নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বায়েজিদ বোস্তামী

১৩ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:২৮

মৃত্যু পূর্বে কেউ একজন তাঁর বয়স জিজ্ঞেস করলে তাঁর জবাব ছিল বেশ চমকপ্রদ-

“I am four years old. For seventy years I was veiled. I got rid of my veils only four years ago.” অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্বে তাঁকে নিয়ে সকল সংশয় দূর করতে তিনি নিজেই যেন স্বীকার করে গেলেন শেষ চার বছর বাদ দিলে বাকি জীবনটায় তিনি কাটিয়েছেন এক ঘোরের মধ্যে। বায়েজিদ বোস্তামী ৮০৪ খ্রীষ্টাব্দে ইরানের বোস্তাম শহরে জন্ম গ্রহণ করেন এক ধর্মাশ্রিত পরিবারে। আগেকার দিনে কিছু কিছু দেশে নামের শেষে জন্ম গ্রহণকারী অঞ্চলের নাম জুড়ে দেওয়ার রীতি বেশ প্রচলিত ছিল। চট্টগ্রাম মাযারের শহর হিসেবে খ্যাত, কারণ সেখানে বারো-আওলিয়ার মাযার আছে।



বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার চট্টগ্রাম এর নাসিরাবাদের একটি পাহাড়ের উপরে অবস্থিত। সমাধি পাহাড়ের পাদদেশে একটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ঠ মোঘলরীতির আয়তাকার মসজিদ এবং একটি বিশালাকার দীঘি আছে। মিথ প্রচলিত আছে বায়েজিদ বোস্তামী নিজে এসব কচ্ছপ চট্টগ্রামে নিয়ে এসেছিলেন।আবার কেউ কেউ বিশ্বাস করেন বায়েজিদ দুষ্ট জ্বীনদের কচ্ছপ বানিয়ে বন্ধী করে রেখেছেন। স্থাপত্যশৈলী থেকে ধারণা করা হয় মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব এর আমলে মসজিদটি নির্মিত।বোস্তামী নামের অর্থ - যিনি বোস্তাম শহরের বাসিন্দা। হযরত বায়েজিদের দাদা একজন পার্সী ধমাবলম্বী ছিলেন, যিনি পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।বায়েজিদ ১ম বার মক্কা গিয়ে শুন্য ঘর ও কিছু পাথর ছাড়া কিছুই দেখতে পেলেন না। ভাবলেন হয়তো ঈশ্বর তাঁর তীর্থভ্রমণ গ্রহণ করেন নি। তাই দেখা দেন নি। ২য় বার আবার গেলেন সেখানে, ঐ ঘর আবার দেখতে পেলেন এবং সেই সাথে ঐ ঘরের প্রভুকে দেখতে পাওয়ার দাবি জানালেন।



সুফী সাধক ও আউলিয়াগণ চট্টগ্রামে ইসলাম ধর্ম প্রচারের সময় সচরাচর পাহাড় এর উপরে কিংবা জঙ্গল ঘেরা অঞ্চলে আবাস স্থাপন করেন এবং এসব জায়গাতে মাজার কিংবা এই ধরণের বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করেন। বেশি ভাগ সময়ই তিনি নিজ বাড়ির নিভৃতে অথবা মসজিতে কাটিয়েছেন। নিভৃতচারী হওয়া সত্ত্বেও সূফী জগৎ থেকে তিনি কখনোই আলাদা থাকেননি। সূফীবাদের আলোচনা করার জন্য তিনি লোকজনকে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রন করতেন।তাঁর বাবা ছিলেন এক জন সুফি সাধক, মাও ছিলেন ধর্মপ্রাণ মহিলা।বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার। এখানে প্রকৃত অর্থেই কোন মাজার নেই। আছে কল্প কাহিনীর ভিত্তিতে জমজমাট ব্যবসা। বায়েজিদ বোস্তামীতে একটা পুকুর আছে। শত বছর ধরে ধারণা ছিল, ‘বোস্তামী কাছিম’ শুধু চট্টগ্রামে বায়েজিদ বোস্তামী (র.)-এর মাজারের পুকুরে পাওয়া যায়। সম্প্রতি বন্য প্রাণী-বিষয়ক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর অ্যাডভান্স রিসার্চ ইন ন্যাচারাল রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের (ক্যারিনাম) নেতৃত্বে একদল দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী দেশের চারটি এলাকায় এ কাছিমের সন্ধান পেয়েছেন।



অষ্টাদশ শতাব্দীর চট্টগ্রামের কিছু কবির কবিতার উল্লেখ করা হয় যেখানে শাহ সুলতান নামক একজন মনীষির নাম বর্ণিত আছে। বায়েজীদ বোস্তামীকে যেহেতু সুলতান উল আরেফীন হিসাবে আখ্যায়িত করা হয় যেই সূত্রে এই শাহ সুলতান আর সুলতান উল আরেফীন কে একই ব্যক্তি হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।ছোটবেলায় তাঁর বেশিরভাগ সময় নাকি কাটত ঘর থেকে মসজিদ আর মসজিদ থেকে ঘরে যাওয়া আসা করেই। তাঁর জ্ঞান বুদ্ধি তাতে কতটুকু বিকশিত হয়েছিল তা নিয়ে ঘোর সংশয় সৃষ্টি হয় কবি কালিদাস রায়ের ‘মাতৃভক্তি’ কবিতাটি পড়লেই। বায়েজিদ বোস্তামীর মাজারচট্টগ্রাম এর নাসিরাবাদের একটি পাহাড়ের উপরে অবস্থিত।বোস্তামীর কাছিম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি অত্যন্ত বিরল এবং চরমভাবে বিপন্নপ্রায় প্রজাতি।



একদিন বায়েজিদ বোস্তামীর মা গভীর রাতে হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে পানি খেতে চাইলেন। বালক বায়েজিদ পানি আনতে গিয়ে দেখলেন কলসিতে পানি নেই। অতগ্য তিনি রাত দুপুরে বহু দুরের ঝর্ণা হতে পানি নিয়ে এসে দেখলেন মা আবারো ঘুমিয়ে পড়েছেন। কিন্তু তিনি মায়ের ঘুম না ভাঙ্গিয়ে সারারাত পানির গ্লাস হাতে মায়ের শিয়রের কাছে দাঁড়িয়ে প্রতিক্ষায় রইলেন মায়ের ঘুম ভাঙ্গার? এক সময় রাত কেটে সকাল হল। মা জেগে দেখলেন বায়েজিদ তখনো দাঁড়িয়ে আছে গ্লাসে পানি নিয়ে। মায়ের প্রতি এই ভক্তি দেখে মা আবেগ তাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলেন । এ ঘটনার পর কান্না ভেজা চোখে মা সেদিন বায়েজিদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন। আর মায়ের দোয়ার বরকতে হযরত বায়েজিদ বড় হয়ে বিশ্ব বিখ্যাত আউলিয়াদের একজন হয়ে গেলেন।



বাংলাদেশে মাজার নিয়ে সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহর 'লাল সালু' উপন্যাস এবং আরো বেশ কয়েকটি মুখরোচক গল্প প্রচলিত আছে। বোস্তামির মাজারে কচ্চপ সমূহকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘গজালী-মজালী’ কচ্চপ বললে নাকি গুনাহ! হয়। অনেক অজ্ঞ মানুষ নিয়্যত করে, ছেলে-মেয়ে জন্মিলে ওদের হাত দিয়ে গজালী-মজালীকে খাবার খাওয়াবে। পেটে বাচ্চা হওয়ার জন্য গজালী-মজালীর পীটের কাদা নিয়ে পেটে মাখবে, কাদা গুলি বাচ্চার শরীরে-মুখে মাখবে, বিভিন্ন রোগ মুক্তির আশায় ওদের পীঠের ওপর জমে থাকা কাদা খাওয়ার মত জঘন্য কাজ ও করা হয়। দাড়ি-টুপী-পাগড়ী ওয়ালা দালাল সাথে সাথেই ঘুর ঘুর করছে। উপরে নিয়ে গিয়ে মাজারের মশারীর উপর কোন মনোস্কামনা পূরনের নিয়্যত করে মাল (টাকা) ঢালতে বলবে। তার পর বলবে দানবাক্সে ঢালতে। বাক্সেরগুলি পরে ভাগ বাটোয়ারা হবে। মশারীর উপর যা ঢালা হল তা ঐ চোর নগদ হাতিয়ে নেবে। তার পর নিয়ে যাবে মাজার আঙ্গিনায় বেড়ে ওঠা গাছ গাছালির নিকট। চিরকুটে বিভিন্ন আর্জি লিখে গাছের সাথে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। আরো অনেক তামাশা।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:৫৯

আবু বকর িসিদ্দক বলেছেন: এখানে ৯৫/% হয় ভন্ডামি....যত্তসব ফালতু কাজকারবার...

২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১২:৩৩

জীবন যুদ্ধে পরাজিত রাফি বলেছেন: বায়েজিদ বোস্তামি (রাঃ) আল্লাহ্'র অত্যন্ত প্রিয়পাত্র। Peace be upon him.

৩| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১২ ভোর ৫:০৯

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: জীবন যুদ্ধে পরাজিত রাফি বলেছেন: বায়েজিদ বোস্তামি (রাঃ) আল্লাহ্'র অত্যন্ত প্রিয়পাত্র। Peace be upon him.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.