![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হ্যালো? কোথায় তুমি?
- আসছি, আর পাঁচ মিনিট।
পাঁচ মিনিট করে বলছ যতবার ফোন দিচ্ছি। তোমার পাঁচ মিনিট কখন শেষ হবে?
- বোঝনা কেন, এক জায়গা থেকে আসতে সময় লাগে। আর ঠিকঠাক পাঁচ মিনিট পরেই আমাকে দেখতে পাবে।
নীলা মিথ্যে বলেছে। সে প্রায় দশ মিনিট ধরে নিলয়ের পেছনে দাড়িয়ে আছে। এর মদ্ধে নিলয় দুই প্যাকেট ডালভাজা খেয়েছে। ডালভাজা কেন খাচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না। বোধহয় রুচি ডালভাজার এ্যাড দেখে মুঠোয় মুঠোয় সময় পার করার আইডিয়া পেয়েছে।
হ্যালো? তোমার পাঁচ মিনিট কি শেষ হয়েছে?
- পাঁচ মিনিট হতে আর দুই মিনিট বাকি আছে। দুই মিনিট শেষ হওয়ার আগেই আমাকে দেখতে পাবে।
দুই মিনিট ঘড়ি ধরে দেখব, দুই মিনিটের এক সেকেন্ড দেরি হলে এখান থেকে চলে যাব। তখন বুঝবে মজা।
-যেওনা সাথি ওগো যেওনা আর এক মিনিট বস না। হি হিহি
উফ খালি ফাজলামি।
খুব রাগ হচ্ছে নিলয়ের। প্রায় বিশ মিনিট আগে নীলার আসার কথা। কিন্তু নীলার কোন খবর নাই। বিশ মিনিটে নিলয় দুই প্যাকেট ডালভাজা খেয়েছে। দুই প্যাকেট ডালভাজা খাওয়ার কোন কারন নাই। অপেক্ষা করার সময় বাদাম খেতে হয়। বাদাম খাওয়া যাচ্ছে না। সাম্রাজ্যবাদী সরকারের মুল্যস্ফীতির প্রভাবে বাদামের মার্কেট চড়া। কিছুদিন আগে চালের দাম বাড়ায় মমতাজ বেগম ভাতের বদলে আলু খাওয়ার গান গাইছিল। এখন মমতাজ বেগমকে দিয়ে ডালভাজা খাওয়ার গান গাওয়ানো যেতে পারে। মমতাজ বেগম গাইবে, " শোনেন শোনেন প্রেমিকগন শোনেন দিয়া মন, ডালভাজায় আছে যে ভাই বড়ই পুষ্টিগুন। " মমতাজ আপার গান শুনে প্রেমিকগন দুই প্যাকেট করে ডালভাজা কিনবে। একপ্যাকেট নিজের আরেক প্যাকেট প্রেমিকার জন্য। পেটুক প্রেমিকার জন্য তিন প্যাকেট কেনা যেতে পারে। নিলয় দুই প্যাকেট ই কিনেছিল। কিন্তু দুই প্যাকেট ই খেয়ে ফেলেছে। নীলার শাস্তি। এখন এসে বসে বসে হাওয়া খাক।
কেমন আছ?
-ভাল, কোথায় ছিলেন এতক্ষন?
তোমার পিছনে, দেখতে পাওনি গাধা।
- আমার মাথার পিছনে তো দুইটা চোখ নাই, কি করে দেখব?
সরি।
কি করছ?
- দেখতেই পাচ্ছ কি করছি।
এমন কেন করছ?
- তো কি করব? রাস্তায় দাড়িয়ে নাচানাচি করব?
সরি।
- সরি বলে লাভ নাই।
নিলয় রাগ করেছে। ভয়ংকর রাগ করেছে। ভয়ংকর রাগ করলে নিলয়ের চোখ ছোট ছোট হয়ে যায়। চোখ ছোট হয়ে গেলে নিলয়কে অনেক কিউট লাগে। সেটা দেখার জন্য নিলয়কে বার বার রাগিয়ে দিতে ইচ্ছে করে নীলার।
রোদ্রজ্জল দুপুরে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টি দেখে নীলার ছোটবেলায় পড়া একটা ছড়া মনে পড়ছে। ' রোদ হচ্ছে বৃষ্টি হচ্ছে খ্যাঁকশিয়ালের বিয়ে হচ্ছে। ' রোদ বৃষ্টি একসাথে হলে খ্যাঁকশিয়ালের বিয়ে কেন হবে নীলা তা জানে না। আম্মুকে জিজ্ঞেস করতে হবে। নীলার ধারণা তার আম্মু সব জানে। আচ্ছা নিলয় কি জানে? নিলয় একটা গাধা, নিলয় কি করে জানবে? দশ মিনিট ধরে যে ভালবাসা নিয়ে নিলয়ের পিছনে দাড়িয়ে ছিল সেটা নিলয় জানতে পারবে না। সব ভালবাসা প্রকাশ করতে হয় না। কিছু ভালবাসা বুকের মাঝে লুকিয়ে রেখে দিতে হয়।
চল বৃষ্টিতে ভিজি।
- না তোমার ঠান্ডা লাগবে।
লাগলে লাগবে, চলনা প্লিজ।
-জি না। তোমার ঠান্ডার অসুখ, ভিজলে প্রব্লেম হবে।
থাক তোমার আসা লাগবে না, আমি একাই ভিজব।
নীলা বৃষ্টিতে ভেজার জন্য দৌড় দিয়েছে। পেছন পেছন নিলয় ও এসেছে। নীলার হাত ধরে বৃষ্টিতে ভিজছে। আদুরে মেয়েদের উপর রাগ করে থাকা যায় না। তাদের হাত ধরে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। ঝুম বৃষ্টির মাঝে ফিস ফিস করে ভালবাসি বলতে হয়। নীলার মত বুদ্ধিমতি মেয়েরা সেই ফিস ফিস শব্দ শুনে ফেলে। তারপর লাজুক হেসে উত্তর দেয়। সেই উত্তর শুনতে হয় না, চোখ দিয়ে দেখতে হয়। হ্যা, ভালবাসা দেখা যায়।।।
©somewhere in net ltd.