানা, চাঁদের চেয়েও জ্যোতি।
তুমি দেখাইলে মহিমান্বিতা নারী কী শক্তিমতী।।
শিখালে কাঁকন চুড়ি পরিয়াও নারী,
ধরিতে পারে যে উদ্ধত তরবারি,
না রহিত অবরোধের দুর্গ, হতো না এ দুর্গতি।।
তুমি দেখালে নারীর শক্তি স্বরূপ – চিন্ময়ী কল্যাণী,
ভারত জয়ীর দর্প নাশিয়া মুছালে নারীর গ্লানি।
তুমি গোলকুন্ডার কোহিনূর হীরা সম
আজো ইতিহাসে জ্বলিতেছে নিরুপম,
রণরঙ্গিণী ফিরে এসো,
তুমি ফিরিয়া আসিলে, ফিরিয়া আসিবে লক্ষী ও সরস্বতী।।




১৩৮।
ওগো চৈতী রাতের চাঁদ, যেয়ো না
সাধ না মিটিতে যেতে চেয়ো না।।
হের তরুলতায় কত আশার মুকুল,
ওগো মাধবী-চাঁদ আজো ফোটেনি ফুল,
তুমি যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না —
ঝরা মুকুলে বনবীথি ছেয়ো না
তুমি যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না, ওগো যেয়ো না।।



১৩৯।
আধখানা চাঁদ হাসিছে আকাশে
আধখানা চাঁদ নিচে
প্রিয়া তব মুখে ঝলকিছে
গগনে জ্বলিছে অগণন তারা
দু’টি তারা ধরণীতে
প্রিয়া তব চোখে চমকিছে।।




১৪০।
চাঁদ হেরিছে চাঁদ–মুখ তার সরসীর আরশিতে।
ছুটে তরঙ্গ বাসনা–ভঙ্গ সে অঙ্গ পরশিতে।।
হেরিছে রজনী – রজনী জাগিয়া
চকোর উতলা চাঁদের লাগিয়া,
কাঁহা পিউ কাঁহা ডাকিছে পাপিয়া
কুমুদীরে কাঁদাইতে।।
না জানি সজনী কত সে রজনী কেঁদেছে চকোরী পাপিয়া,
হেরেছে শশীরে সরসী–মুকুরে ভীরু ছায়া–তরু কাঁপিয়া।
কেঁদেছে আকাশে চাঁদের ঘরণী
চির–বিরহিণী রোহিণী ভরণী
অবশ আকাশ বিবশা ধরণী
কাঁদানীয়া চাঁদিনীতে।।



১৪১।
এখনো ওঠেনি চাঁদ এখনো ফোটেনি তারা
এখনো দিনের কাজ হয়নি যে মোর সারা —
হে পথিক যাও ফিরে।।
এখনো বাঁধিনি বেণী, তুলিনি এখনো ফুল
জ্বালি নাই মণিদীপ মম মন–মন্দিরে —
হে পথিক যাও ফিরে।।
পল্লব–গুণ্ঠনে নিশি–গন্ধার কলি
চাহিতে পারে না লাজে দিবস যায়নি বলি’।
এখনো ওঠেনি ঢেউ থির সারসির নীরে —
হে পথিক যাও ফিরে।।
যবে ঝিমাইবে চাঁদ ঘুমে তখন তোমার লাগি’
র’ব একা পথ চেয়ে বাতায়ন–পাশে জাগি’
কবরীর মালা খুলে ফেলে দেব ধীরে ধীরে —
হে পথিক যাও ফিরে।।




১৪২।
ওগো আজিকে আঁধার তমাল বনে, বসে আছি উদাস মনে
ওগো তোমার দেশে চাঁদ উঠেছে আমার দেশে বাদল ঝুরে॥
সেথা চাঁদ উঠেছে —
ওগো শুল্কা তিথির চতুর্দশীর চাঁদ উঠেছে
সেথা শুল্কা তিথির চতুর্দশীর চাঁদ উঠেছে
সখি তাদের দেশে আকাশে আজ আমার দেশের চাঁদ উঠেছে।
ওগো মোর গগনে কৃষ্ণা তিথি আমার দেশে বাদল ঝুরে॥



১৪৩।
বাদলা রাতে চাঁদ উঠেছে কৃষ্ণ মেঘের কোলে রে।
ব্রজ পুরে তমাল-ডালের ঝুলনাতে দোলে রে।।
নীল চাঁদ আর সোনার চাঁদে
বাঁধা বন-মালার ফাঁদে রে
এই চাঁদ হেসে আরেক চাঁদের অঙ্গে পড়ে ঢ’লে রে।।
যুগল শশী হেরি গোপী কহে, বাদলা রাতই ভালো রে,
গোকুল এলো ব্রজে নেমে ধরা হল আলো রে।
দেব-দেবীরা চরণ-তলে
বৃষ্টি হয়ে পড়ে গ’লে রে,
বেদ-গাথা সব নূপুর হয়ে রুনুঝুনু বোলে রে।।




১৪৪।
বাদলা রাতে চাঁদ উঠেছে কৃষ্ণ মেঘের কোলে রে।
ব্রজ পুরে তমাল-ডালের ঝুলনাতে দোলে রে।।
নীল চাঁদ আর সোনার চাঁদে
বাঁধা বন-মালার ফাঁদে রে
এই চাঁদ হেসে আরেক চাঁদের অঙ্গে পড়ে ঢ’লে রে।।
যুগল শশী হেরি গোপী কহে, বাদলা রাতই ভালো রে,
গোকুল এলো ব্রজে নেমে ধরা হল আলো রে।
দেব-দেবীরা চরণ-তলে
বৃষ্টি হয়ে পড়ে গ’লে রে,
বেদ-গাথা সব নূপুর হয়ে রুনুঝুনু বোলে রে।।

আগামী পর্বে আরো ১০টি চন্দ্র পংক্তি থাকবে।

=================================================================
সিরিজের পুরনো পর্বগুলি দেখতে -
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০১, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০২, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৩, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৪
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৫, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৬, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৭, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৮
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৯, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১০ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১১ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১২
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১৩


রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০১, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০২, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৩, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৪, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৫, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৬, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৭, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৮, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৯, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১০, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১১, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১২, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৩, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৪, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৫, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৬, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৭, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৮, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৯

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



এই সিরিজের পপুলারিটি কমে গেছে।

১৩ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৪৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমার কোনো সিরিজেরই পপুলারিটি নেই।

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১২:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: নজরুল তার লেখায় অনেক কঠিন শব্দ ব্যবহার করেছেন।

১৩ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৪৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এই ভয়েই নজরুলের কোনো বই আমি আজও পড়ি নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.