নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ: জন্ম, উত্তরণ ও বর্তমান অবস্থা।

২৪ শে জুন, ২০২৫ সকাল ৮:২৫

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ: জন্ম, উত্তরণ ও বর্তমান অবস্থা।
ভূমিকা
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল। দেশটির স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বর্তমান উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় এ দলটি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রবন্ধে দলটির জন্ম, বিকাশ, নেতৃত্বের রূপান্তর এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
জন্ম ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন, ঢাকার ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেনে। প্রতিষ্ঠাকালে দলটির নাম ছিল "পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ"। পাকিস্তান মুসলিম লীগের বাঙালি বিরোধী শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই দলটির জন্ম।
জন্মের পেছনের কারণ:
পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের পর পূর্ব বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিকে অবহেলা করা হয়।
পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালি নেতারা বিকল্প দল গঠনের উদ্যোগ নেন।
নেতৃত্বের রূপরেখা (১৯৪৯–বর্তমান)
সভাপতি:
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী (১৯৪৯–১৯৫৭)
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (১৯৫৩–১৯৬৩)
শেখ মুজিবুর রহমান (১৯৬৬–১৯৭৫)
আব্দুর রাজ্জাক (ভারপ্রাপ্ত, ১৯৭৫–১৯৮১)
শেখ হাসিনা (১৯৮১–বর্তমান)
সাধারণ সম্পাদক:
শামসুল হক (১৯৪৯–১৯৫৩)
তাজউদ্দীন আহমদ (১৯৫৩–১৯৬৬)
সৈয়দ নজরুল ইসলাম (১৯৬৬–১৯৭১)
আব্দুর রাজ্জাক (১৯৭৩–১৯৭৫)
আবদুল জলিল (২০০২–২০০৯)
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (২০০৯–২০১৬)
ওবায়দুল কাদের (২০১৬–বর্তমান)
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে যাঁরা ছিলেন:
সহ-সভাপতি: কাজী আবুল হোসেন, আব্দুর রব সরদার, আমিরুল ইসলাম (বিভিন্ন সময়)
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক: শেখ মুজিবুর রহমান (১৯৪৯–১৯৫৩), মোহাম্মদ তোয়াহা (১৯৫৪–১৯৫৬)
কোষাধ্যক্ষ: মোহাম্মদ আলী সিরাজী (প্রথম কোষাধ্যক্ষ)
প্রচার সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ (১৯৭০–১৯৭৫, পরে ১৯৯৬–২০০১)
১৯৭০ সালের নির্বাচন ও পশ্চিম পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ
১৯৭০ সালের পাকিস্তান জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিশাল বিজয় অর্জন করে:
পূর্ব পাকিস্তানে ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৬০টি জিতে নেয়।
কারণ ও বিশ্লেষণ:
আওয়ামী লীগ ছিল পূর্ব পাকিস্তানকেন্দ্রিক। পশ্চিম পাকিস্তানে সংগঠন ছিল দুর্বল।
ভুটোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি পশ্চিম পাকিস্তানে প্রভাব বিস্তার করেছিল।
পশ্চিম পাকিস্তানের আওয়ামী সমর্থকরা অনেকেই ১৯৭১ সালে নিপীড়নের শিকার হন।
১৯৭১–পরবর্তী কালের রাজনৈতিক রূপরেখা
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর আওয়ামী লীগ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। একাধিক উপদল ও বিভাজন দেখা দেয়। সামরিক শাসনের সময় দলটি নিষিদ্ধ থাকে।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দলীয় সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেন এবং গণআন্দোলনের মাধ্যমে দলটিকে পুনর্জীবিত করেন।
বর্তমান অবস্থা ও বিশ্লেষণ
অবস্থান:
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ২০০৮ সাল থেকে একটানা ক্ষমতায় রয়েছে।
অর্জন:
পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল
দারিদ্র্য হ্রাস, প্রযুক্তির প্রসার, নারীর ক্ষমতায়ন, রাস্তাঘাট, ব্রীজ নির্মাণসহ অভুতপূর্ব সাফল্য এনে দিয়েছেন।
উপসংহার
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনস্বীকার্য নাম। স্বাধীনতার নেতৃত্ব থেকে শুরু করে উন্নয়নের নেতৃত্ব এই দল জাতির ক্রান্তিকালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং স্বচ্ছতার প্রশ্নে দলটির প্রতি জনগণের প্রত্যাশা দিন দিন বাড়ছে। নেতৃত্বকে বুঝতে হবে, অতীত গৌরব ধরে রাখতে হলে ভবিষ্যতের পথ হতে হবে আরও জবাবদিহিমূলক ও জনমুখী।
প্রবন্ধ: সালাউদ্দিন রাব্বী
সহ-সাধারন সম্পাদক,
বাংলাদেশ কৃষকলীগ,
মুন্সীগন্জ জেলা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.