নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
উত্তর কলকাতার পাদপ্রান্তে অবস্থিত জোড়াসাঁকো অঞ্চলের আদি নাম ছিল ‘মেছুয়াবাজার’।১৭৮৫ সালে কলকাতা শহরকে প্রথম যে ৩১টি থানায় ভাগ করা হয়েছিল, তার একটি ছিল এই জোড়াসাঁকো থানা।জোড়াসাঁকোয় বসবাসকারী দু-টি পরিবারের সঙ্গে বাংলার নবজাগরণের নাম জড়িয়ে রয়েছে ওতোপ্রতোভাবে। একটি হল সিংহ পরিবার–যে পরিবারের সন্তান ছিলেন হুতোম পেঁচার নকশা-খ্যাত মহাভারত-অনুবাদক কালীপ্রসন্ন সিংহ। অপর পরিবারটি, বলাই বাহুল্য, বঙ্গদেশের সুবিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের জোড়াসাঁকো শাখা। রবীন্দ্রনাথের জন্মের আগে থেকেই বাংলার আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে ঠাকুর পরিবারের নাম ওতোপ্রতোভাবে জড়িত।
১৭৮৪ সালে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের ঠাকুরদা নীলমণি ঠাকুর পাথুরিয়াঘাটার ঠাকুরদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে আসেন জোড়াসাঁকো অঞ্চলে। নীলমণি থেকে তাঁর নাতি দ্বারকানাথ পর্যন্ত জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি ছিল এক বিরাট জমিদারি ও ব্যবসাদারির কেন্দ্রস্থল। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের আমলে ব্রাহ্মধর্মের প্রসার বঙ্গ-সংস্কৃতির মুকুটে ঠাকুরবাড়ির এক নতুন পালক সংযোজন।রবীন্দ্রনাথের জন্ম, কাব্যরচনা, সাহিত্যচর্চা, নাট্যাভিনয়, নোবেল-প্রাপ্তি, নাইটহুড-ত্যাগ, রাজনীতিদর্শন ও মহাপ্রয়াণের সঙ্গে এই বাড়ির নাম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর দাদা, বৌদি ও দিদিদের সুবাদে তৎকালীন ভারত ও বহির্ভারতের অনেক নামিদামি মানুষের পায়ের ধুলো পড়েছিল এই বাড়িতে।
রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর থেকেই ঠাকুর পরিবারের সদস্যরা একে একে জোড়াসাঁকোর বাস তুলে অন্যত্র চলে যান। বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব অংশের মালিকানা থেকে যায় গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে। কালক্রমে দেশভাগ ও স্বাধীনতা অর্জনের ডামাডোলে বাড়ির একটি বড়ো অংশই চলে যায় বহিরাগতদের হাতে। উনিশশো পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকে রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির তরফে সুরেন্দ্রনাথ মজুমদার পনেরো লক্ষ টাকা দিয়ে বাড়িটি কিনে নেন।
১৯৫৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আসন্ন রবীন্দ্র-জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রনাথের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেন।কবি-পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে আলোচনার পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার সমগ্র ঠাকুরবাড়ির দখল নেন।
রবীন্দ্রনাথের প্রায় ৮০ শতাংশ রচনা অনূদিত হয়েছে তামিল ভাষায়? হ্যাঁ, এই ভাবেই তামিল সংস্কৃতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন দখল করে নিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।‘যদি কেউ কথা না কয়, ওরে ওরে ও অভাগা,/ যদি সবাই থাকে মুখ ফিরায়ে সবাই করে ভয়–/ তবে পরান খুলে/ ও তুই মুখ ফুটে তোর মনের কথা একলা বলো রে।।’ – এই অমোঘ পংক্তি যাঁর লেখা সেই রবীন্দ্রনাথ ভুগতেন অবসাদে। এমনটাই দাবি করছে অধ্যাপক সব্যসাচী ভট্টাচার্যের লেখা কবির নতুন জীবনী ‘রবীন্দ্রনাথ টেগোর: অ্যান ইন্টারপ্রিটেশন’।
রবীন্দ্রনাথের মৌলিক নাটকের সংখ্যা ৩৮। এই নাটকগুলিকে কয়েকটি বর্গে বিভক্ত করা যায়। যেমন: গীতিনাট্য, নিয়মানুগ নাটক, কাব্যনাট্য, নৃত্যনাট্য, প্রহসন-কৌতুকনাট্য ও রূপক-সাংকেতিক নাটক।
রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে সাহিত্যিক প্রমথনাথ বিশীর একটি লাইন , ‘বাংলাদেশের মতোই রবীন্দ্রনাথের কবিত্ব নদীমাতৃক।’
©somewhere in net ltd.