নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
রামায়ণ ছাড়া যেমন রামের কোনো অস্তিত্ব নেই, মহাভারত ছাড়া কৃষ্ণেরও কোনো অস্তিত্ব নেই। কাজেই রাম ও কৃষ্ণে বিশ্বাস করতে হলে যথাক্রমে রামায়ণ ও মহাভারতে বিশ্বাস করতেই হবে। অন্যদিকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একদম মৌলিক বিশ্বাস যেমন অবতারবাদ, জন্মান্তরবাদ, ও নির্বাণ এর ধারণা এসেছে গীতা-উপনিষদ থেকে, বেদ থেকে নয়। অতএব- হিন্দু ধর্ম থেকে যদি রাম, কৃষ্ণ, অবতারবাদ, জন্মান্তরবাদ, ও নির্বাণকে বাদ দেওয়া হয় তাহলে বর্তমান হিন্দু ধর্ম বলে কিছু থাকবে না। গীতা অনুযায়ী পরকাল তো দূরে থাক এমনকি ইহকালেও বিশ্বাস ছাড়া ভালো কাজের কোনোই মূল্য নেই। পুরো গ্রন্থটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে কোনো নিরপেক্ষধর্মী মানুষের কাছে মনেই হবে না যে এটি স্রষ্টার বাণী। বরঞ্চ যেটি মনে হবে সেটি হচ্ছে একজন মানুষকে ঈশ্বর বানিয়ে নাটকের মতো করে কেউ লিখেছেন, যেখানে পুরোপুরি অযৌক্তিক ও অবিশ্বাস্য রকমের কিছু কল্পকাহিনীও যোগ করা হয়েছে, এবং যার জ্ঞান মূলত সেই সময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
গীতার কিছু স্লোককে কল্পকাহিনীর মতো মনে হয়। কৃষ্ণকে এই পৃথিবীর সকলেই আমাদের মতোই একজন মানুষ হিসেবে দেখতে পাচ্ছেন। অথচ গীতাতে তার সম্পর্কে এমন কিছু কাহিনী আছে যেগুলো কোনো মানুষের পক্ষে একদমই অসম্ভব - যেগুলোকে কল্পকাহিনী ছাড়া অন্য কোনো ভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে না। উদাহরণস্বরূপ, কুরুক্ষেত্রের যোদ্ধারা কৃষ্ণের জ্বলন্ত মুখের মধ্যে দ্রুতগতিতে ঢুকে যেয়ে ধ্বংস হচ্ছে! সম্পূর্ণ মহাবিশ্বই কৃষ্ণের মুখের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে! ইত্যাদি। অর্জুন আবার এই দৃশ্যগুলো দেখেছেন। একজন মানুষের মুখের ভেতর সম্পূর্ণ মহাবিশ্ব কীভাবে ঢুকে যাওয়া সম্ভব! তাছাড়া সম্পূর্ণ মহাবিশ্বই যদি কৃষ্ণের জ্বলন্ত মুখের মধ্যে ঢুকে যায় তাহলে অর্জুন সেই দৃশ্য কোথা থেকে এবং কীভাবে দেখলেন!
ভগবদ্গীতা একটি ৭০০-শ্লোকের হিন্দু ধর্মগ্রন্থ। এটি প্রাচীন সংস্কৃত মহাকাব্য মহাভারত-এর একটি অংশ। গীতা-র বিষয়বস্তু কৃষ্ণ ও পাণ্ডব রাজকুমার অর্জুনের কথোপকথন। গীতা হিন্দু ধর্মতত্ত্বের একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ এবং হিন্দুদের জীবনচর্যার একটি ব্যবহারিক পথনির্দেশিকা। গীতা হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। ভারতীয় দর্শনের অন্যতম ভিত্তিও নাকি গীতা। এতে বেদ, বেদান্ত, উপনিষদ প্রভৃতি গ্রন্থে বর্ণিত দার্শনিক তত্ত্বের সার সংগৃহীত হয়েছে। ওম শান্তি অর্থ্যাৎ পৃথিবীর সকল প্রাণী শান্তি লাভ করুক। শুধু গীতা পাঠ করলেই হবে না তা বুঝতে হবে।
ধান ক্ষেতে যেমন আগাছাগুলি তুলে ফেলে দেওয়া হয়, তেমনই ভগবদগীতার সূচনা থেকেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, কুরুক্ষেত্রের রণাঙ্গনে ভগবান স্বয়ং উপস্থিত থেকে ধৃতরাষ্ট্রের পাপিষ্ঠ পুত্রদের সমূলে উৎপটিত করে যুধিষ্ঠিরের নেতৃত্বে ধর্মপরায়ণ মহাত্মাদের পুনঃ প্রতিষ্ঠা করবার আয়োজন করেছেন। গীতার কেন্দ্রীয় চরিত্র হচ্ছেন কৃষ্ণ। হিন্দুশাস্ত্রীয় বিবরণ বা লোকবিশ্বাস অনুযায়ী কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল খ্রীষ্টপূর্ব ৩২২৮ সালে। কৃষ্ণকে যেহেতু ঈশ্বর হিসেবে বিশ্বাস করা হয় সেহেতু তাদের কাছে গীতা হচ্ছে ঈশ্বরের বাণী। অন্যদিকে আবার তারা যেহেতু ঈশ্বরকে স্বচক্ষে দেখে বিশ্বাস করে সেহেতু তারা খ্রীষ্টান, মুসলিম, ও ইহুদীদেরকে ‘অন্ধ বিশ্বাসী’ বলে সমালোচনা করে থাকে।
গীতার ১০:৩১ স্লোক অনুযায়ী রাম ও কৃষ্ণ উভয়েই যোদ্ধা ছিলেন। বেদ, রামায়ণ, ও মহাভারতে প্রচুর যুদ্ধ ও হতাহতের ঘটনা আছে। তবে সেদিকে না যেয়ে শুধু গীতা থেকেই এ বিষয়ে কিছু স্লোক তুলে ধরা হবে। গীতা মূলত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের উপর ভিত্তি করে রচিত একটি ধর্মগ্রন্থ, যে যুদ্ধে প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ হতাহত হয় এবং যার নেতৃত্বে ছিলেন স্বয়ং কৃষ্ণ। কৃষ্ণের নেতৃত্বে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে উভয় পক্ষের ৩৯,৩৬,৫৮৮ জন সৈন্য নিহত হয় যাদের মধ্যে বিরোধী পক্ষের সৈন্য সংখ্যা ছিল ২৪,০৫,৬৯৬ জন। কোরআন-হাদিসের কোথাও এরকম ভয়ঙ্কর কথাবার্তা ও হত্যাযজ্ঞের ঘটনা পাওয়া যাবে না। মূলত কৃষ্ণের নেতৃত্বে এবং কৃষ্ণের কারণে আজ থেকে হাজার হাজার বছর আগে শুধুমাত্র কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধেই প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ নিহত হয়।
আমরা যখন কোন ঔষধ খাই, তখন যেমন আমরা আমাদের ইচ্ছামতো সেই ঔষধ খেতে পারি না, ডাক্তারের নির্দেশ বা ঔষধের শিশিতে দেওয়া নির্দেশ অনুসারে সেই ঔষধ খেতে হয়, তেমনই ভগবদগীতাকে গ্রহণ করতে হবে ঠিক যেভাবে তাঁর বক্তা তাঁকে গ্রহণ করবার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। ভগবদগীতার বক্তা হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। ভগবদগীতার প্রতিটি পাতায় বলা হয়েছে যে, শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান।
গীতার প্রথম কথা নিষ্কাম কর্ম। অর্থাত্ ফলের আকাঙ্ক্ষা না করে কর্ম করা। নিষ্কাম কর্ম করতে করতে জ্ঞানের উদয় হয়। জ্ঞানবলে কর্মী বুঝতে পারেন যে, ভগবান সকল কারণের কারণ এবং সমস্ত কাজ ভগবানের। জ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে জাগে ভক্তি। ভক্ত মন-প্রাণ ভগবানে সমর্পণ করে মোক্ষলাভ করে থাকেন। ভগবদগীতার আর এক নাম গীতোপনিষদ্। এটি বৈদিক দর্শনের সারমর্ম এবং বৈদিক সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ উপনিষদ্।
গীতা সারাংশঃ
যা হয়েছে তা ভালই হয়েছে,
যা হচ্ছে তা ভালই হচ্ছে,
যা হবে তাও ভালই হবে।
তোমার কি হারিয়েছে, যে তুমি কাঁদছ ?
তুমি কি নিয়ে এসেছিলে, যা তুমি হারিয়েছ?
তুমি কি সৃষ্টি করেছ, যা নষ্ট হয়ে গেছে?
তুমি যা নিয়েছ, এখান থেকেই নিয়েছ।
যা দিয়েছ এখানেই দিয়েছ।
তোমার আজ যা আছে,
কাল তা অন্যকারো ছিল,
পরশু সেটা অন্যকারো হয়ে যাবে।
পরিবর্তনই সংসার এর নিয়ম।।
০৩ রা মে, ২০২১ রাত ১১:২১
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
২| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৭
সঞ্জয় নিপু বলেছেন: যা হয়েছে তা ভালই হয়েছে,
যা হচ্ছে তা ভালই হচ্ছে,
যা হবে তাও ভালই হবে।
তোমার কি হারিয়েছে, যে তুমি কাঁদছ ?
০৩ রা মে, ২০২১ রাত ১১:২১
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
৩| ১৫ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১:১৪
শান্তুনো বলেছেন: ‘অন্ধ বিশ্বাসী’ বলে সমালোচনা করে থাকে না হিন্দু ধর্মের মানুষরা . আর শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান সে সব কিছু করতে পারে
...
৪| ০৩ রা মে, ২০২১ রাত ১১:২১
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
৫| ০৪ ঠা মে, ২০২১ রাত ১:২৫
নতুন বলেছেন: গীতা সারাংশঃ
যা হয়েছে তা ভালই হয়েছে,
যা হচ্ছে তা ভালই হচ্ছে,
যা হবে তাও ভালই হবে
পরশু সেটা অন্যকারো হয়ে যাবে।
পরিবর্তনই সংসার এর নিয়ম।।
খুবই সত্য একটা কথা। এর আসল শ্লোকটা আছে আপনার জানা?
০৪ ঠা মে, ২০২১ রাত ১:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: না জানা নেই।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৪৮
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: "তোমার আজ যা আছে,
কাল তা অন্যকারো ছিল,
পরশু সেটা অন্যকারো হয়ে যাবে।
পরিবর্তনই সংসার এর নিয়ম।।"
চমৎকার লাগলো