নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ না আমি কেউ না

খাঁজা বাবা

বল বীর – বল উন্নত মম শির! শির নেহারি’আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!

খাঁজা বাবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে চাকুরীতে ঢোকার বয়স সীমা বাড়ানো কতটা যৌক্তিক?

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৭




আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে চাকুরীতে ঢোকার বয়স সীমা বাড়ানো কতটা যৌক্তিক? আসলে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটটাই বা কি? আমাদের দেশ ১৮ কোটি জনসংখ্যার এক বিশাল দেশ (জনসংখ্যার ভিত্তিতে)। এই দেশ থেকে যদি প্রতি বছর ২% মানুষ নতুন জনশক্তি হিসেবে আমাদের সমাজে যোগ হয় সেটা ৩৬ লক্ষ। এদের মধ্যে কেউ জনশক্তি হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখে, কেউ বেকার নাম নিয়ে বসে থাকে। সরকারী হিসেব মতে আমাদের দেশে কর্মক্ষম জনশক্তির ৪-৫% মানুষ বেকার। বাস্তবে আরো বেশি। প্রত্যেক বছর আমাদের দেশে ৪-৫ লক্ষ লোক গ্রাজুয়েশান করে বের হয়। গ্রাজুয়েশান শেষ করতে মোটামুটি ২৬ বছর পার হয়ে যায়, যাদের ইয়ার ড্রপ না হয় বা প্রাইভেটে পড়ে তাদেরও প্রায় ২৪ বছর পার হয়ে যায়। প্রত্যেক বছর গড়পড়তা ৫০ হাজার মানুষ সরকারী চাকুরীতে প্রবেশ করে বাকিরা প্রাইভেট সেক্টরে যায়। এদের মধ্যে কেউ চাকুরি করে কেউ আত্মকর্মসংস্থান করে, ব্যাবসা করে। কেউ বেকার থেকে যায়। এই হচ্ছে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট।

এখন কথা হচ্ছে এই ৫ লক্ষ গ্রাজুয়েট আর এর বাইরে আরো ২৭ লক্ষ লোকের মধ্য থেকে যদি কম করে ১ লক্ষ লোক ও সরকারী চাকুরির আশায় পয়ত্রিশ বছর বয়স পর্যন্ত বেকার থেকে যায় তো এক লাখ লোকের ১০ লাখ বছর নষ্ট হচ্ছে। এক জন গ্রাজুয়েট যদি মাসে ২০০০০ টাকা বেতনে চাকুরি করেন বা কোন পন্য বা সেবা উৎপাদন বা মূল্য সংযোজন করে মাসে ২০০০০ টাকা আয় করেন তবে ১ লাখ লোক ১০ বছরে ২৪ হাজার কোটি টাকার পন্য বা সেবা অর্থনীতিতে যোগ করতে পারতেন। আমাদের বেকার পোষার প্রযেক্ট এই সম্ভাবনা থেকে দেশকে বঞ্চিত করছে। বর্তমানে আমাদের চাকুরীতে ঢোকার শেষ বয়স ৩০। মানে ১ লাখ লোক ৫ বছর বেকার থেকে দেশের অর্থনীতিকে ১২ হাজার কোটি টাকা থেকে বঞ্চিত করছে। বাস্তবে এই সংখ্যাটা আরো বেশি।

অনেকে যুক্তি দেবেন উন্নত দেশে সরকারী চাকুরিতে ঢোকার কোন বয়স নাই। আমি বলি ভাই সেই দেশে যে কাজ আছে তাদের জন্য পর্যাপ্ত লোক নাই। তাদের বাইরে থেকে লোক নিতে হয়। যে সব বেকার আছে হয় তারা শখের বেকার, অথবা যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ না পাওয়ায় বেকার। ৫ কোটিতে এমন ২/১ লাখ হতেই পারে।
আমাদের দেশে চাকরিতে ঢোকার বয়স একদিকে বাড়াতে চাচ্ছে আর এক দিকে চাকরি শেষের বয়স ও বাড়ানো হচ্ছে। ৬০ বছর বয়সের একটা মানুষের অনেক এক্সপেরিয়েন্স আছে অনেক জ্ঞানী তিনি। কিন্তু এই বয়সের একটা মানুষের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শারিরিক যোজ্ঞতা ও এনার্জীর ঘাটতি থাকে। আর অনেক ক্ষেত্রে এই বয়সের মানূষের চিন্তা শক্তিও হ্রাস পায়। অনেক মানুষই তখন নারাচারা থিওরি দেওয়া শুরু করে ম খাঁ এর মত, তাদের ব্রেইন তখন ঠিক ভাবে কাজ করেন না।

যেহেতু আমাদের দেশে তরুন জনশক্তির কোন অভাব নাই সূতরাং ৬০ বছরের উপর বয়সের মানুষ সরকারী চাকুরিতে রাখার প্রয়োজন নাই। প্রাইভেট সেক্টরে রাখা যায়, কেননা সেখানে মনিটরিং অনেক বেশী। আর চাকরিতে ঢোকার বয়স সীমা না বাড়িয়ে বরং কমানো উতিত। তাতে দেশের বেকারের হার নিশ্চিত ভাবেই কমবে। মানুষ স্বকল্প সংস্থানে উদবোদ্ধ হবে।
যে ছেলেটি বা মেয়েটি পড়াশুনা শেষ করার ২/৩ বছরের মধ্যে চাকরি যোগাড় করতে পারে না সে ১০ বছর পরে যোগ্যতায় চাকরী পাবে সেটা বিশ্বাস যোগ্য না। বরং দিনে দিনে তার মেধার ধার কমতে থাকবে। শেষ বয়সে এসে চাকরীর জন্য দূর্নিতির আশ্রয় নেবে। ব্যতিক্রম যে কিছু নেই তা নয়। সেটা নগন্য। এই স্বেচ্ছায় বেকারদের জীবনে এই বেকার সময়ের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানুষিক প্রাভাব ভয়াবহ।

চাকুরিতে ঢোকার বয়স না বাড়িয়ে বরং পড়াশুনা শেষ করার বয়স কমানো উচিত। একজন ছাত্র যাতে ২২/২৩ বছরের মধ্যে পড়াশুনা শেষ করতে পারে।

এদেশে আম জনতার মাস্টার্শ করার কোন প্রয়োজনীতা নেই। কেরানীর চাকরী করতে মাস্টার্স লাগে না। শুধু শুধু সময় নষ্ট। মাস্টার্শ করার সুযোগ শুধু তাদের জন্য খোলা থাকবে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হবে বা গবেষনায় নিযুক্ত হবে। ক্লাসের প্রথম শারির মেধাবীরা। আর মাস্টার্শ করবে চাকরিতে ঢোকার পর যাদের প্রয়োজন। কারন দেখা যাচ্ছে পড়ছে ব্যাংকিং- হচ্ছে পুলিশ, পড়ছে সোস্যাল- সাইন্স হচ্ছে ব্যংকার। এতে করে সিক্ষার্থীদের সময় যেমন বেঁচে যাবে সরকারের খরচ ও কমে যাবে। এই টাকা গবেষনায় খরচ করা যাবে।

সূতরাং চাকরীতে ঢোকার বয়স না বাড়িয়ে বরং কিভাবে পড়ালেখার সময় কমিয়ে আনা যায়, দক্ষ কর্মী তৈরি করা যায় সেদিকে মনযোগ দেয়া উচিত। আর প্রাইভেট সেকটরে কর্মীদের সুবিধা কিভাবে উন্নত করা যায় সেদিকে সরকারের মনযোগ দেয়া উচিত।

সর্বোপরি সরকারী চাকরিতে দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন ঠেকাতে সরকারের বিষেশ পদক্ষেপ নেয়া উচিত। সরকারী চাকরীর উচ্চ চাহিদার জন্য দুর্নিতি বহুলাংশে দায়ী।

পরিশেষে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে চাকরিতে ঢোকার বয়স না বাড়ানোই উত্তম।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৭

সনেট কবি বলেছেন: কিছুটা পড়লাম।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৬

খাঁজা বাবা বলেছেন: ধন্যবাদ
আশা করছি নিয়মত আমার ব্লগে আপনাকে পাব :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.