নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সূরাঃ আন নূর

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:০৩

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।আমি একজন ভাল মুসলিম হতে চাই । এজন্য ইসলাম নিয়ে আমার সাধ্যমত পড়াশুনা করার চেষ্টা করি । সূরা আন নূর মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ২৪ নং সূরা। সূরার নামের বাংলা অর্থ আলো। এটি মাদানী সূরা। এ সূরায় হযরত আয়েশা রা. এর উপর দেওয়া অপবাদ খন্ডন করা হয়েছে।



এ সূরায় ব্যাভিচারের শাস্তি ঘোষণা করা হয়। কারো বিরুদ্ধে অহেতুক ব্যাভিচারের অপবাদ দেবার শাস্তি ঘোষিত হয়। ১১ নং আয়াতে হযরত আয়েশা রা. এর বিরুদ্ধে আনা অপবাদের জবাব দেওয়া হয়। ২৭ নং আয়াতে অনুমতি ছাড়া অপরের ঘরে প্রবেশ করতে নিষেধ করে আইন করা হয়। ৩০ ও ৩১ নং আয়াতে যথাক্রমে পুরুষ ও নারীদের জন্যে পর্দার বিধান দিয়ে দৃষ্ঠি নিচু করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৩১ আয়াতে গাইরে মাহরামদের (যাদের সাথে বিয়ে জায়েয কিন্তু দেখা দেওয়া হারাম) তালিকা দেওয়া হয়। ৩৫ আয়াতে আল্লাহ একটি উপমার দ্বারা নিজের পরিচয় তুলে ধরেছেন । পরবর্তী আয়াতগুলোতে সৃষ্ঠিজগতের প্রাকৃতিক ও বৈজ্ঞানিক কিছু নিদর্শনের প্রতি ইঙ্গিত করে পরকালের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।



ধর্ষণের সঙ্গা আমরা সবাই জানি। সহজ কথায়-ধর্ষণ বলতে এক চরম পাশবিক ও বিকৃত যৌন নির্যাতনকে বোঝায়। যা একই সঙ্গে অশ্লীলতা, বিকৃত মানষিকতা ও কুশিক্ষার ফলাফল হিসেবেই আমরা দেখে থাকি।আর সমাজ থেকে এই অশ্লীলতাপূর্ণ অমানবিক নির্যাতন নির্মূল করা শুধুমাত্র আইন করে সম্ভব নয়, দরকার মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধের বিকাশ। নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণে সমাজ আজ যে অভিশাপে ভুগছে তা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের ইসলামের দারস্থ হতেই হয়।



আমরা একটি সুন্দর বাসযোগ্য সমাজ চাই, যেখানে কোনো মানুষকে আর নির্যাতিত হতে হবে না, আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য আমাদের সবাইকে ন্যায় নীতির ভিত্তিতে এক সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে, সব অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।



প্রকৃত সুখ-শান্তি অর্জন, পৃথিবীতে খেলাফাত (ইসলামিক কর্তৃত্ব ও শাসন ব্যবস্থা) প্রতিষ্ঠা, ইসলামের বিশুদ্ধ চর্চা এবং সমস্ত রকম বাতিল ও শয়তানি অপশক্তির আক্রমণের বিরুদ্ধে ধৈর্য এবং নিষ্ঠার সাথে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া- এসবের একটিও সম্ভব নয় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌” এর বাস্তবিক প্রয়োগ ছাড়া।



১। এটি একটি সূরা, এটি আমি অবতীর্ণ করেছি এবং এর বিধানকে অবশ্য পালনীয় করেছি, এতে আমি অবতীর্ণ করেছি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।



২। ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী_ তাদের প্রত্যেককে একশত বেত্রাঘাত করবে,১ আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে পেয়ে না বসে, যদি তোমরা আল্লাহ এবং আখিরাতে বিশ্বাসী হও; মু'মিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।



৩। ব্যভিচারি-ব্যভিচারিণীকে অথবা মুশরিক নারীকে ছাড়াবিবাহ করে না এবং ব্যভিচারিণী_ তাকে ব্যভিচারী অথবা মুশরিক ছাড়াকেউ বিবাহ করে না, মু'মিনদের জন্য এটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।



৪। যারা সাধ্বী রমনীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি কশাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবে না; এরাই তো সত্যত্যাগী।



৫। তবে যদি তারপর তারা তাওবা করে ও নিজেদেরকে সংশোধন করে, আল্লাহ তো অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।



৬। এবং যারা নিজেদের স্ত্রীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথচ নিজেরা ছাড়া তাদের কোন সাক্ষী নাই, তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য এই হবে যে, সে আল্লাহর নামে চারবার শপথ করে বলবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী,



৭। এবং পঞ্চমবারে বলবে যে, সে মিথ্যাবাদী হলে তার উপর নেমে আসবে আল্লাহর লা'নত।



৮। তবে স্ত্রীর শাস্তি রহিত হবে যদি সে চারবার আল্লাহর নামে শপথ করে সাক্ষ্য দেয় যে, তার স্বামীই মিথ্যাবাদী,



৯। এবং পঞ্চমবারে বলে যে, তার স্বামী সত্যবাদী হলে তার নিজের উপর নেমে আসবে আল্লাহর গজব।



১০। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেহই অব্যাহতি পেতে না এবং আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী ও প্রজ্ঞাময়।



১১। যারা এই অপবাদ৩ রচনা করেছে তারা তো তোমাদেরই একটি দল; একে তোমরা তোমাদের জন্য অনিষ্টকর মনে করো না; বরং এটা তো তোমাদের জন্য কল্যাণকর; তাদের প্রত্যেকের জন্য আছে তাদের কৃত পাপকর্মের ফল এবং তাদের মধ্যে যে এই ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছে, তার জন্য আছে মহাশাস্তি।



১২। যখন তারা এটা শুনল তখন মু'মিন পুরুষ এবং মু'মিন নারীরা আপন লোকদের সম্পর্কে কেন ভাল ধারণা করল না এবং বলল না, 'এটা তো সুস্পষ্ট অপবাদ।'



১৩। তারা কেন এ ব্যাপারে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করেনি? যেহেতু তারা সাক্ষী উপস্থিত করেনি, সে কারণে তারা আল্লাহর নিকট মিথ্যাবাদী।



১৪। দুনিয়া ও আখিরাতে তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে, তোমরা যাতে লিপ্ত৪ ছিলে তজ্জন্য মহাশাস্তি তোমাদেরকে স্পর্�র মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।



২০। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ না থাকলে তোমাদের কেউই অব্যাহতি পেতে না এবং আল্লাহ দয়াবান ও পরম দয়ালু।



২১। হে মু'মিনগণ! তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করলে শয়তান তো অশ্লীলতা ও মন্দকর্মের নির্দেশ দেয়। আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেউই কখনও পবিত্র হতে পারতে না, তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করে থাকেন এবং আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।



২২। তোমাদের মধ্যে যরা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্য�� করত,



১৫। যখন তোমরা মুখে মুখে তা ছড়াতেছিলে এবং এমন বিষয় মুখে উচ্চারণ করতেছিলে যার কোন জ্ঞান তোমাদের ছিল না এবং তোমরা তাকে তুচ্ছ গণ্য করেছিলে, যদিও আল্লাহর নিকট এটা ছিল গুরুতর বিষয়।



১৬। এবং তোমরা যখন তা শ্রবণ করলে তখন কেন বললে না, 'এ বিষয়ে বলাবলি করা আমাদের উচিত নয়; আল্লাহ পবিত্র, মহান। এটা তো এক গুরুতর অপবাদ!'



১৭। আল্লাহ তোমাদেরকে উপদেশ দিতেছেন, 'তোমরা যদি মু'মিন হও তবে কখনও অনুরূপ আচরণের পুনরাবৃত্তি করো না।'



১৮। আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করেন এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়।



১৯। যারা মু'মিনদেের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহর রাস্তায় যারা হিজরত করেছে তাদেরকে কিছুই দিবে না;৫ তারা যেন তাদেরকে ক্ষমা করে এবং তাদের দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন? এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।



২৩। যারা সাধ্বী, সরলমনা৬ ও ঈমানদার নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত এবং তাদের জন্য আছে মহাশাস্তি।



২৪। যে দিন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে তাদের জিহ্বা, তাদের হস্ত ও তাদের চরণ তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে_



২৫। সে দিন আল্লাহ তাদের প্রাপ্য প্রতিফল পুরোপুরি দিবেন এবং তারা জানবে; আল্লাহই সত্য ও সুস্পষ্ট ।



২৬। দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য; দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য; সচ্চরিত্রা নারী সচ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ সচ্চরিত্রা নারীর জন্য। লোকে যা বলে তারা৭ তা থেকে পবিত্র; তাদের জন্য আছে ক্ষমা এবং সম্মানজনক রিয্ক।



২৭। হে মু'মিনগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া কারও ঘরে তার বাসিন্দাদের অনুমতি না নিয়ে এবং তাদেরকে সালাম না দিয়ে প্রবেশ করো না। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।



২৮। যদিও তোমরা ঘরে কাউকে না পাও তা হলেও তাতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ না তোমাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়। যদি তোমাদেরকে বলা হয়, 'ফিরে যাও', তবে তোমরা ফিরে যাবে, এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, এবং তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ ভালভাবেই জানেন।



২৯। যে ঘরে কেউ বসবাস করে না তাতে তোমাদের জন্য দ্রব্যসামগ্রী থাকলে সেখানে তোমরা প্রবেশ করলে কোনও পাপ নাই এবং আল্লাহ জানেন যা তোমরা প্রকাশ কর এবং যা তোমরা গোপন কর।



৩০। মু'মিনদেরকে বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে; এটাই তাদের জন্য উত্তম। তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।



৩১। আর মু'মিন নারীদেরকে বল, 'তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থান হিফাজত করে; তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশ থাকে তা ছাড়া তাদের আভরণ৮ প্রদর্শন না করে, তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে, তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাইয়ের পুত্র, বোনের পুত্র, আপন নারীগণ,৯ তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা-রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো নিকট তাদের আভরণ প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে। হে মু'মিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।



৩২। তোমাদের মধ্যে যারা আয়্যিম১০ তাদের বিবাহ সম্পাদন কর এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরও। তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দিবেন; আল্লাহ তো প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ।



৩৩। যাদের বিবাহের সামর্থ্য নেই, আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে এবং তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীদের মধ্যে কেউ তার মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি চাইলে, তাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হও, যদি তোমরা তাদের মধ্যে মঙ্গলের সন্ধান পাও। আল্লাহ তোমাদেরকে যে সম্পদ দিয়েছেন তা থেকে তোমরা তাদেরকে দান করবে। তোমাদের দাসীরা, সতীত্ব রক্ষা করতে চাইলে পার্থিব জীবনের ধন-লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারিনী হতে বাধ্য করো না,১১ আর যে তাদেরকে বাধ্য করে, তবে তাদের উপর জবরদস্তির পর আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।



৩৪। আমি তোমাদের নিকট অবতীর্ণ করেছি সুস্পষ্ট আয়াত, তোমাদের পূর্ববতর্ীদের দৃষ্টান্ত এবং মুত্তাকীদের জন্য উপদেশ।



৩৫। আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর জ্যোতি,১২ তাঁর জ্যোতির উপমা যেন একটি দীপাধার যার মধ্যে আছে এক প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচের আবরণের মধ্যে স্থাপিত, কাঁচের আবরণটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ; এটা প্রজ্বলিত করা হয় পূত-পবিত্র যায়তূন বৃক্ষের তেল দ্বারা যা প্রাচ্যের নয়, প্রতীচ্যেরও নয়, আগুন তাকে স্পর্শ না করলেও যেন তার তেল উজ্জ্বল আলো দিচ্ছে; জ্যোতির উপর জ্যোতি! আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথনির্দেশ করেন তাঁর জ্যোতির দিকে। আল্লাহ মানুষের জন্য উপমা দিয়ে থাকেন এবং আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।



৩৬। সে সকল ঘরে১৩ যাকে সমুন্নত করতে এবং যাতে তাঁর নাম স্মরণ করতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে,



৩৭। সেসব লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে এবং সালাত কায়েম ও যাকাত প্রদান থেকে বিরত রাখে না, তারা ভয় করে সে দিনকে যেদিন অনেক অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে_



৩৮। যাতে তারা যে কাজ করে সেজন্য আল্লাহ তাদেরকে উত্তম পুরস্কার দেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদের প্রাপ্যের অধিক দেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত রিয্ক দান করেন।



৩৯। যারা কুফুরী করে তাদের কাজ মরুভূমির মরীচিকার মত, পিপাসার্ত যাকে পানি মনে করে থাকে, কিন্তু সে তার কাছে উপস্থিত হলে দেখবে তা কিছু নয় এবং সে পাবে সেখানে আল্লাহকে, অতঃপর তিনি তার কর্মফল পূর্ণমাত্রায় দিবেন। আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর।



৪০। অথবা তাদের কাজ গভীর সমুদ্র তলের অন্ধকারের মত, যাকে আচ্ছন্ন করে ঢেউয়ের পর ঢেউ, যার উপরে মেঘমালা, স্তরে স্তরে অন্ধকার, এমনকি সে হাত বের করলেও তা দেখতে পাবে না। আল্লাহ যাকে আলো দেন না তার জন্য কোন আলো নেই।



৪১। তুমি কি দেখ না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যারা আছে তারা এবং উড়ন্ত পাখীরা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেই জানে তার ইবাদতের ও পবিত্রতা ঘোষণার পদ্ধতি এবং তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ ভালভাবেই জানেন।



৪২। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই এবং আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তন।



৪৩। তুমি কি দেখ না, আল্লাহ পরিচালিত করেন মেঘমালাকে, এরপর তাদেরকে একত্র করেন এবং পুঞ্জীভূত করেন, অতঃপর তুমি দেখতে পাও, তার মধ্য থেকে বের হয় বৃষ্টি; আকাশের শিলাসতূপ থেকে তিনি বর্ষণ করেন শিলা এবং এর দ্বারা তিনি যাকে ইচ্ছা আঘাত করেন এবং যাকে ইচ্ছা তার উপর থেকে তা অন্য দিকে ফিরিয়ে দেন। মেঘের বিদু্যৎ ঝলক দৃষ্টিশক্তি প্রায় কেড়ে নেয়।



৪৪। আল্লাহ দিন ও রাতের পরিবর্তন ঘটান, তাতে শিক্ষা রয়েছে অন্তদর্ৃষ্টি সম্পন্নদের জন্য।



৪৫। আল্লাহ সমস্ত জীব সৃষ্টি করেছেন পানি থেকে, তাদের কিছু পেটে ভর দিয়ে চলে, কিছু দুই পায়ে চলে এবং কিছু চলে চারপায়ে, আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন, নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।



৪৬। আমি তো সুস্পষ্ট নিদর্শন অবতীর্ণ করেছি, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করেন।



৪৭। তারা বলে আমরা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনলাম এবং আমরা আনুগত্য স্বীকার করলাম', কিন্তু এর পর তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নিল; আসলে তারা মু'মিন নয়।



৪৮। এবং যখন তাদেরকে ডাকা হয় আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে, তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেয়ার জন্য তখন তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়।



৪৯। আর যদি তাদের কোন পাওনা থাকে১৪ তাহলে তারা বিনীতভাবে রাসূলের কাছে ছুটে আসে।



৫০। তাদের অন্তরে কি রোগ আছে, না তারা সন্দেহ করে? না তারা ভয় করে যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাদের প্রতি যুলুম করবেন? বরং তারাই তো যালিম।



৫১। মু'মিনদের উক্তি তো এই_ যখন তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেয়ার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে আহ্বান করা হয় তখন তারা বলে, 'আমরা শুনলাম ও আনুগত্য করলাম।' আর তারাই তো সফলকাম।



৫২। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর অবাধ্যতা থেকে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম।



৫৩। তারা দৃঢ়ভাবে আল্লাহর শপথ করে বলে যে, তুমি তাদেরকে আদেশ করলে তারা অবশ্যই বের হবে১৫; তুমি বল, 'শপথ করো না, যথাযথ আনুগত্যই কাম্য। তোমরা যা কর নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে ভালভাবে জানেন।'



৫৪। বল, 'আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর।' অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নেও, তবে তার১৬ উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য সেই দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী; এবং তোমরা তার আনুগত্য করলে সৎপথ পাবে, আর রাসূলের কাজ তো শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া।



৫৫। তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দিবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দিয়েছিলেন তাদের পূর্ববতর্ীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দ্বীনকে যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা দিবেন। তারা আমার ইবাদত করবে, আমার কোন শরীক করবে না, অতঃপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারা তো সত্যত্যাগী।



৫৬। তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হতে পার।



৫৭। তুমি কাফিরদেরকে পৃথিবীতে কখনো প্রবল১৭ মনে করো না। তাদের আশ্রয়স্থল আগুন; কত নিকৃষ্ট এই পরিণাম।



৫৮। হে মুমিনগণ! তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি তারা যেন তোমাদের ঘরে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে, ফজরের সালাতের পূর্বে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখ তখন এবং ঈশার সালাতের পর; এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তার সময়। এই তিন সময় ছাড়া অন্য সময়ে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে তোমাদের জন্য এবং তাদের জন্য কোন দোষ নেই। তোমাদের একজনকে অন্যের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে তাঁর নিদর্শন সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।



৫৯। আর তোমাদের সন্তান-সন্তুতি প্রাপ্তবয়স্ক হলে তারাও যেন অনুমতি প্রার্থনা করে যেমন অনুমতি প্রার্থনা করে তাদের পূর্ববর্তীরা১৮। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের কাছে তাঁর নির্দেশ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়।



৬০। বৃদ্ধা নারী যারা বিয়ের আশা রাখে না, তাদের জন্য অপরাধ নেই, যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রর্দশন না করে তাদের কাপড়১৯ খুলে রাখে; তবে তা থেকে তাদের বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।



৬১। অন্ধের জন্য দোষ নেই, খোঁড়ার জন্য দোষ নেই, রুগ্নের জন্য দোষ নেই এবং তোমাদের নিজেদের জন্যও দোষ নেই আহার করায়_২০ তোমাদের ঘরে অথবা তোমাদের পিতাদের ঘরে, মায়েদের ঘরে, ভাইদের ঘরে, ফুফুদের ঘরে, মামাদের ঘরে, খালাদের ঘরে অথবা সেসব ঘরে যার চাবির মালিক তোমরা অথবা তোমাদের বন্ধুদের ঘরে। তোমরা একত্রে আহার কর অথবা পৃথক পৃথকভাবে আহার কর তাতে তোমাদের জন্য কোন অপরাধ নেই। তবে যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদনস্বরূপ যা আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণময় ও পবিত্র। এভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে তাঁর নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার।



৬২। মু'মিন তো তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনে এবং রাসূলের সঙ্গে সমষ্টিগত ব্যাপারে একত্র হলে তার অনুমতি ছাড়া সরে পড়ে না;২১ যারা তোমার অনুমতি প্রার্থনা করে তারাই আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলে বিশ্বাসী। অতএব তারা তাদের কোন কাজে বাইরে যাওয়ার জন্য তোমার অনুমতি চাইলে তাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তুমি অনুমতি দিও এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।



৬৩। রাসূলের আহ্বানকে তোমরা তোমাদের একে অপরের প্রতি আহ্বানের মত গণ্য করো না; তোমাদের মধ্যে যারা অলক্ষ্যে সরে পড়ে আল্লাহ তো তাদেরকে জানেন। সুতরাং যারা তাঁর আদেশের বিরোধিতা করে তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদেরকে গ্রাস করবে অথবা তাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আপতিত হবে।



৬৪। জেনে রাখ, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই; তোমরা যাতে ব্যস্ত তিনি তা জানেন। যেদিন তারা তাঁর কাছে ফিরে যাবে সেদিন তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন তারা যা করত। আল্লাহ সবকিছুই জানেন।



মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:১৪

খেয়া ঘাট বলেছেন: দারুন পোস্ট।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছ প্লাস।

১৬ ই মে, ২০২১ রাত ৩:১০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন।

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৫

খাটাস বলেছেন: খেয়া ঘাট বলেছেন: দারুন পোস্ট।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছ প্লাস। সাথে বক্সে।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:০১

গ্রীনলাভার বলেছেন: ভাই না বুঝে এভাবে কপি-পেষ্ট করলেন। কথাটা কেন বললাম বলছি। ৩ নং আয়াতটির অর্থ হবে এরকম -

"ব্যভিচারীরা ব্যভিচারিনী বা আল্লাহকে মান্য করে না এমন কারওর সাথেই মেলামেশা করে থাকে। অনুরুপভাবে ব্যভিচারিনীরা ব্যভিচারী বা আল্লাহকে মান্য করে না এমন কারওর সাথেই মেলামেশা করে থাকে। আর এটিতো মুমিনদের জন্য নিষিদ্ধ।"

--- পবিত্র কোরআনের সহজ-সাবলীল বাংলা অর্থ এখনও দু:স্প্রাপ্য। তাই আমাদের ভিন্ন ভিন্ন বাংলা অর্থ দেখা/শুনা এবং তাফসির দেখা/শুনা উচিৎ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.