নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের শহর ঢাকা

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৭

কোলকাতা ইংরেজ আমলের শহর। ইংরেজরাই এ শহর গড়ে তুলেছে। অন্যদিকে ঢাকা মোঘলদের তৈরি করা শহর।৭০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ঢাকা অঞ্চলটিতে শহর গড়ে ওঠে।কথিত আছে যে, সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভ্রমণকালে সন্নিহিত জঙ্গলে হিন্দু দেবী দুর্গার একটি বিগ্রহ খুঁজে পান। দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ রাজা বল্লাল সেন ঐ এলাকায় একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। যেহেতু দেবীর বিগ্রহ ঢাকা বা গুপ্ত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো, তাই রাজা, মন্দিরের নাম রাখেন ঢাকেশ্বরী মন্দির। মন্দিরের নাম থেকেই কালক্রমে স্থানটির নাম ঢাকা হিসেবে গড়ে ওঠে।মুঘল সাম্রাজ্যের বেশ কিছু সময় ঢাকা সম্রাট জাহাঙ্গীরের প্রতি সম্মান জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর নামে পরিচিত ছিলো।মুঘল-পূর্বযুগের পুরাতাত্তি্বক নির্দশন হিসেবে ঢাকা শহরে দুটি এবং মিরপুরে একটি মসজিদ রয়েছে।বুড়িগঙ্গা ও এর উৎস নদী ধলেশ্বরী অন্যান্য বড় বড় নদীর মাধ্যমে বাংলার প্রায় সবকনটি জেলার সঙ্গে ঢাকার সংযোগ স্থাপন করেছে।বিখ্যাত ঐতিহাসিক আরনল্ড টয়েনবি বলেছিলেন, শহরকে কেউ হত্যা করে না। শহর নিজেই আত্মহননে ধ্বংস হয়ে যায়। আমরা মনে রাখি না সিন্ধু সভ্যতার মহেনজোদাড়ো নগরী ছেড়ে মানুষ কেন চলে গিয়েছিল। রোমান নগরী ধ্বংসের একমাত্র কারণ শুধু ভূমিকম্প নয়, লাগামহীন ভোগ ও স্বেচ্ছাচারও বটে।



এই প্রাচীন শহরটির রাস্তাগুলো খুব সরু হওয়াতে রিকশা এখানকার প্রধান বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া যান্ত্রিক বাহনগুলোর মধ্যে বাস, টেম্পো, সি.এন.জি. চালিত অটোরিকশা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক অঞ্চল হওয়ায় মালপত্র আনা-নেয়ার জন্য গভীর রাতে পুরান ঢাকা'র সড়কগুলো ট্রাকের দখলে চলে যায়। ঢাকাইয়া লোকেরা চালাক-চতুর, কিন্তু ব্যবহারে খুবই অমায়িক হয়ে থাকেন। অতিথিদের আপ্যায়ন বা খাতিরদারীতে ঢাকা'র লোকেরা দেশে সর্বশ্রেষ্ঠ।প্রায় প্রতিটি মহল্লায় একটি অথবা দু'টি করে মসজিদ রয়েছে। এর কারণেই ঢাকাকে 'মসজিদের নগরী' বলা হয়ে থাকে। ঢাকার অন্যতম প্রাচীন বাজার হলো চক', মূর্শিদ আলি খান প্রায় ২০০ গজ আয়তনের এই চৌকোনা বাজার টি স্থাপন করেছিলেন! সেই সময়ে নগরীর এই অঞ্চলটাকে বলা হতো পুরানা নেকাউস! নেকাউস বা নাখাস শব্দের অর্থ হলো দাস! তাহলে ধরে নেয়া যায় মোঘল আমলে এই "চক", দাস বিক্রীর কেন্দ্র হিসাবেও খ্যাতি অর্জন করেছিল!৪০০ বছর কেটে যাওয়া ঢাকার ভবিষ্যত নিয়ে পরিকল্পকরা বুঝতেই পারছেন না, আগামী ৪০০ বছর নয় সামনের দশ বছরের ভবিষ্যদ্বাণী করাও অসম্ভব।ঢাকা শহরে যে অবকাঠামোর ওপর দাড়িয়ে আছে তাতে সহসাই পরিবর্তন ঘটানো প্রায় অসম্ভব। অতএব শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন সেক্টরগুলোকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থাপন না করলে কোনোভাবেই ৪০/৫০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঠেকানো যাবে না।



মিরপুর ঢাকা শহরের একটি থানা। এর উত্তরে পল্লবী থানা, দক্ষিণে মোহাম্মদপুর থানা, পূর্বে কাফরুল ও পল্লবী থানার একাংশ।প্রায় ১,২০,৩২৯ টি বসতবাড়ি নিয়ে সমগ্র মিরপুরের আয়তন ৫৮.৬৬ বর্গ কিলোমিটার। মিরপুর এ কাজীপাড়া,শেওড়াপাড়া,সেনপাড়া ও সেকশন ১,২,৬,৭,১০,১১,পল্লবী,১২,১৩ রয়েছে।ঢাকার প্রচীন উঁচুভূমি বলতে বুঝায় মীরপুর চিড়িয়াখানার উঁচু ভূমি ও সেনপাড়া পর্বতা থেকে পূর্ব-দক্ষিণে কাঁঠালবাগান পর্যন্ত উঁচু ভূমি, লালমাটিয়ার উঁচু ভূমি এবং লালবাগ থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত উঁচু থেকে ক্রমশ ঢালু নিম্নভূমি অঞ্চল।ঢাকা আরিচা রুটে বলিয়ারপুর থেকে গাবতলী পর্যন্ত প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তীব্র যানজট পরিলক্ষিত হচ্ছে। তীব্র গ্যাস সংকটের ঢ‍াকা নগরীতে প্রতিদিন অপচয় হচ্ছে গ্যাস ও তেল।গিজগিজ করা মানুষের ভিড়ে প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যে আসলেই একটু একান্ত, নিভৃতে কথা বলাটা কঠিন।স্যাটেলাইট শহর বা উপশহর বলতে একটি বড় মেট্রোপলিটান শহরের কাছাকাছি এমন একটি শহর বোঝায় যা সেই শহরের অধিবাসীদের জীবন যাপনের জন্যে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজ যেমনঃ চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, বাজার, খেলাধুলা ইত্যাদির জন্যে সেই মেট্রোপলিটান শহরের উপর নির্ভর করবে না।



চামড়া শিল্প হলো বাংলাদেশে তৃতীয় সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শিল্প। বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান চামড়া প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলটি পুরান ঢাকা'র হাজারীবাগ এলাকায় অবস্থিত।ইসলামপুর হলো থান কাপড়ের বৃহত্তম বিপণন অঞ্চল।ঢাকেশ্বরী ঢাকার মন্দিরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো।ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিষ্ঠা নিয়েও নানা কিংবদন্তি আছে। হিন্দুধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, ঢাকেশ্বরী ঢাকার অধিষ্ঠাত্রী দেবী। তাঁর নামানুসারেই এ শহরের নাম ঢাকা হয়েছে। ঐতিহাসিক ব্রাডলি বার্ট গত শতকের প্রথমাংশে লেখা তাঁর প্রাচ্যের রহস্য নগরী বইতে উল্লেখ করেছেন, ‘মন্দিরটি ২০০ বছরের পুরোনো এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক হিন্দু এজেন্ট বর্তমান মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন।’ তবে মুনতাসীর মামুন তাঁর ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী বইতে বলেছেন, এসব মত বিশ্বাসযোগ্য নয়।



স্যার চার্লস ড'য়লী ১৮০৮ সালে ঢাকার কালেক্টর হিসাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন, বাংলাদেশে তিনি ছিলনে ১৮১৮ সাল পর্যন্ত। রাজনৈতিক, সামরিক ও প্রশাসনিক সকল কাজের কেন্দ্র হিসাবে কোলকাতার উথ্থান আর ঢাকার পতন একই সুত্রে গাঁথা। রোমান্টিক শিল্পী ড'য়েলী আকাঁয় অবশ্য দেখা যায় তৎকালীন ঢাকা শহরে সুরম্য অট্টালিকার চাইতে মাটি, খড়, বাঁশ কিংবা ঘাস জাতীয় দ্রব্যে বাননো কুড়েঘরের আধ্যিক ছিল বেশি। কথিত আছে, মাঝে মাঝেই আগুন লেগে মহল্লার পর মহল্লা এই সব খড়ের ঘর গুলো পুড়ে যেতো। "ঘরকাচি" মহলের লোকেরা ইচ্ছা করে মাঝে মাঝে আগুন লাগিয়ে দিত ঘরে। "ঘরকাচি মহল" হলো খড়, বাঁশ, নলখাগড়া এই সব ঘরবাড়ি তৈরির জিনিসপত্রের দোকান, নিজেদের মালামাল বিক্রীর জন্য এরা মাঝে মাঝে এই কান্ড করতো!



জীবনের নবচেতনা ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির মানুষ তৈরিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা (১৯২১) ঐ অনুঘটকের ভূমিকার জন্যই প্রতিষ্ঠানটি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ছাব্বিশ বছর পরেই ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে আরো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভূমিকা পালনের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে এবং ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পূর্ব বাংলায় বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্টার যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, আমাদের এই নগরী হয়ে ওঠে তার অগ্নিগর্ভ মূল কেন্দ্র। এবং শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ঢাকা এখন নব্য স্বাধীন বাংলাদেশের গৌরবধন্য রাজধানী শহর।বিশ্বের ৯ম বৃহত্তম শহর ঢাকা এবং বিশ্বের ২৮তম জনবহুল শহর, আমাদের ঢাকা । প্রতিদিন ঢাকার রাস্তায় প্রায় ৪,০০,০০০ রিকসা চলাচল করার কারনে এটাকে বিশ্বে রিকসার রাজধানী ও বলা হয়।



ফরাসী পর্যটক তাভের্নিয়া ১৬৬৬ খ্রী: ঢাকায় এসেছিলেন, তার যাত্রা বিবরনী তে তিনি লিখেছিলেন "ঢাকা থেকে দুই ক্রোশ বা চার মাইল দূরত্বে উত্তর পূর্ব দিকে থেকে প্রবাহিত লক্ষ্যা নদীর উভয় পাশে দুটি কামান সজ্জিত কেল্লা আছে। এরপরে আধ ক্রোশ ভাটিতে মীর জুমলা কতৃক নির্মিত একয়ি সেতু আছে, এরও আধ ক্রোশ ভাটিতে কদমতলী নদীর উপরে আরেকটি সুন্দর সেতু আছে, যার নাম পাগলার পুল!"ড'য়েলীর আকাঁয় ঢাকার দুটি সেতু আমারা দেখি, একটা পাগলার পুল, আরেকটা টংগী সেতু। যদিও সেই সময়ে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই ভাল ছিলনা, ছিলনা তেমন কোর রাস্তা ঘাট। সেই মোঘল আমলে মোহাম্মদ আজম আরমানিটোলায় হাতি ঘোড়া চলাচলের জন্য ইট বিছানো রাস্তা অল্প একটু তৈরি করেছিলেন। চলাচলের জন্য লোকজন ব্যবাহর করতো পালকি, নয়তো নৌকা আর বড়লোকেরা হাতি বা ঘোড়া! ১৮৬০ সালে বাকল্যান্ড বাঁধ তৈরির পরে কিছু রাস্তাঘাট বানানো হয়েছিল! শহরের মূল রাস্তা ছিল সাহেব বাজার থেকে নবাবপুর পর্যন্ত, এই রাস্তা ছিল ঝামা বিছানো!



মেট্রোপলিটন নগরী বলে এখন আমরা যে ঢাকাকে চিনি সে ঢাকা অনেক আগে থেকেই হাজারো সঙ্কটের নির্দয় শিকারে পরিণত হয়েছে।বস্তুত ঢাকা শ্বাসকষ্টে ভুগছে এখন। এমনকি কাকের মতো পাখিও পালিয়েছে এ নগরী থেকে। নিসর্গ নয়, ঢাকার দিগন্ত বদলে দিয়েছে কিছু ইট-কাঠের স্তূপ। একুশ শতকে এসে শত শত বছরের প্রাচীন শহর একযোগে সব ধরনের দূষণের শিকার হয়েছে; বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ, পানি দূষণ, মাটি দূষণ—সব।এ শহরে সন্ত্রাস, খুনখারাবি, জবরদখল এখন নৈমিত্তিক বিষয়। সামাজিক পরিবেশ বিপন্ন ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ ও দুর্বৃত্তদের দৌরাত্ম্যে। বাজে শহরের তালিকা উল্টো দিক থেকে দেখলে বাংলাদেশের রাজধানী দ্বিতীয়। অর্থাত্ ১৩৯তম স্থান দখল করেছে ঢাকা। অনুপযোগী শহরের আগের অবস্থানই ধরে রেখেছে ঢাকা। জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেকে হারাতে পেয়েছে শুধু। বসবাসের উপযোগী শহর হিসেবে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার নগরীকে আবার প্রথম স্থানে রেখেছেন আলোচ্য সংস্থার গবেষকরা।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩৬

আমি পিচ্চি পোলা বলেছেন: প্রাচীন কালেন দাস দাসীর প্রথার সাথে জড়িয়ে দ্বীন ইসলাম কে নিয়ে যারা আজেবাজে কথা তাদের একটা দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হয়েছে এইখানে। সরাসরী এই লিংকে চলে যান। না পড়লে নিশ্চিত মিস করবেন ভাই

১৮ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই পড়বো।

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩৩

হুমায়রা হারুন বলেছেন: অসাধারণ পোস্ট।

১৮ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২২

আহসান হাবিব হীমূ বলেছেন: ++

১৮ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।

৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৬

শূন্য পথিক বলেছেন: পোষ্টে +

১৮ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.