নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ না আমি কেউ না

খাঁজা বাবা

বল বীর – বল উন্নত মম শির! শির নেহারি’আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!

খাঁজা বাবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ ফার্স্ট ডেট

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৮



সকাল থেকেই আকাশটা গম্ভীর। হঠাৎ হঠাৎ ঝিরঝিরে বৃষ্টি। মেয়েটার সাথে আজ প্রথম দেখা করার কথা, তাই একটু অস্থির লাগছে। বুকের মধ্যে ডিব ডিব করছে। একটু ভয় ও লাগছে, কি না কি হয় ভেবে। বৃষ্টির জন্য ও চিন্তা হচ্ছে। বের হওয়ার সময় যদি বৃষ্টি বেশি থাকে, যদি বের হতে না পারি? বা মেয়েটা যদি বের হতে মানা করে দেয়? তাহলে আবার আগামী শুক্রবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারন এর মধ্যে অফিসের ফাকে আর সময় পাব না হয়ত। কিন্তু মেয়েটা কি অতদিন ঢাকায় থাকবে?
যা হোক জুমার নামাজের পর খেয়ে দেয়ে মেয়েটাকে একটা মেসেজ দিলাম। বের হচ্ছি। ভয়ে ফোন দিলাম না। এখানে মেয়েটা ভাই ভাবীর বাসায় উঠেছে। আজ যেহেতু শুক্রবার, সেহেতু সবাই বাসায়। কে না কে ফোন রিসিভ করে...
কিছুক্ষনের মধ্যেই রিপ্লাই এল আসেন। যখন এয়ারপোর্ট পৌছাবেন তখন আমাকে কল করবেন, তখন আমি বের হব।
আমাদের উত্তরায় মিট করার কথা। আমি জসিমউদ্দিন থাকব ৪টায়, পরে কোথায় বসব।
আমি OK রিপ্লাই দিয়ে বের হয়ে গেলাম। একে তো শুক্রবার, তার উপর বিরতি দিয়ে হালকা বৃষ্টি। রাস্তা একদম ফাকা। আমি ২০ মিনিটের মধ্যেই এয়ারপোর্ট পৌছে গেলাম। তারপর কাঁপা কাঁপা হাতে তাকে ফোন করলাম। প্রথম রিং হতেই ফোন রিসিভ হল। হয়তো ফোন হাতেই ছিল। হালকা ঝারির সাথে ওপাশ থেকে বলল আপনাকে না বলছি এয়ারপোর্ট আসলে আমাকে কল দিতে? আমি বললাম-আমি এয়ারপোর্ট ক্রস করলাম।
সে একটু টেনে বলল - আল্লাহ, এত তারাতারি?
আমি বললাম হুম। কোথায় বসবেন? আমি কোথায় আসব?
সে বলল আগে জসিমউদ্দিন আসেন, আমি নেমে দেখি কোথায় বসা যায়।
আমি ওকে বলে ফোন রাখলাম আর বুঝলাম কোন পাকনা মেয়ের পাল্লায় পরেছি। আমার খবর আছে সামনে।

বাস থেকে নেমেই তাকে কল দিলাম, ধরল না। হালকা বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে একটা মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়েছি। আরো বেশ কিছু কপোত কপোতিও সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের দেখেই মনটা ভাল হয়ে গেল। যদিও অপেক্ষা করা খুবই বিরিক্তিকর। তার উপর টেনশান তো আছেই। কি না কি হয়। দশ মিনিট অপেক্ষার পরে আবার কল করলাম। রিসিভ করেই বলল রিক্সায় উঠেছি। কোথায় বসবেন? আমি বললাম আমি কি জানি। ইউ হ্যাভ ইনভাইটেড মি। সে বলল চাইলে পার্কেও বসতে পারেন বা রেষ্টুরেন্টে। আমি বললাম যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে পার্ক বাদ। অন্য কোথাও। সে OK বলেই লাইনটা কেটে দিল। আর আমি আবুল হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
প্রায় আর দশ মিনিট পর এবার সে আমাকে কল করল। হ্যালো বলতেই অপাশ থেকে বলল একটা রিক্সা নিয়ে ভিতরে চলে আসেন। বি এফ সি তে। ২০ টাকা ভাড়া। আবারো আমি ওকে বলতেই লাইন কাট।

আমি রিক্সা থেকে নামলাম, ভয় আর বুকের ডিপ ডিপানি টা আরো বেড়েছে। গ্লাস ডোর ঠেলে ভিতরে ঢুকলাম তাকে দেখলাম। না। আগে সামনা সামনি না দেখলেও ফেসবুকে ছবি দেখেছি। সো ছবির সাথে বাস্তবের খুব বেশি পার্থক্য হওয়ার কথা না। কিন্তু তেমন কাউকে দেখলাম না। দোতলায় যাওয়ার সিরিটা চোখে পরল। আস্তে আস্তে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে ও তেমন কাউকে দেখলাম না। শুধু বাচ্ছা কাচ্ছা নিয়ে দু তিনটা ফ্যামিলি বসে আছে। কিছু বাচ্ছা কর্নারে কিড জোনে খেলছে। ভাবলাম আমার সে কই? ভুল যায়গায় এসে পরলাম? নাকি সে এখনো আসে নি? হঠাত সামনে চোখ পরল। সামনে ডানদিকে আরো কিছু স্পেস আছে দেয়ালের আড়ালে। ওখানে নেইতো? ভাওবে ভাবতে সামনে এগোই। কর্নারে এসে ডান দিকে তাকাতেই একেবারে শেষ টেবেলে তাকে দেখলাম। আমাকে দেখে হাসছে। সম্ভবত আমাকে রিক্সা থেকে নামতে দেখেছে। এখান থেকে রাস্তা পরিষ্কার দেখা যায়।
আমি গিয়ে তার সামনে বসলাম। ঠোটে এখনো হাসিটা লেগে আছে। আমি বসতেই ভ্রু নাচিয়ে আমাকে ইশারা করল। জিজ্ঞেস করলাম কেমন আছেন...
সে উত্তর দিল কোন মেয়ের ভাইয়ের মার খেয়েছেন কখনো? আমি বললাম না, কিন্তু কেন?
আজ সম্ভাবনা আছে, মানষিক প্রস্তুতি নেন। ভাইয়া আজ বাসায়। শুক্রবার মেয়েকে নিয়ে বিকেলে বের হয়। আজ যেহেতু বৃষ্টি তো কোথাও বসবে। আর এ রেষ্টুরেন্ট টাই ভাইয়ার পছন্দের যায়গা। একথা শুনে আমার ডিপ ডিপানি আরো বেড়ে গেছে।
এরপর টুকটাক কথা খাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি, কিন্তু আমি কেন জানি খুব একটা কম্ফোর্ট ফিল করছিলাম না। কেমন যেন একটু লজ্জা লজ্জা লাগছিল। আমি কোন কথা খুজে পাচ্ছিলাম না বলার জন্য। ফার্স্ট ডেট বলে কথা। স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটিতে আমার গার্ল ফ্রেন্ড তো দূরের কথা, তেমন কোন বান্ধবীও ছিল না। যদিও সে আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট, মাত্র অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে আর আমার মাস্টার্স শেষ আরো দু বছর আগে। তারপরও সে যথেষ্ট সাবলীল ছিল। কথা যা সব সে ই চালিয়ে গেল। সম্পূর্ন আমার উল্টো। তার কথার ব্রেকে আমি টিভি স্ক্রিনের দিকে চোখ দিলাম, বাংলাদেশের কোন টিমের সাথে যেন টেষ্ট চলছিল। কিন্তু আমার মন পরে ছিল তার চোখে। যদিও তার চোখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না। কেমন জড়তা কাজ করছিল। এমন মায়াময় সুন্দর চোখ আমি কোনদিন দেখিনি।

আমি বুঝলাম ও চোখে আমি ফেঁসে গেছি। একবার দেখেই আমি তার দুচোখের প্রেমে পড়ে গেছি। আমার ফিরে আসার আর কোন পথ নেই।


প্রথম গল্প, একটু বেশী বর্ননা মূলক হয়ে গেছে। কিছু হয়ত নানান ভুল আছে। ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
গঠন মূলক সমালোচনা ও মন্তব্যকে সাধুবাদ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৭

সনেট কবি বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৫

খাঁজা বাবা বলেছেন: মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ :)

২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

লাবণ্য ২ বলেছেন: আপনি ভালোই লিখেন।ভালোলাগা জানিয়ে গেলাম।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:২১

খাঁজা বাবা বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.