নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
রবীন্দ্রনাথ লিখেছেনঃ আমাকে যাহারা চেনে সকলেই তো আমার নাম ধরিয়া ডাকে, কিন্তু সকলেই কিছু একই ব্যক্তিকে ডাকে না, এবং সকলকেই কিছু একই ব্যক্তি সাড়া দেয় না। এক-একজনে আমার এক-একটা অংশকে ডাকে মাত্র, আমাকে তাহারা ততটুকু বলিয়াই জানে। এইজন্য আমরা যাহারা ভালোবাসি তাহার একটা নূতন নামকরণ করিতে চাই; কারণ সকলের সে ও আমার-সে বিস্তর প্রভেদ।
নানাভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যক্তিগত জীবন ছিল একজন অসুখী মানুষের প্রতিচিত্র। তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ১৮৮৩ সালে, স্ত্রীকে হারান ১৯০২ সালে এবং এরপর তিনি আর বিয়ে থা’ করেননি। তিনি অনেকের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য কামনা করেছেন। কিন্তু সবসময় এমনকি সম্ভবত বিবাহিত জীবনেও তা পাননি। তিনি একবার তার স্ত্রী মৃণালিনী দেবীকে লিখেনঃ ‘যদি তুমি ও আমি আমাদের সমস্ত কাজ ও চিন্তার সঙ্গী হতে পারতাম, তাহলে তা কতই না তৃপ্তিকর হতো। কিন্তু অনেক সময় আমরা যা চাই তার সবকিছু পাই না।’
রবীন্দ্রনাথের একনিষ্ঠ অনুরাগী আনা আখমাতোভা যিনি ১৯৬০ সালের মধ্যভাগে রাশিয়ান ভাষায় তার কিছু কবিতা অনুবাদ করেন, তিনিও রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে বলেছেন, ‘কবিতার যে শক্তিশালী প্রবাহ হিন্দুবাদ ও গঙ্গা থেকে উৎসারিত ও অনুপ্রাণিত তারই নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।’১৯৯৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী পালন উপলক্ষে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্রনাথের চিঠির সংকলন প্রকাশিত হয়।রবীন্দ্রনাথের চেহারা সুরতের ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে ফ্রান্সেস কর্ণফর্ড উইলিয়াম রোথেনস্টেনকে বলেন, ‘এখন আমি একজন শক্তিশালী ও ভদ্রশিষ্ট যিশু খ্রিষ্টের কথা চিন্তা করতে পারি যা অতীতে আর কখনো দেখেনি।’ ব্রিটিশ ওয়েব রবীন্দ্রনাথকে পছন্দ করতেন না। তার ভাষায়- ‘তিনি দেখতে সুন্দর ও তার কথাবার্তায় স্বরভেদ ও পুনরাবৃত্ত সুর যথার্থ যেন বা তা একজন নাটকীয় সন্ন্যাসির পরিমিতিবোধ।’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিভিন্ন ধর্মের সংশ্লেষণে ভিন্ন ধারা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন অথবা তার এ ব্যাপারে আগ্রহ ছিল প্রশ্নাতীত। যেমন করে মোঘল সম্রাট আকবর তার দ্বীন-ই-ইলাহী প্রতিষ্ঠায় প্রাণান্তকর চেষ্টা করেছিলেন। তবে রবীন্দ্রনাথের সেই দৃষ্টিভঙ্গি নাছোড়বান্দার ন্যায় প্রবল ছিল না কিংবা তিনি কোন উপদলেরও সমর্থক ছিলেন না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায় দুই শতাধিক গ্রন্থ লিখে গেছেন। এসব গ্রন্থ ভারতীয় বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটসহ সারাবিশ্বের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রভাবের জ্বলন্ত প্রমাণবহ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মহাত্মা গান্ধী দু’জনই বিংশ শতাব্দীতে শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় চিন্তাবিদ ছিলেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাত্মা গান্ধীর কথাবার্তায় বিমুগ্ধ হয়েছিলেন। এতদসত্ত্বেও অনেক বিষয়েই তাদের মত পার্থক্য ছিল। যেমন-জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেম, সংস্কৃতি বিনিময়ের গুরুত্ব। বিজ্ঞান ও যৌক্তিকতার ভূমিকা এবং অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের গতি-প্রকৃতি ইত্যাদি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুর মাত্র ৬ বছর পর ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের সময় এই সাম্প্রদায়িকতার কারণে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।লিওনার্দ ইম্পহার্স্ট নামক তার এক বন্ধু ইংরেজ জনহিতৈষী ও সমাজসেবী হিসেবে ব্যাপক নাম করেছিলেন। তিনি রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ভারতেও পল্লী উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখেন। ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বর মাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে একপত্রে লিখেন-‘লাখ লাখ মানুষের ভাগ্যান্বেষণে পরাজিতন্মন্য ব্যক্তিদের ন্যায় গভীর হতাশা ব্যক্ত করার কোন দরকার নেই। এসব মানুষের সহজাত সংস্কৃতি ও শান্তিপূর্ণ ঐতিহ্য যুগপৎভাবে তাদের ক্ষুধা, রোগ-ব্যাধি, দেশী-বিদেশী শোষণ এবং বিক্ষুব্ধ ও অসন্তোষমূলক সাম্প্রদায়িকতার অধীন করে দিচ্ছে।’
২৫ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:১০
রাজীব নুর বলেছেন: বন্ধু !!! 'বন্ধু' ডাকটি খুব ভালো লাগল। ধন্যবাদ বন্ধু।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০৫
বিষাদ আব্দুল্লাহ বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন বন্ধু