নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতীয় স্বার্থ বনাম বিদেশি স্বার্থ: বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে

৩০ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬

জাতীয় স্বার্থ বনাম বিদেশি স্বার্থ: বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে
--------------------------------------------------------------------------------
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার করে বাংলাদেশ আজ এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের সংগ্রাম ভূখণ্ড, সংস্কৃতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আত্মত্যাগের এক বিরল দৃষ্টান্ত। এত দশক পরেও আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সরাসরি কোন সশস্ত্র দ্বন্দ্ব নেই, সীমান্তে উত্তেজনা থাকলেও তা কখনো পূর্ণ যুদ্ধ বা আন্তর্জাতিক বিবাদে পরিণত হয়নি। কিন্তু আজ, দেশের ভেতরকার কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনায় আমাদের সার্বভৌমত্ব গভীর হুমকির মুখে।
বিশেষ করে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠী (যাদের ‘ইউনূস গং’ বলা হয়) এমন কিছু কার্যক্রমে জড়িত, যা কেবল বিতর্কিত নয়, বরং ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে কূটনৈতিক জটিলতা ও আঞ্চলিক সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে পারে।
জাতীয় সম্পদের বিদেশি ইজারা: একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত?
গত ১০ মাসে ইউনূস গং-এর ছায়ায় থেকে যে সব সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাব আলোচনায় এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে:
বিদেশি সংস্থার কাছে সমুদ্রবন্দর ও লজিস্টিক হাব ইজারা দেয়া
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বিদেশি কোম্পানির কাছে পর্যটন ও নিরাপত্তা ঘাঁটি গড়ার জন্য লীজ দেয়ার আলোচনা
বিদেশি সামরিক ও বাণিজ্যিক করিডোর স্থাপনের প্রস্তাব, যার মাধ্যমে একটি বা একাধিক পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশ ভূখণ্ড ব্যবহার করতে পারবে ট্রানজিটের জন্য
এসব পদক্ষেপের নেপথ্যে যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে, তা স্পষ্ট বিদেশিদের সুবিধা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা। কিন্তু ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে, এই ধরনের পদক্ষেপ দেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
আন্তর্জাতিক উদাহরণ: যেখানে বিদেশি ইজারা হয়েছে জাতীয় দুর্ভোগের কারণ
১. শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর
শ্রীলঙ্কা যখন চীনের কাছ থেকে উচ্চ সুদের ঋণ নেয়, তখন অর্থনৈতিক চাপ মোকাবেলায় হাম্বানটোটা বন্দর ৯৯ বছরের জন্য চীনা কোম্পানিকে লীজ দেয়। এর ফলে চীনের সামরিক ও কৌশলগত উপস্থিতি ভারত মহাসাগরে বাড়ে, এবং শ্রীলঙ্কা তার গুরুত্বপূর্ণ একটি জাতীয় সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায়।
২. পাকিস্তানের গওাদার বন্দর
চীনা “বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ”-এর অংশ হিসেবে গওাদার বন্দরও চীনের হাতে তুলে দেয়া হয়। এই বন্দরের মাধ্যমে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে গেছে, এবং চীনের অর্থনৈতিক দখলদারিত্ব সেখানকার স্থানীয় জনগণকে উপেক্ষা করে কার্যত একাধিপত্য কায়েম করেছে।
৩. জিবুতির দোরালেহ বন্দরে চীনা নিয়ন্ত্রণ
মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা সংযোগকারী দোরালেহ কনটেইনার টার্মিনাল একসময় আরব কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে ছিল। পরে তা জোরপূর্বক রাষ্ট্রীয়করণ করে চীনা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়া হয়। এরই পাশে চীন স্থাপন করেছে তাদের প্রথম সামরিক ঘাঁটি যা কেবল জিবুতি নয়, বরং গোটা অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্যকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য বিপদ
বাংলাদেশ যদি ইউনূস গং-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের বন্দর, দ্বীপ ও করিডোর বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়, তাহলে তা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, ভূরাজনৈতিক অবস্থান এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলবে। সম্ভাব্য বিপদের মধ্যে রয়েছে:
আঞ্চলিক উত্তেজনায় জড়িয়ে পড়া (ভারত-চীন সংঘর্ষ বা সমুদ্র সীমানা বিরোধে)
স্থানীয় জনগণের ভূমি ও জীবিকা হারানোর আশঙ্কা
বিদেশি সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের অজুহাতে আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্ন
আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের স্বাধীন অবস্থান হ্রাস পাওয়া
উন্নয়নের নামে উপনিবেশায়ন?
এইসব চুক্তির পক্ষে প্রচার করা হয় উন্নয়ন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের কথা। কিন্তু উপরের উদাহরণগুলো দেখায়, এই উন্নয়ন প্রকল্পের আসল লাভ হয় বিদেশিদের, এবং দেশীয় জনগণের ভাগ্যে জোটে দখল, নির্যাতন ও নিরাসক্তি। দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করতে কিছু গোষ্ঠী যদি জাতীয় স্বার্থকে বাজি রাখে, তাহলে সেটা গণতন্ত্র বা উন্নয়ন নয় বরং নব্য উপনিবেশবাদ।
উপসংহার: এখনই সচেতন হোন
বাংলাদেশের ভূকৌশলগত অবস্থান অত্যন্ত সংবেদনশীল। আমাদের যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে হবে সুপরিকল্পিতভাবে, সংসদীয় আলোচনার মাধ্যমে, জনগণের অংশগ্রহণে। কোনও গোপন চুক্তি বা বিদেশি চাপের কাছে মাথানত করে জাতীয় সম্পদ লীজ দিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।
আমরা যারা ১৯৭১-এর চেতনায় বিশ্বাসী, তাদের দায়িত্ব এখন সেই চেতনার প্রতিরক্ষা করা। কারণ একটি স্বাধীন দেশের অর্থনীতি, নিরাপত্তা এবং কূটনীতি সবকিছু শুরু হয় তার নিজস্ব ভূখণ্ডের ওপর কর্তৃত্ব থেকে।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৭

অপলক বলেছেন: আসলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নতুন কোন রাষ্ট্র স্বার্থ জড়িত চুক্তি করার অধিকার থাকা উচিত না। কারন তারা অনির্বাচিত এবং ক্ষণকালীন একটি সুশৃঙ্খল প্রতিনিধি। নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ দ্রুত তৈরী করাই প্রধান কাজ। কিন্তু বর্তমানে ইউনূস স্যার যা করছেন, সেটা ঠিক ওনার চেয়ারের যে দায়িত্ব, তার সাথে অনেকটা অংশ যায় না। মনে হচ্ছে যেন, কারও এজেন্ট হয়ে দেশকে উন্নয়ন আর সংস্কারের নামে বিকিয়ে দেয়ার অভিযানে নেমেছে।

২| ৩০ শে মে, ২০২৫ রাত ৮:১৪

রিফাত হোসেন বলেছেন: চেতনা পোস্ট। লীগের বেতন কত পোস্ট প্রতি?

৩| ৩০ শে মে, ২০২৫ রাত ৮:৫৭

কামাল১৮ বলেছেন: একজন জাতিয় নেতার বড় প্রয়োজন।

৪| ৩০ শে মে, ২০২৫ রাত ৯:২১

এ পথের পথিক বলেছেন: রিফাত ভাইয়ের যা বলেছে আমিও সেটা জিজ্ঞেস করতে চাইঃ
দিল্লীর দাসী খুনি হাসুর দাসদের হাসু প্রতি পোস্টের জন্য কত পে করে ?

৫| ৩১ শে মে, ২০২৫ সকাল ১০:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: সব কিছুর নষ্টের মুখে হলো- এই জামাত শিবির।
এই শালাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করতে পারলেই দেশে শান্তি ফিরে আসিবে।

৬| ৩১ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৪:০৯

আমি নই বলেছেন: ভাই কি আজকেই এই গ্রহে নামলেন নাকি? বিগত সরকার যখন বন্দর পরিচালনার দায়ীত্ব ভারতকে দিতে চাইছিল তখন কোথায় ছিলেন? ভারত কি আপনাদের কাছে বিদেশি শক্তি নয়? ভারতে কে দায়ীত্ব দিলে কি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পরতনা?

ঋণ নিলে পরিশোধ করতে হবে, সেটাই নিয়ম। আপনি ঋণ নিয়ে খেয়ে ফেলবেন তারপর ব্যাংক বাড়ী দখল করলে সেটা কি ব্যাংকের দোষ হবে?

পাকিস্তান, শ্রীলংকা ঋণ নিয়ে নয়ছয় (আমাদের বিগত সরকারের মত) করেছে ফলে ঋণের টাকা ব্যাক দিতে পারেনাই। চীন তার টাকা রিকভার করার জন্যে বন্দর নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে নিয়েছে, এখানে চীনের দোষ কোথায়।

যতটুকু মনে পরে আমাদের বন্দর আধুনিকরন করেছিল চীন, তারা আশায় ছিল পরিচালনার দায়ীত্ব তারাই পাবে। কিন্তু বিগত সরকার পরিচালনার দায়ীত্ব ভারতকে দিতে চাইছিল।

যেই প্রশ্ন ইউনুসরে করতেছেন সেই একই প্রশ্ন হাসিনাকে করেন নাই কেন?

৩১ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৮

রাবব১৯৭১ বলেছেন: কোন বন্দর কাকে দিয়েছিল?

৭| ৩১ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৮

ইমরান৯২ বলেছেন: ওরে চেতনা রে।।!!
এত চেতনা কই ছিল এত বছর ?

৮| ০২ রা জুন, ২০২৫ বিকাল ৩:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.