নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
সামাজিক ও ঐতিহাসিক উপন্যাস, রাজনৈতিক বা মনস্তাত্বিক- এরা এখন মৃত। এখন উত্তর-জীবনানন্দ আধুনিক উপন্যাসের যুগ। এখন বিষয় যৎসামান্য তথা কাজ একটাই। ব্যান্ডেজ খুলে রক্তঝরা ক্ষতস্থানটি দেখানো। সেটাই উপন্যাস।
- সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়
সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়-কে নিয়ে একজন কবির একটি কবিতা আছে। শেষের দুই লাইনে বলা হয়েছিল যে, তিনি হচ্ছেন যুদ্ধকালীন বিমানবন্দরের মতো, যুদ্ধের সময় অতিব্যবহৃত হলেও, শান্তির সময় সেখানে কোনো বিমান নামে না! সন্দীপন অসাধারণ হেলাফেলায় তাঁর ডায়েরি লিখেছেন, অথচ গভীরে প্রবেশ করলে দেখা যায় অসামান্য যত্ন তাঁর লেখায় পরতে পরতে, সন্দীপনের বলা একটি কথাকেও হেলাফেলা করা যায় না, ফেলে দেয়া যাবে না, অহেতুক বলা যাবে না। ডায়েরিতে লেখা একটি বাক্য হাতে নিয়ে-ও সারারাত বসে থাকা যায়। তেমন ‘একটি বাক্য’ অসংখ্য। কয়েকটি উদাহরণ দেই…
২১ ডিসেম্বর ১৯৯৩ তে লিখেছেন, ঘুম থেকে উঠে ক্লান্ত লাগে এত। মিকি মাউসের কার্টুনে মিকির ওপর দিয়ে একটা রোলার চলে গেছে যেন। কাগজ হয়ে গেছি। ফুলে-ফেঁপে আবার মাউস হই। কী হল আমার।জন্ম ২৫ অক্টোবর ১৯৩৩ কলকাতায় | জিজ্ঞেস করলে বলতে পছন্দ করেন ' লেখাপড়া যত্রতত্র' | পেশাগত সূত্রে জড়িত ছিলেন কলকাতা কর্পোরেশনের সঙ্গে | জড়িত একটি জনপ্রিয় বাংলা দৈনিকের সঙ্গেও | সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় পৃথিবী থেকে চলে গেছেন ২০০৫ এর ১২ ডিসেম্বর!
সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় একজন ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হল ক্রীতদাস ক্রীতদাসী (১৯৬১), সমবেত প্রতিদ্বন্দ্বী ও অন্যান্য গল্প (১৯৬৯), এখন আমার কোনো অসুখ নেই (১৯৭৭), হিরোশিমা মাই লাভ (১৯৮৯), কলকাতার দিনরাত্রি (১৯৯৬) ইত্যাদি। একইসাথে লিখেছেন এই ডায়েরিটি, যেটি তাঁর মৃত্যর পর বেরিয়েছে, নাম ’সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ডায়েরি’। বই এর ব্যাক কভারে লেখা হয়েছে,
’দুঃসাহসী, অকপট, আনপ্রেডিক্টেবল। যা মনে করেছেন তাই লিখেছেন। গোটা বাংলা লেখালেখির জগৎকে ফালাফালা করেছেন। এমনকি বাদ যায়নি নিজেও। শুধু বিতর্কিত নয়, একই সঙ্গে গভীর, মননশীল, বুদ্ধিদীপ্ত। এই আনসেনসেরড ও আনএডিটেড সন্দীপন গুছিয়ে দেওয়া হল টীকাটিপ্পনীসহ।’
৪০ বছরে লিখেছেন ৭০তি গল্প ,২১টি উপন্যাস এবং অসংখ্য না-কাহিনীমূলক নিবন্ধ | ১৯৯৫ তে পেয়েছেন বঙ্কিম পুরস্কার এবং ২০০২-তে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার |
সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়-এর চিঠি ( দেবী রায়কে লেখা )
প্রিয় দেবী ৩ ডিসেম্বর ১৯৬৩
পরপর দু-সপ্তাহ এলেন না, কোনো চিঠিপত্রও নেই, দোষ একটি মাত্র করেছি। এত দিনের বন্ধুত্বে একটি, আপনাকে লেখা দিই নি। এজন্যে যদি কিছু মনে করে থাকেন, আমার কিছু করার নেই। উৎপল আপনাদের ওখানে গিয়েছিল? প্রিয় উৎপল, অনেক দিন দেখা হয়নি। রয়েড স্ট্রিটে উঠে গেছেন ? আমি সুনীলের একটি চিঠি পেয়েছি। আমি খুব ভাল নেই। একদিন যদি চলে আসেন ভাল হয়---আপনি তো শক্তির মতো ধান্দায় ঘোরেন না। আপনি চলে এলেই পারেন। 'বীট'দের একটি পত্রিকা NOW কে পেয়েছি । প্রেরক C. Plymell একজন কবি। ১৫৩৭ N. Topeka, Wichita, Kansas, USA একটা উত্তর দিয়ে দিন। ভাই শক্তি, 'দেশে' কলাম ছাপানো ব্যাপারে তৈরি plan কী successful হল, অন্যান্য planগুলো শংকর, বরেন, সুভাষ মুখো থেকে শুরু করে নরেশ গুহ স্টিল সুনীল, বুদ্ধদেব, নীরেনবাবু ইত্যাদি মিলিয়ে ও বিধু, রবীন দত্ত, শামসের সমেত ও অধুনা শংকর কী যেন (ছাড়পত্র সম্পাদক ) প্লাস শরৎ ভাস্কর প্রণব প্রভৃতি নিয়ে যে বিরাট জাল ফেলেছিস সেটা এবার তোল। আমরা আর কতো সময় দাঁড়িয়ে থাকবো ? তারপরেও অপেক্ষা করতে হবে। আমেরিকাগামী প্লেনে দমদমে করতে পারলে তবে আমাদের ছুটি। প্রিয় সুনীল আপনার চিঠি পেয়েছি। আমার উঁকি মারছেন কেন ? আমার সমূহ বিপদ----এই প্রথম আমার মনে হচ্ছে আমার দ্বারা বুঝে ওঠা সম্ভব হবে না এখন আমার কী করা উচিত, এখন এই প্রথম আমাকে অপরের উপদেশমত চলতে হবে। প্রিয় দীপেন, তোমার কী হল ? তুমি জেনো আমার সব অপরাধের শাস্তি আমি ভোগ করছি। প্রিয় উৎপল আপনি ছাড়া কারো সম্পর্কে এখন বন্ধুত্বের বোধ নেই। সুনীলের জন্য আছে, কিন্তু তা বোধ হয় সে আমেরিকায় আছে বলে। শ্যামবাজার থেকে টু-বি ধরেছি, দোতলা, মাঝে-মাঝে বাসস্টপগুলির সুযোগ নিয়ে লিখছি। একদিন আসুন।
আপনার সন্দীপন
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০০
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৭:৩৭
মহিদুল বেস্ট বলেছেন: ভাল লেগেছে! মাথায় গেঁথে নেবার চেষ্টা করলাম যদিও অল্পই ঢুকল