নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
সময় দুপুর বারোটা। বাসা থেকে বের হয়ে হাঁটতে হাঁটতে ফার্ম গেট এসে দাঁড়িয়ে আছি। যাবো মিরপুর-দশ । পকেট একেবারে শূন্য। দুপুরবেলা রোদের মধ্যে হেঁটে মিরপুর যেতে ইচ্ছা করছে না। ইচ্ছা করছে গাড়িতে এসি ছেড়ে আরাম করে গান শুনতে শুনতে যাই অথবা পত্রিকা পড়া যেতে পারে। বিদেশে কি সুন্দর লিফট পাওয়া যায়। কি করবো...কি করবো ভাবছি, ঠিক তখনই একটা সাদা রঙের গাড়ি এসে আমার সামনে থামল। গাড়ি থেকে এক ভদ্রলোক নেমে বললেন- এই ছেলে তোমার নাম কি- আজমত উল্লাহ ? চারিদিকে গাড়ি-বাসের বিকট শব্দ, প্রচন্ড রোদের তাপ। আমি ঘামছি। আমি ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে বললাম- এই যে আপনার নাম কি- আহমদ ইবনে রফিক হাইয়ান? ভদ্রলোক চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন না- আমার নাম- রফিক চৌধুরী। আমি একটু হাসি দিয়ে বললাম- আমার নাম- বাবুই।
বেলা দুইটা। আমি দাঁড়িয়ে আছি সংসদ ভবনের সামনে। গ্রাম থেকে নতুন শহরে আসা লোকদের মতন হা করে তাকিয়ে আছি সংসদ ভবনের দিকে। এমন সময় দুইজন পুলিশ এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে বলল- এখানে কি করছেন? আমি বললাম- এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খাবো, ভাবছি সংসদ ভবনে কি পানির কল আছে! ওসি সাহেব বললেন- তোর নাম কি ? কী করা হয় ? আমি বললাম- আমার নাম বাবুই। সাংবাদিকতা করি। ছবি তুলি। ওসি বলল, কোন পত্রিকায়? আমি বললাম- বিশেষ কোনো পত্রিকা নেই। ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতা। যেখানে সুযোগ পাই টুকটাক কাজ করি। গত সপ্তাহ যুগান্তর পত্রিকায় আমার তোলা ছবি দিয়ে দু'টা লীড নিউজ হয়েছে- হয়তো আপনার চোখে পড়েছে। পুরান ঢাকার সমস্যা নিয়ে। ওসি সাহেব ভ্রু কুঁচকে বললেন- আপনাকে আমার সাথে থানায় যেতে হবে। আমি পুলিশের গাড়িতে উঠে পড়লাম।
থানায় যাওয়ার দুই ঘন্টা পর পুলিশ আমাকে বলল- আমরা পত্রিকা অফিসে খোঁজ নিয়েছি- বাবুই নামে কোনো ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক নেই। ওসি সাহেবের হুমুকে একজন আমাকে ঠাটিয়ে এক চড মারলো। পাঁচ কেজি ওজনের চড়ে আমি ছিটকে পড়লাম। উঠে দাঁড়াতেই- ওসি সাহেব বললেন- এইবার বল তোর আসল ধান্ধা কি? এরপর বেশ কিছু নোংরা কথা- যা বাংলা ভাষায় আমার পক্ষে লেখা সম্ভব নয়। রাত এগারোটায় ডিউটি অফিসার এসে আমাকে ছেড়ে দিলেন। থানা থেকে বের হয়ে আমি হাঁটছি। আমার ভালো নাম রাজীব নূর। পত্রিকাতে এই নামেই আমি কাজ করি। হিমি আমাকে আদর করে বাবুই বলে ডাকে। ইদানিং কেউ যদি আমার নাম জিজ্ঞেস করে- আমি ছোট্র বাচ্চাদের মতন বলি- আমার নাম বাবুই। হাঁটতে হাঁটতে আমি আবার সংসদ ভবনের সামনে এসে দাঁড়াই। অনেক ক্ষুধা পেয়েছে। গলা শুকিয়ে কাঠ। সংসদ ভবনের দিকে তাকিয়ে মনে হলো- রাতের বেলা-ই সংসদ ভবন দেখতে বেশী সুন্দর লাগে।
রাত দুইটায় বাসায় ফিরলাম- বিষন্ন মন এবং ক্লান্ত শরীর নিয়ে। বাসায় ফিরে অনেক সময় আরাম করে গোছল করলাম। পেট ভরে ভাত খেলাম- রুই মাছ, কলমি শাক আর ডাল দিয়ে। ব্যালকনিতে গিয়ে বসলাম। এখন আমি হিমির কথা ভাববো। অনেকদিন হিমির সাথে দেখা হয় না। আমি ইচ্ছা করেই অনেকদিন পর-পর হিমির সাথে দেখা করি। বুদ্ধিমান'রা জানে প্রিয় মানুষদের সাথে রোজ রোজ দেখা করা ঠিক নয়। রাত তিনটায় হিমির বাসায় ফোন দিলাম। ফোন ধরলেন হিমির বাবা। আমি বললাম- তেজগাঁ থানা ? হিমির বাবা বললেন- হারামজাদা, তেজগাঁ থানা তোমার ইয়ে দিয়ে ডুকিয়ে দিবো। আমি বললাম- হিমিকে ফোন দেন- জরুরী কথা আছে।হিমির বাবা চিৎকার করে বললেন- তুই কে ? আমি নরম স্বরে বললাম- আমি আপনার মেয়ের জামাই। হিমির বাবা বললেন- ফোন রাখ শুয়োর। আমি বললাম- আমার নাম বাবুই।
বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির একটা অলৌকিক ক্ষমতা আছে। প্রতিটা মানুষের মন আদ্রতায় ভরিয়ে দেয়। একজন রিকশাওয়ালা আনন্দে গান গেয়ে উঠে। এত নাম থাকতে হিমি আমাকে কেন বাবুই নামে ডাকে? আজিব ! বর্ষা কালে আকাশের তারা গুলো কম জ্বল জ্বল করে। আকাশের সবচেয়ে জ্বল জ্বল করা তারাটির নাম হচ্ছে হিমি। হিমির কাছে প্রতিদিন একটা করে চিঠি লিখতে ইচ্ছা করে। খুব আয়োজন করে চিঠি লিখতে বসি। কলম হাতে নিয়ে বসে থাকি- কী লিখব ভেবে পাই না। আমি চিঠিতে লিখলাম- হিমি আমার খুব ইচ্ছা করে, জোছনা রাতে সমুদ্রের পাড়ে তোমাকে নিয়ে হাঁটি।সেদিন তোমাকে অবশ্যই নীল শাড়ি পড়তে হবে। দুই হাত ভরতি থাকবে নীল কাঁচের চুড়ী, কপালে একটা বড় নীল টিপ। বাতাসে তোমার মাথার চুল উড়ে এসে আমার গায়ে পড়বে।তোমার শাড়ির আঁচল বাতাসে পতাকার মতন উড়বে। অ
অনেকদিন আগে একটি গল্প পড়েছিলাম, গল্পটি অনেকটা এই রকমঃ রাশিয়ার এক শহরে বাস করতো আকসেনভ নামের এক যুবক। পেশায় ছিল ব্যবসায়ী, আর ছিল দু খানা দোকান ও বসত ভিটা। ছোটবেলা থেকে নেশা করলেও এখন সে পুরাপুরি ভালো, মাঝে মাঝে কেবল ভদকা খেয়ে নেশা করে। গ্রীষ্মের এক সকালে ব্যবসার কাজে শহরে যাওয়ার জন্য বের হয় যুবক। স্ত্রী তাকে বলে যে ,আমি খুব একটা খারাপ স্বপ্ন দেখেছি তুমি আজ শহরে যেওনা। সে উপেক্ষা করে শহরে যায় এবং রাস্তার মাঝে পরিচয় হয় এক ব্যবসায়ীর সাথে। দু’ জনেই রাতে এক সরাই খানাতে থাকে। পরদিন সকাল বেলা আকসেনভ সরাই খানার সব লেনদেন চুকে দিয়ে বের হয়। প্রায় মাইল পঁচিশ যাবার পর সে আরেকটা সরাই খানাতে দাঁড়িয়ে পড়ে ঘোড়া গুলোকে কিছু খাইয়ে নেবার জন্য। কিছুক্ষণ পর একজন অফিসার এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করে। সে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিলেও মূল ঘটনা বুঝে উঠতে পারেনা। অফিসার আকসেনভকে বলে যে, যে লোকটির সাথে আপনি আপনি রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন সে খুন হয়েছে। আর আমি একজন পুলিশ অফিসার। আপনার পোটলা তল্লাসী করব। যেই বলা সেই কাজ। আকসেনভের ব্যাগ তল্লাসী করে একটা রক্ত মাখা ছোরা পাওয়া গেল। ছোরাতে কেন রক্ত লেগে আছে জিজ্ঞেস করলে আকসেনভ কোন উত্তর দিতে পারেনা। সে শুধু বলে আমি কিছু জানিনা। আমি খুন করিনি।
২৩ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।
২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৩১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বুইজ্ঝা নিলাম ...
লেখা ভাল লেগেছে ।।
২৩ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।
৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৪৯
সিস্টেম অ্যাডমিন বলেছেন: লিখেছেন ভাল। তবে পরিবর্তন কী হবে ?
২৩ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৫
বাদলপ্রিয় বলেছেন: ভাই হুমায়ন বেশী পড়েন, তাই না? If you know what I mean...
২৩ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী।
৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫২
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: উপরের অতখানি লেখার চেয়ে নীচের আকসেনভের গল্পটা মন ছুয়ে গেল।
২৩ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।
৬| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:১৬
অর্থনীতিবিদ বলেছেন: আকসেনভের ঘটনার সাথে হিমির প্রতি আপনার ভালবাসার ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না।
২৩ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: আমি নিজেও কি বুঝি??!!
৭| ১০ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:১৩
আলমগীর_কবির বলেছেন: নূর ভাই লেখা ভাল তবে হুমায়ুন স্যারের প্রভাব থেকে লেখটা রেহায় পায়নি।
২৩ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: হুমাহূন আহমেদ কে আমি বস মানি।
৮| ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২০
মু. ইশরাত হোসেন লিপটন বলেছেন: একই ব্যক্তির ভেতর একাধিক স্বত্ত্বার উপস্থিতি। এটাতো এক ধরণের মানসিক রোগ যেটার নাম হল- মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার। রাজীব ভাই, রাজীব নূর এবং বাবুইর কথা বলছি না। আকসেনভ কি মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার রোগে ভূগছিলেন? আর এ কারণে তাঁর ভেতরে লুকিয়ে থাকা ভিন্ন কোনো স্বত্ত্বা ওই খুনের জন্য দায়ী!
২৩ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:১০
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:০০
খেয়া ঘাট বলেছেন: পড়ে ভালো লাগলো।