নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাইফি আজমি ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান

০২ রা জুন, ২০২৫ ভোর ৬:২৩

কাইফি আজমি ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান
কাইফি আজমি ভারতের উত্তর প্রদেশের আজমগড়ে এক জমিদার পরিবারে ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শওকাত আজমিকে বিয়ে করেন। তার কন্যা শাবানা আজমি ভারতের বিখ্যাত অভিনেত্রী। তিনি ছাত্র জীবনে উর্দু ও ফার্সি সাহিত্যে লেখাপড়া করেন। কিন্তু ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে ভারতছাড় আন্দোলনের সময় লেখাপড়া ছেড়ে দেন। প্রগতিশীল সাহিত্য আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক হিসেবে তিনি ভারতীয় সাহিত্যে এক অনন্য স্থান অধিকার করেন। তাঁর কবিতায় সমাজের নিপীড়িত মানুষের কথা, শ্রেণি-সংগ্রাম, স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। এমন এক মানবতাবাদী কবি কাইফি আজমি বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে রেখেছেন বিশেষ ভূমিকা, যা আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ ও কাইফি আজমির মনোভাব
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে যখন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) বাঙালিদের উপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বর আক্রমণ শুরু হয়, তখন ভারতসহ গোটা বিশ্বের বিবেকবান মানুষ এই ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হন। এই সময় কাইফি আজমিও ব্যথিত হৃদয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। একজন মানবতাবাদী কবি হিসেবে তিনি নিপীড়িত বাঙালিদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন এবং পাকিস্তানি শাসকদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কলম ধরেন।
কবিতার মাধ্যমে জনমত গঠন
কাইফি আজমি তাঁর কবিতার মাধ্যমে বাংলাদেশি জনগণের পক্ষে সোচ্চার অবস্থান নেন। তাঁর লেখা বিখ্যাত কবিতা "বাংলাদেশ" (Bangladesh) সে সময় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই কবিতাটি শুধু একজন কবির আবেগ নয়, বরং এক মানবিক প্রতিবাদ। কবিতাটিতে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতার নিন্দা করেন এবং বাঙালিদের বীরত্ব ও সংগ্রামের প্রশংসা করেন। এটি ভারতের বিভিন্ন সভা-সমিতিতে পাঠ করা হয় এবং জনমত গঠনে তা কার্যকর ভূমিকা রাখে।
সাংস্কৃতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ
কাইফি আজমি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ভারতের বিভিন্ন শহরে বাংলাদেশের পক্ষে সাংস্কৃতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। কবিতা পাঠ, বক্তৃতা ও সমাবেশে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে মানুষের সহানুভূতি জাগাতে সাহায্য করেন। তিনি ভারতীয় সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নানা সাংগঠনিক কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানো
১৯৭১ সালে যখন লক্ষ লক্ষ বাঙালি শরণার্থী ভারতের সীমান্তে আশ্রয় নেন, তখন কাইফি আজমি তাঁদের সহায়তায় উদ্যোগ নেন। ভারতীয় বুদ্ধিজীবী ও সাহিত্যিক সমাজকে তিনি আহ্বান জানান শরণার্থীদের জন্য অর্থ ও মানবিক সহায়তা সংগঠনে। কাইফি আজমির এই প্রচেষ্টা শরণার্থীদের প্রতি আন্তর্জাতিক সহানুভূতি জাগাতে সাহায্য করে।
আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে ভূমিকা
কাইফি আজমি শুধু ভারতেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেন। তাঁর কবিতা ও বক্তব্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে প্রচারিত হয়। তাঁর মত একজন খ্যাতিমান কবির পক্ষে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযুদ্ধের বৈধতা ও নৈতিক ভিত্তিকে আরও জোরদার করে তোলে।
উপসংহার
কাইফি আজমি একজন কবি হিসেবে তাঁর কলমকে মুক্তিযুদ্ধের একটি অস্ত্রে পরিণত করেছিলেন। কবিতার মাধ্যমে তিনি শুধু পাকিস্তানি শাসকদের নিন্দাই করেননি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিকে নৈতিক ও মানবিক সমর্থনও দিয়েছেন। তাঁর এই অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশ তাঁকে স্মরণ করে একজন প্রকৃত বন্ধু, সাহসী কবি ও মানবতাবাদী মানুষ হিসেবে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুন, ২০২৫ সকাল ৯:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: কাইফি আজমিকে জানলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.