নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছেছড়া লেখক

রাইয়ান পাটোয়ারী

সম্পাদক, তরুণোদয়

রাইয়ান পাটোয়ারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা গদ্য ও তার রূপ (প্রথম কিস্তি)

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৪০

বাংলা গদ্য সাহিত্যের আবির্ভাব খুব বেশি প্রাচীন নয়। মোটামোটি পনের শতকের শেষ ভাগে প্রাচীন কিছু দলিল দস্তাবেজ, চিঠি ও কিছু ধর্মীয় গ্রন্থতে বাংলা গদ্যর সামান্য কিছু নিদর্শন পাওয়া যায়। তবে তা সাহিত্য হিসাবে বিকাশ লাভ করে আঠারো শতকের প্রথম ভাগে। সাহিত্যর কাল বিভাজন অনুসারে বাংলা গদ্যে সাহিত্যের আবির্ভাব আধুনিক যুগে ঘঠলেও এটি প্রতিষ্ঠা পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলা গদ্য সাহিত্য বাংলা সাহিত্যর বিশাল অংশ জুড়ে তার নিজস্ব অবস্থান সৃষ্টি করে তোলে। বাংলা গদ্য সাহিত্য কত দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে তার স্পষ্ট উধাহরন পাওয়া যায় ১৮৫৮ সালে প্যারাচাঁদ মিত্র রচিত “আলালের ঘরের দুলাল” উপন্যাসটিতে। মূলত আলালের ঘরে দুলাল উপন্যাসটির ভাষাশৈলী বাংলা গদ্য সাহিত্য কে তার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়। পরবর্তীতে বাংলা গদ্য সাহিত্যকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলতে একে একে আর্বিভুত হন রামমোহন রায়, অক্ষয়কুমার দত্ত,দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর,তারাশঙ্কর তর্করত্ন, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, এর মত কালজয়ী সব গদ্যকারের। বাংলা গদ্য সাহিত্য তার জন্মলগ্ন থেকেই তিনটি প্রধান ধারা লক্ষ করা যায়। প্রবন্ধ, কথাসাহিত্য ও সাহিত্য সমালোচনা।আবার প্রবন্ধকে তার উদ্দেশ্য ও গঠনশৈলীর উপর ভিত্তি করে বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা যায়। এর মধ্যে চিন্তাপ্রধান প্রবন্ধ ও রস রচনা অন্যতম। যুক্তি,তর্ক ও প্রমানের সাহায্য চিন্তা চেতনার নব নব দ্বারদ্ঘাঠনই হয়ে উঠে চিন্তা প্রধান প্রবন্ধের মূল লক্ষ্য। সম্ভবত এই ধারার প্রবন্ধ আর্বিভুত হয় রামমোহন রায় এর হাত ধরেই। তার প্রবন্ধসমুহে মূলত ধর্মদর্শন, সমাজসংস্কার ও শিক্ষা সংস্ককারের মতো বিষয় গুলো উঠে আসে। তবে এটা সত্য যে রামমোহন রায় প্রথম প্রাবন্ধিক হিসেবে তার প্রবন্ধগুলোতে একটু দূরূহ ও গভীর ভাবনাকে আশ্রয় করেছেন। কিন্তু পরবর্তী তার এ ধরনার প্রবন্ধ সমুহতে প্রাণসঞ্চার করতে আবির্ভাব ঘঠে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের। ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কতটা রামমোহর রায় এর ধারাকে অনুসরন করেছিলেন সেটি স্পষ্ট হয় যখন উভয় গদ্যকারের প্রবন্ধের উদ্দেশ্য পর্যালোচনা করা হয়। মূলত রামমোহন রায় ও ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উভয়ই প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন সমাজ সংস্কারের খাতিরে। যেমন ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রবন্ধসমুহের দিকে তাকালে আমরা দেখি , তার প্রবন্ধ সমুহতে ঠাই পেয়েছিলো সতিদা্হ প্রথা উচ্ছেদ, স্ত্রী শিক্ষা প্রবর্তন, বিধবা বিবাহ প্রচলনের মতো তৎকালীন সামাজিক সমস্যাগুলো। তবে এক্ষেত্রে ইশ্বরচন্দ্র রামমোহন রায় এর ধারাকে অনুসরন করলেও এ কথা অনস্বীকার্য যে, বাংলা প্রবন্ধের আমূল পরিবর্ত আসে বিদ্যাসাগরের হাত ধরেই। বিদ্যাসাগরের ভাষারীতিই এই পরিবর্তনের মূল হাতিয়ার ছিল। তাই বাংলা গদ্যর প্রথম প্রাবন্ধিক রামমোহন রায় হলেও বাংলা গদ্যর জনক কিন্তু ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরই ছিলেন।

প্রবন্ধের আরেকটি অংশ হলো রস রচনা বা সাহিত্য প্রধান প্রবন্ধ। এই ধরনের প্রবন্ধতে যুক্তি তর্কের কোনো বালাই খাটে না। এখানে লেখক শুধু আত্মউপলব্দির কথা বলেন, নিজের মনের গোপন কথাগুলো অবলীলায় ব্যাক্ত করেন। কোন নিয়মের মুখোপেক্ষী নন লেখক। শুধুমাত্র সাহিত্যর রস প্রধান করে প্রবন্ধ কে সুস্বাদু করে তোলাই তার মূল লক্ষ্য। এ ধরনের প্রবন্ধ সমুহ মূলত জীবনস্মৃতি,ভ্রমনকাহীনি,ব্যাঙ্গাত্মক রচনা, চিঠি সাহিত্য ও ডায়েরী প্রর্বত্তি। এই ধরনের প্রবন্ধ রচনায় ব্রত হয়েছিলেন ভবানীচরন বন্দ্যোপাধ্যায়,দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর,কালীপ্রসন্ন সিংহের মতো প্রাবন্দিকরা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.