নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাবীব আমিন

নিচে তাকিয়ে থাকার মজা হল কাওকে দেখতে হয় না, আবার কাওকে দেখা দিতে হয় না। লুকিয়ে থাকতে চাই বলে উপরে তাকাই না। একদিন তাকাবো, আর সব কিছু দেখে নেব। চেনা মানুষ দেখতে দেখতে আজ ক্লান্ত আমি, বড় বেশি ক্লান্ত। facebook.com/rabib5

রাবীব আমিন

রাবীব আমিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিবিম্ব

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫২

আজ জাহানের জন্মদিন। জন্মদিন মানে খুশির দিন। খুশির দিনে হাসিমুখে থাকতে হয়। জন্মদিনে আত্মীয়- বন্ধুরা শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোন দিচ্ছে। জাহান সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলছে। একটু আগে হাসিমুখে গরুর মাংসে লবন কম দেওয়ার জন্য কাজের বুয়াকে বকাও দিয়েছে। হাসি মুখে বকা দিলে বুয়ারা কথা গায়ে মাখে না। বুয়া উল্টো তাকে জ্ঞান দিয়েছে।



-আফা লবন ঠিক আছে। মাংসে ঝোল বেশি হইসে। ঝোল মাইরা দিলে দেখবেন লবন ঠিকঠাক।



বুয়াকে প্রচন্ড ধমক দিতে ইচ্ছে করছে জাহানের। তবে আজ ধমক দেয়া যাবে না। জন্মদিন হচ্ছে পবিত্র দিন। জন্মদিনে মানুষ পবিত্র হয়ে পৃথিবীতে আসে। পবিত্র দিনে কাউকে বকাবাজি করা ঠিক না।



-আফা আপনের কি আজকে জন্মদিন?

তোমাকে কে বলেছে আজ আমার জন্মদিন?

- কেউ বলে নাই। আপনে আম্মাজানের সাথে ফোনে কথা বলছিলেন। কথা শুইন্যা বুঝসি।



জাহানের প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। এই বুয়াকে কাজে রাখা যাবে না। আজকেই মাকে বলে নতুন বুয়া ঠিক করতে হবে। যে বুয়া আড়ি পেতে ফোনে কথা বলা শুনে সে বুয়ার মতলব নিশ্চয় ভাল না। মতলববাজ বুয়া সে রাখবে না।



হ্যালো? রাশেদ? কি করছ?

- ডাল ভাত রান্না করছি। ডালে পানি বেশি হয়েছে, তাই বস আমাকে ডালের পাতিলের সামনে বসিয়ে রেখেছে। জাহান তোমাকে কতবার বলেছি অফিস টাইমে জরুরী দরকার ছাড়া ফোন করবে না।

-সরি

উফফ তোমার প্রবলেমটা কি?

- সরি

কানের কাছে সরি সরি বলবেনা, ফোন রাখ।

- আচ্ছা।

আর শোন, আমার আজ আসতে দেরি হবে। অফিসে জরুরী মিটিং আছে। তুমি খেয়ে নিও।

- আচ্ছা।



জাহানের দুচোখ ফেটে কান্না আসছে। কিন্তু কাঁদতে পারছে না। বুয়া ড্যাবড্যাব করে জাহানের দিকে তাকিয়ে আছে। বুয়ার সামনে কাঁদা যাবে না। কাঁদতে হবে রুমে দরজা লাগিয়ে।



জাহান ব্যাকুল হয়ে কাঁদছে। কান্নার দমকে ফুলে ফুলে হেচকি উঠছে। যত জোরে হেচকি উঠছে কান্নার জোর তত বাড়ছে।



হালো জাহান?

-হুম বল।

ড্রেসিং টেবিলের উপরের ড্রয়ারটা খুলে দেখ একটা প্যাকেট আছে। প্যাকেট টা বের কর।

- কি আছে প্যাকেটে?

গিয়ে দেখ।



জাহান প্যাকেট খুলে ফেলেছে। ভিররে একটা ব্লু লেডি পারফিউমের বোতল। সাথে একটা চিরকুট। তাতে লেখা

' জাহান, আজকের এই দিনটিতে পৃথিবীতে আসার জন্য তোমাকে থ্যাংস। তোমার জীবনের এই সুন্দর দিনটি যেন এভাবেই একসাথে কাটাতে পারি। শুভ জন্মদিন।'

রাশেদ।



জাহান আবার কাঁদছে। তবে এই কান্নায় হেচকি উঠছে না, বুকের মদ্ধে কেমন যেন একটা সুখ সুখ লাগছে।



আরো কিছু সময় পর...

জাহান আর রাশেদ ছাদে বসে আছে। বাইরে উথাল-পাতাল জোছনা। রাশেদের কাধে মাথা রেখে জাহান হা করে জোছনা গিলছে। এই মুহুর্তে জাহানকে দেখে মনে হচ্ছে তার মত সুখী মেয়ে পৃথিবীতে আর একটিও নেই। রাশেদ চোখ বন্ধ করে আছে। জাহানের গা থেকে আসা পারফিউমের স্মেল অনুভব করার চেষ্টা করছে।

মানুষটা বদলে গিয়েছে। স্মেলটা সেই আগের মতই আছে। দমকা বাতাসের সাথে সাথে তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। কখনো কখনো ভালবাসার মানুষেরা হারিয়ে যায়। ভালবাসা থেকে যায়। অন্য কারো মাঝে অন্য কোন রূপে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.