নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথের কোনো বিকল্প নাই-৯৬

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৬

সৈয়ত মুজতবা আলী স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কণ্ঠে, তারই সামনে বসে তার আকাংক্ষা বিষয়ক বক্তৃতা শুনেছিলেন। মানে রবীন্দ্রনাথ কে কাছ থেকে দেখার এবং তার বক্তৃতা শোনার সৌভাগ্য, দুটোই হয়েছিল তার। আর তারপর শিশু মুজতবা আলী যে কাণ্ডটি ঘটিয়েছিলেন, তার নমুনা শুনলে আশ্চর্য হবেন নিশ্চিত। মুজতবা আলী কারও সঙ্গে পরামর্শ না করেই চিঠি লিখে বসলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে। চিঠিতে জিজ্ঞাসা ছিলো- আকাংক্ষা উচ্চ করতে হলে কী করা প্রয়োজন? আর তার ক’দিন পরই আসমানী রঙের খামে আসমানী চিঠির কাগজে জবাব এল শিশু মুজতবা আলীর কাছে। রবি ঠাকুর নিজের হাতে ১০/১২ লাইনের জবাবে যা লিখেছিলেন, তার মূল কথা এরকম- ‘আকাংক্ষা উচ্চ করিতে হইবে- এই কথাটার মোটামুটি অর্থ এই- স্বার্থই যেন মানুষের কাম্য না হয়। দেশের মঙ্গলের জন্য ও জনসেবার জন্য স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগ কামনাই মানুষকে কল্যাণের পথে নিয়ে যায়। তোমার পক্ষে কী করা উচিত, তা এতদূর থেকে বলে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে তোমার অন্তরের শুভেচ্ছাই তোমাকে কল্যাণের পথে নিয়ে যাবে।’



ওয়াল্ট হুইটম্যান লিখেছেন, " আমি বিশাল, আমি আমাতে ব্যাপককে ধারণ করি" - রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রেও এই কথাটিই সর্বৈব সত্যি। রবি ঠাকুরও তার নিজের মধ্যে ব্যাপককে শুধু ধারণই করেননি বরং তা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখে গিয়েছেন আমাদের জন্য, তার কবিতায়, গানে, গল্পে, উপন্যাসে, প্রবন্ধে - এমনকি ছবিতেও।



এই সঞ্চয়িতা সঙ্গে থাকলে আমি আর কিছুই চাই না। নাটক নয়, উপন্যাস নয়, কবিগুরুর গান ও কবিতাই আমার বেশি প্রিয়। সব মিলিয়ে এগারো বছর কাটিয়েছি জেলে। আমার সব সময়ের সঙ্গী ছিল এই সঞ্চয়িতা। কবিতার পর কবিতা পড়তাম আর মুখস্থ করতাম। এখনও ভুলে যাইনি। এই প্রথম মিয়ানওয়ালি জেলের ন'মাস সঞ্চয়িতা সঙ্গে ছিল না। বড় কষ্ট পেয়েছি। আমার একটি প্রিয় গানকেই- 'আমার সোনার বাংলা' আমি স্বাধীন দেশের জাতীয় সঙ্গীত করেছি। আর হ্যাঁ, আমার আর একটি প্রিয় গান ডি এল রায়ের 'ধন ধান্য পুষ্প ভরা'। দু'টি গানই আমি কাজের ফাঁকে গুনগুন করে গেয়ে থাকি।'' নয় মাসের পাকিস্তানি কারাগারে বন্দীদশা শেষে নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে আসার বারোদিন পর এই ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উচ্চারণ। যার আন্দোলন-সংগ্রাম এবং জীবন সাধনায় রবীন্দ্রনাথ অঙ্গাঙ্গী জড়িয়ে। তাই শান্তি নিকেতনের এক সময়ের শিক্ষার্থী ও সিলেটে জন্ম সাহিত্যিক-সাংবাদিক অমিতাভ চৌধুরীকে বলেছিলেন, ''রবীন্দ্রনাথকে আমি ভালোবাসি তার মানবপ্রেম ও দেশপ্রেমের জন্য। বড় হয়ে পড়লাম, 'হে মোর দুর্ভাগা দেশ।' আমাদের দেশের দুর্ভাগা মানুষের প্রতি এতো দরদ আর কার আছে।'' স্বাধীন দেশে এসেছিলেন সে সময়ের আনন্দবাজার পত্রিকার বার্তা সম্পাদক অমিতাভ চৌধুরী। ৩২ নম্বরের বাড়ীতে সেদিন রাজনীতি নয়, কথা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব নিয়ে। রবীন্দ্রনাথের সোনার বাংলা যে তিনি গড়ে তুলতে চান, সে চাওয়া ও স্বপ্নের কথাও বলেছিলেন।



১৯২৮ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি তাঁর স্নেহধন্য দিলীপ কুমার রায়কে কবি এক দীর্ঘ চিঠি লেখে। বিষয়- নারীর ব্যভিচার। রবীন্দ্রনাথ স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছে, “সমাজে যদি অশান্তি না ঘটে তাহলে ব্যভিচার-ব্যভিচারই হয় না। ব্যভিচারের ফলে যদি সন্তান সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে আজকাল সেটাও সমস্যা নয়। কেননা কন্ট্রাসেপটিভ বেরিয়ে গেছে। নিবারণের উপায়গুলোও সহজ। সুতরাং গর্ভধারণ করতে হয় বলে দেহকে সাবধান রাখার দায় আর তেমন নেই।... সমাজ নিজের প্রয়োজনবশত: স্বভাবকে ঠেকিয়ে রাখে। ঠেকিয়ে রাখতে তার অনেক ছলবল- কৗশল অনেক কড়াকড়ি, অনেক পাহারার দরকার হয়। কিন্তু প্রয়োজনগুলোই যখন আলগা হতে থাকে, তখন স্বভাবকে ঠেকিয়ে রাখা আর সহজ হয় না। ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভোগের দৃষ্টান্ত দেখ না। আমার যখনই ক্ষিদে পায়, তখন আমার গাছে যদি ফল না থাকে, তবে তোমার গাছ থেকে ফল পেড়ে খেতে আমার স্বভাবতই ইচ্ছা হয়। কিন্তু যেহেতু ব্যক্তি সম্পত্তির সীমা রক্ষা করা সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষার পক্ষে অত্যাবশ্যক, এজন্যই ফল পেড়ে খাওয়াটা চুরি। এই চুরি সম্পর্কে সমাজ আমাদের মনে যে সংস্কার দৃঢ় বদ্ধমূল করে দিয়েছে সেটা নিজের ব্যবস্থা রক্ষা করবার উদ্দেশ্যে।... বস্তুত: চুরি না করার নীতি শাশ্বত নীতি নয়। এটা মানুষের মনগড়া নীতি। এ নীতিকে পালন না করলে সমাজে যদি অশাস্তি না ঘটে, তবে পরের দ্রব্য নেওয়া চুরিই নয়। এই কারণে তুমি দিলীপ কুমার রায় যদি আমি রবীন্দ্রনাথের লিচু বাগানে আমার অনুপস্থিতিতে লিচু খেয়ে যাও, তুমিও সেটাকে চুরি বলে অনুশোচনা কর না। আমিও সেটাকে চুরি বলে খড়গহস্ত হই না। ব্যভিচার সম্বন্ধে এই কথাটাই খাটে। এর মধ্যে যে অপরাধ সেটা সামাজিক। অর্থাৎ সমাজে যদি অশান্তি ঘটে, তবে সমাজের মানুষকে সাবধান হতে হয়। যদি না ঘটে, তাহলে ব্যভিচার-ব্যভিচারই হয় না।



শান্তিনিকেতনে কবি গুরু উঁচু পাতাটনে বসা। নিচে পায়ের কাছে বসা নজরুল। হঠাৎ নজরুলের কি খেয়াল হলো, সে রবীন্দ্রনাথের পা ধরে টেপা শুরু করলেন! এমন জোড়ে টিপলেন যে রবীন্দ্রনাথ ব্যথায়, "বাবাগো" বলে উঠলেন! নজরুল তো লজ্জ্বায় শেষ। প্রিয় কবির লজ্জ্বা কাটানোর জন্য নিজের পায়ে হাত বুলাতে বুলাতে, কবি গুরু মাথা ঝুকিয়ে নজরুলকে বললেন,

- কটা গান লিখলে আজ? নাকি খালি চেঁচালে!

নজরুল তখন তার দিকে তাকিয়ে বললেন,

- মাঝে মাঝে মনে হয়, মোটা একটা লাঠি নিয়ে আপনার মাথায় বাড়ি দেই।

বিশ্মিত রবীন্দ্রনাথ বললেন,

- কেন, কেন!?

- যাতে লোকে, আপনার নামের পাশে আমার নামটি নেয়। আপনার ছবির পাশে আমার ছবি ছাঁপা হয়।

রবীন্দ্রনাথ নজরুলের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে "হো হো হো" করে হেসে উঠে বললেন,

- ওরে কে আছিস, দেখে যা, এই পাগল তো সত্যি সত্যি আমার মাথায় বাড়ি দিয়ে বসবে!



( রাতে ঘুমানোর আগে এই গানটি শুনে ঘুমান। দেখবেন অন্য একরকম অনুভূতি কাজ করবে।)

ও যে মানে না মানা।

আঁখি ফিরাইলে বলে, 'না, না, না।'

যত বলি 'নাই রাতি-- মলিন হয়েছে বাতি'

মুখপানে চেয়ে বলে, 'না, না, না।'

বিধুর বিকল হয়ে খেপা পবনে

ফাগুন করিছে হাহা ফুলের বনে।

আমি যত বলি 'তবে এবার যে যেতে হবে'

দুয়ারে দাঁড়ায়ে বলে, 'না, না, না।'

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২২

ঢাকাবাসী বলেছেন: গুরুদেবকে নিয়ে লেখা! আরি বাপরে! চালিয়ে যান।

১৬ ই মে, ২০২১ রাত ২:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন।

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এই সিরিজ খুবই ভালো লাগে।

১৬ ই মে, ২০২১ রাত ২:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন।

৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩৪

ওয়ালি শিখন বলেছেন: ভাল লাগল ।

১৬ ই মে, ২০২১ রাত ২:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: সুকরিয়া।

৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৫

ইশতিয়াক হাসান শিল্প বলেছেন: শেষে যে গানটি দিয়েছেন সেটা স্বরবিতানের নবম ভলিউমে "প্রায়শ্চিত্ত" তে আছে । আপনি কি গানটার সম্বন্ধে বিস্তারিত জানাতে পারেন? গানটি কেন লেখা হয়েছে? কাকে উদ্দেশ্য করে?

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: না, আপাতত জানাতে পারবো না।
একসময় রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে গবেষানা করতে গিয়ে অনেক কিছু জেনেছি।
তবে এই গানটি নিয়ে হয়তো অন্য কোনো পর্ব কিছু লিখে থাকতে পারি।
এই মুহুর্তে কিছুই মনে নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.