নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাস্তায় পাওয়া ডায়েরী থেকে- ২৯

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৯

আমি মনে করি রাস্তার পাশের চায়ের দোকান গুলো জ্ঞানের ভান্ডার। একটা চায়ের দোকানে নানান রকম মানুষ আসে- তারা চা খেতে খেতে নানান রকম গল্প করে, সেই গল্প থেকে অনেক কিছু জানা যায়। আমি নিয়মিত রাস্তার পাশের চায়ের দোকান গুলোতে যাই। চা খাই আর আশে পাশের লোকজনদের কথা গুলো খুব মন দিয়ে শুনি। কত রকম বিষয় নিয়ে যে আলোচনা হয়- তা চায়ের দোকানে না গেলে বুঝা সম্ভব নয়। ইদানিং হরতাল আর অবরোধের কারনে রাস্তার পাশের চায়ের দোকান গুলো পুলিশ খুলতে দেয় না। যাই হোক, গ্রামের চায়ের দোকান গুলো আরো বেশী আনন্দের। তবে এখনকার গ্রামের চায়ের দোকান গুলোতে সারাদিন সিডিতে বাংলা সিনেমা চলতে থাকে। বেশীর ভাগ সিনেমা গুলোর ডায়লোগ'ই খুবই নোংরা এবং নাচ গান গুলো খুবই অশালীন। এক সময় আমার খুব ইচ্ছা ছিল- বড় করে একটা চায়ের দোকান দিবো। সারাদিন দুনিয়ার মানুষজন এসে আমার দোকানে চা খাবে-গল্প করবে। আর আমি খুব মন দিয়ে তাদের গল্প শুনব। এই ইচ্ছাটা আমার এখনও আছে।



সেদিন সন্ধ্যায় বড় ভাইয়ের মেয়ে রোজাকে নিয়ে হাঁটতে বের হয়েছি। রোজা আমার গলা জড়িয়ে ধরে নানান গল্প করছে। রাস্তায় বের হলেই রোজা অনেক খুশি। রাস্তারা সব কিছুই তার ভালো লাগে। যদি রাস্তা দিয়ে একটা ভিক্ষুকও হেঁটে যায়- সে এক আকাশ বিস্ময় ভিক্ষুকের দিকে তাকিয়ে থাকয়াবে। মাঝে মাঝে আমি চায়ে খেতে গেলে রোজাকে কোলে করে নিয়ে যাই। চায়ের দোকানের মালিক জোর করে রোজার হাতে বিস্কুট- রুটি কলা দিয়ে দেয়। রোজা এক কামড় মুখে দিয়ে ফেলে দেয়। এদিকে রোজার মা বাইরের সব ধরনের খাবার রোজার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে। তো সেদিন, চা শেষ করে ফুটপাত ধরে বাসায় ফিরছি। হঠাত রাস্তার মাঝখানে পর-পর তিনটা ককটেল ফাটল। মুহূর্তের মধ্যে দোকান পাট সব বন্ধ হয়ে গেল। রাস্তা খালি হয়ে গেল। আমি কোনো রকমে রোজাকে ঝাপটে ধরে গলির ভেতরে ঢুকে পড়লাম। রোজা প্রচন্ড ভয় পেয়ে হাট দিয়ে দুই কান ঢেকে রাখে। আল্লাহকে ধন্যবাদ সেদিন একটা ককটেল আমাদের গায়ে এসে পড়েনি।



খিলগা ওভার ব্রীজের কাছে একটা চায়ের দোকান আছে। আমার খুব প্রিয় একটা চায়ের দোকান। চা-টা দারুন বানায়। এক কাপ চা খেলেই- মনটা আনন্দে ভরে উঠে। সেদিন দুপুরবেলা আরাম করে চা খাচ্ছি- এমন সময় পাঁচ সাতজন পুলিশ এসে উপস্থিত। একজন পুলিশ চায়ের দোকানদারকে খুব বাজে কয়েকটা গালি দিল। আমি মাত্র চায়ে প্রথম চুমুক দিবো, এমন সময় একটা পুলিশ ধমক দিয়ে বলল- চায়ের কাপ রাখেন। আমি বললাম কেন? পুলিশ বলল- রাখতে বলেছি রাখেন, চেক করবো। আমি বললাম- চা-টা শেষ করে নিই, ঠান্ডা হয়ে যাবে তো! পুলিশ চোখ মুখ খিচিয়ে বলল- আপনার কাজ আগে না আমাদের কাজ আগে? একটা পুলিশ আমার হাত থেকে চায়ের কাপ কেড়ে নিল। কিছু গরম চা ছিটকে এসে আমার হাতে পড়ল। পুলিশ আমাকে চেক করে পিস্তল, ছুরি বা ককটেল কিছুই পেল না। এর মধ্যে একজন পুলিশ আমার ম্যানিব্যাগ তন্ন তন্ন করে কি যেন খুজছে। যেন আমি ম্যানিব্যাগে গ্রেনেড লুকিয়ে রেখেছি। হঠাত করে একজন পুলিশ তুই করে বলতে শুরু করলো- তুই কই থাকস? কি করস? অপরিচিত মানুষ তুই করে বললে খুব রাগ হয় আমার। ইচ্ছা করলো একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেই।



এই হরতাল, অবরোধ, গাড়ি বাসে আগুন দেওয়া, গাছ কেটে রাস্তা বন্ধ করা, পিটিয়ে-কুপিয়ে- আগুন দিয়ে মানুষ মেরে ফেলা- এইসব কবে বন্ধ হবে। দিনের পর দিন- আর ভাল্লাগে না। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এই খারাপ কাজ গুলো যারা করে মনে মনে তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করি প্রতিদিন। দেশের মানুষকে কষ্ট দিয়ে রাজনীতিবিদরা কেমন রাজনীতি করেন? আজিব!! আমি কোনো দল করি না। হাসিনা খালেদা কেউই ভালো না। আমার ক্ষমতা থাকলে এই দুইজনকে জোর করে অবসর করাতাম। কারন তাদের রাজনীতির মধ্যে দেশের জন্য ভালোবাসা প্রকাশ পায় না। প্রকাশ পায় ক্ষমতার প্রতি লোভ। খবরের কাগজ পড়া ছেড়ে দিয়েছি। এখন মনে হচ্ছে টিভিতে খবর দেখাও ছেড়ে দিতে হবে। সব গুলো চ্যানেলই ভন্ড-বদমাইশ। নিরপেক্ষ খবর কেউ প্রচার করে না। ( টক শো গুলো তো- মাথায় আগুন ধরিয়ে দেয়।) মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে এই দেশটা ছেড়ে ইউরোপের কোনো দেশে চলে যাই। বাকিটা জীবন সুখে শান্তিতে বাস করি। সমস্যা হচ্ছে- এইদেশটাকে আমি অনেক ভালোবাসি। খুব বেশী ভালোবাসি। বেশ কয়েক বছর আগে- একবার তাড়াহুড়া করে পাসপোর্ট ভিসা রে্ডী করলাম মালোশিয়া চলে যাব। প্লেনে ওঠার দুই দিন আগে- ভাবলাম, প্রিয় জন্মভূমি ছেড়ে আমি কোথাও যাব না। না। নো নেভার।



একজন ধনী ব্যক্তি তার ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে গ্রামে বেড়াতে গেল। তারা কয়েকদিন গ্রামে থাকলো, গ্রামের গরীব মানুষদের সাথে পরিচিত হল। ফেরার পথে ছোট ছেলেটার বাবা তাকে বলল, “দেখেছো গ্রামের মানুষ কত গরীব?? কি শিখলে তুমি তাদের দেখে?” ছেলেটা বলল, “আমাদের একটা কুকুর আছে, ওদের আছে পাঁচটা; আমাদের সুইমিং পুল আছে, ওদের আছে নদী; আমাদের আছে ডিম লাইট রাতে ঘুমানোর জন্য, ওদের আছে তাঁরা; আমাদের সুরক্ষার জন্য আছে দেয়াল, ওদের আছে বন্ধু;

আমরা খাবার কিনে খাই; ওরা নিজেরা উৎপন্ন করে; আমরা টাকা দিয়ে মানুষের সাহায্য পাই, ওরা পায় বিনামুল্যে।

বাবা তোমাকে অনেক ধন্যবাদ আমরা কতটা গরীব সেটা আমকে দেখানর জন্য।”



শুধু টাকা থাকলেই মানুষ ধনী হয় না, প্রকৃত ধনী সেই যে জীবনটাকে সত্যিকার অর্থে উপলব্ধি করতে পারে।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫৯

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: অসাম, জটিল...।

লাখো তরুন-যুবা'র মনের কথা। আমরা আসলে "না" প্রজন্ম।

ভালোলাগা আর ভালবাসা জানবেন।

১১ ই জুন, ২০১৯ সকাল ৯:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৩৩

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: হ্যাঁ, রাস্তার পাশের টং চা-দোকানগুলো ইউনিভার্সিটি, আপনি ওখানকার পিএইচডি।

১১ ই জুন, ২০১৯ সকাল ৯:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:৪১

তোমোদাচি বলেছেন: চমৎকার লাগল!!

১১ ই জুন, ২০১৯ সকাল ৯:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:২৯

ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল লাগল।

১১ ই জুন, ২০১৯ সকাল ৯:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৪

স্রাবনের রাত বলেছেন: সুন্দর লাগল ।
দেশের এই অবস্থায় হতাশা উড়ানো ছাড়া, আমাদের মনে হয় আর কিছু করার নেই।

যাই হোক , একটাই অভিযোগ.।.।.।
চায়ের দোকানের গল্প গুলো, তোঁ আর বললেন না

১১ ই জুন, ২০১৯ সকাল ৯:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.