নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

দাবা

৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:২৪

শ্বশুরের সাথে দাবা খেলছি। বিরক্তিকর একটি কাজ- কিন্তু এমন ভাব করছি- যেন আমার সব চিন্তা ভাবনা এখন খেলা নিয়ে। শ্বশুর মশাই স্বরাষ্ট মন্ত্রনালয়ে কাজ করতেন। অবসর নিয়েছেন- পাঁচ বছর হলো। আমার বৌ এর মুখে দিকে তাকিয়ে বার বার দাবা খেলায় হেরে যেতে হয়।তারপরও একদম শেষে গিয়ে আমি ইচ্ছা করে ভুল চাল দিয়ে হেরে যাই।তার পর শ্বশুর মশাই আমাকে দাবা বিষয়ক জ্ঞান দেন। শোনো, বাছা দাবা বোর্ডে বর্গাকৃতি ৬৪টি সাদা-কালো ঘর থাকে।দু'জন খেলোয়াড়ের সর্বমোট ৩২টি গুটি থাকে।আমি বললাম- দাবা খেলার জন্ম ভারতবর্ষে বলে সর্বাধিক প্রচলিত মতবাদ । শ্বশুর মশাই আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, আমার কথার মাঝখানে কথা বলবে না- তোমাকে কত দিন বলেছি?আমি ছোট করে বললাম- স্যরি ।



আমার শ্বশুর আবার শুরু করলেন- কথিত আছে যে রাবনের স্ত্রী চিত্রাঙ্গদা যুদ্ধে নিবৃত করার জন্য রাবনের সাথে দাবা খেলতেন ।বর্তমানে দাবা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম।গণিতে অভিজ্ঞরাই দাবা খেলায় উন্নতি করতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা দাবী করে থাকেন। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, এ খেলায় নারীদের তুলনায় পুরুষদের অংশগ্রহণের হার খুব বেশী। শতকরা ৯৮ জন পুরুষ দাবা খেলায় অংশ নেন; যেখানে নারীদের অংশগ্রহণ মাত্র ২%।আমি এক আকাশ মিথ্যা আগ্রহ নিয়ে দাবা জ্ঞান সম্পন্ন হয়ে রাত দুইটায় আমার ঘরে এলাম। বৌ বলল- “Pride and Prejudice” উপন্যাসটা পড়ে মাত্র শেষ করলাম। Jane Austen এর কালজয়ী প্রেমের গল্প । তুমি ব্যালকনিতে যাও আমি তোমার জন্য চা নিয়ে আসছি, তারপর গল্পটি তোমাকে বলব।



যদি এই গল্পটি অনেক আগেই আমি পড়েছি। তবুও গল্পটি শোনার জন্য- আমি আবার এক আকাশ মিথ্যা আগ্রহ নিয়ে ব্যালকনিতে বসলাম। বৌ আমার হাতে চায়ের মগ ধরিয়ে দিয়ে- গল্প শুরু করলো- এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হল তৎকালীন ইংরেজ ধনী সমাজের এক তরুণ ডার্সি।বংশমর্যাদায় গর্বিত এই ডার্সি, ঘটনাচক্রে এবং নানা নাটকীটার মাঝে সাধারণ-মধ্যবিত্ত এক পরিবারের মেয়ে এলিজাবেথের সাথে পরিচয় হয়। এলিজাবেথ ছিল মিঃ অ্যান্ড মিসেস বেনেটের পাঁচটি মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয়।আমি বললাম, এলিজাবেথ আর ডার্সি'র মধ্যে ভালোবাসা হয়। বৌ ধমক দিয়ে বলল-গল্পের মাঝখানে কথা বলাটা তোমার খুব বাজে অভ্যাস। আমি বললাম স্যরি। রাত সাড়ে তিনটায় ডার্সি- এলিজাবেথের মিলনের মধ্যে দিয়ে আমার বৌ-এর গল্প বলা শেষ হয়।



বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে- বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। আমার ইচ্ছা করছে বিদ্যুৎ চমকানোর দৃশ্যটা ক্যামেরা বন্দী করতে। কিন্তু তা সম্ভব না। বৌ বুকের মাথা রেখে আদুরে গলায় বলছে- এবারে পহেলা বৈশাখে তাকে যেন চুন্ডী শাড়ি কিনে দেই। হঠাৎ ব্রজপাতের শব্দে বৌ ভয় পেয়ে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। তারপর যা হয় তাই-ই হলো, এক আকাশ আদর ভালোবাসায় দুইজন ডুবে রইলাম। বাইরে বৃষ্টি থেমে গিয়ে আকাশ ফরসা হতে শুরু করেছে। বৌ আমার বুকে হাত রেখে গভীর ঘুমে মগ্ন। বৌ এর মুখের দিকে তাকিয়ে মায়া লাগল। কপালে একটা চুমু খেলাম।আস্তে করে ব্যালকনিতে এসে একটা সিগারেট ধরালাম। মেঘ মুক্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে বললাম- "জানি আমি তুমি রবে-আমার হবে ক্ষয়/পদ্মপাতা একটি শুধু জলের বিন্দু নয়।/এই আছে, নেই-এই আছে নেই-জীবন চঞ্চল;/তা তাকাতেই ফুরিয়ে যায় রে পদ্মপাতার জল/ বুঝেছি আমি তোমায় ভালোবেসে।"



সকাল ১১ টায় আমার বৌ ফোন করে আমাকে বলল- সে মা হতে চলেছে।মানে আমি বাবা। বিশাল এক আনন্দের খবর। বিকেলে বউকে নিয়ে মার্কেটে গিয়ে চুন্ডী শাড়ি এবং শ্বশুরকে পাঞ্জাবী কিনে দিলাম।রাতে শ্বশুর মশাই এবং বউকে নিয়ে পুরান ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে খেলাম। বাসায় ফিরে শ্বশুরের সাথে অনেক গল্প করলাম হাসি মুখে( নকল হাসি না)।শ্বশুর মশাই জানেন, আমি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লিখছি, তাই রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে একটা তথ্য দিলেন আমাকে-" একজন বিখ্যাত সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথের থেকে একটি প্লট পেয়েছিলেন। তিনি হলেন বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় ওরফে বনফুল। নির্মোক-এর অমর নামক চরিত্রটি বনফুল সৃষ্টি করেছিলেন পত্রযোগে প্রাপ্ত রবীন্দ্রনাথের এই প্লটটি অনুসরণে।"



রবীন্দ্রনাথ ছোটগল্প সম্পর্কে বলেছিলেন ‘শেষ হয়েও হইলো না শেষ’। দাবা গল্পটিও শেষ হয়নি- আর একটু বাকি আছে। ডাক্তারের হিসাব মতে, আর সাত দিন পর আমার বউএর ফুটফুটে দু'টি মেয়ে জমজ বাচ্চা হবে। বাচ্চাদের নামও ঠিক করা হলো- টাপুর-টুপুর। এই ক'টি মাস আমি বৌ এর চূড়ান্ত রকম সেবা যত্ন করেছি। বাচ্চা এবং বাচ্চার মা সুস্থ আছে। কোথাও কোনো সময়সা নাই। বউকে হাসপাতালে ভরতি করার পর শ্বশুর মশাই আমাকে নিয়ে গেলেন গাজী পুরে একটা পুরনো জমিদার বাড়ি দেখাতে। ফেরার পথে শ্বশুর মশাই বললেন- গাড়ি আমি ড্রাইভ করবো। ঢাকা ময়মনসিংহ রোড়ে বিকেল পাঁচটায় শ্বশুর মশাই আমাদের প্রাইভেট কার কে ধাক্কা খাওয়ালো একটা কার্গো বাসের সাথে। শ্বশুর মশাই সাথে সাথে মরে গেলেন। আর আমি মারা গেলাম হাসপাতালে।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:৩৪

গ্য।গটেম্প বলেছেন: শ্বশুর মশাই সাথে সাথে মরে গেলেন। আর আমি মারা গেলাম হাসপাতালে। #:-S ভয় পাইছি,ভূত!!

২| ৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪

ধুমধাম বলেছেন: eita ki hoilo?

৩| ৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:৪৯

শিব্বির আহমেদ বলেছেন: ভুই পাইসি , ভুতে লেখছে এই লেখা ।

৪| ৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:৫৫

ইউক্লিড রনি বলেছেন: মইরা লাভ নাই।
ইমন জুবায়ের এক পিসই। B-)) B-))

৫| ৩০ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:০৪

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: শ্বশুর মশাই সাথে সাথে মরে গেলেন। আর আমি মারা গেলাম হাসপাতালে। ,,,,,,,,,,,,,ওরে বাবারে এই লেখা কে লিখলো !!! ভুত লিখলো নাকি,,,,,,,,,,,,,,, ভয় পেয়েছি ,,,,,,,,,,

৬| ৩০ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮

জ্যাক রুশো বলেছেন: এইডা কি হইল :| :|

৭| ৩০ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:২০

লাবনী আক্তার বলেছেন: শ্বশুর মশাই সাথে সাথে মরে গেলেন। আর আমি মারা গেলাম হাসপাতালে।


ভাই এই লাইনের মানেটাতো বুজলাম না! B:-) B:-)

৮| ৩০ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৭

আকরাম বলেছেন: পরিচিত কার স্টাইলের সাথে যেনো লেখা মিলে! :(

৯| ৩০ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৪:২৩

একাকী বাংলাদেশি বলেছেন: আজকে কি আপনার মন কোন কারনে সাংঘাতিক ভাবে ত্যাক্ত বিরক্ত বা মেজাজ খুবই চড়া হয়ে আছে নাকি? নাহলে এরকম একটা গল্পের শেষে এরকম ফিনিশিং খুবই অবাক করার মত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.