নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
তিন বছর প্রেম করে বিয়ে করলাম। ইচ্ছা করে প্রেম করিনি। কিভাবে যে কি হয়ে গেল ! প্রেমের স্বাদ মিটে গেছে এবং বিয়ের স্বাদও ।আমি মনে করি- কোনো ছেলেরই পয়ত্রিশ বছরের আগে বিয়ে করা উচিত না। বিয়ে করা মানে বন্ধী হয়ে যাওয়া। আমি কোনো দিনও লেকের ধারে অথবা পার্কে প্রেম করতে পারিনি। এমনকি বড় বড় শপিংমলের ফাস্ট ফুডের দোকানেও পারিনি। কে কখন দেখে ফেলে। যেদিন দেখা করার কথা থাকত- রিকশায় করে অনেক দূরে চলে যেতাম- যেখানে কোনো পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হবে না। আমার প্রেমিকা খুবই লক্ষ্মী টাইপ মেয়ে, আমার সাথে দেখা করতে আসার সময় অনেক রকম খাবার রান্না করে নিয়ে আসত। মেয়েটা অনেক রকম রান্না জানে। মাশাল্লাহ প্রতিটা খাবার খুব স্বাদ হয়। ভালো রান্না করতে জানে বলেই- মেয়েটিকে বিয়ে করি। যার বৌ এর রান্নার হাত ভালো না- তার কপাল পোড়া।সংসার জীবনে রান্নাটা অনেক বড় একটা ব্যাপার।
প্রতিদিন রাতে বৌ আমাকে গান গেয়ে ঘুম পাড়ায়। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। সারা দিনের মধ্যে এই সময়টাই আমার জন্য এক আকাশ আনন্দের । মনে মনে অপেক্ষায় থাকি- কখন রাত হবে। বিশেষ করে 'এই মন তোমাকে দিলাম'.…..সাবিনার এই গানটি খুব সুন্দর গায়। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর বৌ জোর করে তিনটা পরোটা খাওয়ায়।কিন্তু বিয়ের আগে একটা পরোটা খেতাম। ইদানিং হু হু করে আমার ওজন বাড়ছে। ও আচ্ছা, আমার বৌ এর নামই তো বলা হয়নি- নাম হচ্ছে- অবন্তি । এই নাম রেখেছে অবন্তির দাদী। অবন্তি কখনও আমার কাছে কিছু চায় না। যখন প্রেম করতাম তখনও কিছু চাইতো না। আমি নিজে থেকেই প্রায়ই অবন্তির জন্য অনেক কিছু কিনতাম। এক আকাশ আগ্রহ নিয়ে অবন্তি আমার দেওয়া শাড়ি পড়তো। হিন্দু মেয়েদের মতন ইয়া বড় একটা টিপ পড়তো।অবন্তির সাথে আমি দেখা করতে গেলেই সাথে করে ক্যামেরা নিয়ে যেতাম। এ পর্যন্ত আমি অবন্তির নব্বই হাজার ছবি তুলেছি।
অবন্তি টিকটিকি আর তেলাপোকা খুব ভয় পায়। একদিন আমি ঘুমন্ত অবন্তির পেটের উপর অনেক গুলো তেলাপোকা ছেড়ে দিয়েছিলাম। অবন্তি অনেক ভয় পেয়েছিল। বেচারির ভয় দেখে আমার নিজেরই অনেক মায়া লাগল। পরের দিন অবন্তিকে নিয়ে পুরান ঢাকায় গিয়ে কাঠাল পাতার বিরিয়ানী খাওয়ালাম। ফেরার পথে দু'জন রিকশায় বসে বাচ্চাদের মতন হাওয়াই মিঠাই খেলাম। অবন্তি আগে মাসে দুইবার বাপের বাড়ি যেত। একদিন রাতে আমি খুব ভয় পাই- এরপর অবন্তি বাপের বাড়ি গেলেও সন্ধ্যার পর ফিরে আসে। কি দেখে ভয় পেয়েছিলাম- সেটা বলি, সারাদিন পর বাসায় ফিরে অবন্তিকে ঘরে না দেখে মনটাই খারাপ হয়ে গেল। যদিও অবন্তি আমাকে বলেই গিয়েছে। আমি রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঠিক রাত দুইটায় হঠাত আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল।ঘুম ভাঙতেই দেখি আমার পাশে একটা লাশ। আমি দৌড়ে বাথরুমে গেলাম। সেখানে গিয়ে আয়নাতে দেখি লাশটা চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি জ্ঞান হারালাম।
প্রতিদিন আমরা একটি করে বিখ্যাত মুভি দেখি। 'নটিং হিল' দেখেছি, 'সিটি অব অ্যাঞ্জেল' দেখেছি, 'ইট হ্যাপেন্ড ওয়ান নাইট' দেখেছি, 'দ্যা কিড' দেখেছি আর গতকাল দেখেছি- The Hunger Games। মুভির মাঝখানে আমরা ব্রেক নিয়ে চা নাস্তা খাই। যে রাত গুলো আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে সেরাতে আমরা চুপি চুপি বৃষ্টিতে ভিজি। বাসা থেকে বের হলে- বাইরে কাজ শেষ করেই আমি বাসায় চলে আসি। কোথাও আড্ডা দেই না। বাসায় ফিরে অবন্তিকে ঘরের কাজে সাহায্য করি।অবন্তি আমার ফোটোগ্রাফী কাজে সাহায্য করে। বিয়ের আগে অবন্তি যতটা আন্তরিক ছিল বিয়ের পর আন্তরিকতা হাজার গুন বেড়েছে। অবন্তিকে যদি রাত তিনটায় ঘুম থেকে জাগিয়ে বলি- চা খেতে ইচ্ছা করছে, একটুও বিরক্ত হয় না। হাসি মুখে চা করে নিয়ে আসে। শুধু আমার জন্য না, নিজের জন্যও এক কাপ আনে। অবন্তির ধারনা একা চা খেয়ে আরাম পাওয়া যায় না।
অবন্তির সবচেয়ে ভালো দিক হলো- অন্য স্ত্রীলোকের মতন স্বামীকে সিগারেট খেতে মানা করে না। বরং শোয়ার ঘরে বসে সিগারেট খেলেও চিল্লাচিল্লি করে না। দেখতে দেখতে আমাদের বিয়ের তিন বছর পার হয়ে গেল। এই তিন বছরে আমাদের কখনও ঝগড়া হয়নি। দিনদিন অদ্ভুত ভাবে ভালোবাসা বেড়েই চলেছে। তবে গত বছর অবন্তি আর আমার জন্য জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্টের ছিল। সেই সময় আমরা পার করে এসেছি। অবন্তি পেটে দু'টা জমজ বাচ্চা ছিল। বাচ্চার নাম রেখে ছিলাম টাপুর টুপুর। একদিন অবন্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মালিবাগ মোড়ে গাড়ির ধাক্কায় অবন্তি আর আমি রিকশা থেকে পড়ে যাই। তখন অবন্তির আট মাস চলছিল। প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয়, বাচ্চা দু'টা পেটের মধ্যেই মরে যায়। অবন্তি পেটে আর মাথায় প্রচন্ড আঘাত পায়। আমি হাতে ব্যাথা পেয়েছিলাম। তিন মাস পর্যন্ত অবন্তি পাগলের মতন হয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনার পর ডাক্তার আমাকে জানিয়েছে- অবন্তি আর কোনোদিন মা হতে পারবে না।
অবন্তির সাথে কিভাবে আমার পরিচয় হয়েছিল, সেই গল্পটা বলে আমি আমার "এই গল্পের নাম নেই" লেখাটা শেষ করবো। তখন আমি খুব বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি তুলতাম। মিরপুর একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছি। সেখানেই অবন্তিকে প্রথম দেখি। অবন্তি গ্রামের মেয়েদের মতন করে হলুদ শাড়ি পড়েছিল। এবং সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হচ্ছে- সেই অনুষ্ঠানে অবন্তির একটা ছবিও তুলিনি। কেন ছবি তুলিনি, আমি নিজেও জানি না। এক মাস পরে অবন্তির সাথে আমার দেখা হয় লাল মাটিয়া কলেজের সামনে। অবন্তি আমাকে দেখেই বলল- এই যে ফোটোগ্রাফার সাহেব আমি দেখতে কি বাজে ? তিনটা অনুষ্ঠানে আমার একটাও ছবি নেই কেন ? আমি এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে ছোট্র করে বলেছিলাম, দুঃখিত। আমি আপনার নব্বই হাজার ছবি তুলে দিব। অবন্তি অবাক হয়ে বলেছিল- নব্বই হাজার ছবি !! কতদিন সময় লাগবে ? আমি বলেছিলাম- তিন বছর। অবন্তি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিল- আচ্ছা, আপনাকে সময় দেওয়া হলো।
২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৫৫
sumon2015 বলেছেন: কিছু বলার ভাষা খুজে পাছ্ছিনা কারন যেটা ঘটে গেছে আপনদের জীবনের সাথে তা পুরন হবার নয় তবে পুরাটা পড়ে ভালো লাগলো... ভালো থাকবেন আপনারা দু জন অনেক ভালো........
৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:২৩
ননদালীনাজ বলেছেন: ভাই - অবন্তীকে সময় দিন, ভালবাসুন ঠিক আগের মতই, সব ঠিক হয়ে যাবে।
শুভকামনা রইল।
৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:২৫
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: খুব ভালো লাগলো আপনার লেখাটা পড়ে, অবন্তির জন্য শুভকামনা আর ভালোবাসা......
৫| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:৩৪
সামসুন নাহার বলেছেন: এই প্রেম মৃতু অবধি যেন একই রকম থাকে। বাড়ে বৈকি কমেনা যেন। ভালো থাকবেন আপনারা, দুজনেই। আমি একটা গল্প পড়েছিলাম, বলবো, আপনার গল্প পড়ে খুব বলতে ইচ্ছা করছে। বলি-একটা ছেলে একটা মেয়েকে ভালোবাসে। তো তাদের প্রেমের সম্পর্ক বেশ কয়েকবছর চলে। বিয়ের প্লান করছে ছেলেটা। হঠাৎ মেয়েটা আগুনে পুড়ে যায় এবং তার শরীরের নীচের ভাগটাই বেশি ক্ষতি হয়। অনেকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। ডাক্তার মেয়েটার অভিভাবকদের ডেকে বলল যে, এমেয়েকে তো আর বিয়ে দিতে পারবেন না। সেখানে ছেলেটিও উপস্থিত ছিল। মেয়েটি এখবর জানতে পায়। যেদিন বাড়ি নিয়ে যাবে সেদিন ছেলেটি মেয়েটির বেডের কাছে যায় তখন মেয়েটি ছেলেটির দিকে তাকিয়ে থাকে। ছেলেটি তার চোখের ভাষা বুঝতে পারে। ছেলেটি মেয়ের পাশে বসে বলে- "এই হাত, এই চুল, এই চোখ, এই মুখ আর এই ঠোট এবং ঠোটের হাসি" এটুকু হলেই আমার চলবে, আমার জীবনে আর কিছু চাইনা। আমি আজীবন এভাবেই তোমাকে ভালবাসবো।
৬| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:৩৮
নানাভাই বলেছেন: এইটা কি গপ্পো লিখলেন, নাকি হাচা হাচা হইছিল?
৭| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৬:০৯
ভিটামিন সি বলেছেন: আমারও একটা লুতু-পুতু টাইপ বউ আছে।
৮| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৬:৩৩
প্রকৌশলী মোঃ জুলফিকার আলী জুয়েল বলেছেন: ভিটামিন সি বলেছেন: আমারও একটা লুতু-পুতু টাইপ বউ আছে।
বউয়ের সাথে তিন বছরে একবারও ঝগড়া হয়নি । বউয়ের সাথে মাঝে মাঝে ঝগড়া করবেন, ভালোবাসা বাড়বে কমবে না । সন্তান সম্ভবা মায়ের জন্য রিক্সা বড় ভয়ঙ্কর যান। শুভকামনা রইল।
৯| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৬:৫৩
বটের ফল বলেছেন: এটাও যদি আপনার আগের লেখাটার মতই শুধুই একটা গল্প হয় তবে আপনাকে -
একগুচ্ছ প্লাস।
++++++++++
একই সাথে শুভকামনা। ভালো থাকবেন অনেক বেশী।
১০| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:০৬
অচিন তারা বলেছেন: লক্ষী টাইপ মেয়ে গুলো সব সময় এতো কষ্ট পায় কেনো???
১১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:০৮
রুবাইয়াত নেওয়াজ বলেছেন: খুব ভালো লাগলো।
১২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০৫
সাদা রং- বলেছেন: আপনাকে কি বলে সান্তনা দিবো সেই ভাষা নেই, আপনার সুখে থাকুন এ কামনা করি। টাপুর টুপুরের জন্য খুবই কষ্ট হচ্ছে, আমিও ভুক্তভুগি এরকম, আমার বৌ এখনো কান্নাকাটি করে।
১৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯
সোহেল সি এস ই বলেছেন: আমি মনে করি- কোনো ছেলেরই পয়ত্রিশ বছরের আগে বিয়ে করা উচিত না।...........আমি ২৬ বছর বয়সে বিয়ে করে এটা উপলব্ধি করেছি।
১৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:০০
গ্রীনলাভার বলেছেন: আগে হেসে নেই।
কিছুক্ষন পর নুর ভাই বলবেন," আমি খুব দুঃখিত। আমি একটা গল্প লিখেছি। কোনো সত্য কাহিনী নয়। আপনারা কেন ধরে নিলেন-এটা সত্য কাহিনী।" (এবং এত দু:খ পাচ্ছেন।)
১৫| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৩
নিভৃত নিঃশব্দ বলেছেন: লেখাটা খুব ভাল লাগল...
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৪৭
ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: Srishti korta apnader valibasha bohu gun bariye dik..... Jeno sontan na thakar koshto ek jn r ekjn k vuliye dite paren...... Sotti hole emntai prarthona kori.......
R golpo hole sundor hoyeche lejha ta.....