নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক

[email protected]

দণ্ডিত পুরুষ

জীবন যাপন নয়, বহন করেই চলছি প্রতিনিয়ত। কখনও কখনও এই বহিত জীবন, আমাকে ভুল পথে চালিত করে। তখন আমি অপরাধবোধে ভুগী। নিজেকে দণ্ড দেই। এভাবেই চলছে জীবন।

দণ্ডিত পুরুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঁশি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমার অতি প্রিয় একটি কবিতা

১২ ই জুন, ২০০৯ রাত ১১:৪৬



কিনু গোয়ালার গলি।

দোতলা বাড়ির

লোহার-গরাদে-দেওয়া একতলা ঘর

পথের ধারেই।

লোনাধরা দেয়ালেতে মাঝে মাঝে ধসে গেছে বালি,

মাঝে মাঝে স্যাঁতাপড়া দাগ।

মার্কিন থানের মার্কা একখানা ছবি

সিদ্ধিদাতা গণেশের

দরজার 'পরে আঁটা।

আমি ছাড়া ঘরে থাকে আরেকটা জীব

এক ভাড়াতেই,

সেটা টিকটিকি।

তফাত আমার সঙ্গে এই শুধু,

নেই তার অন্নের অভাব।



বেতন পঁচিশ টাকা ,

সদাগিরি আপিসের কনিষ্ঠ কেরানি।

খেতে পাই দত্তদের বাড়ির

ছেলেকে পড়িয়ে।

শেয়ালদা ইস্টিশনে যাই,

সন্ধেটা কাটিয়ে আসি,

আলো জ্বালাবার দায় বাঁচে।

এঞ্জিনের ধস্‌ ধস্‌,

বাঁশির আওয়াজ,

যাত্রীর ব্যস্ততা,

কুলি-হাঁকাহাকি।

সাড়ে-দশ বেজে যায়,

তারপর ঘরে এসে নিরালা নিঃঝুম অন্ধকার।

















ধলেশ্বরী-নদীতীরে পিসিদের গ্রাম

তাঁর দেওরের মেয়ে,

অভাগার সাথে তার বিবাহের ছিল ঠিকঠাক।

লগ্ন শুভ, নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেল

সেই লগ্নে এসেছি পালিয়ে।

মেয়েটা তো রক্ষে পেলে,

আমি তথৈবচ।

ঘরেতে এল না সে তো, মনে তার নিত্য আসা-যাওয়া

পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর।



বর্ষা ঘনঘোর।

ট্রামের খরচা বাড়ে,

মাঝে মাঝে মাইনে কাটা যায়।

গলিটার কোণে কোণে

জমে ওঠে, পচে ওঠে

আমের খোসা ও আঁঠি, কাঁঠালের ভূতি,

মাছের কান্‌কা,

মরা বেড়ালের ছানা

ছাঁইপাশ আরো কত কী যে।

ছাতার অবস্থাখানা জরিমানা দেওয়া

মাইনের মতো,

বহু ছিদ্র তার।

আপিসের সাজ

গোপীকান্ত গোঁসাইয়ের মনটা যেমন,

সর্বদাই রসসিক্ত থাকে।

বাদলের কালো ছায়া

স্যাঁৎসেঁতে ঘরটাতে ঢুকে

কলে-পড়া জন্তুর মতন

মূর্ছায় অসাড়!

দিনরাত, মনে হয়, কোন আধমরা

জগতের সঙ্গে যেন আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে আছি।



গলির মোড়েই থাকে কান্তবাবু

যত্নে-পাট- করা লম্বা চুল,

বড়ো বড়ো চোখ,

শৌখিন মেজাজ।

কর্নেট বাজানো তার শখ।

মাঝে মাঝে সুর জেগে ওঠে

এ গলির বীভৎস বাতাসে

কখনো গভীর রাতে,

ভোরবেলা আধো-অন্ধকারে.

কখনো বৈকালে

ঝিকিমিকি আলোয়-ছায়ায়।

হঠাৎ সন্ধ্যায়

সিন্ধু-বাঁরোয়ায় লাগে তান,

সমস্ত আকাশ বাজে

অনাদি কালের বিরহবেদনা।

তখনি মুহূর্তে ধরা পড়ে

এ গলিটা ঘোর মিছে

দুর্বিষহ মাতালের প্রলাপের মতো।

হঠাৎ খবর পাই মনে,

আকবর বাদশার সঙ্গে

হরিপদ কেরানির কোনো ভেদ নেই।


বাঁশির করুণ ডাক বেয়ে

ছেঁড়া ছাতা রাজছত্র মিলি চলে গেছে

এক বৈকুণ্ঠের দিকে।



এ গান যেখানে সত্য

অনন্ত গোধূলিলগ্নে

সেইখানে

বহি চলে ধলেশ্বরী,

তীরে তমালের ঘন ছায়া

আঙিনাতে

যে আছে অপেক্ষা ক'রে, তার

পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর।







আমার লাইফস্টাইল অনেকটা এই কবিতাটির মতো।

এইজন্যই মনে হয় আমার এত প্রিয়।

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১২:০৫

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: আগে পড়িনি। ভালো লাগলো। প্রিয়তে থাকলো।

১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১২:১০

দণ্ডিত পুরুষ বলেছেন: রাতে যখন ব্লগে পড়ে থাকি তখন শিমুল মুস্তাফার কন্ঠে এই আবৃত্তিটা আবহ সঙ্গীত হিসেবে ননস্টপ বাজতে থাকে।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১২:১৭

আবু সালেহ বলেছেন: ভালো লাগলো।

১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১২:৪১

দণ্ডিত পুরুষ বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১২:২১

ভাস্কর চৌধুরী বলেছেন:

অসাধারণ.....................................................+
ভালো লাগল।







ভালো থাকুন।
শুভরাত্রি।

১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১:১৯

দণ্ডিত পুরুষ বলেছেন: ভাস্কর দা, ভালা খইরা মাত রে বো।

ভালো থাকবেন।

শুভরাত্রি।

৪| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১২:২৩

তানহা তাবাসসুম বলেছেন: +++++

৫| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১২:২৪

স্বপ্ন-বয়ান বলেছেন: কবিতাটা আমারো ভীষণ প্রিয়। তবে শিমুল মোস্তফা'র এ আবৃত্তিটা আমার কাছে খুব ব্যবসায়িক আবৃত্তি মনে হয়। মানে, কবিতার ভিতরে ডুকে আবৃত্তি নয়, কাঁপাকাঁপা গলায় কিছু শ্রোতাকে আকৃষ্ট করার মতো আবৃত্তি। এর থেকে আসাদুজ্জামান নুরের আবৃত্তিটা অনেক বেশি ভাললাগে। পারলে যোগাড় ক'রে শুনবেন।
++++++++

১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১:১৬

দণ্ডিত পুরুষ বলেছেন: শিমুল মুস্তাফা হলো আবৃত্তির প্রতিষ্ঠান। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনি তার বাবা গোলাম মোস্তাফাকেও ছাড়িয়ে গেছেন।

এই কবিতার এই অংশটুকু তিনি যখন ভরাট কন্ঠে বলেন "হঠাৎ খবর পাই মনে আকবর বাদশার সঙ্গে
হরিপদ কেরানির কোনো ভেদ নেই"।
তখন আমার কাছে সবকিছু স্তব্ধ মনে হয়।
আসাদুজ্জামান নূরের আবৃত্তিও আমার খুব ভালো লাগে।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

৬| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১২:৩২

পথিক!!!!!!! বলেছেন: আগে পড়িনাই তো, দারুন

১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১২:৪৪

দণ্ডিত পুরুষ বলেছেন: পথিক ভাই, অনেকদিন পর।

আবৃত্তি শুনলে কবিতার আবেদনটা আরো বেশি ধরা পড়বে।

ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

৭| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১:০৫

দেশী পোলা বলেছেন: ভালা জিনিষ, পুরোটা আগে পড়া হয় নাই, ধন্যবাদ

১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১:২৩

দণ্ডিত পুরুষ বলেছেন: বস্, আপনে পড়ছেন তাইলে?

বহুত বহুত শুকুর।

৮| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১:২৪

নাজিম উদদীন বলেছেন: আমি সবসময় মনে করতাম কবিতার নাম 'কিনু গোয়ালার গলি', বাঁশি যে এটা মনে থাকে না।

৯| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ১:২৯

মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: শিমুল মুস্তাফা কিন্তু গোলাম মোস্তাফার সাথে কোনো ভাবেই সংশ্লিষ্ট নন। পিতা-পুত্র সম্পর্কতো নয়ই। দু'জনের নামে মিল, ওটুকুই।

কবিতাটি শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।

১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ২:০৪

দণ্ডিত পুরুষ বলেছেন: তাই নাকি? এটাতো জানতাম না।

ভুলটি ধরিয়ে দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

১০| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ২:৫০

শ।মসীর বলেছেন: robindro nath er kuthi bari ghure aste paren....

Click This Link

১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ২:৫৭

দণ্ডিত পুরুষ বলেছেন: ধন্যবাদ বড় ভাই।

একবার যাওয়ার ইচ্ছা আছে।

১১| ১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ২:৫৬

গায়ত্রী সান্যাল বলেছেন: ঘরেতে এল না সে তো, মনে তার নিত্য আসা-যাওয়া


আমার খুব্বি প্রিয়।+++++++++++

১৩ ই জুন, ২০০৯ রাত ৩:০২

দণ্ডিত পুরুষ বলেছেন: হঠাৎ খবর পাই মনে,
আকবর বাদশার সঙ্গে
হরিপদ কেরানির কোনো ভেদ নেই।

এইলাইনগুলো আমার খুব ভালোলাগে।
সত্যিইতো প্রেমের অনুভূতির ক্ষেত্রে আকবর বাদশা যা এই আমিও তাই।

আপনাকে ধন্যবাদ।

১২| ১৩ ই জুন, ২০০৯ দুপুর ১:০৬

ইমরান মাঝি বলেছেন: আবার পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ

১৩ ই জুন, ২০০৯ বিকাল ৫:৪৬

দণ্ডিত পুরুষ বলেছেন: পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.