নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

sohel sodeshi

রযাবিডি

আমি সোহেল খন্দকার, মুক্ত চিন্তার অধিকারী। নিজে স্বাধীনতা পছন্দ করি, অন্যের জন্যও স্বাধীনতা আদায়ে সচেষ্ট।

রযাবিডি › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারীর অধিকার

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৮

বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৪৩তম বছর পার করে ফেলেছ, দেশ অনেক দূর এগিয়ে চলেছে। কিন্তু থামানো যায়নি নারী নির্যাতন ও নারীর মানবাধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি এখনো।

বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, পরিবর্তিত হচ্ছে সমাজ কাঠামো, বিকশিত হচ্ছে সভ্যতা। পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে মানুষের জীবনযাত্রায়। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, বন্ধ হয়নি নারী নির্যাতন। নারী’ এই শব্দটি প্রাচীন কাল থেকে প্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষণ নানাভাবে নির্যাতিত ও শোষিত হচ্ছে, হচ্ছে অধিকার হারা। সবই পরিবর্তিত হচ্ছে কিন্তু নারীর কপালে দূর্ভোগ কমছে না। আর এই দূর্ভোগ বা বঞ্চনা শুরু হয় তার পরিবার হতে। আর এই বঞ্চনার শুরু হয় তার জন্মের পর হতেই। যেন সে এক নিষিদ্ধ জাতি, অর্স্পৃশ্য কেউ।আইয়্যামে জাহেলিয়াত যুগে কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করা ছিলো লজ্জার বিষয়। ফলে লজ্জা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য কন্যা সন্তানকে জীবিত কবর দিতে লজ্জাবোধ করতো না।হিন্দু ধর্মে যত তাড়াতাড়ি বিয়ে অর্থাৎ ১৬ বছরের পূর্বে বিয়ে দেওয়াকে বলা হতো ‘গৌরী দান’, এই গৌরী দানের নামে বাল্য বিবাহ উতসাহিত করা হয়েছে। অপরদিকে পৈত্রিক সম্পত্তিতে তাদের কোন অধিকার নেই।

দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী এবং সমাজের উন্নয়নে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু তারপরও সাধারণভাবে তারা শান্তি, নিরাপত্তা ও অধিকারের দিক দিয়ে এখনো পুরুষের সমকক্ষতো নয়ই কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ এই নারীর কারণেই একটি সন্তান পৃথিবীর আলো দেখতে পায়, একটি সুন্দর জীবনের শুভ সুচনা হয়।

অথচ নারীদের জীবন আমাদের এই সমাজে শুধুই একজন সামান্য নারী হিসাবে চিহ্নিত, যার কোনো অস্তিত্ব নেই। আমাদের সমাজে নারী পুরুষ উভয়ই সমান অধিকারী। কিন্তু এই অধিকার নারীরা কতটুকু পায়? তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অধিকার থেকে বঞ্চিত।

আমাদের দেশে নারী নির্যাতন ও নারীর প্রতি অবজ্ঞা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ক্ষুধা, দারিদ্র, অপুষ্ঠি, অশিক্ষা, বেকার সমস্যা এই সকল সাধারণ সমস্যার পাশাপাশি নারীদের আরো কিছু মারাত্মক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় শুধুমাত্র তারা নারী বলে।

এ নির্যাতনের কোনো শেষ নেই। এসিড সন্ত্রাস, ইভটিজিং,পারিবারিক সন্ত্রাস, যৌতুক, ধর্ষণ, ফতোয়া, গৃহ পরিচারিকা নির্যাতন এরকম আরো অনেক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করা যাবে।

আধুনিক কালে নারীর ক্ষমতায়ন ঘটলেও নারী নির্যাতন বন্ধ হয় নি, হয়নি বঞ্চনার শেষ। অথচ দেশে আইন আছে কিন্তু এর সঠিক ব্যবহার নেই বললেই চলে। তাই নারীর নির্যাতন ও বঞ্চনা কমছে না। বরং বাড়ছে। তবে সবচেয়ে বিবেক অপমানিত হয় তখন যখন আমরা দেখি নারী দ্বারা নারী নির্যাতিত হচ্ছে। প্রতিটি পরিবারে নারীর বঞ্চনা ও নির্যাতনের পেছনে মূখ্য ভূমিকা রাখে পরিবারের আরেক নারী। দুখজনক হলেও সত্যি যে পুরুষরা নারী নির্যাতন ও নারীকে বঞ্চিত করার পেছনে অবশ্যই আরেক জন নারীর ভূমিকা থাকে।

মানবসভ্যতা গড়ে ওঠার পেছনে নারীর অবদান পুরুষের চেয়ে কোন অংশে কম নয় এবং ছোট করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।মানব সভ্যতার শুরু হতে লাখ লাখ বছর আগে গুহাবাসী নারী-পুরুষ যৌথ প্রচেষ্টায় যে জীবন শুরু করেছিল, তা ক্রমেই বিকশিত হয়ে আজকের সভ্যতার সৃষ্টি। নারী-পুরুষের স্বার্থ এক ও অভিন্ন। একই যানের দুইটি চাকা। একটি অচল হলে অপরটি অবশ্যই অচল হতে বাধ্য। তাই ভারসাম্য পূর্ণ সমাজের জন্য নারী ও পুরুষ দুটি চাকাই সমান অধিকার দিতে হবে।

আধুনিকতার নামে আজ সমাজের প্রতিটি পর্যায়ে নারীকে দেখানো হচ্ছে ভোগ্য পণ্য হিসাবে। আর নারীর অধিকার আদায়ে এই বিষয়িট এক বড় অন্তরায়। তাই নারীকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে না দেখে তার সঠিক মর্যাদা তাকে দিতে হবে।সকল অভিশাপ থেকে নারীকে মুক্ত করতে হবে। নারীরা প্রতিনিয়ত কোনো না কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার হন।নির্যাতিত নারীদের অধিকাংশই নীরবে নির্যাতন সহ্য করেন। এই নির্যাতন নারীর অগ্রগতির পথে একটি মারাত্মক হুমকি বা বাধা।

নারী এখনো নারীই রয়ে গেলো, মানুষ হতে পারলো না, এই সমাজ তাকে মানুষ বলে স্বীকৃতি দিতে লজ্জিত হয়। আর মানুষ হতে না পারলে অধিকার কিসের? আমাদের চিন্তা চেতনার এই প্রতিবন্ধকতা হতে বের হয়ে আসতে হবে। নারীকে শুধু নারী নয় মানুষের অধিকার দিতে হবে। আমাদের সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই নারীকে সমান অধিকার দিতে হবে। আর দেশের অর্ধেক জনসংখ্যাকে অধিকার বঞ্চিত রেখে দেশের উন্নয়ন চিন্তা করা অলীক স্বপ্ন মাত্র।
এতো দুখের মাঝো খুশির বিষয় দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধী দলীয় নেত্রী নারী, সংসদের স্পীকার একজন নারী।

নারীর ওপর এই বঞ্চনার প্রভাব সমাজের সব ক্ষেত্রে পড়বেই, এটাই স্বাভাবিক। আর অধিকার বঞ্চিত নারীকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিতে সব ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধ করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে সকল নারীকে। একজন নারীও এই আন্দোলনে বাদ যাওয়া যাবে না। আর পুরুষ শাসিত এই সমাজে মুখ্য ভূমিকা রাখতে হবে অবশ্যই পুরুষকে। তাই আসুন নারীর অধিকার মানুষ হিসাবে ফিরিয়ে দিই। সমাজকে কির আরো ও গতিশীল ও সমৃদ্ধ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.